ETV Bharat / state

গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে আটকে গেল সমস্ত কর্মীদের বেতন

আটকে গেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় 10 জন আধিকারিক, 90 জন অধ্যাপক-অধ্যাপিকা এবং ১৩৮ জন অশিক্ষক কর্মীর বেতন ৷ এর মধ্যে রয়েছেন আন্দোলনকারী অশিক্ষক ও অস্থায়ী কর্মীরাও ৷

author img

By

Published : Dec 2, 2019, 10:08 PM IST

Gour Banga University
গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মবিরতি

মালদা, 2 ডিসেম্বর: অস্থায়ী কর্মীদের লাগাতার কর্মবিরতির জেরে আটকে গেল গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্ত কর্মীদের বেতন ৷ এই অচলাবস্থার মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত ফিনান্স অফিসার পদত্যাগ করায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে ৷ এদিকে আজ আধিকারিকদের কাউকে বিশ্ববিদ্যালয়ে দেখা যায়নি ৷ অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক অফিসের তালা খোলেননি আন্দোলনকারী অস্থায়ী কর্মীরা ৷

তিন দফা দাবি নিয়ে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী কর্মীদের আন্দোলন আজ 12 দিনে পড়ল ৷ এই আন্দোলন চলাকালীন পদত্যাগ করেছেন উপাচার্য ৷ বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুপস্থিত ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রারও ৷ আজ ইন্সপেক্টর অফ কলেজেস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অফিসাররা বিশ্ববিদ্যালয়ে এলেও তাঁদের দপ্তরের তালা না খোলায় কাজ করতে পারেননি ৷ এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্ত অফিস বন্ধ থাকায় ফিরে যেতে হচ্ছে পড়ুয়াদেরও ৷

ভিডিয়োয় দেখুন কী বলছেন পড়ুয়ারা...

এই পরিস্থিতিতে গত শুক্রবার সন্ধ্যায় উপাচার্যের কাছে পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত ফিনান্স অফিসার ভাস্কর বাগচি ৷ আজ তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেননি ৷ তাঁর অবর্তমানে আটকে গেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় 10 জন আধিকারিক, 90 জন অধ্যাপক-অধ্যাপিকা এবং ১৩৮ জন অশিক্ষক কর্মীর বেতন ৷ এর মধ্যে রয়েছেন আন্দোলনকারী অশিক্ষক অস্থায়ী কর্মীরাও ৷ ভাস্করবাবু ত বৃহস্পতিবার আন্দোলনকারী অস্থায়ী কর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন ৷ কিন্তু সেই সময় আন্দোলকারী অস্থায়ী কর্মীরা তাঁর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন বলে অভিযোগ ৷ এরপর ভাস্করবাবু অসুস্থ হয়ে পড়েন ৷ তাঁকে মালদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয় ৷ সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছাড়া পান তিনি ৷

এরপরই ভাস্করবাবু তাঁর পদত্যাগ পত্র ই-মেল করে পাঠিয়ে দেন উপাচার্যের কাছে ৷ আজ একাধিকবার ফোন করা হলেও ফোন ধরেননি ভাস্করবাবু ৷ ফোন না ধরায় তাঁর কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি ৷

উত্তর দিনাজপুরের ইটাহার থানার বীরনগর থেকে আজ বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছিলেন মোস্তাফিজুর রহমান ৷ তিনি বলেন, "রেজিস্ট্রেশনের জন্য আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছিলাম ৷ রেজিস্ট্রারের দপ্তরে তালা ৷ রেজিস্ট্রার কিংবা ডেপুটি রেজিস্ট্রার কেউ নেই ৷ এর আগেও একদিন এসেছিলাম ৷ কিন্তু অস্থায়ী কর্মীদের কর্মবিরতির জন্য কাজ হয়নি ৷ আজও একই দশা ৷ এদিকে আগামীকাল রেজিস্ট্রেশনের শেষ দিন ৷ কী হবে, জানি না ৷" রায়গঞ্জের বাসিন্দা তাজমিনার সরকার বলেন, "আগামী 9 ডিসেম্বর আমার B.Ed-এর পরীক্ষা ৷ তার আগে আমাকে মাইগ্রেশন সার্টিফিকেট জমা দিতে হবে ৷ তা না হলে আমি পরীক্ষা দিতে পারব না ৷ কিন্তু আজ এসে দেখছি সব জায়গায় তালা ৷ এর আগেও একদিন ঘুরে গেছি ৷ এখন আমাদের কী হবে জানি না৷"

এই সম্পর্কিত আরও খবর : স্থায়ীকরণ সহ একাধিক দাবিতে কর্মবিরতি শুরু গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী কর্মীদের
সারা বাংলা শিক্ষাবন্ধু সমিতির গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিটের সভাপতি শুভায়ু দাস বলেন, "ন্যূনতম কয়েকটি দাবিতে আমাদের কর্মবিরতি আজ 12 দিনে পড়ল ৷ কিন্তু আজ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আমাদের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ করেনি ৷ আর বেতনের বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিনান্স অফিসার দেখেন ৷ এখানে আমরাই সবচেয়ে কম মাইনে পাই ৷ ফলে বেতন না হওয়ায় আমরাও সমস্যায় পড়েছি ৷ কী কারণে মাইনে আটকে গেল, তা ফিনান্স অফিসারই বলতে পারবেন ৷ আমাদের আন্দোলনের জন্যই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মাইনে আটকে দিয়েছে কিনা তা আমাদের জানা নেই ৷ তবে পড়ুয়াদের জন্য আমরা হেল্প ডেস্ক তৈরি করেছি ৷ পড়ুয়ারা কোথা থেকে মাইগ্রেশন, রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট, প্রবেশনাল সার্টিফিকেট পাবেন, স্কলারশিপ কোথা থেকে দেওয়া হচ্ছে, কীভাবে তা পাওয়া যাবে, সেসব আমরা ছাত্রছাত্রীদের জানিয়ে দিচ্ছি ৷ কিন্তু আধিকারিকরাই যদি অনুপস্থিত থাকেন, তবে আমরা আর কী করতে পারি ? 20 নভেম্বর আমরা শেষবারের জন্য উপাচার্যের সঙ্গে কথা বলি ৷ তারপর তিনি পদত্যাগ করেন ৷ গত বৃহস্পতিবার শেষবার রেজিস্ট্রারের সঙ্গে আমাদের দেখা হয় ৷ তারপর থেকে তিনি নিখোঁজ ৷ আজ আবার ফিনান্স অফিসারকেও দেখা যাচ্ছে না ৷"

মালদা, 2 ডিসেম্বর: অস্থায়ী কর্মীদের লাগাতার কর্মবিরতির জেরে আটকে গেল গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্ত কর্মীদের বেতন ৷ এই অচলাবস্থার মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত ফিনান্স অফিসার পদত্যাগ করায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে ৷ এদিকে আজ আধিকারিকদের কাউকে বিশ্ববিদ্যালয়ে দেখা যায়নি ৷ অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক অফিসের তালা খোলেননি আন্দোলনকারী অস্থায়ী কর্মীরা ৷

তিন দফা দাবি নিয়ে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী কর্মীদের আন্দোলন আজ 12 দিনে পড়ল ৷ এই আন্দোলন চলাকালীন পদত্যাগ করেছেন উপাচার্য ৷ বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুপস্থিত ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রারও ৷ আজ ইন্সপেক্টর অফ কলেজেস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অফিসাররা বিশ্ববিদ্যালয়ে এলেও তাঁদের দপ্তরের তালা না খোলায় কাজ করতে পারেননি ৷ এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্ত অফিস বন্ধ থাকায় ফিরে যেতে হচ্ছে পড়ুয়াদেরও ৷

ভিডিয়োয় দেখুন কী বলছেন পড়ুয়ারা...

এই পরিস্থিতিতে গত শুক্রবার সন্ধ্যায় উপাচার্যের কাছে পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত ফিনান্স অফিসার ভাস্কর বাগচি ৷ আজ তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেননি ৷ তাঁর অবর্তমানে আটকে গেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় 10 জন আধিকারিক, 90 জন অধ্যাপক-অধ্যাপিকা এবং ১৩৮ জন অশিক্ষক কর্মীর বেতন ৷ এর মধ্যে রয়েছেন আন্দোলনকারী অশিক্ষক অস্থায়ী কর্মীরাও ৷ ভাস্করবাবু ত বৃহস্পতিবার আন্দোলনকারী অস্থায়ী কর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন ৷ কিন্তু সেই সময় আন্দোলকারী অস্থায়ী কর্মীরা তাঁর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন বলে অভিযোগ ৷ এরপর ভাস্করবাবু অসুস্থ হয়ে পড়েন ৷ তাঁকে মালদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয় ৷ সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছাড়া পান তিনি ৷

এরপরই ভাস্করবাবু তাঁর পদত্যাগ পত্র ই-মেল করে পাঠিয়ে দেন উপাচার্যের কাছে ৷ আজ একাধিকবার ফোন করা হলেও ফোন ধরেননি ভাস্করবাবু ৷ ফোন না ধরায় তাঁর কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি ৷

উত্তর দিনাজপুরের ইটাহার থানার বীরনগর থেকে আজ বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছিলেন মোস্তাফিজুর রহমান ৷ তিনি বলেন, "রেজিস্ট্রেশনের জন্য আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছিলাম ৷ রেজিস্ট্রারের দপ্তরে তালা ৷ রেজিস্ট্রার কিংবা ডেপুটি রেজিস্ট্রার কেউ নেই ৷ এর আগেও একদিন এসেছিলাম ৷ কিন্তু অস্থায়ী কর্মীদের কর্মবিরতির জন্য কাজ হয়নি ৷ আজও একই দশা ৷ এদিকে আগামীকাল রেজিস্ট্রেশনের শেষ দিন ৷ কী হবে, জানি না ৷" রায়গঞ্জের বাসিন্দা তাজমিনার সরকার বলেন, "আগামী 9 ডিসেম্বর আমার B.Ed-এর পরীক্ষা ৷ তার আগে আমাকে মাইগ্রেশন সার্টিফিকেট জমা দিতে হবে ৷ তা না হলে আমি পরীক্ষা দিতে পারব না ৷ কিন্তু আজ এসে দেখছি সব জায়গায় তালা ৷ এর আগেও একদিন ঘুরে গেছি ৷ এখন আমাদের কী হবে জানি না৷"

এই সম্পর্কিত আরও খবর : স্থায়ীকরণ সহ একাধিক দাবিতে কর্মবিরতি শুরু গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী কর্মীদের
সারা বাংলা শিক্ষাবন্ধু সমিতির গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিটের সভাপতি শুভায়ু দাস বলেন, "ন্যূনতম কয়েকটি দাবিতে আমাদের কর্মবিরতি আজ 12 দিনে পড়ল ৷ কিন্তু আজ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আমাদের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ করেনি ৷ আর বেতনের বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিনান্স অফিসার দেখেন ৷ এখানে আমরাই সবচেয়ে কম মাইনে পাই ৷ ফলে বেতন না হওয়ায় আমরাও সমস্যায় পড়েছি ৷ কী কারণে মাইনে আটকে গেল, তা ফিনান্স অফিসারই বলতে পারবেন ৷ আমাদের আন্দোলনের জন্যই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মাইনে আটকে দিয়েছে কিনা তা আমাদের জানা নেই ৷ তবে পড়ুয়াদের জন্য আমরা হেল্প ডেস্ক তৈরি করেছি ৷ পড়ুয়ারা কোথা থেকে মাইগ্রেশন, রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট, প্রবেশনাল সার্টিফিকেট পাবেন, স্কলারশিপ কোথা থেকে দেওয়া হচ্ছে, কীভাবে তা পাওয়া যাবে, সেসব আমরা ছাত্রছাত্রীদের জানিয়ে দিচ্ছি ৷ কিন্তু আধিকারিকরাই যদি অনুপস্থিত থাকেন, তবে আমরা আর কী করতে পারি ? 20 নভেম্বর আমরা শেষবারের জন্য উপাচার্যের সঙ্গে কথা বলি ৷ তারপর তিনি পদত্যাগ করেন ৷ গত বৃহস্পতিবার শেষবার রেজিস্ট্রারের সঙ্গে আমাদের দেখা হয় ৷ তারপর থেকে তিনি নিখোঁজ ৷ আজ আবার ফিনান্স অফিসারকেও দেখা যাচ্ছে না ৷"

Intro:মালদা, ০২ ডিসেম্বর : অস্থায়ী কর্মীদের লাগাতার কর্মবিরতির জেরে আটকে গেল গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্ত কর্মীদের বেতন৷ এই অচলাবস্থার মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত ফিনান্স অফিসার পদত্যাগ করায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে৷ এদিকে আজ বিশ্ববিদ্যালয়ে আধিকারিকদের কাউকে দেখা যায়নি৷ তাঁদের গেটের তালা খোলেননি আন্দোলনকারী অস্থায়ী কর্মীরা৷ যদিও আন্দোলনকারীদের তরফে দাবি করা হয়েছে, এই পরিস্থিতির জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষই দায়ী৷


Body: তিন দফা দাবিতে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী কর্মীদের আন্দোলন আজ ১২ দিনে পড়ল৷ এই আন্দোলনের মধ্যে পদত্যাগ করেছেন উপাচার্য৷ অনুপস্থিত ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রারও৷ আজ ইন্সপেকটর অফ কলেজেস এবং ডেভেলপমেন্ট অফিসার বিশ্ববিদ্যালয়ে আসলেও তাঁদের দপ্তরের তালা না খোলায় তাঁরা কাজ করতে পারেননি৷ এদিকে নিজেদের কাজে দূরদূরান্ত থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে ফিরে যাচ্ছেন পড়ুয়ারা৷ সবচেয়ে বড়ো বিষয়, এই পরিস্থিতিতে গত শুক্রবার সন্ধেয় উপাচার্যের কাছে নিজের পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত ফিনান্স অফিসার ভাস্কর বাগচি৷ আজ তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেননি৷ ফোনও ধরেননি তিনি৷ জানা গেছে, এই মুহূর্তে তিনি কলকাতায় রয়েছেন৷ তাঁর অবর্তমানে আটকে গেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ১০ জন আধিকারিক, ৯০ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং ১৩৮ জন অশিক্ষক কর্মীর বেতন৷ এর মধ্যে রয়েছেন আন্দোলনকারী অশিক্ষক অস্থায়ী কর্মীরাও৷
বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ডামাডোল পরিস্থিতিতে কেন বাণিজ্য বিভাগের অধ্যাপক, ভারপ্রাপ্ত ফিনান্স অফিসার পদত্যাগ করলেন তা কেউ জানে না৷ জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান পরিস্থিতিতেও তিনি সবার বেতন যাতে সঠিক সময়ে হয় তার উদ্যোগ নিয়েছিলেন৷ এনিয়ে তিনি উপাচার্যের সঙ্গে কথা বললে উপাচার্য তাঁকে নির্দেশ দেন, পরিস্থিতি যাই হোক না কেন, নির্দিষ্ট সময়ে সবার বেতনের ব্যবস্থা করতে হবে৷ এরপরেই তিনি ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রারকে মেইল করে সব ঘটনা জানান৷ রেজিস্ট্রারের সাহায্য চান৷ রেজিস্ট্রার তাঁকে সবরকম সাহায্যের কথা বললেও সেই সাহায্য নাকি ভাস্করবাবু পাননি৷ শেষ পর্যন্ত গত বৃহস্পতিবার তিনি আন্দোলনকারী অস্থায়ী কর্মীদের সঙ্গে এনিয়ে কথা বলেন৷ তিনি তাঁদের কাছে আবেদন করেন, যেহেতু যে সফটওয়্যারে বেতন সংক্রান্ত কাজ হয় তা তাঁর অজানা এবং যেহেতু অস্থায়ী কর্মীরাই বেতন সংক্রান্ত সমস্ত নথিপত্র তৈরি করেন, তাই তাঁরা যেন সবার বেতনের স্বার্থে তাঁকে সাহায্য করেন৷ কিন্তু সেই সময় আন্দোলকারী অস্থায়ী কর্মীরা তাঁর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন বলে অভিযোগ৷ এতে ভাস্করবাবু অসুস্থ হয়ে পড়েন৷ তাঁকে মালদা মেডিকেলে নিয়ে যেতে হয়৷ সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছাড়া পান তিনি৷ পরদিনই তিনি ভারপ্রাপ্ত ফিনান্স অফিসারের পদ থেকে ইস্তফা দেন তিনি৷ নিজের পদত্যাগপত্র মেইল মারফৎ পাঠিয়ে দেন উপাচার্যের কাছে৷ আজ একাধিকবার ফোন করা হলেও ফোন ধরেননি ভাস্করবাবু৷ ফলে এবিষয়ে তাঁর কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি৷ তবে জানা গেছে, ঘাড়ে এবং কোমড়ে স্পন্ডেলাইটিসের কারণ দেখিয়ে তিনি ফিনান্স অফিসারের পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন৷
         এদিকে আজও নিজেদের কাজে এসে ঘুরে যেতে হয়েছে পড়ুয়াদের৷ উত্তর দিনাজপুরের ইটাহার থানার বীরনগর থেকে আজ বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছিলেন মোস্তাফিজুর রহমান৷ তিনি বলেন, “রেজিস্ট্রেশনের জন্য আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছিলাম৷ রেজিস্ট্রারের দপ্তরে তালা৷ রেজিস্ট্রার কিংবা ডেপুটি রেজিস্ট্রার নেই৷ এর আগেও একদিন এসেছিলাম৷ কিন্তু অস্থায়ী কর্মীদের কর্মবিরতির জন্য কাজ হয়নি৷ আজও একই দশা৷ এদিকে আগামীকাল রেজিস্ট্রেশনের শেষ দিন৷ কী হবে, জানি না৷” আরেক ছাত্র, রায়গঞ্জের বাসিন্দা তাজমিনার সরকার বলেন, “আগামী ৯ তারিখ আমার বিএড-এর পরীক্ষা৷ তার আগে আমাকে মাইগ্রেশন জমা দিতে হবে৷ তা না হলে আমি পরীক্ষা দিতে পারব না৷ কিন্তু আজ এসে দেখছি, সব জায়গায় তালা৷ এর আগেও একদিন ঘুরে গেছি৷ এখন আমাদের কী হবে জানি না৷”


Conclusion:         সমস্ত বিষয় নিয়ে প্রশ্ন করা হলে আন্দোলনকারীদের তৃণমূল প্রভাবিত সংগঠন, সারা বাংলা শিক্ষাবন্ধু সমিতির গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিটের সভাপতি শুভায়ু দাস বলেন, “ন্যূনতম কয়েকটি দাবিতে আমাদের কর্মবিরতি আজ ১২ দিনে পড়ল৷ কিন্তু আজ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আমাদের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ করেনি৷ আর বেতনের বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিনান্স অফিসার দেখেন৷ এখানে আমরাই সবচেয়ে কম মাইনে পাই৷ ফলে বেতন না হওয়ায় আমরাও সমস্যায় পড়েছি৷ কী কারণে মাইনে আটকে গেল, তা ফিনান্স অফিসারই বলতে পারবেন৷ আমাদের আন্দোলনের জন্যই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মাইনে আটকে দিয়েছে কিনা তা আমাদের জানা নেই৷ তবে পড়ুয়াদের জন্য আমরা হেল্প ডেস্ক তৈরি করেছি৷ পড়ুয়ারা কোথায় থেকে মাইগ্রেশন পাবেন, রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট, প্রবেশনাল সার্টিফিকেট, স্কলারশিপ কোথায় থেকে দেওয়া হচ্ছে, কীভাবে তা পাওয়া যাবে, সেসব আমরা ছাত্রছাত্রীদের জানিয়ে দিচ্ছি৷ কিন্তু আধিকারিকরাই যদি অনুপস্থিত থাকেন, তবে আমরা আর কী করতে পারি! ২০ নভেম্বর আমরা শেষবার উপাচার্যের সঙ্গে কথা বলি৷ তারপর তিনি পদত্যাগ করেন৷ গত বৃহস্পতিবার শেষবার রেজিস্ট্রারের সঙ্গে আমাদের দেখা হয়৷ তারপর থেকে তিনি নিখোঁজ৷ আজ আবার ফিনান্স অফিসারকেও দেখা যাচ্ছে না৷”
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.