মালদা, 22 নভেম্বর: সদ্যোজাত সন্তান বিক্রি কাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করল পুলিশ ৷ তবে অভিযোগে নেই অভাবি মা ৷ অবশেষে জেলা চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির নির্দেশে হরিশ্চন্দ্রপুর পুলিশ এই পদক্ষেপ করল ৷ থানার তরফে জানানো হয়েছে, অভিযোগের তালিকা থেকে ওই অভাবি নাবালিকা মাকে আপাতত বাইরে রাখা হয়েছে ৷ সন্তান বিক্রির খবর সামনে আসার পর সোমবারই চাঁচলের মহকুমাশাসক সৌভিক মুখোপাধ্যায়ের নির্দেশে ওই মায়ের কাছে যান হরিশ্চন্দ্রপুর 1 নম্বর ব্লকের বিডিও সৌমেন মণ্ডল ৷
এদিকে মঙ্গলবার ওই বধূর সঙ্গে দেখা করতে যান হরিশ্চন্দ্রপুর 1 নম্বর ব্লকের সিডিপিও আবদুস সাত্তার এবং দুই সুপারভাইজার রুমি মণ্ডল ও সাংমু ভুটিয়া ৷ তবে ওই বধূর সঙ্গে দেখা না-হওয়ায় তাঁর মায়ের সঙ্গে কথা বলেন আধিকারিকরা ৷ তাঁর হাতে কিছু সামগ্রীও তুলে দেন ৷ সিডিপিও বলেন, "সংবাদমাধ্যমে খবর দেখে আজ আমরা ওই মায়ের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলাম ৷ পরিবারটি সত্যিই ভীষণ অভাবি ৷ আমরা নিজেরা চাঁদা দিয়ে কিছু খাদ্য সামগ্রী-সহ শীতবস্ত্র তাঁদের হাতে তুলে দিয়েছি ৷ এনিয়ে আমরা উপরে রিপোর্ট পেশ করব ৷ ওই মা নাবালিকা ৷ মাত্র 15 বছর বয়স ৷ তাই সরকারিভাবে তাঁকে কোনও সাহায্য করা যাবে না ৷ আমরা দেখছি তাঁকে কীভাবে সাহায্য করা যায় ৷"
অভাবের তাড়নায় 18 দিনের নবজাতকে দেড় লক্ষ টাকায় বিক্রি করে দিয়েছিলেন হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকার নাবালিকা বধূ ৷ তাঁর স্বামী পরিযায়ী শ্রমিক ৷ ভিনরাজ্যে কর্মরত ৷ দম্পতির এক বছরের একটি পুত্রসন্তান রয়েছে ৷ এর মধ্যে গত 1 নভেম্বর হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীন হাসপাতালে আবার একটি পুত্রসন্তানের জন্ম দেন ওই নাবালিকা ৷ কিন্তু অভাবের সংসারে দুই সন্তানের দুধ কেনার ক্ষমতা ছিল না তাঁর ৷
অভিযোগ, এমন সময় এলাকারই এক অবাঙালি ওষুধ ব্যবসায়ী তাঁর সদ্যোজাত সন্তানটিকে কেনার প্রস্তাব দেন ৷ দেড় লক্ষ টাকায় ওই ব্যবসায়ীর কাছে ছোট শিশুকে বিক্রি করে দেন মা ৷ যদিও বিষয়টি জানাজানির পর স্থানীয় এক তৃণমূল নেতা ওই সদ্যোজাতকে ব্যবসায়ীর ঘর থেকে ফের মায়ের কোলে তুলে দেন ৷ তবে তাঁর বিরুদ্ধেও দেড় লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে ৷ সংবাদমাধ্যমে ওই নাবালিকা বধূ স্বীকার করেন, অভাবের কারণে তিনি সন্তান বিক্রির সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছিলেন ৷
আরও পড়ুন: