ETV Bharat / state

Youth Body Recovered in Malda: 'মাকে কোনও দিন সুখ দিতে পারলাম না !' সুইসাইড নোট লিখে 'আত্মঘাতী' যুবক

পুরাতন মালদার মুচিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের মনোহরপুর গ্রামের (Youth Body Recovered in Malda) একটি আমগাছ থেকে উদ্ধার হল এক যুবকের ঝুলন্ত দেহ ৷ তাঁর পকেট থেকে উদ্ধার করা হয়েছে একটি 'সুইসাইড নোট' ৷ সেই চিঠি পড়ে চোখে জল স্থানীয়দের ৷ ঘটনাটি ভাবাচ্ছে পুলিশকেও ৷

hanged body of a young man recovered in Malda
একান্তর 'সুইসাইড নোট' পড়ে চোখে জল স্থানীয়দের
author img

By

Published : Feb 18, 2023, 4:42 PM IST

একান্তর পরিণতিতে শোকস্তব্ধ গোটা গ্রাম

মালদা, 18 ফেব্রুয়ারি: মা ছিলেন তাঁর জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মানুষ ৷ অথচ সেই বয়স্ক মায়ের জন্যই তিনি কিছু করতে পারেননি ! এ নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন তিনি ৷ শেষমেশ বেছে নিলেন আত্মহত্যার পথ ৷ অবসাদেই শেষ পর্যন্ত গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হলেন যুবক ? প্রাথমিকভাবে অন্তত এমনটাই মনে করা হচ্ছে ৷ শনিবার সকালে বাড়ির অদূরেই একটি আমগাছে তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে পুলিশ ৷ ঘটনায় আলোড়ন পড়ে গিয়েছে পুরাতন মালদার মুচিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের মনোহরপুর গ্রামে (Youth Body Recovered in Malda) ৷ মায়ের জন্য কিছু করতে না-পারার যন্ত্রণা যে এক তরতাজা তরুণের জীবনে এমন পরিণতি ঘটাতে পারে, তা জেনে শোকস্তব্ধ এলাকাবাসী ৷ এই ঘটনা ভাবাচ্ছে পুলিশকেও ৷

মৃত যুবকের নাম একান্ত মণ্ডল ৷ বয়স 33 বছর ৷ পূর্বপুরুষের আমল থেকেই তাঁরা মনোহরপুর গ্রামের বাসিন্দা ৷ পেশায় রাজমিস্ত্রি ছিলেন একান্ত ৷ দুই দাদা তাঁদের নিজেদের পরিবার নিয়ে আলাদা থাকেন ৷ বয়স্কা মা সাবিত্রীদেবীকে নিয়ে থাকতেন একান্ত ৷ প্রতিবেশীরা জানালেন, দুই দাদা বিয়ের পর মা'কে ছেড়ে আলাদা সংসার পেতেছেন ৷ তা দেখে নিজে আর বিয়ে করেননি একান্ত ৷ তাঁর ভয় ছিল, পাছে তাঁর মা একা হয়ে যান ! একান্তর বন্ধুরা বলছেন, তিনি কোনও সাতে-পাঁচে থাকতেন না ৷ তবে, মাকে সুখে রাখতে না-পারার যন্ত্রণা তাঁকে কুড়ে-কুড়ে খেত ৷ কিছুদিন ধরেই ভুগছিলেন মানসিক অবসাদে ৷ সহকর্মীদের একান্ত বলেছিলেন, তাঁর কিছু হয়ে গেলে মায়ের খুব কষ্ট হবে ৷

আরও পড়ুন: লটারি জিতে বিক্রেতার কাছে প্রতারণার শিকার ! আসানসোলে আত্মঘাতী বিজেতা

শুক্রবার কাজ সেরে বাড়ি ফেরার পর ফের বাইরে বেরিয়ে যান একান্ত ৷ তারপর থেকে তাঁর আর কোনও খোঁজ মিলছিল না ৷ পরিবারের সদস্যরা মনে করেছিলেন, হয়তো তিনি শিবরাত্রি উপলক্ষে গঙ্গা থেকে জল আনতে গিয়েছেন ৷ কিন্তু, শনিবার সকালে এলাকারই কিছু বাসিন্দা বাড়ি থেকে খানিকটা দূরে একটি আমগাছে একান্তর দেহ ঝুলতে দেখেন ৷ তাঁরাই একান্তর পরিবার এবং স্থানীয় থানায় খবর দেন ৷ খানিক বাদে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে দেহটি উদ্ধার করে নিয়ে যায় ৷

একান্তর পকেট থেকে একটি চিঠি উদ্ধার করা হয়েছে ৷ সেটিকেই তাঁর সুইসাইড নোট বলে মনে করছে পুলিশ ৷ সেই সুইসাইড নোটের বয়ান উপস্থিত সকলের চোখে জল এনে দিয়েছে ৷ চিঠিতে একান্ত লিখেছেন, অনেক কষ্ট করে মা তাঁদের মানুষ করেছেন ৷ কিন্তু মা'কে তিনি কোনও সুখ কিংবা শান্তি দিতে পারলেন না ৷ তাই তিনি ছেলে হিসাবে কলঙ্ক ! চিঠির শেষে দাদা-দিদিদের উদ্দেশে একান্ত লিখেছেন, তাঁরা যেন মা'কে ভালো রাখে ৷ নিজেরাও ভালো থাকেন ৷

একান্তের ছোটবেলার বন্ধু প্রসেনজিৎ দেবনাথ বলেন, "আমরা একসঙ্গেই এই গ্রামে মানুষ ৷ একা খুব ভালো ছেলে ছিল ৷ কোনও ঝুট-ঝামেলায় থাকত না ৷ তবে খুব চাপা স্বভাবের ছিল ৷ আজ সকালে শুনলাম, গতকাল সন্ধে থেকে ও নাকি আর বাড়ি ফেরেনি ৷ আজ সকালে ওর মাও ওকে খুঁজতে বেরিয়েছিলেন ৷ তিনি ভেবেছিলেন, শিবরাত্রি উপলক্ষে হয়তো ও গতকাল রাতে শিবের মাথায় জল ঢালতে গিয়েছে ৷ তখনই কয়েকজন গ্রামবাসীর চোখে পড়ে, বাগানের আমগাছ থেকে ওর দেহ ঝুলছে ৷ ওর পকেট থেকে সুইসাইড নোটও পাওয়া গিয়েছে ৷ মাকে নিয়ে ও মানসিক অবসাদে ভুগছিল ৷ তার জন্যই হয়তো আমাদের ছেড়ে এভাবে চলে গেল !"

একান্তর পরিণতিতে শোকস্তব্ধ গোটা গ্রাম

মালদা, 18 ফেব্রুয়ারি: মা ছিলেন তাঁর জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মানুষ ৷ অথচ সেই বয়স্ক মায়ের জন্যই তিনি কিছু করতে পারেননি ! এ নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন তিনি ৷ শেষমেশ বেছে নিলেন আত্মহত্যার পথ ৷ অবসাদেই শেষ পর্যন্ত গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হলেন যুবক ? প্রাথমিকভাবে অন্তত এমনটাই মনে করা হচ্ছে ৷ শনিবার সকালে বাড়ির অদূরেই একটি আমগাছে তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে পুলিশ ৷ ঘটনায় আলোড়ন পড়ে গিয়েছে পুরাতন মালদার মুচিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের মনোহরপুর গ্রামে (Youth Body Recovered in Malda) ৷ মায়ের জন্য কিছু করতে না-পারার যন্ত্রণা যে এক তরতাজা তরুণের জীবনে এমন পরিণতি ঘটাতে পারে, তা জেনে শোকস্তব্ধ এলাকাবাসী ৷ এই ঘটনা ভাবাচ্ছে পুলিশকেও ৷

মৃত যুবকের নাম একান্ত মণ্ডল ৷ বয়স 33 বছর ৷ পূর্বপুরুষের আমল থেকেই তাঁরা মনোহরপুর গ্রামের বাসিন্দা ৷ পেশায় রাজমিস্ত্রি ছিলেন একান্ত ৷ দুই দাদা তাঁদের নিজেদের পরিবার নিয়ে আলাদা থাকেন ৷ বয়স্কা মা সাবিত্রীদেবীকে নিয়ে থাকতেন একান্ত ৷ প্রতিবেশীরা জানালেন, দুই দাদা বিয়ের পর মা'কে ছেড়ে আলাদা সংসার পেতেছেন ৷ তা দেখে নিজে আর বিয়ে করেননি একান্ত ৷ তাঁর ভয় ছিল, পাছে তাঁর মা একা হয়ে যান ! একান্তর বন্ধুরা বলছেন, তিনি কোনও সাতে-পাঁচে থাকতেন না ৷ তবে, মাকে সুখে রাখতে না-পারার যন্ত্রণা তাঁকে কুড়ে-কুড়ে খেত ৷ কিছুদিন ধরেই ভুগছিলেন মানসিক অবসাদে ৷ সহকর্মীদের একান্ত বলেছিলেন, তাঁর কিছু হয়ে গেলে মায়ের খুব কষ্ট হবে ৷

আরও পড়ুন: লটারি জিতে বিক্রেতার কাছে প্রতারণার শিকার ! আসানসোলে আত্মঘাতী বিজেতা

শুক্রবার কাজ সেরে বাড়ি ফেরার পর ফের বাইরে বেরিয়ে যান একান্ত ৷ তারপর থেকে তাঁর আর কোনও খোঁজ মিলছিল না ৷ পরিবারের সদস্যরা মনে করেছিলেন, হয়তো তিনি শিবরাত্রি উপলক্ষে গঙ্গা থেকে জল আনতে গিয়েছেন ৷ কিন্তু, শনিবার সকালে এলাকারই কিছু বাসিন্দা বাড়ি থেকে খানিকটা দূরে একটি আমগাছে একান্তর দেহ ঝুলতে দেখেন ৷ তাঁরাই একান্তর পরিবার এবং স্থানীয় থানায় খবর দেন ৷ খানিক বাদে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে দেহটি উদ্ধার করে নিয়ে যায় ৷

একান্তর পকেট থেকে একটি চিঠি উদ্ধার করা হয়েছে ৷ সেটিকেই তাঁর সুইসাইড নোট বলে মনে করছে পুলিশ ৷ সেই সুইসাইড নোটের বয়ান উপস্থিত সকলের চোখে জল এনে দিয়েছে ৷ চিঠিতে একান্ত লিখেছেন, অনেক কষ্ট করে মা তাঁদের মানুষ করেছেন ৷ কিন্তু মা'কে তিনি কোনও সুখ কিংবা শান্তি দিতে পারলেন না ৷ তাই তিনি ছেলে হিসাবে কলঙ্ক ! চিঠির শেষে দাদা-দিদিদের উদ্দেশে একান্ত লিখেছেন, তাঁরা যেন মা'কে ভালো রাখে ৷ নিজেরাও ভালো থাকেন ৷

একান্তের ছোটবেলার বন্ধু প্রসেনজিৎ দেবনাথ বলেন, "আমরা একসঙ্গেই এই গ্রামে মানুষ ৷ একা খুব ভালো ছেলে ছিল ৷ কোনও ঝুট-ঝামেলায় থাকত না ৷ তবে খুব চাপা স্বভাবের ছিল ৷ আজ সকালে শুনলাম, গতকাল সন্ধে থেকে ও নাকি আর বাড়ি ফেরেনি ৷ আজ সকালে ওর মাও ওকে খুঁজতে বেরিয়েছিলেন ৷ তিনি ভেবেছিলেন, শিবরাত্রি উপলক্ষে হয়তো ও গতকাল রাতে শিবের মাথায় জল ঢালতে গিয়েছে ৷ তখনই কয়েকজন গ্রামবাসীর চোখে পড়ে, বাগানের আমগাছ থেকে ওর দেহ ঝুলছে ৷ ওর পকেট থেকে সুইসাইড নোটও পাওয়া গিয়েছে ৷ মাকে নিয়ে ও মানসিক অবসাদে ভুগছিল ৷ তার জন্যই হয়তো আমাদের ছেড়ে এভাবে চলে গেল !"

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.