মালদা, 19 এপ্রিল : মালদায় এপর্যন্ত কোনও কোরোনা আক্রান্তের খোঁজ পাওয়া যায়নি । তবে, কোরোনা মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছে মালদা জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ । গতকাল মালদা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের কোরোনা পরীক্ষাকেন্দ্র পরিদর্শনে এসেছিলেন উত্তরবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত কোরোনা টাস্ক ফোর্সের সদস্য অভিজিৎ চৌধুরি । মালদা মেডিকেল কর্তৃপক্ষ, চিকিৎসক ও জেলা প্রশাসনিক কর্তাদের নিয়ে দীর্ঘক্ষণ রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন । বৈঠক শেষে কোরোনা পরীক্ষাকেন্দ্র পরিদর্শন করেন তিনি । শেষে অভিনন্দ বর্তমানের উদাহরণ টেনে বলেন, "অভিনন্দন বর্তমান যেভাবে শত্রুদের ঘরে ঢুকে বিনাশ করে এসেছিলেন, চিকিৎসকরাও তেমনই বীরত্বের কাজ করছেন । ওঁদের বীরের মর্যাদা দিন ।"
দীর্ঘদিন ধরেই মালদা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে কোরোনা পরীক্ষাকেন্দ্র করার দাবি উঠছিল । সেই দাবি মতো মালদা মেডিকেলে PCR মেশিন বসানো হয় । কিন্তু প্রথমে পরীক্ষার কিট না আসায় ও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি না মেলায় কোরোনা পরীক্ষা শুরু করা যায়নি । পরে কিট এলে সেই কাজ শুরু হয় । পরীক্ষাকেন্দ্রে প্রয়োজনীয় কুলার বসানোর কাজের জন্য ফের বন্ধ করে দেওয়া হয় মালদা মেডিকেলে কোরোনা পরীক্ষা । গতকাল পরীক্ষাকেন্দ্রটি পরিদর্শনে আসেন প্রফেসর অভিজিৎ চৌধুরি । মালদা মেডিকেল কর্তৃপক্ষ, চিকিৎসক ও জেলা প্রশাসনিক কর্তাদের নিয়ে দীর্ঘক্ষণ রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন তিনি। বৈঠক শেষে মালদা মেডিকেলের কোরোনা পরীক্ষাকেন্দ্র পরিদর্শন করেন।
সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে অভিজিৎবাবু বলেন, “কোরোনা মোকাবিলায় প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে আমাদের মালদায় আসার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল । মালদায় এখনও পর্যন্ত একটিও কোরোনা আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা ঘটেনি । মালদায় যদি এই সৌভাগ্য বজায় থাকে তাহলে আমরা সবচেয়ে বেশি খুশি হব । কিন্তু আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে । সারা দেশে যেভাবে সংক্রমণ হচ্ছে, যদি আগামীতে মালদায় কোরোনা আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা ঘটে তবে আমরা কী ব্যবস্থা নেব তা নিয়েই চিকিৎসক ও জেলা প্রশাসনকে সঙ্গে নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে । মালদায় কোথায় কোথায় কোরোনা হাসপাতাল হবে তা আমরা ইতিমধ্যেই চিহ্নিত করেছি । মালদা মেডিকেলের কোরোনা পরীক্ষা ব্যবস্থা আমরা দেখলাম । আমরা সেই রিপোর্ট সরকারের কাছে দেব । তারপরেই সরকার থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে কবে থেকে মালদায় কোরোনা পরীক্ষা শুরু হবে । আমার মনে হয়, খুব শীঘ্রই মালদা মেডিকেলে কোরোনা পরীক্ষা শুরু হবে । মালদায় সরকারি চিকিৎসক ছাড়াও যেসব চিকিৎসক রয়েছেন তাঁদের ভূমিকা নিয়েও আলোচনা হয়েছে । কারণ এই সমস্যাকে হালকাভাবে নেওয়া যাবে না । মানুষ আতঙ্কিত হয়ে স্বাস্থ্যকর্মীদের পাড়া থেকে বের করে দেওয়ার মতো ঘটনা ঘটছে । কোথাও কোরোনা হাসপাতাল হলে যেন পাড়ায় ডাইনি চলে এল । এই ধরনের মনোভাব কমাতে হবে । কোরোনা আকাশে বাতাসে ছড়ায় না । এই মুহূর্তে স্বাস্থকর্মীদের বীরের মর্যাদা দেওয়া উচিত ।”
বীর বলতে গিয়েই তিনি উদাহরণ টানেন অভিনন্দন বর্তমানের । বলেন, “কোরোনা মোকাবিলা করছেন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা । তাঁদের দূরে সরিয়ে না দিয়ে বীরের মর্যাদা দিন । অভিনন্দন বর্তমান যেমন ঘরে ঢুকে শত্রুদের বিনাস করেছিল, সেইভাবেই চিকিৎসকরা ঘরে ঢুকে কোরোনার মোকাবিলা করছেন । অভিনন্দন বর্তমান যে গৌরবজনক ভূমিকা পালন করেছিলেন চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীরাও সেই ভূমিকা পালন করছেন । আমরা তাঁকে যেমন সম্মান দিয়েছি, ঠিক সেইভাবেই দেশবাসী ও রাজ্যবাসীর উচিত চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীদের বীরের সম্মান দেওয়া । আজকের আলোচনায় চিকিৎসকদের সুরক্ষার প্রশ্নও উঠে এসেছে । চিকিৎসকদের সুরক্ষা আরও কতটা বাড়ানো যায় তার দিকে লক্ষ্য রাখা হবে । সমস্ত চিকিৎসককে সুরক্ষিত রাখতে প্রয়োজনীয় সুরক্ষা সামগ্রী নিয়েও আলোচনা হয়েছে ।”