মালদা, ২৪ মে : ক্রমেই শক্তি বাড়িয়ে রাজ্যের দিকে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় যশ ৷ প্রবল আতঙ্কের প্রহর গোনা শুরু করেছে রাজ্যবাসী ৷ মাথায় হাত পড়েছে চাষিদের ৷ ঝড়ের তাণ্ডবে প্রচুর ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কায় প্রমাদ গুনছেন তাঁরা ৷ কোনও উপায় না-পেয়ে আধপাকা ধান কেটে ও অপুষ্ট আম পেড়ে ঘরে তুলে রাখছেন মালদার চাষিরা ৷
আবহাওয়া দফতর জানিয়ে দিয়েছে, ইতিমধ্যে গভীর নিম্নচাপ থেকে ঘুর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে যশ ৷ আগামীকালের মধ্যে সে প্রবল ঘুর্ণিঝড়ে পরিণত হবে ৷ বুধবার প্রায় 165 কিলোমিটার গতি নিয়ে পারাদ্বীপ ও সাগরদ্বীপের মাঝামাঝি কোনও জায়গায় আছড়ে পড়বে এই ঝড় ৷ তার জন্য ইতিমধ্যেই তৎপরতা শুরু হয়েছে প্রশাসনের ৷ আগাম প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন কৃষকরা ৷ ফসল রক্ষায় তাঁরা আধপাকা ধান ও অপুষ্ট আমও ঘরে তুলতে শুরু করে দিয়েছেন ৷
পুরাতন মালদার ভাবুক গ্রাম পঞ্চায়েতের সোনাঝুড়ি এলাকার দুঃখু ঠাকুর নামে এক কৃষক বললেন, “এখনও সব চাষি বোরো ধান ঘরে তুলতে পারেনি ৷ অনেক ধান মাঠে পড়ে রয়েছে ৷ ধান কাটার কাজ চলছে ৷ এরই মধ্যে ঘুর্ণিঝড় আসছে ৷ এতে ধানের খুব ক্ষতি হবে ৷ তাই আধপাকা ধানও কেটে নিচ্ছি ৷ কারণ ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে এখানে প্রবল বৃষ্টি হবেই ৷ তাতে ধানের খুব ক্ষতি হয়ে যাবে ৷”
আরও পড়ুন: আগামী 24 ঘণ্টায় আরও শক্তিশালী হবে ঘূর্ণিঝড় যশ
চাঁচলের এক ধানচাষি অমিতা দাস বলেন, “খবরে ঘুর্ণিঝড়ের কথা শুনেছি ৷ একেই এ বার শিলাবৃষ্টিতে ধানের দফারফা হয়ে গিয়েছে ৷ এ বার ঝড়-বৃষ্টি হলে যেটুকু ধান আছে, সেটাও পাব না ৷ তাই ভয়ে আগাম ধান কেটে নিচ্ছি ৷ আমি একা নই, এলাকার সব চাষিই আধপাকা ধানও কেটে নিচ্ছে ৷”
হরিশ্চন্দ্রপুরের নগেন দাস দীর্ঘ 30 বছর ধরে আমচাষ ও ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ৷ তার কথায়, “এ বার শিলাবৃষ্টিতে আমের খুব ক্ষতি হয়েছিল ৷ ফের বড়সড় ঝড় আসছে ৷ তাই পুষ্ট না হলেও পরিস্থিতি বুঝে আমরা কাঁচা আমই পেড়ে নিচ্ছি ৷ কারণ এই সময় ঝড় হলে আমের আর কিছু থাকবে না ৷ পুরো পথে বসে যাব ৷”