মালদা, 29 এপ্রিল : কোরোনা আক্রান্তদের চিকিৎসায় নিযুক্ত স্বাস্থ্যকর্মীদের আলাদা থাকার ব্যবস্থা করল মালদা প্রশাসন ৷ কোরোনা চিকিৎসার যে হাসপাতালগুলি চিহ্নিত করা হয়েছে । তার আশপাশেই একটি চারতলা বাড়িতে কোরোনা হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসক, নার্স সহ অন্য স্বাস্থ্যকর্মীদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে ৷ আজ সেখানকার পরিকাঠামো খতিয়ে দেখতে যান অতিরিক্ত জেলাশাসক অশোককুমার মোদক, জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ভূষণ চক্রবর্তী, কোরোনার দায়িত্বপ্রাপ্ত নোডাল অফিসার, ডেপুটি CMOH (2) অমিতাভ মণ্ডল সহ অন্যরা ৷ তবে ওই ভবনে কতজনের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে, তা এখনও জানা যায়নি ৷
রাজ্যের অন্য জেলাগুলির মতো মালদাতেও কোরোনা আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য দুটি নার্সিং হোমকে চিহ্নিত করা হয়েছে । একটি পুরাতন মালদায় ও দ্বিতীয়টি চাঁচলে ৷ প্রথম পর্যায়ে পুরাতন মালদার নারায়ণপুরের নার্সিং হোমেই কোরোনা চিকিৎসার প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো গড়ে তোলা হয়েছে ৷ ওই নার্সিং হোমের তৃতীয় ও চতুর্থ তলে থাকা 70টি বেড কোরোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য তৈরি রাখা হয়েছে ৷ দ্বিতীয় তলে থাকা 30টি বেড রাখা হয়েছে সিভিয়ার অ্যাকিউট রেসপিরেটরি ইলনেসে (SARI) ভোগা রোগীদের চিকিৎসার জন্য ৷
নারায়ণপুরের ওই নার্সিং হোমে কোরোনা আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য চিকিৎসক, নার্স ও অন্য স্বাস্থ্যকর্মীদের তিনটি দল তৈরি রাখা হয়েছে ৷ সব মিলিয়ে প্রতিটি দলে প্রায় 21 জন রয়েছেন ৷ একটি দল টানা সাতদিন কাজ করবে ৷ পরবর্তী 14 দিন ওই দলের সদস্যরা বাধ্যতামূলক কোয়ারানটিনে যাবেন ৷ তখন দ্বিতীয় দল কাজে যোগ দেবে ৷ এই স্বাস্থ্যকর্মীদের থাকার জন্যই কোরোনা হাসপাতালের পাশে একটি বিল্ডিংয়ে ব্যবস্থা করা হয়েছে ।
গত পরশু থেকে মালদায় কোরোনা রোগী চিহ্নিত হতে শুরু করেছে ৷ প্রথমে মানিকচক, তারপর রতুয়া ১ ব্লকে দু’জনের লালারস পরীক্ষায় মিলেছে কোরোনা ভাইরাস ৷ দু’জনকেই পাঠানো হয়েছে শিলিগুড়ির মাটিগাড়ার কোরোনা হাসপাতালে ৷ এনিয়ে জেলার অনেকেই প্রশ্ন তুলেছে, জেলায় কোরোনা হাসপাতাল তৈরি করা হলেও সেখানে রোগীদের ভরতি করা হচ্ছে না কেন ? জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে খবর, এই মুহূর্তে কোরোনা ভাইরাস যত কম জায়গায় ছড়াতে পারে তারই চেষ্টা চলছে ৷ শিলিগুড়ির ওই হাসপাতালে প্রায় 400 বেড রয়েছে ৷ তাই রাজ্য সরকার আপাতত সেই হাসপাতালেই কোরোনা আক্রান্তদের চিকিৎসার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ৷
এদিকে পুরাতন মালদার নারায়ণপুরের ওই হাসপাতালে আজই একজনকে ভরতি করা হয়েছে ৷ ওই রোগীর বাড়ি আইহো গ্রাম পঞ্চায়েতের ঋষিপুর এলাকায় ৷ তাঁর ছেলে বলেন, "মাসখানেক ধরে বাবার জ্বর ছিল ৷ সর্দি-কাশিও ছিল ৷ জিভে ঘা হয়েছিল ৷ কয়েকদিন ধরে তাঁর জ্বর বেড়ে যায় ৷ শ্বাসকষ্টও শুরু হয় ৷ ওষুধ খাওয়ালেও জ্বর সারছিল না ৷ তাই আজ মালদা মেডিকেলে নিয়ে যাই ৷ সেখানকার চিকিৎসকরা তাঁকে নারায়ণপুরের হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন ৷ আমাকে বলা হয়েছে, বাবার বেশ কিছু পরীক্ষা হবে ৷ তারপরই এখান থেকে ছাড়া হবে ৷"