মালদা, 24 ফেব্রুয়ারি : মালদার আম যে জগৎ বিখ্যাত তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না৷ গরমকালে মালদার আমের অপেক্ষায় থাকে রাজ্যবাসী৷ তবে এবারে আবহাওয়া কপালে ভাঁজ ফেলেছে আমচাষিদের৷
ফাল্গুন মাসের শুরুতেই প্রবল ব্যস্ততা শুরু হয়ে যায় মালদার আমচাষিদের৷ জেলার প্রধান অর্থনৈতিক ফসলের চাষ শুরু হয়ে যায় এই সময় থেকেই৷ চরম ব্যস্ততার মধ্যে কাটে চাষিদের৷ এবারে চিত্রটা একটু অন্যরকমের৷ সময় পেরিয়ে যাচ্ছে, অথচ এখনও পর্যন্ত সেভাবে গাছে মুকুলের দেখা নেই৷ দীর্ঘস্থায়ী শীতের জন্যই এমন হচ্ছে বলে মনে করছেন চাষিরা৷ এমনকী আর 5 থেকে 7 দিনের মধ্যে মুকুল না বেরিয়ে এলে আম চাষে ক্ষতি হতে পারে ৷
উল্লেখ্য, মালদা জেলায় 31 হেক্টর জমিতে আমচাষ হয়ে থাকে৷ জেলাজুড়ে প্রায় 350 প্রজাতির আম উৎপাদিত হয়৷ মাটি ও আবহাওয়াই এই চাষে প্রধান ভূমিকা নিয়ে থাকে৷ সাধারণত মাঘের মাঝামাঝি সময় থেকেই মুকুলের দেখা মিললেও এবারে ফাল্গুন মাস পরে গেলেও এখনও গাছে মুকুলের দেখা নেই৷
সাহাপুরের আমচাষি স্বপন শেঠের দাবি, "আবহাওয়ার জন্য এখনও পর্যন্ত আমের মুকুলের অবস্থা খারাপ৷ পোকমাকড়ও খুব বেশি৷ যতটুকু মুকুল দেখা যাচ্ছে, তাও পরিষ্কার হয়নি এখনও৷ এবারে দীর্ঘদিন শীত স্থায়ী হয়েছে৷ সকালের দিকেও কুয়াশা হচ্ছে৷ এই আবহাওয়ায় মুকুল ঠিকমতো বেরোতে পারে না৷ আরেকটু গরম আর পশ্চিমি বাতাস বইতে শুরু করলে মুকুল দ্রুত বেরিয়ে আসত৷ তাই এখন স্প্রে-এর মাধ্যমেই আমের মুকুল বাঁচানোর চেষ্টা করছি৷ আমরা সাধারণত মরশুমে তিন থেকে চার বার স্প্রে করে থাকি৷ কিন্তু এবারে পাঁচবার স্প্রে করতে হতে পারেষ মুকুল বেরোনোর সময় প্রায় শেষ৷ আর মাত্র দিন পাঁচেক মতো হাতে সময় রয়েছে৷ তার মধ্যে মুকুল না বেরোলে পাতা বেরিয়ে আসবে৷ আমের ফলনও প্রচুর পরিমাণে কম হতে পারে৷"
এই বিষয়ে জেলা উদ্যানপালন ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ দপ্তরের অধিকর্তা রাহুল চক্রবর্তী জানান, "এবার দীর্ঘস্থায়ী শীতের জন্যই সব গাছে এখনও মুকুল বেরিয়ে আসেনি৷ সাধারণত রাতের তাপমাত্রা 12 ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে থাকলে মুকুল বেরিয়ে আসতে পারে না৷ তবে, গত কয়েকদিন ধরে রাতের তাপমাত্রা বাড়তে শুরু করেছে৷ মুকুলও বেরোতে শুরু করেছে৷ আশা করা যাচ্ছে আর কয়েকদিনের মধ্যেই প্রতিটি প্রজাতির গাছেই মুকুল চলে আসবে৷ এবিষয়ে চাষিদের এখনই দুশ্চিন্তার কোনও কারণ নেই৷ আমরা চাষিদের বলেছি, এখন যাতে গাছে স্প্রে করা না হয়৷ তবে, খারাপ আবহওয়ার কারণেই সেই বার্তা না শুনেই গাছে স্প্রে করছেন তাঁরা৷ এতে ভালোর বদলে ক্ষতি হয়ে যেতে পারে৷ আমরা আবারও বলছি, গরম পরতে শুরু করেছে৷ দু-এক দিনের মধ্যেই পশ্চিমি বাতাসের সম্ভাবনা রয়েছে৷ দিন কয়েকের মধ্যেই প্রতিটি গাছে মুকুল চলে আসবে৷"