মালদা, 23 নভেম্বর: একসময় বামনগোলা ব্লক ছিল নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন কেএলও’র আখড়া ৷ এই ব্লক থেকে অনেক যুবক-যুবতী ওই সংগঠনে নাম লিখিয়েছিলেন ৷ অসমের গভীর জঙ্গলে জঙ্গি প্রশিক্ষণও নিয়েছিলেন ৷ এই ব্লক থেকেই কেএলও জঙ্গি হয়ে উঠেছিলেন মাধব মণ্ডল ৷ পরে যিনি মালখান সিং নামে গোটা দেশে পরিচিত হন ৷ কেএলও’র মূল দাবি ছিল পৃথক কামতাপুর রাজ্য এবং কামতাপুরি ভাষার স্বীকৃতি ৷
একই দাবিতে 1996 সালে গঠিত হয় কামতাপুর পিপলস পার্টিও ৷ পরে কেপিপি ভেঙে তৈরি হয় কামতাপুর পিপলস পার্টি (ইউনাইটেড) ৷ যেহেতু প্রতিটি সংগঠনের দাবি এক, তাই এই তিন সংগঠনের নেতৃত্বের অন্দরের ভালো যোগাযোগ বলেই খবর ৷ তবে দিন বদলের সঙ্গে সঙ্গে বামনগোলায় কেএলও সংগঠনের প্রভাব অনেকটা কমেছে ৷ একটা সময় প্রতিদিন কেএলও আতঙ্ক নিয়ে রাতে ঘুমোতে যেতেন এলাকার মানুষজন ৷ এখন তাঁরা নিশ্চিন্তে ঘুমোতে পারেন ৷ কিন্তু সেই কেএলও স্মৃতি ফের ফিরে আসছে এলাকায় ৷
স্থানীয়দের অভিযোগ, কেএলও’র নাম করে এলাকা থেকে তোলা আদায় করছেন কেপিপি (ইউনাইটেড)-এর কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সুভাষ বর্মন ৷ এনিয়ে বৃহস্পতিবার বামনগোলার বিডিওকে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে ব্যবস্থা গ্রহণের আর্জি জানিয়েছে অল ইন্ডিয়া নমঃশুদ্র বিকাশ পরিষদের বামনগোলা ব্লক কমিটি ৷
অল ইন্ডিয়া নমঃশুদ্র বিকাশ পরিষদের বামনগোলা ব্লক কমিটির সম্পাদক দীপঙ্কর বিশ্বাস বলেন, "একসময় পাকুয়াহাটের আয়তন ছিল 100 বিঘার বেশি ৷ হাটটি বর্ধমানের কালনা এলাকার জমিদারি সম্পত্তি ছিল ৷ নন্দী অ্যান্ড দে এস্টেট হাটের মালিক ছিল ৷ হাট দেখাশোনার জন্য জমিদাররা কর্মচারী নিয়োগ করেছিলেন ৷ হাট দেখাশোনার জন্য গঠিত হয়েছিল একটি কমিটি ৷ সেই কমিটিতে সুভাষ বর্মনও ছিলেন ৷ নিজের ক্ষমতার অপব্যবহার করে তিনি হাটের জমি দফায় দফায় বিক্রি করে দেন ৷ বর্তমানে হাটটি 50 বিঘার নীচে নেমে গিয়েছে ৷ তাই সম্প্রতি মালিকপক্ষ হাটটি স্থানীয় কয়েকজনকে বিক্রি করে দিয়েছে ৷ হাট কেনাবেচা নিয়ে সুভাষবাবু কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেন ৷ সেই মামলার ভিত্তিতে বিচারপতি মালদার জেলাশাসককে হাটটি সরকারিভাবে অধিগ্রহণ করার সঙ্গে হাটের জমিতে থাকা বেআইনি নির্মাণ ভেঙে দেওয়ার নির্দেশ দেন ৷
এখন সুভাষবাবু হাট ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মামলা করার নামে তোলা আদায় করছেন ৷ এর আগেও তিনি বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে তোলা তুলতেন ৷ এতে ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন ৷ তাঁরা ভয়ে মুখ খুলছেন না ৷ কারণ, পাকুয়াহাটে বোমাবাজিতে কামতাপুর পিপলস পার্টির শীর্ষস্থানীয় নেতা সুভাষ বর্মন জড়িত রয়েছেন ৷ তাই আজ আমরা বিডিওকে লিখিতভাবে গোটা বিষয়টি জানিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের আর্জি জানিয়েছি ৷"
এবিষয়ে প্রতিক্রিয়া পেতে সুভাষ বর্মনকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি ৷ বামনগোলা ব্লকের বিডিও রাজু কুণ্ডু জানিয়েছেন, অল ইন্ডিয়া নমঃশুদ্র বিকাশ পরিষদের দাবিপত্র এখনও তাঁর হাতে আসেনি ৷ হাতে আসলে তিনি খতিয়ে দেখে যথাযথ পদক্ষেপ নেবেন ৷
আরও পড়ুন: