মালদা, 28 এপ্রিল : একদিকে চোরাকারবারি, অন্যদিকে বিএসএফ ৷ ভয় রয়েছে দু’দিক থেকেই ৷ এভাবেই দিনযাপন করে চলেছেন মালদা বিধানসভা কেন্দ্রের আইহো, ঋষিপুর ও শ্রীরামপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দারা ৷ তিনটি এলাকাই ইন্দো-বাংলাদেশ সীমান্তে ৷
মালদা কেন্দ্রের মধ্যে থাকলেও এই তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েত হবিবপুর ব্লকের অন্তর্গত ৷ ফলে যে কোনও কাজে গ্রামবাসীদের হবিবপুরেই যেতে হয় ৷ এভাবেই ভোট দিয়ে আসছেন তাঁরা ৷ এতদিন পুরাতন মালদা কিংবা ইংরেজবাজারের বাসিন্দারাই এই কেন্দ্রের বিধায়ক হয়ে এসেছেন ৷ অভিজ্ঞতা গ্রামবাসীদের শিখিয়ে দিয়েছে, যে দলেরই বিধায়ক হোন না কেন, এই তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েতের মানুষ নিজেদের পাশে বিধায়ককে সবসময় পাবেন না ৷ একমাত্র বড় কিছু হলেই তাঁদের দেখা মিলবে ৷ তার মধ্যেই আগামীকাল ভোটদানের প্রস্তুতি নিতে শুরু করে দিয়েছেন তাঁরা ৷
মালদা কেন্দ্রের মোট দু’লাখ 45 হাজার 305 জন ভোটারের মধ্যে 37 হাজার 324 জন এই তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দা ৷ ফলে এই তিন গ্রাম পঞ্চায়েতের ভোট এই কেন্দ্রের ফলে বেশ ভালোই ভূমিকা নেয় ৷ কিন্তু কোনও ভোটেই সীমান্ত গ্রামগুলিতে কোনও দল বড়সড় কোনও প্রচার করে না ৷ তারকা প্রচারকদের এখানে দেখতে পায় না কেউই ৷ এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি ৷ শুধুমাত্র প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরী শেষ সময়ে এসে এই কেন্দ্রে ছোট একটি সভা করে গিয়েছেন ৷ অনেক আগে একটি সভা করেছিলেন বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং ৷ এই দু’জন ছাড়া নামি কারোরই পা পড়েনি এই তিন পঞ্চায়েত এলাকায় ৷
সীমান্তরক্ষীদের কড়াকড়িতে এখন ঘরে সিঁধিয়ে রয়েছে চোরাকারবারিরা ৷ মাঝেমধ্যেই ছোটখাটো দু’একটি ঘটনার কথা শোনা গেলেও, তা তেমন কিছু নয় ৷ এলাকার বাসিন্দা উৎপল চৌধুরী বলছেন, “এই এলাকার অনেক গ্রাম একেবারে বাংলাদেশ সীমানায় ৷ আগে এই তিনটি পঞ্চায়েত এলাকা দিয়ে বাংলাদেশে নিয়মিত গরু পাচার হত ৷ এখন অবশ্য সে সব আর হয় না ৷ বিএসএফের কড়া নজরদারিতে চোরাকারবারিরা এখন সুবিধে করতে পারে না ৷ এখন অনেক শান্তিতে আছি ৷”
আরও পড়ুন : 'নিখোঁজ' কেষ্টর খোঁজ মিলল তারাপীঠের মন্দিরে
আইহো এলাকার বাসিন্দা নিশীথ মণ্ডল বলেন, “আমরা হবিবপুর ব্লকের বাসিন্দা ৷ এই এলাকার তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েত মালদা বিধানসভা কেন্দ্রে পড়ে৷ কিন্তু সমস্যা হল, ভোটে জেতার পর আমাদেরই বিধায়ক সীমান্ত এলাকায় উন্নয়নে কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছেন না ৷ আমরা এলাকার উন্নয়ন চাই ৷ তাই যে দলই জিতুক না কেন, এই এলাকার উন্নয়নে সেই দলের প্রার্থীকে কাজ করতে হবে ৷” একই বক্তব্য স্থানীয় বিশ্বনাথ মণ্ডলেরও ৷