ETV Bharat / state

জল সংকট এড়াতে ব্যবস্থা নিচ্ছে ইংরেজবাজার পৌরসভা - Malda corporatioon

মালদার ভরসা ভৌমজল । এই জলের স্তর যত কমবে মালদায় জলের কষ্ট তত বাড়বে । জলে মিশতে পারে আর্সেনিকও ।

ফাইল ফোটো
author img

By

Published : Jun 29, 2019, 1:23 PM IST

Updated : Jun 29, 2019, 2:35 PM IST

মালদা, 29 জুন : জলশূন্য চেন্নাই । অদূর ভবিষ্যতে দেশের 21 টি শহরের ভূগর্ভস্থ জলের স্তর শুকিয়ে যাবে । তেমনটাই জানিয়েছে নীতি আয়োগ । আগামীতে দেশের অনেক শহরেই জলসংকট তীব্র হতে পারে বলে আশঙ্কা । তাই প্রমাদ গুণেছে ইংরেজবাজার পৌরসভা । ভূগর্ভস্থ জলের ভাণ্ডার যাতে ফুরিয়ে না যায়, তার জন্য ইতিমধ্যে কয়েকটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে পৌর কর্তৃপক্ষ ।

মালদা শহরের আয়তন 13.25 বর্গ কিলোমিটার । জনসংখ্যা পেরিয়েছে তিন লাখ । 151 বছরের পুরোনো এই শহরের অন্যতম সমস্যা পানীয় জল । এখনও পর্যন্ত ভূগর্ভস্থ জল উত্তোলন করেই শহরবাসীকে তা সরবরাহ করছে পৌর কর্তৃপক্ষ । তার জন্য শহরের 29 টি ওয়ার্ডে বসানো হয়েছে 59 টি সাবমার্সিবল পাম্প । এই পাম্পগুলি দিয়ে প্রতিদিন কয়েক লাখ গ্যালন জল তুলে নেওয়া হয় । এর সঙ্গে গোটা শহরজুড়ে তৈরি হয়েছে কয়েকশো ফ্ল্যাট বাড়ি । অনেক ফ্ল্যাটেই পৌরসভার অনুমতি না নিয়েই অনিয়ন্ত্রিতভাবে ভূগর্ভস্থ জল তোলা হচ্ছে । ইতিমধ্যে গ্রীষ্মকালে তার ফল ভুগতে শুরু করেছে শহরবাসী। ভূগর্ভস্থ জলস্তর প্রতিবছরই নেমে যায় অনেক নীচে । ফলে সাধারণ পাম্প দিয়ে জল উত্তোলন করা যায় না ।

ইংরেজবাজার পৌরসভার চেয়ারম্যান নীহাররঞ্জন ঘোষ ETV ভারতকে বলেন, "দেশজুড়ে এখন জল সংকট চলছে । অনেক রাজ্যেই মাটির নীচ থেকে এক বিন্দুও জল পাওয়া যাচ্ছে না । ইতিমধ্যে মালদা জেলার বেশ কিছু জায়গাতেও প্রবল জল সংকট দেখা দিয়েছে । এই সংকট থেকে শহরবাসীকে মুক্তি দিতে আমরা মহানন্দা নদীর জল পরিস্রুত করে শহরে সরবরাহ করার প্রকল্প গ্রহণ করেছি । সেই কাজ শুরু হয়ে গেলেও কিছু ভুল থাকায় প্রকল্প খরচ অনেকটা বেড়ে গেছে । আমরা পরিবর্তিত প্রকল্প রাজ্য সরকারের কাছে পাঠিয়েছি । অনুমোদন হয়ে সেই প্রকল্পের টাকাও চলে এসেছে । ফলে থমকে থাকা কাজ ফের শুরু হচ্ছে । ইতিমধ্যে 11-12 টি ওয়ার্ডে নতুন পাইপলাইন বসানোর কাজ শেষ হয়েছে । পাইপ শেষ হয়ে যাওয়ায় বাকি ওয়ার্ডগুলিতে সেই কাজ স্থগিত ছিল। তবে নতুন পাইপ চলে এসেছে। ফলে বাকি কাজ শুরু হচ্ছে । এটা ঠিক, শহরের বেশ কিছু ফ্ল্যাটবাড়িতে বেআইনি উপায়ে ভূগর্ভস্থ জল অনিয়ন্ত্রিতভাবে তুলে নেওয়া হচ্ছে । পৌরসভাকে কিছু না জানিয়েই সাবমার্সিবল পাম্প ব্যবহার করা হচ্ছে । জল বিভাগের রিপোর্ট পেয়ে আমরা কয়েকটি ফ্ল্যাটবাড়িকে চিঠি দিয়েছি । সেই ফ্ল্যাটগুলির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে । প্রতিটি ফ্ল্যাটকে ভূগর্ভস্থ রিজার্ভার নির্মাণ করে সেখানে পৌরসভার সরবরাহ করা জলই ধরে রাখতে হবে । তবে বৃষ্টির জল ধরে রাখার জন্য আমরা এখনও কোনও উদ্যোগ নিতে পারিনি । বৃষ্টিও এখন আর তেমন হয় না । তবে নিজেদের বাঁচাতে গেলে মানুষকে অবশ্যই এগিয়ে আসতে হবে । জলের অপচয় রোধ করতে হবে । তা না হলে এমন দিন আসতে বেশি দেরি নেই, যেদিন মানুষের কাছে সব থাকবে, কিন্তু জল থাকবে না ।"

দেখুন ভিডিয়ো

নীহাররঞ্জনবাবু বলেন, "আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি অন্ততপক্ষে চারটি বড়ো প্রজাতির গাছ না লাগানো হলে পৌরসভা কোনও ফ্ল্যাটবাড়ি নির্মাণের অনুমতি দেবে না । পুকুর ভরাট রুখতে আমরা জেলাশাসকের দ্বারস্থ হচ্ছি । জেলা ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তর কোনও জমির পর্চা দেওয়ার আগে সেই জমির মিউটেশন যাতে বাধ্যতামূলক করে তার চেষ্টা চালাচ্ছি আমরা । তাতে কোনও জলাভূমি ভরাট করা হলে তা আগেই ধরা পড়বে । "

a
বহুতল তৈরিতে অবাধে চলছে ভূগর্ভস্থ জল তোলার কাজ

পরিবেশবিদরা বলছেন, "মালদা শহরে প্রতিদিন যে পরিমাণ জল অপচয় হয়, তাতে আরেকটি ছোট শহরের প্রতিদিনের চাহিদা মিটে যেতে পারে । তার উপর একের পর এক ফ্ল্যাটবাড়ি এই অপচয় আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে । পৌর কর্তৃপক্ষ এসব জানে । কিন্তু রাজনৈতিক কারণে কোনও পৌরবোর্ডই জল অপচয়ের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে পারে না । আর নদী থেকে জল উত্তোলন করে সেই জল কবে সরবরাহ হবে কেউ জানে না । সবচেয়ে বড় বিষয়, মালদা শহরের ভূগর্ভস্থ জলে আর্সেনিক মিশে রয়েছে । ভূগর্ভস্থ জলের পরিমাণ যত কমবে, সেই জলে আর্সেনিকের পরিমাণ তত বাড়বে । এভাবে চলতে থাকলে আগামী পাঁচ বছরের মধ্যেই এই শহরের বাসিন্দাদের জলের জন্য হাহাকার করতে হবে । এটা নিশ্চিত ভবিষ্যৎ ।"

মালদা, 29 জুন : জলশূন্য চেন্নাই । অদূর ভবিষ্যতে দেশের 21 টি শহরের ভূগর্ভস্থ জলের স্তর শুকিয়ে যাবে । তেমনটাই জানিয়েছে নীতি আয়োগ । আগামীতে দেশের অনেক শহরেই জলসংকট তীব্র হতে পারে বলে আশঙ্কা । তাই প্রমাদ গুণেছে ইংরেজবাজার পৌরসভা । ভূগর্ভস্থ জলের ভাণ্ডার যাতে ফুরিয়ে না যায়, তার জন্য ইতিমধ্যে কয়েকটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে পৌর কর্তৃপক্ষ ।

মালদা শহরের আয়তন 13.25 বর্গ কিলোমিটার । জনসংখ্যা পেরিয়েছে তিন লাখ । 151 বছরের পুরোনো এই শহরের অন্যতম সমস্যা পানীয় জল । এখনও পর্যন্ত ভূগর্ভস্থ জল উত্তোলন করেই শহরবাসীকে তা সরবরাহ করছে পৌর কর্তৃপক্ষ । তার জন্য শহরের 29 টি ওয়ার্ডে বসানো হয়েছে 59 টি সাবমার্সিবল পাম্প । এই পাম্পগুলি দিয়ে প্রতিদিন কয়েক লাখ গ্যালন জল তুলে নেওয়া হয় । এর সঙ্গে গোটা শহরজুড়ে তৈরি হয়েছে কয়েকশো ফ্ল্যাট বাড়ি । অনেক ফ্ল্যাটেই পৌরসভার অনুমতি না নিয়েই অনিয়ন্ত্রিতভাবে ভূগর্ভস্থ জল তোলা হচ্ছে । ইতিমধ্যে গ্রীষ্মকালে তার ফল ভুগতে শুরু করেছে শহরবাসী। ভূগর্ভস্থ জলস্তর প্রতিবছরই নেমে যায় অনেক নীচে । ফলে সাধারণ পাম্প দিয়ে জল উত্তোলন করা যায় না ।

ইংরেজবাজার পৌরসভার চেয়ারম্যান নীহাররঞ্জন ঘোষ ETV ভারতকে বলেন, "দেশজুড়ে এখন জল সংকট চলছে । অনেক রাজ্যেই মাটির নীচ থেকে এক বিন্দুও জল পাওয়া যাচ্ছে না । ইতিমধ্যে মালদা জেলার বেশ কিছু জায়গাতেও প্রবল জল সংকট দেখা দিয়েছে । এই সংকট থেকে শহরবাসীকে মুক্তি দিতে আমরা মহানন্দা নদীর জল পরিস্রুত করে শহরে সরবরাহ করার প্রকল্প গ্রহণ করেছি । সেই কাজ শুরু হয়ে গেলেও কিছু ভুল থাকায় প্রকল্প খরচ অনেকটা বেড়ে গেছে । আমরা পরিবর্তিত প্রকল্প রাজ্য সরকারের কাছে পাঠিয়েছি । অনুমোদন হয়ে সেই প্রকল্পের টাকাও চলে এসেছে । ফলে থমকে থাকা কাজ ফের শুরু হচ্ছে । ইতিমধ্যে 11-12 টি ওয়ার্ডে নতুন পাইপলাইন বসানোর কাজ শেষ হয়েছে । পাইপ শেষ হয়ে যাওয়ায় বাকি ওয়ার্ডগুলিতে সেই কাজ স্থগিত ছিল। তবে নতুন পাইপ চলে এসেছে। ফলে বাকি কাজ শুরু হচ্ছে । এটা ঠিক, শহরের বেশ কিছু ফ্ল্যাটবাড়িতে বেআইনি উপায়ে ভূগর্ভস্থ জল অনিয়ন্ত্রিতভাবে তুলে নেওয়া হচ্ছে । পৌরসভাকে কিছু না জানিয়েই সাবমার্সিবল পাম্প ব্যবহার করা হচ্ছে । জল বিভাগের রিপোর্ট পেয়ে আমরা কয়েকটি ফ্ল্যাটবাড়িকে চিঠি দিয়েছি । সেই ফ্ল্যাটগুলির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে । প্রতিটি ফ্ল্যাটকে ভূগর্ভস্থ রিজার্ভার নির্মাণ করে সেখানে পৌরসভার সরবরাহ করা জলই ধরে রাখতে হবে । তবে বৃষ্টির জল ধরে রাখার জন্য আমরা এখনও কোনও উদ্যোগ নিতে পারিনি । বৃষ্টিও এখন আর তেমন হয় না । তবে নিজেদের বাঁচাতে গেলে মানুষকে অবশ্যই এগিয়ে আসতে হবে । জলের অপচয় রোধ করতে হবে । তা না হলে এমন দিন আসতে বেশি দেরি নেই, যেদিন মানুষের কাছে সব থাকবে, কিন্তু জল থাকবে না ।"

দেখুন ভিডিয়ো

নীহাররঞ্জনবাবু বলেন, "আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি অন্ততপক্ষে চারটি বড়ো প্রজাতির গাছ না লাগানো হলে পৌরসভা কোনও ফ্ল্যাটবাড়ি নির্মাণের অনুমতি দেবে না । পুকুর ভরাট রুখতে আমরা জেলাশাসকের দ্বারস্থ হচ্ছি । জেলা ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তর কোনও জমির পর্চা দেওয়ার আগে সেই জমির মিউটেশন যাতে বাধ্যতামূলক করে তার চেষ্টা চালাচ্ছি আমরা । তাতে কোনও জলাভূমি ভরাট করা হলে তা আগেই ধরা পড়বে । "

a
বহুতল তৈরিতে অবাধে চলছে ভূগর্ভস্থ জল তোলার কাজ

পরিবেশবিদরা বলছেন, "মালদা শহরে প্রতিদিন যে পরিমাণ জল অপচয় হয়, তাতে আরেকটি ছোট শহরের প্রতিদিনের চাহিদা মিটে যেতে পারে । তার উপর একের পর এক ফ্ল্যাটবাড়ি এই অপচয় আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে । পৌর কর্তৃপক্ষ এসব জানে । কিন্তু রাজনৈতিক কারণে কোনও পৌরবোর্ডই জল অপচয়ের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে পারে না । আর নদী থেকে জল উত্তোলন করে সেই জল কবে সরবরাহ হবে কেউ জানে না । সবচেয়ে বড় বিষয়, মালদা শহরের ভূগর্ভস্থ জলে আর্সেনিক মিশে রয়েছে । ভূগর্ভস্থ জলের পরিমাণ যত কমবে, সেই জলে আর্সেনিকের পরিমাণ তত বাড়বে । এভাবে চলতে থাকলে আগামী পাঁচ বছরের মধ্যেই এই শহরের বাসিন্দাদের জলের জন্য হাহাকার করতে হবে । এটা নিশ্চিত ভবিষ্যৎ ।"

Intro:মালদা, 28 জুন : জলশূন্য চেন্নাই। আগামী এক বছর পরেই জলশূন্য হয়ে পড়বে দেশের আরও 21 টি শহর। সেই বার্তা ইতিমধ্যেই দিয়ে ফেলেছে নীতি আয়োগ। বার্তা পেয়ে আশঙ্কায় কাঁপছে মালদা শহর। আশঙ্কিত খোদ ইংরেজবাজার পৌরসভার চেয়ারম্যানও। ভূগর্ভস্থ জলের ভাণ্ডার যাতে শূন্য হয়ে না পড়ে, তার জন্য বেশ কয়েকটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে পৌর কর্তৃপক্ষ। শহরের আশঙ্কা ও তা থেকে উদ্ধারের দাওয়াই ইটিভি ভারতকে একান্তে জানিয়েছেন চেয়ারম্যান নীহাররঞ্জন ঘোষ।


Body:মালদা শহরের আয়তন 13.25 বর্গ কিলোমিটার। জনসংখ্যা পেরিয়েছে তিন লক্ষ। 151 বছরের পুরনো এই শহরের অন্যতম সমস্যা পানীয় জল। এখনো পর্যন্ত ভূগর্ভস্থ ভৌম জল উত্তোলন করেই শহরবাসীকে সরবরাহ করে পৌর কর্তৃপক্ষ। তার জন্য শহরের 29 টি ওয়ার্ডে বসানো হয়েছে 59 টি সাবমার্সিবল পাম্প। এই পাম্পগুলি দিয়ে প্রতিদিন কয়েক লক্ষ গ্যালন ভৌম জল তুলে নেওয়া হয়। এর সঙ্গে গোটা শহর জুড়ে তৈরি হয়েছে কয়েকশো ফ্ল্যাট বাড়ি। তাই 99% ফ্ল্যাট বাড়ি কারোর কাছ থেকে কোনো অনুমতি না নিয়েই অনিয়ন্ত্রিতভাবে ভূগর্ভস্থ জল উত্তোলন করছে প্রতিনিয়ত। ইতিমধ্যে গ্রীষ্মকালে তার ফল ভুগতে শুরু করেছে শহরবাসী। ভূগর্ভস্থ জলস্তর প্রতিবছরই নেমে যায় অনেক নীচে। ফলে সাধারণ পাম্প দিয়ে জল উত্তোলন করা যায় না। সময়ের স্রোতে গোটা পৃথিবীর সঙ্গে এই শহরেও এখন বৃষ্টিপাতের পরিমাণ অনেকটা কমে গেছে। চলতি বছর এখনো পর্যন্ত বর্ষার বৃষ্টির দেখা মেলেনি। তার উপর শহরের প্রায় প্রতিটি রাস্তা এখন মেস্টিকের চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছে। মেস্টিকের রাস্তা ভেদ করে বৃষ্টির জল ভূগর্ভে যেতে পারে না। তাই বৃষ্টি হলেও সেই জল পরবর্তী সময়ে রোদের তাপে শুকিয়ে যায়। এই অবস্থায় বড়ো প্রশ্ন, তাহলে কি মালদা শহর ধীরে ধীরে জলশূন্য হওয়ার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে?
এ এনিয়ে ইংরেজবাজার পৌরসভার চেয়ারম্যান নীহাররঞ্জন ঘোষ এক একান্ত সাক্ষাৎকারে ইটিভি ভারতকে বলেন, "দেশজুড়ে এখন জল সংকট চলছে। অনেক রাজ্যেই মাটির নীচ থেকে এক বিন্দু জল পাওয়া যাচ্ছে না। ইতিমধ্যে মালদা জেলার বেশ কিছু জায়গাতেও প্রবল জল সংকট দেখা দিয়েছে। এই সংকট থেকে শহরবাসীকে মুক্তি দিতে আমরা মহানন্দা নদীর জল পরিশুদ্ধ করে শহরে সরবরাহ করার প্রকল্প গ্রহণ করেছি। সেই কাজ শুরু হয়ে গেলেও কিছু ভুল থাকায় প্রকল্প খরচ অনেকটা বেড়ে গেছে। আমরা পরিবর্তিত প্রকল্প রাজ্য সরকারের কাছে পাঠিয়েছি। অনুমোদন হয়ে সেই প্রকল্পের টাকাও চলে এসেছে। ফলে থমকে থাকা কাজ ফের শুরু হচ্ছে। ইতিমধ্যে 11-12 টি ওয়ার্ডে নতুন পাইপলাইন বসানোর কাজ শেষ হয়েছে। পাইপ শেষ হয়ে যাওয়ায় বাকি ওয়ার্ডগুলিতে সেই কাজ স্থগিত ছিল। তবে নতুন পাইপ চলে এসেছে। ফলে বাকি কাজ শুরু হচ্ছে। এটা ঠিক, শহরের বেশ কিছু ফ্ল্যাটবাড়িতে বেআইনি উপায়ে ভূগর্ভস্থ জল অনিয়ন্ত্রিতভাবে তুলে নেওয়া হচ্ছে। পৌরসভাকে কিছু না জানিয়েই সাবমার্সিবল পাম্প ব্যবহার করা হচ্ছে। জল দপ্তরের রিপোর্ট পেয়ে আমরা কয়েকটি ফ্ল্যাটবাড়িকে চিঠি দিয়েছি। সেই ফ্ল্যাটগুলির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে। প্রতিটি ফ্ল্যাটকে ভূগর্ভস্থ রিজার্ভার নির্মাণ করে সেখানে পৌরসভার সরবরাহ করা জলই ধরে রাখতে হবে। এরই মধ্যে একটি নির্মীয়মান ফ্ল্যাটে বেআইনিভাবে সাবমার্সিবল পাম্প বসানোর অভিযোগ পেয়েছি। সেই ফ্ল্যাটে অভিযান চালানো হচ্ছে। তবে বৃষ্টির জল ধরে রাখার জন্য আমরা এখনও কোনও উদ্যোগ নিতে পারিনি। বৃষ্টিও এখন আর তেমন হয় না। তবে নিজেদের বাঁচাতে গেলে মানুষকে অবশ্যই এগিয়ে আসতে হবে। জলের অপচয় রোধ করতে হবে। তা না হলে এমন দিন আসতে বেশি দেরি নেই, যেদিন মানুষের কাছে সব থাকবে, কিন্তু জল থাকবে না।"
নীহারবাবু বলেন, "গাছপালা ধ্বংস করে আমরাই প্রকৃতিকে নষ্ট করেছি। এখনো করে যাচ্ছি। তাই এবার আমরা শহরে গাছ লাগানোর কর্মসূচি নিয়েছি। শুধু তাই নয়, এবার থেকে অন্ততপক্ষে চারটি বড়ো প্রজাতির গাছ না লাগানো হলে পৌরসভা কোনও ফ্ল্যাবাড়ি নির্মাণের অনুমতি দেবে না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। একইসঙ্গে পুকুর ভরাট রুখতেও আমরা জেলাশাসকের দ্বারস্থ হচ্ছি। জেলা ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তর কোনও জমির পর্চা দেওয়ার আগে সেই জমির মিউটেশন যাতে বাধ্যতামূলক করে তার চেষ্টা চালাচ্ছি আমরা। তাতে কোনও জলাভূমি ভরাট করা হলে তা আগেই ধরা পড়বে। যেভাবেই হোক, শহরের ভূগর্ভস্থ জলস্তর যাতে আর নীচে না নামে তার জন্য এখন থেকেই আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি।"


Conclusion:পরিবেশবিদরা বলছেন, জলের অপচয় মালদা শহরের সবচেয়ে বেশি সমস্যা। এই শহরে প্রতিদিন যে পরিমাণ জল অপচয় হয়, তাতে আরেকটি ছোট শহরের প্রতিদিনের চাহিদা মিটে যেতে পারে। তার উপর একের পর এক ফ্ল্যাটবাড়ি এই অপচয়কে আরো বাড়িয়ে দিচ্ছে। পৌর কর্তৃপক্ষ এসব জানে। কিন্তু রাজনৈতিক কারণে কোন পৌরবোর্ডই জল অপচয়ের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে পারে না। আর নদী থেকে জল উত্তোলন করে সেই জল কবে সরবরাহ হবে কেউ জানে না। সবচেয়ে বড় বিষয়, মালদা শহরের ভূগর্ভস্থ জলে আর্সেনিক মিশে রয়েছে। ভৌম জলের পরিমাণ যত কমবে, সেই জলে আর্সেনিকের পরিমাণ তত বাড়বে। তাই এভাবে চলতে থাকলে আগামী পাঁচ বছরের মধ্যেই এই শহরের বাসিন্দাদের জলের জন্য হাহাকার করতে হবে। এটা নিশ্চিত ভবিষ্যৎ।
Last Updated : Jun 29, 2019, 2:35 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.