মালদা, 7এপ্রিল : কেঁচো খুঁড়তে গিয়ে কেউটে । মালদার রতুয়া থেকে রাজস্থান যাওয়ার পথে প্রায় চার লক্ষ টাকার চোরাই কাঠ বাজেয়াপ্ত হল ৷ ঘটনার অভিযুক্ত তিনজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ ৷ এরপর তাদের জেলা আদালতে পেশ করা হয় ।
গোপন সূত্রে খবর পেয়ে, 2 এপ্রিল রাতে রতুয়া থেকে রাজস্থান যাওয়ার পথে প্রায় চার লক্ষ টাকার চোরাই কাঠ বাজেয়াপ্ত করে বন দফতর । এ প্রসঙ্গে মালদা রেঞ্জের ফরেস্ট রেঞ্জ অফিসার সুজিতকুমার চট্টোপাধ্যায় বলেন, “এমনিতেই আমাদের প্রতিদিন পেট্রলিং চলে । খবর পেয়ে বুধবার আমরা মালদা শহরের স্টেশন রোড থেকে কাঠবোঝাই একটি লরি আটক করি। ওই লরিতে প্রায় চার লক্ষ টাকার চেরাই আমকাঠ ছিল। চালকের কাছ থেকে আমরা একটি ট্রানজিট পাসও পাই। সেই টিপি কালিয়াচক রেঞ্জ থেকে ইস্যু করা হয়েছিল । টিপি দেখে আমাদের সন্দেহ হয় । টিপি অনুযায়ী কাঠ রতুয়া 2 নম্বর ব্লকের পরাণপুর থেকে রাজস্থান নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল । এনিয়ে আমরা খোঁজখবর নিয়ে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করি । ওই লরির চালক, রাজস্থানের বাসিন্দা ইমরত সিংকে আমরা গ্রেফতার করেছি। তাকেও পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। এর পরবর্তী তদন্ত পুলিশই করবে।”
এদিকে ইংরেজবাজার থানার পুলিশ জানিয়েছে, বন দফতরের হাতে ধৃত ইমরত সিংকে জেরা করে এই চক্রের মূল পান্ডার সন্ধান পাওয়া যায়। তার নাম গৌতম কর্মকার। বাড়ি গাজোলে। ওইদিন রাতেই গাজোল থেকে তাকে ধরা হয়। গ্রেফতার করা হয় এই চক্রের আরেক সদস্য ইংরেজবাজারের সোহেল রানাকে। পুলিশি জেরায় গৌতম স্বীকার করে নেয়, নিজেকে ফরেস্ট রেঞ্জ অফিসার পরিচয় দিয়ে সে কাঠ পাচার করত (Fake Forest Ranger)। ভুয়ো নথি তৈরির জন্য সে বন দফতরের সিলও তৈরি করেছিল। বৃহস্পতিবার তিন জনকেই সাতদিনের পুলিশি হেফাজতের আবেদন জানিয়ে জেলা আদালতে পেশ করা হয়।
এপ্রসঙ্গে পুলিশ সুপার অমিতাভ মাইতি জানিয়েছেন, চোরাই কাঠ পাচারের দায়ে রাজস্থানের এক বাসিন্দাকে ইংরেজবাজার থানার হাতে তুলে দেয় বন দফতর। তাদের তরফে থানায় একটি অভিযোগও দায়ের করা হয়। সেই অভিযোগের তদন্তে নেমে এই চক্রের আরও দুই সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর মধ্যে গৌতম কর্মকার নামে একজন ভুয়ো সরকারি সিল ব্যবহার করে কাঠ পাচার করত। পুলিশি হেফাজতের আবেদন জানিয়ে ধৃতদের আজ জেলা আদালতে পেশ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন : পাচারের আগেই উদ্ধার 40 লক্ষের সেগুন, গ্রেফতার ভিনরাজ্যের দুই
আদালতে যাওয়ার পথে ভুয়ো অফিসার গৌতম বলে, “আমি আগে বন দফতরে অস্থায়ী কাজ করতাম। এখন একটা দোকানে কাজ করি। কাঠ চালানের জন্য আমি দু‘টো বন দফতরের ভুয়ো সিল বানিয়েছিলাম। একটি মালদা, দ্বিতীয়টি কালিয়াচক রেঞ্জের। সেই সিল ব্যবহার করে কাঠ চালান করতাম। দুটি সিল আমি থানায় জমা দিয়েছি। তবে নিজেকে কখনও ফরেস্ট রেঞ্জ অফিসার বলে পরিচয় দিইনি।”