মালদা, 13 মে : একমাসের কৃচ্ছসাধনের পালা প্রায় শেষ ৷ আগামীকাল পালিত হবে ইদ উল ফিতর ৷ খুশির ইদ নামেই এই উৎসব পরিচিত ৷ কিন্তু গতবার থেকে খুশি নয়, বরং বিষাদের ছায়া ৷ করোনা কেড়ে নিয়েছে উৎসবের আনন্দ ৷ পরপর দুই মরশুমে জৌলুষহীন উৎসবে সামিল হতে চলেছেন ইসলাম ধর্মাবলম্বীরা ৷ সংখ্যালঘু অধ্যুষিত মালদা জেলাও তার ব্যতিক্রম নয় ৷ ভাইরাসের লাল চোখ এড়াতে এবারও জেলার কোনও ইদগাহ ময়দানে জমায়েত করে ইদের নমাজ পড়া হবে না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বিভিন্ন ইদ কমিটির কর্তারা ৷ ফলে এবারও সুজাপুর ইদগাহ ময়দানে ইদের নমাজে লক্ষাধিক মানুষের উপস্থিতি দেখতে পাওয়া যাবে না ৷
মুসলিম অধ্যুষিত জেলা হিসাবে পরিচিত মালদা ৷ ফলে ইদে এই জেলা খুশিতে মেতে ওঠে ৷ মুসলমানরাই শুধু নন, অনেক হিন্দু পরিবারও বন্ধুদের সঙ্গে এই উৎসবে সামিল হয় ৷ কিন্তু করোনায় গত বছর থেকে উৎসবে ভাঁটা পড়েছে ৷ একমাস উপোসের পর বাড়িতে ভালোমন্দ রান্না হলেও কেউ কাউকে নিমন্ত্রণ করে খাওয়াতে পারছে না ৷ আবার নিমন্ত্রণ পেলেও তা রক্ষা করতে পারছে না কেউ ৷ সকাল থেকে রাত পর্যন্ত নতুন জামাকাপড়ে ঘুরে বেড়ানোর উপায় নেই ৷ সবই আনন্দ কেড়ে নিয়েছে ভাইরাস ৷
সংক্রমণ কিংবা তার জেরে মৃত্যুর তালিকা যাতে দীর্ঘায়িত না হয় তার জন্য এবারও সুজাপুর নয়ামৌজা ইদগাহ ময়দানে নমাজ পড়ায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে কর্তৃপক্ষ ৷ কমিটির সম্পাদক হামিদুর রহমান বলেন, “এবার প্রথমে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, ইদগাহ ময়দানেই সবাই একসঙ্গে ইদের নমাজ পড়ব ৷ পরবর্তীতে ঠিক করি, সরকার নির্ধারিত বিধি মেনেই নমাজ পড়া হবে ৷ প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকের পর আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি ৷ করোনা আবহে এবারও আমরা ইদগাহ ময়দানে ইদের নমাজ পড়ব না ৷ রাজ্যের দ্বিতীয় বৃহত্তম জামাত এবারও বন্ধ থাকবে ৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, 50 জন একসঙ্গে নমাজ পড়তে হবে ৷ কিন্তু ইদগাহ ময়দানে 50 জন নমাজ পড়লে দু’মিনিটের মধ্যে 50 হাজার লোক হয়ে যাবে ৷ তাই এবারও সবাই বাড়ি, ছাদ, পাড়া কিংবা জামে মসজিদে করোনার নিয়ম মেনে নমাজ পড়বে ৷ এই ভাইরাস যাতে দ্রুত বিদায় নেয়, তার জন্য আমরা আল্লার কাছে প্রার্থনা করব ৷”
আরও পড়ুন, খুশির ইদে কাঁটা করোনা, মাথায় হাত রায়গঞ্জের বস্ত্র ব্যবসায়ীদের
এদিকে মালদার মুসলিম কমিটি, আটকোশি আঞ্জুমান আকবারিয়া ইসলামিয়ার কোষাধ্যক্ষ মহম্মদ শারাফত আলি জানান, গতবারের মতো এবারও মালদা শহরের কোনও ইদগাহে নমাজ পাঠ হবে না ৷ করোনার জন্য এবারও সেটা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে ৷ শহরের প্রতিটি মহল্লায় তা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে ৷ শহরের মূল ইদগাহও এবার ইদের দিন বন্ধ থাকবে ৷ কারণ, করোনার প্রকোপ থেকে আগে সবাইকে বেঁচে থাকতে হবে ৷ জীবন থাকলে তবেই উৎসব ৷