ETV Bharat / state

কেপিপির কেন্দ্রীয় নেতার বিরুদ্ধে তোলাবাজির অভিযোগ, কেএলও আতঙ্ক ফিরছে বামনগোলায়!

বামনগোলা ব্লকে একসময় নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন কেএলও-র প্রভাব কমেছিল ৷ ফের এলাকায় বাড়ছে তার প্রভাব ৷ এ বামনগোলার বিডিওকে নিয়ে চিঠি দিল অল ইন্ডিয়া নমঃশুদ্র বিকাশ পরিষদের বামনগোলা ব্লক কমিটি ৷

ETV Bharat
কেএলও জঙ্গি সংগঠনের প্রভাব বাড়ছে
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Nov 25, 2023, 8:55 PM IST

মালদা, 23 নভেম্বর: একসময় বামনগোলা ব্লক ছিল নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন কেএলও’র আখড়া ৷ এই ব্লক থেকে অনেক যুবক-যুবতী ওই সংগঠনে নাম লিখিয়েছিলেন ৷ অসমের গভীর জঙ্গলে জঙ্গি প্রশিক্ষণও নিয়েছিলেন ৷ এই ব্লক থেকেই কেএলও জঙ্গি হয়ে উঠেছিলেন মাধব মণ্ডল ৷ পরে যিনি মালখান সিং নামে গোটা দেশে পরিচিত হন ৷ কেএলও’র মূল দাবি ছিল পৃথক কামতাপুর রাজ্য এবং কামতাপুরি ভাষার স্বীকৃতি ৷

একই দাবিতে 1996 সালে গঠিত হয় কামতাপুর পিপলস পার্টিও ৷ পরে কেপিপি ভেঙে তৈরি হয় কামতাপুর পিপলস পার্টি (ইউনাইটেড) ৷ যেহেতু প্রতিটি সংগঠনের দাবি এক, তাই এই তিন সংগঠনের নেতৃত্বের অন্দরের ভালো যোগাযোগ বলেই খবর ৷ তবে দিন বদলের সঙ্গে সঙ্গে বামনগোলায় কেএলও সংগঠনের প্রভাব অনেকটা কমেছে ৷ একটা সময় প্রতিদিন কেএলও আতঙ্ক নিয়ে রাতে ঘুমোতে যেতেন এলাকার মানুষজন ৷ এখন তাঁরা নিশ্চিন্তে ঘুমোতে পারেন ৷ কিন্তু সেই কেএলও স্মৃতি ফের ফিরে আসছে এলাকায় ৷

স্থানীয়দের অভিযোগ, কেএলও’র নাম করে এলাকা থেকে তোলা আদায় করছেন কেপিপি (ইউনাইটেড)-এর কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সুভাষ বর্মন ৷ এনিয়ে বৃহস্পতিবার বামনগোলার বিডিওকে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে ব্যবস্থা গ্রহণের আর্জি জানিয়েছে অল ইন্ডিয়া নমঃশুদ্র বিকাশ পরিষদের বামনগোলা ব্লক কমিটি ৷

অল ইন্ডিয়া নমঃশুদ্র বিকাশ পরিষদের বামনগোলা ব্লক কমিটির সম্পাদক দীপঙ্কর বিশ্বাস বলেন, "একসময় পাকুয়াহাটের আয়তন ছিল 100 বিঘার বেশি ৷ হাটটি বর্ধমানের কালনা এলাকার জমিদারি সম্পত্তি ছিল ৷ নন্দী অ্যান্ড দে এস্টেট হাটের মালিক ছিল ৷ হাট দেখাশোনার জন্য জমিদাররা কর্মচারী নিয়োগ করেছিলেন ৷ হাট দেখাশোনার জন্য গঠিত হয়েছিল একটি কমিটি ৷ সেই কমিটিতে সুভাষ বর্মনও ছিলেন ৷ নিজের ক্ষমতার অপব্যবহার করে তিনি হাটের জমি দফায় দফায় বিক্রি করে দেন ৷ বর্তমানে হাটটি 50 বিঘার নীচে নেমে গিয়েছে ৷ তাই সম্প্রতি মালিকপক্ষ হাটটি স্থানীয় কয়েকজনকে বিক্রি করে দিয়েছে ৷ হাট কেনাবেচা নিয়ে সুভাষবাবু কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেন ৷ সেই মামলার ভিত্তিতে বিচারপতি মালদার জেলাশাসককে হাটটি সরকারিভাবে অধিগ্রহণ করার সঙ্গে হাটের জমিতে থাকা বেআইনি নির্মাণ ভেঙে দেওয়ার নির্দেশ দেন ৷

এখন সুভাষবাবু হাট ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মামলা করার নামে তোলা আদায় করছেন ৷ এর আগেও তিনি বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে তোলা তুলতেন ৷ এতে ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন ৷ তাঁরা ভয়ে মুখ খুলছেন না ৷ কারণ, পাকুয়াহাটে বোমাবাজিতে কামতাপুর পিপলস পার্টির শীর্ষস্থানীয় নেতা সুভাষ বর্মন জড়িত রয়েছেন ৷ তাই আজ আমরা বিডিওকে লিখিতভাবে গোটা বিষয়টি জানিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের আর্জি জানিয়েছি ৷"

এবিষয়ে প্রতিক্রিয়া পেতে সুভাষ বর্মনকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি ৷ বামনগোলা ব্লকের বিডিও রাজু কুণ্ডু জানিয়েছেন, অল ইন্ডিয়া নমঃশুদ্র বিকাশ পরিষদের দাবিপত্র এখনও তাঁর হাতে আসেনি ৷ হাতে আসলে তিনি খতিয়ে দেখে যথাযথ পদক্ষেপ নেবেন ৷

আরও পড়ুন:

  1. ভারতের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার সিদ্ধান্ত ভুল, কেন্দ্রকে নিশানা কেএলও প্রধানের
  2. পৃথক রাজ্যের দাবিতে আন্দোলনে কামতাপুরী, ময়নাগুড়ি রেললাইন অবরোধ
  3. জীবন সিংহের সঙ্গে শান্তি চুক্তি চেয়ে জনসভা কামতাপুর স্টেট ডিমান্ড কমিটির

মালদা, 23 নভেম্বর: একসময় বামনগোলা ব্লক ছিল নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন কেএলও’র আখড়া ৷ এই ব্লক থেকে অনেক যুবক-যুবতী ওই সংগঠনে নাম লিখিয়েছিলেন ৷ অসমের গভীর জঙ্গলে জঙ্গি প্রশিক্ষণও নিয়েছিলেন ৷ এই ব্লক থেকেই কেএলও জঙ্গি হয়ে উঠেছিলেন মাধব মণ্ডল ৷ পরে যিনি মালখান সিং নামে গোটা দেশে পরিচিত হন ৷ কেএলও’র মূল দাবি ছিল পৃথক কামতাপুর রাজ্য এবং কামতাপুরি ভাষার স্বীকৃতি ৷

একই দাবিতে 1996 সালে গঠিত হয় কামতাপুর পিপলস পার্টিও ৷ পরে কেপিপি ভেঙে তৈরি হয় কামতাপুর পিপলস পার্টি (ইউনাইটেড) ৷ যেহেতু প্রতিটি সংগঠনের দাবি এক, তাই এই তিন সংগঠনের নেতৃত্বের অন্দরের ভালো যোগাযোগ বলেই খবর ৷ তবে দিন বদলের সঙ্গে সঙ্গে বামনগোলায় কেএলও সংগঠনের প্রভাব অনেকটা কমেছে ৷ একটা সময় প্রতিদিন কেএলও আতঙ্ক নিয়ে রাতে ঘুমোতে যেতেন এলাকার মানুষজন ৷ এখন তাঁরা নিশ্চিন্তে ঘুমোতে পারেন ৷ কিন্তু সেই কেএলও স্মৃতি ফের ফিরে আসছে এলাকায় ৷

স্থানীয়দের অভিযোগ, কেএলও’র নাম করে এলাকা থেকে তোলা আদায় করছেন কেপিপি (ইউনাইটেড)-এর কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সুভাষ বর্মন ৷ এনিয়ে বৃহস্পতিবার বামনগোলার বিডিওকে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে ব্যবস্থা গ্রহণের আর্জি জানিয়েছে অল ইন্ডিয়া নমঃশুদ্র বিকাশ পরিষদের বামনগোলা ব্লক কমিটি ৷

অল ইন্ডিয়া নমঃশুদ্র বিকাশ পরিষদের বামনগোলা ব্লক কমিটির সম্পাদক দীপঙ্কর বিশ্বাস বলেন, "একসময় পাকুয়াহাটের আয়তন ছিল 100 বিঘার বেশি ৷ হাটটি বর্ধমানের কালনা এলাকার জমিদারি সম্পত্তি ছিল ৷ নন্দী অ্যান্ড দে এস্টেট হাটের মালিক ছিল ৷ হাট দেখাশোনার জন্য জমিদাররা কর্মচারী নিয়োগ করেছিলেন ৷ হাট দেখাশোনার জন্য গঠিত হয়েছিল একটি কমিটি ৷ সেই কমিটিতে সুভাষ বর্মনও ছিলেন ৷ নিজের ক্ষমতার অপব্যবহার করে তিনি হাটের জমি দফায় দফায় বিক্রি করে দেন ৷ বর্তমানে হাটটি 50 বিঘার নীচে নেমে গিয়েছে ৷ তাই সম্প্রতি মালিকপক্ষ হাটটি স্থানীয় কয়েকজনকে বিক্রি করে দিয়েছে ৷ হাট কেনাবেচা নিয়ে সুভাষবাবু কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেন ৷ সেই মামলার ভিত্তিতে বিচারপতি মালদার জেলাশাসককে হাটটি সরকারিভাবে অধিগ্রহণ করার সঙ্গে হাটের জমিতে থাকা বেআইনি নির্মাণ ভেঙে দেওয়ার নির্দেশ দেন ৷

এখন সুভাষবাবু হাট ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মামলা করার নামে তোলা আদায় করছেন ৷ এর আগেও তিনি বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে তোলা তুলতেন ৷ এতে ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন ৷ তাঁরা ভয়ে মুখ খুলছেন না ৷ কারণ, পাকুয়াহাটে বোমাবাজিতে কামতাপুর পিপলস পার্টির শীর্ষস্থানীয় নেতা সুভাষ বর্মন জড়িত রয়েছেন ৷ তাই আজ আমরা বিডিওকে লিখিতভাবে গোটা বিষয়টি জানিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের আর্জি জানিয়েছি ৷"

এবিষয়ে প্রতিক্রিয়া পেতে সুভাষ বর্মনকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি ৷ বামনগোলা ব্লকের বিডিও রাজু কুণ্ডু জানিয়েছেন, অল ইন্ডিয়া নমঃশুদ্র বিকাশ পরিষদের দাবিপত্র এখনও তাঁর হাতে আসেনি ৷ হাতে আসলে তিনি খতিয়ে দেখে যথাযথ পদক্ষেপ নেবেন ৷

আরও পড়ুন:

  1. ভারতের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার সিদ্ধান্ত ভুল, কেন্দ্রকে নিশানা কেএলও প্রধানের
  2. পৃথক রাজ্যের দাবিতে আন্দোলনে কামতাপুরী, ময়নাগুড়ি রেললাইন অবরোধ
  3. জীবন সিংহের সঙ্গে শান্তি চুক্তি চেয়ে জনসভা কামতাপুর স্টেট ডিমান্ড কমিটির
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.