মালদা, 19 অক্টোবর : দেশে কোরোনার দাপট বহাল থাকলেও আনলক পর্বে রাজ্য ছেড়ে ফের একবার ভিন রাজ্যে পাড়ি দিচ্ছেন পরিযায়ী শ্রমিকরা ৷ তেমনই মালদা থেকে ফের নিজেদের পুরানো কর্মস্থলে ফিরে গিয়েছেন তাঁরা ৷ প্রতিদিনই জেলা থেকে শ'য়ে শ'য়ে শ্রমিক ভিনরাজ্যে পাড়ি দিচ্ছেন ৷ তেমনই 2 সেপ্টেম্বর টাওয়ার নির্মাণের কাজ চলাকালীন দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় তাঁর ৷ 13 দিন পর তাঁর দেহ ফিরেছিল বাড়িতে ৷ কিন্তু এখনও পর্যন্ত তাঁর পরিবার কোনও সরকারি সহায়তা পায়নি ৷ এই পরিস্থিতিতে 33 বছর বয়সি মৃত ওই পরিযায়ী শ্রমিকের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে CITU ৷ আজ সানওয়ার শেখের বাড়িতে গিয়ে সংগঠনের নেতৃত্ব পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছে ৷
CITU-র জেলা সম্পাদক দেবজ্যোতি সিন্হা জানিয়েছেন, মানিকচকের নূরপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার ব্রাহ্মণগ্রামের 33 বছরের যুবক সানওয়ার শেখ হিমাচল প্রদেশে টাওয়ার নির্মাণের কাজ করতে গিয়েছিলেন ৷ লকডাউনে যখন দুই সরকারের ঝামেলায় এই রাজ্যে কোনও স্পেশাল ট্রেন ঢুকতে পারেনি, তখন জেলার অনেক পরিযায়ী শ্রমিক নিজেদের উদ্যোগে ঘরে ফিরেছিলেন ৷ বামফ্রন্টের প্রতিটি দল ও তাদের ছাত্র, যুব ও শ্রমিক সংগঠন এই শ্রমিকদের পাশে দাঁড়িয়েছে ৷ অনেক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাও এই শ্রমিকদের পাশে দাঁড়ায় ৷ কিন্তু, অর্থ সহ নানাবিধ সমস্যায় সানওয়ার বাড়ি ফিরতে পারেননি ৷ শেষে 2 সেপ্টেম্বর নির্মীয়মাণ টাওয়ার থেকে পড়ে তিনি মারা যান ৷ নির্মাণকারী সংস্থাই তাঁর দেহ ঘরে ফেরানোর উদ্যোগ নেয় ৷ অভিযোগ উঠেছে, তৃণমূল পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি, এমনকী এলাকার বাসিন্দা জেলা পরিষদের সভাধিপতিও সানওয়ারের পরিবারের পাশে দাঁড়ায়নি ৷ শুধু এক্ষেত্রেই নয়, লকডাউন ও তার পরবর্তী সময় ভিনরাজ্যে মৃত মালদার 20 জন শ্রমিকের কারোর পরিবারের পাশেই দাঁড়ায়নি রাজ্যের শাসকদল কিংবা BJP ৷ CITU এই শ্রমিকদের পরিবারকে সঙ্গে নিয়ে জেলাশাসকের কাছে ডেপুটেশন দিয়েছে ৷ রাজ্য সরকারকেও চিঠি দিয়েছে ৷
মৃত সানওয়ারের বিবি হেলিয়া বেওয়া জানান, পরিবারে একমাত্র উপার্জনকারী ব্য়ক্তি ছিলেন তাঁর শওহর ৷ বয়স হয়ে যাওয়ায় শ্বশুরমশাই কোনও কাজকর্ম করতে পারেন না ৷ এদিকে তাঁদের দুটি ছোটো ছেলে ও একটি মেয়ে রয়েছে ৷ এই অবস্থায় একমাত্র সরকারি সাহায্য পেলেই বেঁচেবর্তে থাকতে পারবেন ৷