মালদা, 30 জানুয়ারি : একুশের ভোট যত এগিয়ে আসছে, দলীয় টিকিটের চাপ ততই বাড়ছে জেলা তৃণমূলে । সবাই জানে, রাজ্যের প্রতিটি বিধানসভা কেন্দ্রে দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবুও এই জেলার 12টি আসনের প্রার্থীপদে একাধিক দাবিদার হওয়ায় সমস্যায় পড়েছে শাসকদলের জেলা নেতৃত্ব। তবে এখনও সুজাপুর কেন্দ্রটি কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূলও প্রয়াত গনি খানের নামে উৎসর্গ করে রেখেছে । এমনই জানালেন শাসকদলের জেলা কো-অর্ডিনেটর দুলাল সরকার।
দুলালবাবু এই বিষয়ে বলেন, "ইতিমধ্যে হবিবপুর আসনের জন্য চার থেকে পাঁচজন আমার মাধ্যমে দলের জেলা সভানেত্রীর সঙ্গে ভোটের টিকিটের জন্য যোগাযোগ করছেন । মালদা আসনের জন্যও 4-5 জন নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন। যা বিগত দিনে দেখা যায়নি। গাজোল, হরিশ্চন্দ্রপুর, চাঁচল, মালতিপুর, বৈষ্ণবনগর, মোথাবাড়ি, মানিকচক কেন্দ্রের জন্য যাঁরা পুরানো কর্মী, যাঁরা সদ্য দলে যোগ দিয়েছেন, যাঁরা দলের কাজ করছেন, তাঁরাও নিজের নিজের কেন্দ্রে প্রার্থী হতে চেয়ে আমাদের কাছে ধরনা দিয়ে যাচ্ছেন। আর ইংরেজবাজার কেন্দ্র নিয়ে তো কথাই নেই। কোনও কেন্দ্রেই পাঁচ থেকে সাতজনের নিচে দাবিদার নেই । এতে আমাদেরও সমস্যা বাড়ছে । তবে যেহেতু সব খবর নেওয়ার পর খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রার্থী চূড়ান্ত করেন, তাই কাউকে আমাদের প্রতিশ্রুতি দেওয়ার নেই, কিছু বলারও নেই । আমি জন্মলগ্ন থেকে এই দলের সঙ্গে আছি । নিজে তিনটি নির্বাচন করেছি । দুটি বিধানসভা নির্বাচনে প্রার্থীও হয়েছি । টিকিটের জন্য এমন দাবিদার এর আগে কখনও দেখিনি ।"
কিন্তু বলা হচ্ছে, এবার বিজেপি গোটা রাজ্যেই তৃণমূলের শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী। তার মধ্যেও প্রার্থীপদের এত দাবিদার কেন? দুলালবাবুর উত্তর, "এটা সাফোলা তেলের মতো। যিনি বিজ্ঞাপনে বলতেন, সাফোলা খেলে হৃদযন্ত্র ভালো থাকবে, তিনিই হৃদরোগে আক্রান্ত হচ্ছেন । বিজেপির অবস্থাও তাই । তারা প্রচার করছে । কিন্তু সেই প্রচার কাজে আসবে না । মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আছে । রাজ্যে তৃণমূলই থাকবে।"
আরও পড়ুন, ঠাকুরনগরে যে কোনও দিন হতে পারে অমিত শাহের সভা : মুকুল
তবে কংগ্রেসের মতো তৃণমূল সুজাপুর বিধানসভা কেন্দ্রটি প্রয়াত গনি খানের নামে উৎসর্গ করেছে । তা বোঝা গিয়েছে দুলালবাবুর কথায় । তিনি বলেন, "সুজাপুর আসনের সঙ্গে গনি খানের আবেগ জড়িয়ে রয়েছে। ওই আসনে গনি খানের পরিবারের সদস্যরাই ভোটে দাঁড়ান। আমাদের সভানেত্রীও ওই আসন থেকে বিধায়ক নির্বাচিত হয়েছিলেন। ওই আসন নিয়ে আমার কিছু বলা ঠিক নয়। গনি খান পরিবারের অনেকেই ওই আসনে দাঁড়াতে চেয়ে আমাদের কাছে আবেদন জানিয়েছেন। ওই আসনের জন্য জেলা সভানেত্রী ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের যৌথ উদ্যোগে প্রার্থী নির্বাচিত হবে। তবে ওই আসনে বাইরের কয়েকজন দাবিদার রয়েছেন। তার মধ্যে রয়েছেন বিভিন্ন কলেজের অধ্যাপক ও অধ্যক্ষরাও। দলের নেতাদের মধ্যেও কয়েকজন সুজাপুরে দাঁড়াতে চেয়ে যোগাযোগ করছেন। তবু আমি ওই আসন নিয়ে কিছু বলতে রাজি নই। সুজাপুর গনি খানের নির্বাচনী ক্ষেত্র ছিল ৷ পরবর্তীতে তাঁর পরিবারের লোকজন ওই আসনের প্রার্থী হয়ে এসেছেন । তাই আমরা গনি খানকে শ্রদ্ধা জানিয়েই ওই আসনে প্রার্থী ঠিক করি ।"