মালদা, 19 ডিসেম্বর : প্রায় এক মাস । গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অশিক্ষক কর্মীদের কর্মবিরতির আন্দোলন চলছিল এতদিন । শেষ পর্যন্ত তার ফল পেলেন তাঁরা । গতকাল কলকাতায় আয়োজিত বিশ্ববিদ্যালয়ের এগজ়িকিউটিভ কাউন্সিলের বৈঠকে অস্থায়ী কর্মীদের বেশিরভাগ দাবিই মেনে নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে ৷ ফলে কাজকর্ম স্বাভাবিক হবে বলে মনে করছে কর্তৃপক্ষ । তবে আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, এগজ়িকিউটিভ কাউন্সিলের বৈঠকের সিদ্ধান্ত নিয়ে কোনও নথি তাঁরা হাতে পাননি ৷ তাই রেজিস্ট্রার না আসা পর্যন্ত তাঁদের কর্মবিরতি চলতে থাকবে ৷
তিন দফা দাবিতে গত 20 নভেম্বর থেকে লাগাতার কর্মবিরতি চালিয়ে যাচ্ছেন গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অশিক্ষক কর্মীরা ৷ তাঁদের দাবিগুলির মধ্যে ছিল স্থায়ীকরণ ও বেতন পরিকাঠামোর সংশোধন, সমস্ত সরকারি সুযোগসুবিধা প্রদান এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক প্রকাশিত অস্থায়ী কর্মী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহার৷ এর মধ্যে তৃতীয় দাবিটি অনেক আগেই মেনে নেয় কর্তৃপক্ষ৷ কিন্তু প্রথম দুটি দাবি নিয়েই দেখা দিয়েছিল সমস্যা ৷ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বক্তব্য ছিল, এই দাবিগুলি পূরণ করা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক্তিয়ারে নেই৷ রাজ্য উচ্চশিক্ষা দপ্তর এই দাবিগুলি পূরণ করতে পারে৷ এপ্রসঙ্গে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার বিপ্লব গিরি জানিয়েছিলেন, তিনি গোটা বিষয়টি উচ্চশিক্ষা দপ্তরে জানিয়েছেন ৷ প্রত্যেক কর্মীর নিয়োগ সংক্রান্ত নথিও উচ্চশিক্ষা দপ্তরে পাঠানো হয়েছে৷ এনিয়ে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের এগজ়িকিউটিভ কাউন্সিলের বিশেষ বৈঠক ডাকার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানিয়েছেন ৷
অবশেষে গতকাল সকাল 11টা থেকে কলকাতায় অবস্থিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে 22তম এগজ়িকিউটিভ কাউন্সিলের বৈঠক বসে৷ পদত্যাগী উপাচার্য সহ মোট 10 জন সদস্য সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন৷ বৈঠকে অশিক্ষক কর্মীদের দাবি নিয়ে কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়৷ ঠিক হয়, সরকারি নির্দেশিকা পাওয়া গেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের অশিক্ষক কর্মীদের রোপা 2019 হারে বেতন প্রদান করা হবে৷ প্রত্যেক কর্মীকে 60 বছর বয়স পর্যন্ত কাজে বহাল রাখা হবে৷ 2020 সাল থেকে প্রতি বছর প্রত্যেক কর্মীর বেতন মূল বেতনের ৩ শতাংশ হারে বৃদ্ধি করা হবে৷ অশিক্ষক কর্মীদের স্বাস্থ্যসাথী, প্রভিডেন্ড ফান্ড, মাতৃত্ব ও পিতৃত্বকালীন ছুটির বিষয়ে সরকারি স্তরে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে৷ অশিক্ষক কর্মীদের বিষয়ে এমন 10টি সিদ্ধান্ত আজকের EC সভায় গৃহীত হয়েছে ৷ এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন পদে নিয়োগ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ৷
এপ্রসঙ্গে সারা বাংলা শিক্ষাবন্ধু সমিতির গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিটের সভাপতি শুভায়ু দাস বলেন, “কলকাতায় EC বৈঠকের কথা আমরা শুনেছি ৷ কিন্তু সেখানে কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তা আমরা জানি না ৷ আমরা হাতে কোনও নথিও পাইনি ৷ তবে শুনেছি, আমাদের দাবি অনুযায়ী রোপা এন্ট্রি লেভেল স্যালারি চালু করা হয়নি ৷ শুধু তাই নয়, প্রতিটি ক্ষেত্রেই কিছু কিছু বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে বলে শুনছি ৷ রেজিস্ট্রার বিশ্ববিদ্যালয়ে না আসা পর্যন্ত আমরা কিছু বুঝতে পারছি না ৷ তাই তিনি না আসা পর্যন্ত আমাদের কর্মবিরতি চলছেই ৷”