মালদা, 14 অগাস্ট: পথ দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে সোমবার রণক্ষেত্রের চেহারা নিয়েছিল রতুয়ার মহানন্দাটোলা ৷ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলেও এখনও থমথমে গোটা এলাকা ৷ সকাল থেকে বন্ধ দোকানপাট ৷ পুলিশি ধরপাকড়ের ভয়ে এলাকাছাড়া গ্রামবাসীদের অনেকেই ৷ ঘটনায় এক মহিলাসহ 20 জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ ৷ ধৃতদের গতকাল চাঁচল মহকুমা আদালতে তোলা হয় ৷ বিচারক তাদের জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেননি ৷ 14 দিনের জেল হেপাজতের নির্দেশ দিয়েছেন ৷ তবে সোমবারের ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে গুলি চালানো হয়নি বলে দাবি করেন জেলা পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া ৷
আরও পড়ুন : রণক্ষেত্র রতুয়া ; পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর, লাঠিচার্জ, চলল গুলি
ঘটনার সূত্রপাত রবিবার রাতের একটি দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে । সে রাতে মহানন্দটোলায় গাড়ির ধাক্কায় মৃত্যু হয় পরিমল মণ্ডল (40) নামে এক ব্যক্তির । দোষী গাড়ি চালককে গ্রেপ্তার ও ট্রাফিক পরিষেবা ঠিক করার দাবিতে সোমবার সকালে রতুয়া থানায় অভিযোগ জানাতে গিয়েছিলেন স্থানীয়রা । তাঁদের দাবি, পুলিশ অভিযোগ নিতে অস্বীকার করে । বিকেলে ময়নাতদন্তের পর পরিমলের দেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয় । সন্ধ্যার দিকে ফের স্থানীয়রা থানায় যান । পুলিশ এবারও অভিযোগ নিতে অস্বীকার করে৷ এরপরই থানা ঘেরাও করেন স্থানীয়রা । ভাঙচুর চালানো হয় পুলিশের প্রায় 5টি গাড়ি-সহ ফাঁড়িতে । গ্রামবাসীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ পালটা লাঠিচার্জ করে । কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটানো হয়৷ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে নামানো হয় RAF । গোটা ঘটনায় 7 জন পুলিশকর্মী আহত হন ।
তবে স্থানীয়দের অভিযোগ, পুলিশ দু'রাউন্ড গুলি চালিয়েছে । যার জেরে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন এক ব্যক্তি । যদিও গুলি চালানোর অভিযোগ অস্বীকার করেছেন রতুয়া থানার পুলিশ আধিকারিকরা । তাঁদের বক্তব্য, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে লাঠিচার্জ করতে হয়েছে ।
গতকাল এলাকা পরিদর্শনে গিয়েছিলেন অলোক রাজোরিয়া ৷ পুলিশের পক্ষ থেকে গুলি চালানো হয়নি বলে দাবি করেন তিনি ৷ জানান, গোটা ঘটনার সূত্রপাত একটি পথ দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে । ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ ভারতীয় আইনের 304 ধারায় মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করে ৷ অভিযুক্ত ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয় ৷ ঘাতক গাড়িটিকেও আটক করা হয় । সোমবার অভিযুক্ত ব্যক্তিকে চাঁচল মহকুমা আদালতে পাঠানো হয় । কিন্তু পুলিশের পক্ষ থেকে কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি অভিযোগ করেন স্থানীয়রা । সোমবার সন্ধ্যায় পরিমল মণ্ডলের মৃতদেহ নিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন স্থানীয়রা । পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে নামানো হয় RAF । চালানো হয় রবার বুলেটও । কিন্তু গুলি চালানো হয়নি ৷ সোমবারের ঘটনায় গতকাল এক মহিলা-সহ 20 জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৷ মঙ্গলবার তাদের চাঁচল মহকুমা আদালতে তোলা হয় ৷ বিচারক 14 দিনের জেল হেপাজতের নির্দেশ দিয়েছেন ৷ যে আধিকারিক দায়িত্বে ছিলেন তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত করা হবে কি না জানতে চাওয়া হলে অলোকবাবু বলেন, "বিভাগীয় তদন্ত কেন? উনি কী ভুল করেছেন? "