মালদা, 17 সেপ্টেম্বর : 196 নয়, গতকাল মালদা মেডিক্যালের শিশু বিভাগে ভর্তি ছিল 186টি শিশু । জানিয়েছেন মেডিক্যালের শিশু বিভাগের ভারপ্রাপ্ত প্রধান সুষমা সাহু । তিনি আরও জানিয়েছেন, মেডিক্যালে চিকিৎসাধীন কোনও শিশু করোনা সংক্রামিত নয় । তবে 13টি শিশুর শরীরে করোনা পরবর্তী উপসর্গ রয়েছে । উত্তরবঙ্গ জুড়ে জ্বর সহ বিভিন্ন উপসর্গ নিয়ে শিশুদের অসুস্থতা নিয়ে বৃহস্পতিবার মালদা মেডিক্যালে সাংবাদিক বৈঠক হয় ৷ সেখানে সুষমা সাহু ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন মেডিক্যালের অধ্যক্ষ পার্থপ্রতিম মুখোপাধ্যায় ও সহকারী অধ্যক্ষ পুরঞ্জয় সাহা ।
শিশু বিভাগের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বলেছেন, "15 সেপ্টেম্বর মালদা মেডিক্যালের শিশু বিভাগে ভর্তি ছিল 186টি শিশু । বৃহস্পতিবার বেলা দুটো পর্যন্ত সেখানে ভর্তি ছিল 164 টি শিশু । এর মধ্যে 29 জন বুধবার থেকে বৃস্পতিবার দুপুরের মধ্যে ভর্তি হয়েছে । 14 সেপ্টেম্বর ভর্তি ছিল 156টি শিশু ।" তিনি বলেন, "আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারছি না এমন পরিস্থিতি এখনও হয়নি । শীতের আগে এবং বর্ষার শেষে প্রতিটি বিভাগেই রোগীর সংখ্যা বাড়ে । শিশুরাও আক্রান্ত হয় । তাদের বেশিরভাগেরই জ্বর থাকে । তার সঙ্গে সর্দি-কাশি, পেট খারাপ সহ নানাবিধ উপসর্গ থাকে । অনেকের পরিস্থিতি খারাপও থাকে । তার জন্য যা যা করণীয়, আমরা করছি । স্বাস্থ্য বিভাগ, মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষ, এমনকি জেলাশাসকও যথেষ্ট তৎপর রয়েছেন ।"
সুষমাদেবী আশ্বস্ত করে বলছেন, "শিশু বিভাগে এক মাস থেকে 12 বছর বয়সী বাচ্চারা ভর্তি হয় । এখানে করোনা সংক্রমিত কেউ নেই । তবে করোনা পরবর্তী এমআইএসসি উপসর্গ (multisystem inflammatory syndrome in children) সমস্ত জায়গাতেই পাওয়া যাচ্ছে । মালদাও তার ব্যতিক্রম নয় । এখনও পর্যন্ত মালদা মেডিক্যালে 108টি শিশু এমআইএসসি নিয়ে ভর্তি হয়েছিল । চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে তারা বাড়ি ফিরে গিয়েছে । এই মুহূর্তে এখানে আরও 13টি এমআইএসসি উপসর্গযুক্ত শিশুর চিকিৎসা চলছে ।"
কেন এভাবে শিশুরা জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছে ? সুষমা সাহুর কথায়, "অ্যাকিউট ব্রঙ্কোলাইটিস বলে একটি রোগ আছে । মূলত শিশুরা এই রোগে আক্রান্ত হয় । এতে দু’মাস থেকে দু’বছরের শিশুদের আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে । ভাইরাসে আক্রান্ত শিশুদের জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা খুব বেশি । এতেই ভাইরাল ফিভার শব্দবন্ধ ছড়াচ্ছে । বর্তমানে পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে । আতঙ্কের কোনও কারণ নেই । এটা ঠিক, 120 বেডের ওয়ার্ডে অনেক বেশি শিশু ভর্তি থাকায় এক একটা বেডে একাধিক শিশুকে রাখতে হচ্ছে । কিন্তু আমাদের সবাইকেই চিকিৎসা করতে হবে । আমরা 12 জন চিকিৎসক ভর্তি থাকা শিশুদের চিকিৎসা করে যাচ্ছি ।"
মেডিক্যালের অধ্যক্ষ পার্থপ্রতিম মুখোপাধ্যায় বলেন, "অসুস্থ শিশুদের চিকিৎসা এবং পর্যবেক্ষণের জন্য আমরা অনেকগুলি বিভাগকে এক করেছি । এতে কোনও সমস্যা দেখা দিলে আমরা শুরুতেই ব্যবস্থা নিতে পারব । অসুস্থদের পরীক্ষার পর চিকিৎসা শুরু করতে সময় নষ্ট হবে না । এখানে পরিকাঠামোগত সমস্ত ব্যবস্থা আমরা রেখেছি । এখনও পর্যন্ত আতঙ্কের কোনও কারণ নেই । আমরা নিজেরাও সবসময় সচেতন রয়েছি ।" এদিকে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকালে শিশু বিভাগে মৃত পাঁচ বছরের মঙ্গল ডোম সিভিয়ার নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছিল । গতকালও একটি শিশু একই কারণে মারা গিয়েছিল । হবিবপুরের বাসিন্দা আরেকটি শিশুর মৃত্যু হয়েছিল ডায়ারিয়াজনিত সমস্যায় ।
আরও পড়ুন : Mamata Banerjee : ওটা সাধারণ জ্বর, উত্তরবঙ্গে শিশু মৃত্যুর কারণ জ্বর নয়; মন্তব্য মমতার