মালদা, 24 জুন : পুরাতন মালদার যাত্রাডাঙা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার একাদশ শ্রেণির ছাত্রীর খুনের ঘটনায় নিজের দোষ অকপটে স্বীকার করল প্রেমিক (Girlfriend Murder by Her Boyfriend Over Love Triangle)। শুক্রবার ধৃত যুবককে মালদা জেলা আদালতে পেশ করা হয়েছে।
16 বছর বয়সি মৃত ওই ছাত্রীর সঙ্গে শামিম আখতারের প্রেমের সম্পর্কের কথা জানত গ্রামবাসীরা। বিষয়টি জানতেন দু'জনের অভিভাবকরাও। 19 জুন স্থানীয় মালদা থানায় দায়ের করা অভিযোগপত্রে ছাত্রী তথা প্রেমিকার মা জানান, 18 জুন রাতে শামিমের ফোন পেয়ে তাঁর মেয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। তারপর থেকে তার আর কোনও খোঁজ মিলছিল না। পরদিন দুপুর পর্যন্ত মেয়ের কোনও খোঁজ না-পেয়ে তিনি পুলিশের দ্বারস্থ হন। মেয়ের অন্তর্ধানের ঘটনায় তিনি শামিম ও তার বাবা ইসলাম আলিকে দায়ী করেছেন।
আরও পড়ুন : দুই তরুণী পড়েছে প্রেমে, বিয়ের জন্য ছাড়ল ঘর, ছাদনাতলায় পুলিশ
তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্তদের আটক করে মালদা থানার পুলিশ। ওই ছাত্রীর খোঁজে শুরু হয় পুলিশি তল্লাশি। তবে তার কোনও সন্ধান পায়নি পুলিশও। শেষ পর্যন্ত 22 জুন সকালে গ্রামের বাসিন্দারা নিখোঁজ ছাত্রীদেরই বিক্রি করে দেওয়া পুরনো একটি বাড়ির বারান্দায় ফোঁটা ফোঁটা রক্তের দাগ দেখতে পান। ঘরে ঢুকে দেখা যায়, সেখানে আরও রক্তের দাগ। ওই ঘর থেকে ভারি কিছু টেনে নিয়ে যাওয়ার চিহ্নও স্পষ্ট। ঘর থেকে পাওয়া যায় ওই কিশোরীর ব্যাগ ও মেয়েদের অন্তর্বাস। ব্যাগ থেকে পাওয়া যায় একটি প্রেম সম্পর্কিত চিঠি। যদিও কাউকে সম্বোধন করে সেই চিঠি লেখা ছিল না।
কিন্তু এসব সূত্র দেখে গ্রামবাসীরা প্রথমেই খুনের সন্দেহ করেছিলেন। একই সন্দেহ ছিল পুলিশেরও। দেহ উদ্ধারের জন্য ওই বাড়ি লাগোয়া একটি পুকুরে শুরু হয় তল্লাশি। শেষ পর্যন্ত সেইদিনই বিকেল নাগাদ ওই পুকুর থেকেই গাছের শিকড়ে বাঁধা অবস্থায় কিশোরীর মৃতদেহ উদ্ধার হয়। দেহ উদ্ধারের পরেই পুলিশি জেরায় শামিম স্বীকার করে নেয়, প্রেমঘটিত কারণেই সে তার প্রেমিকাকে খুন করেছে। খুনের পর মৃতদেহ পুকুরের ধারে থাকা একটি গাছের শিকড়ে বেঁধে জলে ফেলে দেয়। কিন্তু খুনের আগে সে ওই কিশোরীকে ধর্ষণ করেছে কি না, তা নিয়ে পুলিশকে কিছু জানায়নি শামিম।
আরও পড়ুন : আদালতের নির্দেশে চাকরি যেতেই ছেড়ে গিয়েছে প্রেমিক, বিয়ের দাবিতে ধরনায় শিক্ষিকা
পুলিশ সূত্রে খবর, ময়নাতদন্তের রিপোর্টে জানা যায়, খুনের আগে ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করা হয়েছিল। এরপরেই শামিমের বিরুদ্ধে খুন ও দেহ লোপাটের ধারা ছাড়াও পকসো আইনে ধর্ষণের মামলা রুজু হয়। এদিন আদালতে যাওয়ার পথে শামিম বলে, "ওর সঙ্গে অন্য ছেলের সম্পর্ক ছিল। তাই ওকে গলা টিপে খুন করেছি। আমি একাই ওকে খুন করেছি। খুনের পর পুকুরে শিকড়ের নীচে মৃতদেহ ফেলে দিয়েছি।" শামিম একথা জানালেও পুলিশের অনুমান, তার একার পক্ষে এত কিছু করা কঠিন । তাই এখনও পুলিশ তদন্ত জারি রেখেছে।