মালদা, 26 জুন : বাংলাদেশ সীমান্ত পেরিয়ে মালদায় ঢুকে পড়া চিনা নাগরিক হান জুনেইকে নিজেদের হেফাজতে নিতে অবশেষে মালদা জেলা সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষকে আবেদন জানাল উত্তরপ্রদেশের এটিএস । আজ ওই রাজ্যের এটিএস বিভাগের দুই আধিকারিক জেলায় এসে পৌঁছান । জেলা সংশোধনাগারের তরফে হান জুনেইকে লখনউয়ের বিশেষ আদালতে হাজির করানোর জন্য জেলা আদালতে আবেদন জানানো হয় । আদালত সেই আবেদন মঞ্জুর করেছে । যদিও এই বিষয়ে সংবাদমাধ্যমের কাছে মুখ খুলতে রাজি নন আধিকারিকরা ৷
10 জুন কালিয়াচক 1 নম্বর ব্লকের আকন্দবেড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের মিলিক সুলতানপুর গ্রাম থেকে হান জুনেইকে গ্রেফতার করে সীমান্তরক্ষী বাহিনী । তার হেফাজত থেকে বাজেয়াপ্ত হয় দামি ল্যাপটপ, আইফোন, চিন, ভারত ও বাংলাদেশের সিমকার্ড, দুটি মাস্টারকার্ড, পেন ড্রাইভ, মানি ট্র্যানজ়াকশন মেশিন, আমেরিকান ডলার সহ ভারত ও বাংলাদেশের মুদ্রা । তার সঙ্গে ছিল বৈধ পাসপোর্টও ।
তাকে জেরা করে বিএসএফ জানতে পারে, সে অল্প কিছুদিনের মধ্যে অন্তত চারবার ভারতে আসা-যাওয়া করেছে । 11 জুন বিএসএফের তরফে তাকে কালিয়াচক থানার পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয় । 12 জুন জেলা আদালতে তাকে তোলা হয় । আদালতের নির্দেশে 18 জুন পর্যন্ত তাকে নিজেদের হেফাজতে নেয় কালিয়াচক থানার পুলিশ । কীভাবে সে কাঁটাতারের বেড়াবিহীন অরক্ষিত সীমান্ত দিয়ে এদেশে প্রবেশ করে, সেই ঘটনার পুনর্নির্মাণ হয় । এরই মধ্যে 16 জুন তাকে নিজেদের হেফাজতে নেয় রাজ্য পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স । কারণ, ততদিনে দেশের নিরাপত্তা সংস্থাগুলিও সন্দেহ করতে শুরু করেছে, ইংরেজির স্নাতক হান চিনা গুপ্তচর ।
আরও পড়ুন : নেপাল-ভুটানেও সক্রিয় ছিল হানের নেটওয়ার্ক ?
গতকাল এসটিএফের তরফে হানকে মালদা জেলা আদালতে তোলা হলে তার আইনজীবী জ্ঞানেন্দ্র দেবাং মক্কেলের জামিনের আবেদন করেন । একইসঙ্গে হানের ল্যাপটপ ও আইফোনও ফেরত দেওয়ার আবেদন জানান তিনি । যদিও সেই আবেদন খারিজ করে দেন জেলা আদালতের দায়িত্বপ্রাপ্ত মুখ্য দায়রা বিচারক রূপেন্দ্রনাথ বসু । এসটিএফ আর তাকে হেফাজতে নিতে না চাওয়ায় 9 জুলাই পর্যন্ত হানের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন তিনি ।
হানকে নিজেদের হেফাজতে নিতে গতকাল রাতেই মালদা জেলা সংশোধনাগারের সুপারের কাছে ই-মেল আসে উত্তরপ্রদেশ এটিএসের । আজ জেলায় আসেন এটিএস লখনউয়ের দুই প্রতিনিধি । তাঁরা জেলা সুপারের সঙ্গে গোটা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেন । জেলা সংশোধনাগারের সুপারও এনিয়ে আজ মালদা জেলার মুখ্য দায়রা বিচারকের আদালতে আবেদন জানান । ওই আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর মেহেতাব আলম বলেন, “উত্তরপ্রদেশের এটিএস হান জুনেইকে লখনউয়ের স্পেশাল সিজেএম কোর্টে উপস্থিত করার জন্য আবেদন জানিয়েছিল । সেই আবেদন গ্রাহ্য হয়েছে। আবেদনের ভিত্তিতে মালদা জেলা সংশোধনাগারের সুপারকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয় । 2 জুলাইয়ের মধ্যে হানকে ওই আদালতে পেশ করার নির্দেশ রয়েছে । তার প্রেক্ষিতে আজ মালদা জেলা সংশোধনাগারের সুপার জেলা আদালতে আবেদন জানান । আদালত সেই আবেদন মঞ্জুর করেছে । কীভাবে হানকে উত্তরপ্রদেশের লখনউয়ের স্পেশাল কোর্টে তিনি হাজির করবেন সেটা তাঁর বিষয় ।”