বর্ধমান, 13 ডিসেম্বর: বর্ধমান রেল স্টেশনের 2 ও 3 নম্বর প্ল্যাটফর্মের মাঝখানে জলের ট্যাংক ভেঙে তিনজনের মৃত্যুর ঘটনায় আর্থিক সাহায্যের ঘোষণা করল রেল। মৃতদের পরিবারকে পাঁচ লক্ষ টাকা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব ৷ আহতদের দেওয়া হচ্ছে 50 হাজার টাকা করে বলে জানা গিয়েছে। এমনটাই জানিয়েছেন পূর্ব রেলের জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র।
রেলসূত্রে জানা গিয়েছে, 1890 সালে বর্ধমান স্টেশনের 2 ও 3 প্ল্যাটফর্মের মাঝে তৈরি করা হয়েছিল একটা জলের ট্যাংক। 53 হাজার 800 গ্যালন জল ধরত ওই ট্যাংকে। অর্থাৎ প্রায় দুই লক্ষ লিটারের বেশি জল থাকতো ওই ট্যাংকে। প্রতিবছর রুটিন মাফিক যেভাবে ট্যাংকের রক্ষণাবেক্ষণ করা হয় সেইমতো চলতি ডিসেম্বর মাসের 2 তারিখেও পরিস্কার করা হয়েছিল। প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কীভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করা হল যে, পরিষ্কার করার কয়েক দিনের মধ্যেই তা ভেঙে পড়ল ! যদিও দিন কয়েক ধরে সেই জলের ট্যাংক থেকে জল পড়ছিল বলে যাত্রীদের অভিযোগ ছিল। তারা বিষয়টি রেলকেও জানিয়েছিল। কিন্তু রেলের তরফে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হয়নি। যদিও সমস্ত বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র।
বুধবার সন্ধেয় বর্ধমান স্টেশনে দাঁড়িয়ে কৌশিক মিত্র বলেন, "হাসপাতালে ছিলাম। হাসপাতালে তিরিশ জনের কাছাকাছি ভরতি আছেন। আমাদের মেডিকেল টিম এসেছে। তারা কাজ করছে। আহতদের আত্মীয়দের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের বলা হয়েছে, তারা যদি মনে করে আরও ভালো চিকিৎসার জন্য যে কোনও নার্সিংহোমে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যেতে পারেন। কিন্তু প্রত্যেক আহতদের পরিবারই জানিয়েছে আপাতত তাদের কোথাও যাওয়ার প্রয়োজন নেই। তবুও রেলের অ্যাম্বুলেন্স রেডি রাখা হয়েছে। যারা অল্পবিস্তর আহত হয়েছে তাদেরকেও চিকিৎসার খরচ দেওয়া হয়েছে। এখনও পর্যন্ত আহতদের 50 হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী আরও কিছু ঘোষণা করেছেন। সেটা পরে জানানো হবে।"
তিনি আরও বলেন, "যে জলের ট্যাংক ভেঙে পড়েছে সেই ট্যাংক 1890 সালে তৈরি করা হয়েছিল। প্রতিবছর যে নিয়ম মেনে ট্যাংকগুলির রক্ষণাবেক্ষণ খতিয়ে দেখা হয়। সেই মতো চলতি ডিসেম্বর মাসের 2 তারিখে সেটা খতিয়ে দেখে পরিস্কার করা হয়। একটা দুর্ঘটনা ঘটে গিয়েছে। এটা দুঃখজনক। ইতিমধ্যেই তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। যারা দোষী হবে তাদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিন চার দিনের মধ্যে রিপোর্ট পাওয়া যাবে। এখনও পর্যন্ত কত জন মারা গিয়েছে সেই তালিকা হাতে পাইনি। রাজ্য সরকারের কাছ থেকে তালিকা পাওয়া যাবে। তবে মৃতদের পরিবারকে পাঁচ লক্ষ টাকা করে দেওয়া হবে বলে রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব ঘোষণা করেছেন। যারা আহত হয়েছেন তাদের যাতে ঠিকভাবে চিকিৎসা হয় সেদিকে নজর রাখা হচ্ছে।"
2020 সালে বর্ধমান স্টেশন ভেঙে পড়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "সেটাও ছিল একটা দুর্ঘটনা। তবে এদিনের ঘটনার জন্য ট্রেন চলাচল করছে। কোনও ট্রেন বাতিল করা হয়নি। শুধুমাত্র 2 ও 3 নং প্ল্যাটফর্ম দিয়ে কোনও ট্রেন চলাচল করছে না ৷ কিছু ট্রেন ধীরগতিতে যাচ্ছে। কিছু ট্রেন দেরি করে চলেছে। রেল পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখছে।"
আরও পড়ুন: