মালদা, 4 মে : মালদা জেলার রেশম চাষে আরও একবার আশার আলো দেখাল কেন্দ্রীয় সরকার ৷ ভারত সরকারের নীতি আয়োগের একটি প্রতিনিধিদল (Delegation of NITI Aayog in Malda) আজ কালিয়াচকের রেশম চাষ পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে খতিয়ে দেখে ৷ দলের প্রতিনিধিরা রেশম চাষি এবং ব্যবসায়ীদের সঙ্গেও কথা বলেন ৷ যদিও এ নিয়ে সংবাদমাধ্যমে বিস্তারিত কিছু জানাতে রাজি হননি তাঁরা ৷ তবে, তাঁদের এই পরিদর্শনে এলাকার রেশম চাষিদের মধ্যে নতুন করে উৎসাহ দেখা দিয়েছে ৷
আজ দুপুরে ভারত সরকারের নীতি আয়োগের তরফে চারজনের একটি প্রতিনিধি দল কালিয়াচকের রেশম চাষ খতিয়ে দেখার জন্য আসেন (Delegation of NITI Aayog in Malda to Gets Information About Silk Cultivation) ৷ দলের নেতৃত্বে ছিলেন নীতি আয়োগের প্রতিনিধি মধুমিতা শর্মা ৷ ছিলেন মালদা জেলার সেরিকালচার দফতরের ডেপুটি ডিরেক্টর অভিজিৎ গোস্বামী এবং কেন্দ্রীয় রেশম পর্ষদের দুই বিজ্ঞানী ড. জি শ্রীনিবাস ও ড. বিভি নাইডু ৷ তাঁরা তুঁতচাষ থেকে শুরু করে রেশম সুতো উৎপাদন পর্যন্ত প্রতিটি পর্যায় খতিয়ে দেখেন ৷
এ নিয়ে মধুমিতা শর্মা জানান, “পশ্চিমবঙ্গের মালদা জেলা রেশম উৎপাদনের জন্য বিখ্যাত ৷ এখানে কীভাবে রেশম উৎপাদিত হয় ? তার মান কেমন ? রেশমচাষিরা কীভাবে কাজ করছেন ? সে সব আজ আমরা খতিয়ে দেখলাম ৷ এখানকার চাষীরা সরকারি সহায়তা সত্ত্বেও, কিছু সমস্যার মধ্যে রেশম উৎপাদন করেন ৷ কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশে দেশ জুড়ে রেশমের উপর আমাদের একটি সমীক্ষা চলছে ৷ বিষয়টি গোপনীয় হওয়ায় তা নিয়ে সংবাদমাধ্যমে আমি বেশি কিছু জানাতে পারছি না ৷ দেশের বিভিন্ন রাজ্যে রেশম উৎপাদনের ক্ষেত্রে চাষীদের কী সমস্যা রয়েছে ? তাঁদের কী কী প্রয়োজন ? এই চাষে নতুন কী প্রকল্প নেওয়া যেতে পারে ? চাষীরা কী সুবিধে পাচ্ছেন ? তাঁদের আর কী সুবিধে প্রয়োজন ? সেসব নিয়েই এই সমীক্ষা বলে জানান ৷ আমরা চাষীদের কাছ থেকেই এ সব জানার চেষ্টা করছি ৷ এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট দফতরগুলির সঙ্গেও কথা বলা হচ্ছে ৷ আমরা মালদায় বিভিন্ন ধরনের রেশম দেখতে পেলাম ৷ সব মিলিয়ে আমরা একটি রিপোর্ট তৈরি করে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে জমা দেব ৷’’
আরও পড়ুন : পলুপোকার ডিমে বরাদ্দ বন্ধ রাজ্যের, সংকটে মালদার রেশম শিল্প
উল্লেখ্য, মালদা জেলায় প্রায় 21 হাজার একর জমিতে তুঁতের চাষ করা হয় ৷ জেলার প্রায় প্রতিটি ব্লকে চাষ হলেও সবচেয়ে বেশি রেশম উৎপাদন হয় কালিয়াচকের তিনটি ব্লকে ৷ গোটা জেলায় এই চাষের সঙ্গে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে জড়িয়ে রয়েছেন অন্তত পাঁচ লক্ষ মানুষ ৷ প্রায় 61 হাজার পরিবারের এই চাষ থেকেই সংসার চলে ৷ প্রায় সারা বছরই রেশম চাষ করেন তাঁরা ৷ বছরে গড়ে প্রায় দেড় হাজার মেট্রিক টন রেশম সুতো উৎপাদন হয় মালদায় ৷ এই রেশম সুতো মূলত উত্তর ও দক্ষিণ ভারতের বিভিন্ন জায়গায় রফতানি করেন ব্যবসায়ীরা ৷ কালিয়াচকে পাইকারি রেশম বাজার রয়েছে ৷ তবে চাষিদের দীর্ঘদিনের দাবি, এই জেলাতেই রেশম সুতো থেকে বস্ত্র তৈরির কারখানা করা হোক ৷ এর ফলে জেলার রেশমচাষের পরিধি আরও বাড়বে ৷ পাশাপাশি বিকল্প উপার্জন বাড়বে ৷ আরও বেশি কর্মসংস্থান হবে ৷ আজও কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের কাছে সেই দাবি জানিয়েছেন তাঁরা ৷