ETV Bharat / state

Gold in Archery: ইরাকে আয়োজিত এশিয়া কাপ তিরন্দাজিতে সোনা জয় জুয়েলের - মালদার ছেলের সোনা জয়

এশিয়া কাপের তিরন্দাজি প্রতিযোগিতায় দলগতভাবে সোনা জিতল মালদার ছেলে(Gold in Archery)৷ অজ গাঁ থেকে ইরাকে সোনা জয় ৷ কেমন ছিল সেই যাত্রা ?

gazole
বাবা মায়ের সঙ্গে জুয়েল
author img

By

Published : Jul 18, 2022, 9:04 PM IST

মালদা, 18 জুলাই: নামে জুয়েল । মালদা জেলার রত্ন সে । রাজ্য ও জাতীয় স্তরের প্রতিযোগিতায় আগেই সাফল্য পেয়েছিল । এবার এশিয়া কাপ তিরন্দাজি প্রতিযোগিতায় দলগত বিভাগে সোনা জিতেছে মালদার সোনার ছেলে জুয়েল সরকার(malda 16 years old boy bagged gold in Asia cup archery competition)। ইরাকে আয়োজিত সেই প্রতিযোগিতা শেষে দু’দিন আগেই ঘরে ফিরেছে সে । তার ঘরে ফেরার খবর পেয়ে আজই প্রশাসনের তরফে তাকে সংবর্ধনা দেওয়ার আয়োজন করা হয়েছে।

malda
সোনার ছেলে জুয়েল সরকার

একাদশ শ্রেণির ছাত্র বছর 16-র জুয়েল সরকারের বাড়ি গাজোলের পাণ্ডুয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের ধোবাপাড়া গ্রামে । একেবারেই অজ গাঁ । কাঁচা রাস্তা পেরিয়ে গ্রামে ঢুকতে হয় । বাবা নিশম সরকার পেশায় চাষি আর মা নিরতি সরকার ঘরের কাজকর্ম সামলানোর পাশাপাশি জমিতেও কাজ করেন । স্থানীয় ভবানীকোঠা শশী বিদ্যাপীঠ থেকে চলতি বছর মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাস করেছে সে । ছোট থেকেই তির চালানোর শখ তার । 2016 সালে সে চোখে পড়ে যায় গাজোলের তিরন্দাজি প্রশিক্ষক শ্রীমন্ত চৌধুরীর । এরপর থেকেই শ্রীমন্তবাবু গাজোলের বিএসএ ময়দানে জুয়েলকে তিরন্দাজির প্রশিক্ষণ দিতে শুরু করেন । প্রতিদিন বাড়ি থেকে বেশ কয়েক কিলোমিটার গিয়ে কঠোর অনুশীলন করত সে । সাফল্য আসে 2018 সালে । জলপাইগুড়িতে 10 দিনের ট্রায়াল শেষে সে ঝাড়গ্রাম বেঙ্গল আর্চারি অ্যাকাডেমিতে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পায় । এখন সেখানেই থাকে সে । সেখান থেকেই ইরাকে আয়োজিত এশিয়া কাপ আর্চারি প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিল । তারপরেই মেলে সোনার সাফল্য ৷

malda
জুয়েলকে সংবর্ধনা দিচ্ছেন গাজোল পঞ্চায়েত সমিতির সভানেত্রী

আরও পড়ুন : আমেরিকার বিশ্ববিদ্য়ালয়ে গবেষণার ডাক পেলেন মালদার ছাত্র

জুয়েলের কথায়,"2016 সালে প্রথম প্রশিক্ষণ নিতে শুরু করি । 2018 সালে ঝাড়গ্রাম বেঙ্গল আর্চারি অ্যাকাডেমিতে সুযোগ পাওয়ার পর সেখানেই থাকতে শুরু করি । ওখানে এখন একাদশ শ্রেণিতে পড়ছি । 2022 সালে ইরাকে আয়োজিত এশিয়া কাপ আর্চারি প্রতিযোগিতার ফাইনালে আমরা তিনজন দলগতভাবে বাংলাদেশকে হারিয়ে সোনা জিতি । এখন আন্তর্জাতিক স্তরের সঙ্গে বিশ্বকাপে সফল হওয়াই আমার লক্ষ্য । বাবা-মাকে ছেড়ে দূরে থাকতে মাঝে মধ্যে মন খারাপ করে । কিন্তু ওরা আমার জন্য এত কষ্ট করে টাকা জোগাড় করে তাই ভবিষ্যতে সফল হতে গেলে বাইরে তো থাকতেই হবে ।"

ইরাকে আয়োজিত এশিয়া কাপ তিরন্দাজিতে সোনা জিতল মালদার ছেলে

অনেকদিন পর ছেলে ঘরে ফিরে আসায় বেজায় খুশি মা নিরতি সরকার । তিনি বলেন, "দু-এক বিঘা জমি আছে । তাতেই চাষবাস করে কোনওরকমে সংসার চলে । আমার একটাই ছেলে । ক্লাস ফাইভে যখন পড়ত, তখন তিরখেলায় নাম দিয়ে সফল হয়েছিল । তারপর থেকেই ওর তির চালানোর নেশা । একমাত্র ছেলে বাইরে থাকায় আমাদের মন খারাপ করে । কিন্তু আমরা চাই, ছেলে আরও বড় হোক । ওর জন্য আমরা সব কষ্ট করতে রাজি ।"

আরও পড়ুন : রাজ্যে মাত্র দু’জন, সর্বভারতীয় এনডিএ প্রবেশিকার মেরিট লিস্টে 66তম স্থানে মালদার অর্ণব

জুয়েলের প্রথম প্রশিক্ষক শ্রীমন্ত চৌধুরী জানান, 2015 সালে জুয়েলদের স্কুলে গিয়েছিলাম । তখনই সে আমার চোখে পড়ে । আমি বিভিন্ন গ্রামে গিয়ে ছেলেমেয়েদের তিরন্দাজির জন্য তুলে আনতাম । তাদের মধ্যে জুয়েলের আগ্রহই ছিল সবচেয়ে বেশি । তখন আমার কাছে আধুনিক ধনুক কিংবা তির ছিল না । বিভিন্ন জায়গা থেকে টাকা জোগাড় করে সেসব কিনে ওদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করি । জুয়েলের সাফল্যে আমি গর্বিত । আমি যেটা পারিনি, জুয়েল সেটা করেছে । দেশের হয়ে সোনা জেতা সহজ কাজ নয় ।"

সোমবার সংবর্ধনা দিতে জুয়েলের বাড়ি যান গাজোল পঞ্চায়েত সমিতির সভানেত্রী রেজিনা পারভিন । তিনি বলেন, "এই প্রত্যন্ত গ্রামের ছেলে এশিয়া কাপ তিরন্দাজি প্রতিযোগিতায় সোনা জিতেছে । এমন গ্রামের একটি ছেলের এই সাফল্যে গাজোলবাসী হিসাবে আমি গর্বিত ।"

আরও পড়ুন : দিল্লির হ্যান্ডলুম হাটে ব্যাপক চাহিদা মালদার আমের

মালদা, 18 জুলাই: নামে জুয়েল । মালদা জেলার রত্ন সে । রাজ্য ও জাতীয় স্তরের প্রতিযোগিতায় আগেই সাফল্য পেয়েছিল । এবার এশিয়া কাপ তিরন্দাজি প্রতিযোগিতায় দলগত বিভাগে সোনা জিতেছে মালদার সোনার ছেলে জুয়েল সরকার(malda 16 years old boy bagged gold in Asia cup archery competition)। ইরাকে আয়োজিত সেই প্রতিযোগিতা শেষে দু’দিন আগেই ঘরে ফিরেছে সে । তার ঘরে ফেরার খবর পেয়ে আজই প্রশাসনের তরফে তাকে সংবর্ধনা দেওয়ার আয়োজন করা হয়েছে।

malda
সোনার ছেলে জুয়েল সরকার

একাদশ শ্রেণির ছাত্র বছর 16-র জুয়েল সরকারের বাড়ি গাজোলের পাণ্ডুয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের ধোবাপাড়া গ্রামে । একেবারেই অজ গাঁ । কাঁচা রাস্তা পেরিয়ে গ্রামে ঢুকতে হয় । বাবা নিশম সরকার পেশায় চাষি আর মা নিরতি সরকার ঘরের কাজকর্ম সামলানোর পাশাপাশি জমিতেও কাজ করেন । স্থানীয় ভবানীকোঠা শশী বিদ্যাপীঠ থেকে চলতি বছর মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাস করেছে সে । ছোট থেকেই তির চালানোর শখ তার । 2016 সালে সে চোখে পড়ে যায় গাজোলের তিরন্দাজি প্রশিক্ষক শ্রীমন্ত চৌধুরীর । এরপর থেকেই শ্রীমন্তবাবু গাজোলের বিএসএ ময়দানে জুয়েলকে তিরন্দাজির প্রশিক্ষণ দিতে শুরু করেন । প্রতিদিন বাড়ি থেকে বেশ কয়েক কিলোমিটার গিয়ে কঠোর অনুশীলন করত সে । সাফল্য আসে 2018 সালে । জলপাইগুড়িতে 10 দিনের ট্রায়াল শেষে সে ঝাড়গ্রাম বেঙ্গল আর্চারি অ্যাকাডেমিতে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পায় । এখন সেখানেই থাকে সে । সেখান থেকেই ইরাকে আয়োজিত এশিয়া কাপ আর্চারি প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিল । তারপরেই মেলে সোনার সাফল্য ৷

malda
জুয়েলকে সংবর্ধনা দিচ্ছেন গাজোল পঞ্চায়েত সমিতির সভানেত্রী

আরও পড়ুন : আমেরিকার বিশ্ববিদ্য়ালয়ে গবেষণার ডাক পেলেন মালদার ছাত্র

জুয়েলের কথায়,"2016 সালে প্রথম প্রশিক্ষণ নিতে শুরু করি । 2018 সালে ঝাড়গ্রাম বেঙ্গল আর্চারি অ্যাকাডেমিতে সুযোগ পাওয়ার পর সেখানেই থাকতে শুরু করি । ওখানে এখন একাদশ শ্রেণিতে পড়ছি । 2022 সালে ইরাকে আয়োজিত এশিয়া কাপ আর্চারি প্রতিযোগিতার ফাইনালে আমরা তিনজন দলগতভাবে বাংলাদেশকে হারিয়ে সোনা জিতি । এখন আন্তর্জাতিক স্তরের সঙ্গে বিশ্বকাপে সফল হওয়াই আমার লক্ষ্য । বাবা-মাকে ছেড়ে দূরে থাকতে মাঝে মধ্যে মন খারাপ করে । কিন্তু ওরা আমার জন্য এত কষ্ট করে টাকা জোগাড় করে তাই ভবিষ্যতে সফল হতে গেলে বাইরে তো থাকতেই হবে ।"

ইরাকে আয়োজিত এশিয়া কাপ তিরন্দাজিতে সোনা জিতল মালদার ছেলে

অনেকদিন পর ছেলে ঘরে ফিরে আসায় বেজায় খুশি মা নিরতি সরকার । তিনি বলেন, "দু-এক বিঘা জমি আছে । তাতেই চাষবাস করে কোনওরকমে সংসার চলে । আমার একটাই ছেলে । ক্লাস ফাইভে যখন পড়ত, তখন তিরখেলায় নাম দিয়ে সফল হয়েছিল । তারপর থেকেই ওর তির চালানোর নেশা । একমাত্র ছেলে বাইরে থাকায় আমাদের মন খারাপ করে । কিন্তু আমরা চাই, ছেলে আরও বড় হোক । ওর জন্য আমরা সব কষ্ট করতে রাজি ।"

আরও পড়ুন : রাজ্যে মাত্র দু’জন, সর্বভারতীয় এনডিএ প্রবেশিকার মেরিট লিস্টে 66তম স্থানে মালদার অর্ণব

জুয়েলের প্রথম প্রশিক্ষক শ্রীমন্ত চৌধুরী জানান, 2015 সালে জুয়েলদের স্কুলে গিয়েছিলাম । তখনই সে আমার চোখে পড়ে । আমি বিভিন্ন গ্রামে গিয়ে ছেলেমেয়েদের তিরন্দাজির জন্য তুলে আনতাম । তাদের মধ্যে জুয়েলের আগ্রহই ছিল সবচেয়ে বেশি । তখন আমার কাছে আধুনিক ধনুক কিংবা তির ছিল না । বিভিন্ন জায়গা থেকে টাকা জোগাড় করে সেসব কিনে ওদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করি । জুয়েলের সাফল্যে আমি গর্বিত । আমি যেটা পারিনি, জুয়েল সেটা করেছে । দেশের হয়ে সোনা জেতা সহজ কাজ নয় ।"

সোমবার সংবর্ধনা দিতে জুয়েলের বাড়ি যান গাজোল পঞ্চায়েত সমিতির সভানেত্রী রেজিনা পারভিন । তিনি বলেন, "এই প্রত্যন্ত গ্রামের ছেলে এশিয়া কাপ তিরন্দাজি প্রতিযোগিতায় সোনা জিতেছে । এমন গ্রামের একটি ছেলের এই সাফল্যে গাজোলবাসী হিসাবে আমি গর্বিত ।"

আরও পড়ুন : দিল্লির হ্যান্ডলুম হাটে ব্যাপক চাহিদা মালদার আমের

ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.