ETV Bharat / state

মালদায় ব্যক্তির ঝুলন্ত দেহ, NRC আতঙ্কে আত্মহত্যা; দাবি পরিবারের - মালদা

মালদার রতুয়ায় ব্যক্তির দেহ উদ্ধার ৷ জাতীয় নাগরিকপঞ্জি থেকে নাম বাদ পড়ার আতঙ্কে আত্মঘাতী হয়েছেন পেশায় রিকশাচলাক এই ব্যক্তি, দাবি পরিবারের ৷

NRC panic
আত্মঘাতী রিকশাচালক৷
author img

By

Published : Jan 27, 2020, 1:31 PM IST

মালদা, 27 জানুয়ারি : মালদার রতুয়া ব্লকে ব্যক্তির ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার ৷ মৃতের পরিবারের দাবি, NRC আতঙ্কে আত্মঘাতী হয়েছেন মধু সাহা নামে এই ব্যক্তি ৷ 46 বছর বয়সি মধু সাহা পেশায় ছিলেন রিকশাচালক ৷ মূলত শিলিগুড়ি শহরে রিকশা চালাতেন তিনি ৷ দিনকয়েক আগেই বাড়ি ফিরেছেন ৷ সারা দেশে NRC চালু করার কথা ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন ৷ কারণ রেশন কার্ড আর ভোটার কার্ড থাকলেও তাঁর কিংবা পরিবারের কারও আধার কার্ড নেই ৷ এদিকে আশেপাশের সবাই 24 ঘণ্টা তাঁকে বলে যাচ্ছে ,আধার কার্ড না থাকলে NRC র তালিকায় নাম ওঠার কোনো সম্ভাবনাও নেই তাই আধার কার্ড তৈরির জন্য মধুবাবু গত কয়েক মাসে বারবার ছুটে এসেছেন গ্রামে ৷ দৌড়ঝাঁপ করেছেন একাধিক ব্যাংক ও কাস্টমার সার্ভিস পয়েন্টগুলিতে ৷
কয়েকদিন আগে রতুয়া ব্লক মোড়ে থাকা এক CSP কেন্দ্রে স্ত্রী পঞ্চমী সাহার সঙ্গে তিনি আধার তৈরির আবেদন করেন ৷ তার জন্য ওই কেন্দ্রে 700 টাকা জমাও দেন ৷ কিন্তু কয়েকদিন পর তাঁকে জানানো হয় তাঁদের আধার কার্ড তৈরি হবে না ৷ তিনি চিন্তায় পড়ে যান ৷ তাঁদের আধার কার্ড না হলে দুই ছেলে ভরত আর কিশোরেরও আধার কার্ড হবে না ৷ এই কারণে মানসিক অবসাদে ভুগতে শুরু করেছিলেন তিনি ৷ পরিবারের অভিযোগ, গতকাল দুপুরে স্ত্রী ও শ্যালিকার সঙ্গে কথাবার্তা বলার পর তিনি নিজের ঘরে ঢুকে গলায় ফাঁস লাগিয়ে ঝুলে পড়েন ৷ বেশ কিছুক্ষণ পর সেই দৃশ্য দেখতে পান তাঁর স্ত্রী ৷ এলাকার লোকজন সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন ৷ মধুবাবুর পরিবারের সদস্য সহ স্থানীয়দের দাবি , NRC আতঙ্কেই আত্মঘাতী হয়েছেন তিনি ৷

NRC panic
আত্মঘাতী রিকশাচালক৷

মধুবাবুর ছেলে ভরত বলে , "আধার কার্ড না হওয়ায় NRC ভয় ঢুকে গিয়েছিল বাবার মনে ৷ সব সময় টেনশন করত ৷ আধার কার্ড না হলে NRC তালিকায় নাম উঠবে না ,এনিয়ে মানসিক অবসাদেও ভুগছিল বাবা ৷ দুপুরে মা আর মাসি বাড়ির বাইরে গল্প করছিল ৷ বাবাও সেখানে ছিল ৷ একসময় ভাত খাওয়ার কথা বলে বাবা বাড়ির ভিতরে চলে যায় ৷ এরপর ঘরে গিয়ে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করে ৷ আধার কার্ড না হওয়া এবং NRC আতঙ্কেই বাবা আত্মঘাতী হয়েছে ৷''

NRC আতঙ্কে আত্মঘাতী, দাবি পরিবারের৷

একই বক্তব্য মধু বাবুর ভাইপো রতন সাহার ৷ তিনি বলেন, "NRC শুরু হওয়ার পর থেকেই কাকা আধার কার্ডের জন্য খুব চিন্তায় ছিল ৷ আধার কার্ডের জন্য সব জায়গায় ঘোরাঘুরি করেছে ৷ আমাদের কাছেও এসেছিল ৷ সবাই বুঝিয়েছি, সময় হলেই আধার কার্ড হয়ে যাবে, এত চিন্তার কিছু নেই ৷ কিন্তু কাকার চিন্তা কমেনি ৷ কয়েকদিন আগে ব্লক মোড়ে একটি আধার কেন্দ্রে গিয়ে নিজের এবং কাকিমার আধার কার্ডের জন্য 700 টাকাও দিয়েছিল কিন্তু 10-12 দিন পর ওই কেন্দ্র থেকে কাকাকে বলা হয়, তাঁদের আধার কার্ডের আবেদন পত্র বাতিল হয়ে গিয়েছে ৷ আধার কার্ড হবে না ৷ এতে কাকা দুশ্চিন্তা আরও বেড়ে যায় ৷ দেশ থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার ভয় তাঁকে ঘিরে ধরে ৷ সেই আতঙ্ক থেকেই কাকা গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে ৷''

এই প্রসঙ্গে এলাকার বাসিন্দা খোকা মণ্ডল বলেন,"মধুদের রেশন কার্ড ও ভোটার কার্ড আছে কিন্তু আধার কার্ড নেই ৷ NRC চালু হওয়ার পর পর থেকেই আধার কার্ড না থাকার জন্য চিন্তায় গিয়েছিল ৷ সবাইকে বলত, তাঁদের আসল বাড়ি বাংলাদেশে ৷ আধার কার্ড না থাকায় ফের বাংলাদেশে তাড়িয়ে দেওয়া হবে ৷ সেই টেনশন সহ্য করতে না পেরেই সে ফাঁসি দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছে ৷
খবর পেয়ে রতুয়া গ্রামীণ হাসপাতালে যায় স্থানীয় থানার পুলিশ ৷ অনেক ঘুরেও আধার কার্ড না হওয়ায় দেশত্যাগী হওয়ার আতঙ্কে 26 জানুয়ারির বিশেষ দিনে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন, দাবি পরিবারের ৷ যদিও এনিয়ে প্রশাসনের কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি ৷

মালদা, 27 জানুয়ারি : মালদার রতুয়া ব্লকে ব্যক্তির ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার ৷ মৃতের পরিবারের দাবি, NRC আতঙ্কে আত্মঘাতী হয়েছেন মধু সাহা নামে এই ব্যক্তি ৷ 46 বছর বয়সি মধু সাহা পেশায় ছিলেন রিকশাচালক ৷ মূলত শিলিগুড়ি শহরে রিকশা চালাতেন তিনি ৷ দিনকয়েক আগেই বাড়ি ফিরেছেন ৷ সারা দেশে NRC চালু করার কথা ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন ৷ কারণ রেশন কার্ড আর ভোটার কার্ড থাকলেও তাঁর কিংবা পরিবারের কারও আধার কার্ড নেই ৷ এদিকে আশেপাশের সবাই 24 ঘণ্টা তাঁকে বলে যাচ্ছে ,আধার কার্ড না থাকলে NRC র তালিকায় নাম ওঠার কোনো সম্ভাবনাও নেই তাই আধার কার্ড তৈরির জন্য মধুবাবু গত কয়েক মাসে বারবার ছুটে এসেছেন গ্রামে ৷ দৌড়ঝাঁপ করেছেন একাধিক ব্যাংক ও কাস্টমার সার্ভিস পয়েন্টগুলিতে ৷
কয়েকদিন আগে রতুয়া ব্লক মোড়ে থাকা এক CSP কেন্দ্রে স্ত্রী পঞ্চমী সাহার সঙ্গে তিনি আধার তৈরির আবেদন করেন ৷ তার জন্য ওই কেন্দ্রে 700 টাকা জমাও দেন ৷ কিন্তু কয়েকদিন পর তাঁকে জানানো হয় তাঁদের আধার কার্ড তৈরি হবে না ৷ তিনি চিন্তায় পড়ে যান ৷ তাঁদের আধার কার্ড না হলে দুই ছেলে ভরত আর কিশোরেরও আধার কার্ড হবে না ৷ এই কারণে মানসিক অবসাদে ভুগতে শুরু করেছিলেন তিনি ৷ পরিবারের অভিযোগ, গতকাল দুপুরে স্ত্রী ও শ্যালিকার সঙ্গে কথাবার্তা বলার পর তিনি নিজের ঘরে ঢুকে গলায় ফাঁস লাগিয়ে ঝুলে পড়েন ৷ বেশ কিছুক্ষণ পর সেই দৃশ্য দেখতে পান তাঁর স্ত্রী ৷ এলাকার লোকজন সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন ৷ মধুবাবুর পরিবারের সদস্য সহ স্থানীয়দের দাবি , NRC আতঙ্কেই আত্মঘাতী হয়েছেন তিনি ৷

NRC panic
আত্মঘাতী রিকশাচালক৷

মধুবাবুর ছেলে ভরত বলে , "আধার কার্ড না হওয়ায় NRC ভয় ঢুকে গিয়েছিল বাবার মনে ৷ সব সময় টেনশন করত ৷ আধার কার্ড না হলে NRC তালিকায় নাম উঠবে না ,এনিয়ে মানসিক অবসাদেও ভুগছিল বাবা ৷ দুপুরে মা আর মাসি বাড়ির বাইরে গল্প করছিল ৷ বাবাও সেখানে ছিল ৷ একসময় ভাত খাওয়ার কথা বলে বাবা বাড়ির ভিতরে চলে যায় ৷ এরপর ঘরে গিয়ে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করে ৷ আধার কার্ড না হওয়া এবং NRC আতঙ্কেই বাবা আত্মঘাতী হয়েছে ৷''

NRC আতঙ্কে আত্মঘাতী, দাবি পরিবারের৷

একই বক্তব্য মধু বাবুর ভাইপো রতন সাহার ৷ তিনি বলেন, "NRC শুরু হওয়ার পর থেকেই কাকা আধার কার্ডের জন্য খুব চিন্তায় ছিল ৷ আধার কার্ডের জন্য সব জায়গায় ঘোরাঘুরি করেছে ৷ আমাদের কাছেও এসেছিল ৷ সবাই বুঝিয়েছি, সময় হলেই আধার কার্ড হয়ে যাবে, এত চিন্তার কিছু নেই ৷ কিন্তু কাকার চিন্তা কমেনি ৷ কয়েকদিন আগে ব্লক মোড়ে একটি আধার কেন্দ্রে গিয়ে নিজের এবং কাকিমার আধার কার্ডের জন্য 700 টাকাও দিয়েছিল কিন্তু 10-12 দিন পর ওই কেন্দ্র থেকে কাকাকে বলা হয়, তাঁদের আধার কার্ডের আবেদন পত্র বাতিল হয়ে গিয়েছে ৷ আধার কার্ড হবে না ৷ এতে কাকা দুশ্চিন্তা আরও বেড়ে যায় ৷ দেশ থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার ভয় তাঁকে ঘিরে ধরে ৷ সেই আতঙ্ক থেকেই কাকা গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে ৷''

এই প্রসঙ্গে এলাকার বাসিন্দা খোকা মণ্ডল বলেন,"মধুদের রেশন কার্ড ও ভোটার কার্ড আছে কিন্তু আধার কার্ড নেই ৷ NRC চালু হওয়ার পর পর থেকেই আধার কার্ড না থাকার জন্য চিন্তায় গিয়েছিল ৷ সবাইকে বলত, তাঁদের আসল বাড়ি বাংলাদেশে ৷ আধার কার্ড না থাকায় ফের বাংলাদেশে তাড়িয়ে দেওয়া হবে ৷ সেই টেনশন সহ্য করতে না পেরেই সে ফাঁসি দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছে ৷
খবর পেয়ে রতুয়া গ্রামীণ হাসপাতালে যায় স্থানীয় থানার পুলিশ ৷ অনেক ঘুরেও আধার কার্ড না হওয়ায় দেশত্যাগী হওয়ার আতঙ্কে 26 জানুয়ারির বিশেষ দিনে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন, দাবি পরিবারের ৷ যদিও এনিয়ে প্রশাসনের কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি ৷

Intro:মালদা, ২৭ জানুয়ারি : ২৬ জানুয়ারি৷ ভারতবর্ষের সাধারণতন্ত্র কিংবা প্রজাতন্ত্র দিবস৷ গতকাল দেশের ৭১তম সাধারণতন্ত্র দিবস সগৌরবে উদ্‌যাপন করেছে দেশবাসী৷ বিশেষ এই দিবসের অন্তর্নিহিত অর্থ ‘সাধারণ মানুষের জন্য’ এবং ‘সাধারণ মানুষের দ্বারা’৷ গণতান্ত্রিক দেশ বলে আমরা সবাই গর্ববোধ করি৷ গণতন্ত্র শব্দের মধ্যেও লুকিয়ে রয়েছে সাধারণতন্ত্র দিবসের অর্থ৷ গণ অর্থাৎ সাধারণ মানুষ৷ কিন্তু দেশের ৭১তম সাধারণতন্ত্র দিবসের দিন এনআরসি আতঙ্কে এমনই এক সাধারণ মানুষের আত্মহত্যা দিনটির তাৎপর্য নিয়েই প্রশ্ন তুলে দিয়েছে রতুয়ায়৷ অনেক ঘুরেও আধার কার্ড না হওয়ায় দেশত্যাগী হওয়ার আতঙ্কে বিশেষ এই দিনটিতেই গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন রতুয়া ১ ব্লকের বিনপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মধু সাহা৷ যদিও এনিয়ে প্রশাসনের কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি৷Body:         ৪৬ বছর বয়সী মধুবাবু পেশায় ছিলেন রিকশাচালক৷ মূলত শিলিগুড়ি শহরে রিকশা চালাতেন তিনি৷ দিন কয়েক আগেই বাড়ি ফিরেছেন৷ সারা দেশে এনআরসি লাগু করার কথা ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই তিনি আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন৷ কারণ, রেশন কার্ড আর ভোটার কার্ড থাকলেও তাঁর কিংবা পরিবারের কারোর আধার কার্ড নেই৷ এদিকে আশেপাশের সবাই ২৪ ঘণ্টা তাঁকে বলে যাচ্ছে, আধার কার্ড না থাকলে এনআরসি তালিকায় নাম ওঠার কোনও সম্ভাবনাই নেই৷ তাই আধার কার্ড তৈরির জন্য মধুবাবু গত কয়েক মাসে বারবার ছুটে এসেছেন গ্রামে৷ দৌড়ঝাঁপ করেছেন একাধিক ব্যাংক ও কাস্টমার সার্ভিস পয়েন্টগুলিতে৷ কয়েকদিন আগে রতুয়া ব্লক মোড়ে থাকা এক সিএসপি কেন্দ্রে স্ত্রী পঞ্চমী সাহার সঙ্গে তিনি আধার কার্ড তৈরির আবেদন করেন৷ তার জন্য ওই কেন্দ্রে ৭০০ টাকাও জমা দেন৷ কিন্তু কয়েকদিন পর তাঁকে জানানো হয়, তাঁদের আধার কার্ড তৈরি হবে না৷ তিনি চিন্তায় পড়ে যান৷ তাঁদের আধার কার্ড না হলে দুই ছেলে ভরত আর কিশোরেরও সেই কার্ড হবে না৷ এসব ভাবনা মাথা কুড়ে খাচ্ছিল তাঁর৷ মানসিক অবসাদে ভুগতে শুরু করেছিলেন তিনি৷ শেষ পর্যন্ত গতকাল দুপুরে স্ত্রী ও শ্যালিকার সঙ্গে কথাবার্তা বলার পর তিনি নিজের ঘরে ঢুকে গলায় ফাঁস লাগিয়ে ঝুলে পড়েন৷ বেশ কিছুক্ষণ পর সেই দৃশ্য দেখতে পান তাঁর স্ত্রী৷ এলাকার লোকজন সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে রতুয়া গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন৷ মধুবাবুর পরিবারের সদস্য সহ স্থানীয়দের দাবি, এনআরসি আতঙ্কেই আত্মঘাতী হয়েছেন তিনি৷
         মধুবাবুর ছেলে ভরত বলে, “আধার কার্ড না হওয়ায় এনআরসির ভয় ঢুকে গিয়েছিল বাবার মনে৷ সব সময় টেনশন করত৷ আধার কার্ড না হলে নাকি এনআরসি তালিকায় নাম উঠবে না৷ এনিয়ে মানসিক অবসাদেও ভুগছিল বাবা৷ দুপুরে মা আর মাসি বাড়ির বাইরে গল্প করছিল৷ সেখানে বাবাও ছিল৷ একসময় ভাত খাওয়ার কথা বলে বাবা বাড়ির ভিতরে চলে যায়৷ তখনই ঘরে গিয়ে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করে৷ আধার কার্ড না হওয়া এবং এনআরসি আতঙ্কেই বাবা আত্মঘাতী হয়েছে৷” একই বক্তব্য মধুবাবুর ভাইপো রতন সাহা বলেন, “এনআরসি রব শুরু হওয়ার পর থেকেই কাকা আধার কার্ডের জন্য খুব চিন্তায় ছিল৷ আধার কার্ডের জন্য সব জায়গায় ঘোরাঘুরি করেছে৷ আমাদের কাছেও এসেছিল৷ সবাই বুঝিয়েছি, সময় হলেই আধার কার্ড হয়ে যাবে৷ এত চিন্তার কিছু নেই৷ কিন্তু কাকার চিন্তা কমেনি৷ কয়েকদিন আগে ব্লক মোড়ে একটি আধার কেন্দ্রে গিয়ে নিজের এবং কাকিমার আধার কার্ডের জন্য ৭০০ টাকাও দিয়েছিল৷ কিন্তু ১০-১২ দিন পর ওই কেন্দ্র থেকে কাকাকে বলা হয়, তাদের আধার কার্ডের আবেদনপত্র বাতিল হয়ে গিয়েছে৷ আর তাদের আধার কার্ড হবে না৷ এতে কাকার দুশ্চিন্তা আরও বেড়ে যায়৷ দেশ থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার ভয় তাকে ঘিরে ধরে৷ সেই আতঙ্ক থেকেই কাকা গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে৷”
         এলাকার বাসিন্দা খোকা মণ্ডল বলেন, “মধুদের রেশন কার্ড আর ভোটার কার্ড আছে৷ কিন্তু আধার কার্ড নেই৷ এনআরসি রব চালু হওয়ার পর থেকেই আধার কার্ড না থাকার জন্য সে চিন্তায় পড়ে গিয়েছিল৷ সবাইকে বলত, তাদের আসল বাড়ি বাংলাদেশে৷ আধার কার্ড না থাকায় তাদের ফের সেই দেশে তাড়িয়ে দেওয়া হবে৷ সেই টেনশন সহ্য করতে না পেরেই সে ফাঁসি দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছে৷ আজ ওর বউ আর শ্যালিকা বাড়ির বাইরে বসে গল্প করছিল৷ সেখানেও মধু আধার কার্ড না থাকার কথা বলে৷ ওর বউ আর শ্যালিকা ওকে এনিয়ে টেনশন করতে বারণ করে৷ কিন্তু সে আর মানসিক চাপ নিতে পারেনি৷ ঘরে ঢুকে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হয়৷”Conclusion:         খবর পেয়ে রতুয়া গ্রামীণ হাসপাতালে যায় স্থানীয় থানার পুলিশ৷ মধু সাহার মৃতদের উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মালদা মেডিকেলে পাঠানো হয়৷ রতুয়া থানার ওসি কুণাল দাস জানিয়েছেন, এই ঘটনায় একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করা হয়েছে৷
ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.