মালদা, 11 জুলাই : সবে এসেছে বর্ষা । বৃষ্টি শুরু হয়েছে গতকাল থেকেই । আর তাতেই হাড়গোড় বেরিয়ে পড়েছে উত্তরবঙ্গ এবং উত্তর-পূর্ব ভারতের অন্যতম লাইফ লাইন, 34 নম্বর জাতীয় সড়কের ৷ গত 4 দিনে বেহাল রাস্তায় দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে 3 জনের ৷ মৃতদের মধ্যে একজন স্কুলছাত্র ৷ এনিয়ে ক্ষুব্ধ এলাকার বাসিন্দারা ৷ ক্ষুব্ধ গাড়িচালকরাও ৷ কিন্তু, জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের কোনও হেলদোল নেই বলে অভিযোগ ৷
ফরাক্কা ব্যারেজ পেরিয়ে মালদা জেলায় প্রবেশ করেছে 34 নম্বর জাতীয় সড়ক ৷ গাজোলের ময়না পর্যন্ত এর দৈর্ঘ্য প্রায় 72 কিলোমিটার ৷ কালিয়াচক ও মালদা শহরের কিছু অংশ ছাড়া বাকিটা ফোর লেনের রাস্তা ৷ বৈষ্ণবনগরের 17 মাইল ও গাজোলে এই সড়কে দুটি টোলগেটও রয়েছে ৷ কিন্তু বর্ষা শুরুর সঙ্গে সঙ্গে এই জাতীয় সড়কের অবস্থা বেহাল হয়ে পড়েছে ৷ বিশেষ করে কালিয়াচক ও পুরাতন মালদার কিছু অংশে এই সড়ক দিয়ে চলাচল করা মানে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পথ চলা ৷ তারই প্রমাণ মিলেছে গত 4 দিনে ৷
জাতীয় সড়কের এই অবস্থায় ক্ষুব্ধ সকলেই ৷ পুরাতন মালদার বাসিন্দা তাজমুল ইসলামকে প্রায় প্রতিদিন এই সড়কে মোটরবাইক চালিয়ে কাজে যেতে হয় ৷ তিনি বলেন, "রাস্তার এখন বেহাল অবস্থা ৷ যাতায়াতে অসম্ভব সমস্যা হচ্ছে ৷ নলডুবির কাছে দুর্ঘটনায় একজন মারা গেছে ৷ রাস্তার জন্যই সেই দুর্ঘটনা ঘটেছিল ৷ এই রাস্তায় চলাচল করার জন্য টোল নেওয়া হচ্ছে ৷ অথচ রাস্তা ঠিক করা হচ্ছে না ৷ আমরা চাই, দ্রুত এই সড়ক ঠিক করা হোক ৷" একই বক্তব্য এলাকার বাসিন্দা উজ্জ্বল সাহারও ৷ তিনি বলেন, "দু'দিন আগে নলডুবি ব্রিজের কাছে দুর্ঘটনায় এক ব্যক্তির মৃত্যু হয় ৷ দ্রুত মেরামত করা না হলে আরও অনেকেরই মৃত্যু হবে ৷" বেহাল এই সড়কের জন্য সরকারকেই দায়ি করেছেন পুরাতন মালদার চৈতা গ্রামের বাসিন্দা আনন্দ সরকার ৷ একই দাবি গাড়িচালক মহম্মদ রফিকেরও ৷
কবে এই বেহাল জাতীয় সড়ক মেরামত করা হবে তা জানতে যাওয়া হয়েছিল NH A1-এর প্রোজেক্ট ম্যানেজার দীনেশ হানসারিয়ার কাছে ৷ তিনি সাফ জানিয়ে দেন, এনিয়ে সংবাদমাধ্যমের সামনে কোনও কথা বলবেন না ৷ যা বলার টোল ট্যাক্স অথরিটি বলবে ৷ তাই কবে এই বেহাল সড়কের হাল ফিরবে, তা অজানাই থেকে গেছে ৷ তবে এই জাতীয় সড়ক যে আরও কয়েকজনের প্রাণ নিতে তৈরি হয়ে রয়েছে, তা একপ্রকার নিশ্চিত ৷