মালদা, 7 মে : চেন্নাইয়ে আয়োজিত ন্যাশনাল অ্যাথিলিটিক্স মিটে হাঁটা প্রতিযোগিতায় সোনা ও দৌড় প্রতিযোগিতায় ব্রোঞ্জ পদক পেলেন মালদার মেয়ে (malda girl get 2 medal in national athletic meet )
পদকজয়ী মায়ের নাম তনুশ্রী লালা। বয়স 38 বছর। মালদা শহরের কৃষ্ণপল্লির বাসিন্দা তিনি। পেশায় বেসরকারি সংস্থার কর্মী। স্বামী সুব্রত লালাও একটি বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত। তাঁদের দুই ছেলে। বড় ছেলে মালদা কলেজের ছাত্র। ছোটটি নবম শ্রেণিতে পড়ে। সংসারে অভাব-অনটন লেগেই রয়েছে। ঠিক এই কারণে বিয়ের পর দীর্ঘ 19 বছর মাঠমুখো হতে পারেননি তনুশ্রী। তবে গত তিন বছর ধরে নিয়মিত অনুশীলন করছেন। কখনও রেল ময়দান, আবার কখনও মালদা বিমানবন্দরে চলে তাঁর অনুশীলন। মাঠে ফিরেই সবাইকে চমকে দিয়েছেন তিনি।
গত 27 এপ্রিল-1 মে চেন্নাইয়ের জওহরলাল নেহরু স্টেডিয়ামে 42 তম ন্যাশনাল মাস্টার্স অ্যাথলিটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপ অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে তনুশ্রী পাঁচ কিলোমিটার হাঁটা এবং পনেরোশো মিটার দৌড় প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার সুযোগ পান। হাঁটা প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়ে তিনি সোনা জয় করেন। দৌড়ে মেলে ব্রোঞ্জ পদক।
আরও পড়ুন : ট্রাফিক পুলিশ ও সিভিক ভল্যান্টিয়ারদের জন্য ফার্স্ট এড প্রশিক্ষণ কর্মসূচি
তাঁর কথায়, "চেন্নাইয়ের জওহরলাল নেহরু স্টেডিয়ামে আয়োজিত ন্যাশনাল মিটে আমি পনেরোশো মিটার দৌড় এবং পাঁচ কিলোমিটার হাঁটা প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছিলাম। হাঁটায় প্রথম এবং দৌড়ে তৃতীয় হয়েছি। গত তিন বছর ধরে আমি অনুশীলন করছি। দু'বছর ধরে প্রতিযোগিতায় অংশ নিচ্ছি। ছোট থেকেই খেলাধুলো করতে ভালবাসতাম। তখন স্কুল ও জেলাস্তরের প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছি। বিয়ের পর সাংসারিক সমস্যায় মাঠ থেকে আমাকে দূরেই থাকতে হয়েছিল।"
তিনি আরও বলেন, "19 বছর পর ফের মাঠে নেমেছি। সময় পেলেই মাঠে চলে আসি। মূলত সকালে দু'ঘণ্টা আর বিকেলে দেড় ঘণ্টা অনুশীলন করি। আগামীতে আন্তর্জাতিক ইভেন্টে নামার ইচ্ছে রয়েছে। কিন্তু আর্থিক বাধায় সেই স্বপ্নপূরণ হবে কি না, জানি না। এই অবস্থায় জেলা প্রশাসন কিংবা অন্য কেউ পাশে দাঁড়ালে আমার খুব উপকার হয়।"
আরও পড়ুন : মালদায় বছরের পর বছর শিকলবন্দি 28 বছরের বরুণ
তনুশ্রীর ব্যক্তিগত ট্রেনার অসিত পালও ছাত্রীর আর্থিক সংকট নিয়ে রয়েছেন চিন্তায়। তিনি বলেন, "মাস্টার্স লেভেলে তনুশ্রীই জাতীয়স্তরে প্রথম সোনা জিতেছে। তাঁর এই সাফল্য জেলাকে গর্বিত করেছে। জেলা ক্রীড়া সংস্থা-সহ আরও অনেক সংস্থা তাকে সহযোগিতা করেছে। তার জন্য প্রত্যেককে ধন্যবাদ। তিনি ইতিমধ্যে আন্তর্জাতিকস্তরে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ছাড়পত্র পেয়েছে। কিন্তু আর্থিক সংকটের জন্য প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করাটা খুবই কঠিন। এই অবস্থায় জেলা প্রশাসন কিংবা অন্য কেউ তাঁকে আর্থিক সহযোগিতা করলে তনুশ্রী আন্তর্জাতিক স্তরেও সাফল্য পাবে বলে আমার বিশ্বাস।"