মালদা, ৭ মার্চ : সামনেই লোকসভা ভোট। তার আগেই নজিরবিহীনভাবে বার্ষিক বাজেটসভা থেকে প্রায় ৭৬ কোটি ৭৪ লাখ ৬৯ হাজার টাকার একগুচ্ছ প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করলেন মালদা জেলাপরিষদের সভাধিপতি গৌরচন্দ্র মণ্ডল। আর ভোটের মুখে এই ধরনের কাজ সংবিধানবিরোধী বলে দাবি করেছে বিরোধীরা। আজ জেলাপরিষদের অতিথি আবাসে এই বাজেটসভার আয়োজন করা হয়।
সভায় সভাধিপতি গৌরচন্দ্র মণ্ডল ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন জেলাপরিষদের মেন্টর কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরি, জেলাশাসক কৌশিক ভট্টাচার্য সহ অন্যান্য সদস্য।
মালদা জেলাপরিষদে তৃণমূল একক সংখ্যাগরিষ্ঠ। ফলে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পাস হয়ে যায় বার্ষিক বাজেট। বাজেট বরাদ্দের পরিমাণ ৪২২ কোটি ৬৬ লক্ষ ৫২ হাজার টাকা। বাজেটে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে পানীয় জল, সৌরশক্তি চালিত সাবমার্সিবল পাম্প, সোলার লাইট, শিক্ষা এবং স্বাস্থ্যক্ষেত্রে। বাজেট পাস হওয়ার পর সভা থেকে প্রায় ৭৬ লক্ষ টাকার বিভিন্ন প্রকল্পের শিলান্যাস ও উদ্বোধন করা হয়েছে।
বাজেটসভা থেকে নতুন প্রকল্পের শিলান্যাস নিয়েই প্রশ্ন তুলেছে বিরোধীরা। বামনগোলা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি উৎপল সরকার সাফ জানিয়েছেন, "বিরোধীদের কোনও গুরুত্ব না দিয়েই আজ বাজেট পাস করা হয়েছে। আজ যে ৭৬ কোটি টাকার কাজের শিলান্যাস ও উদ্বোধন করা হল, তার একটিও বিরোধীদের এলাকায় হয়নি। আসলে এটা ভোট পাওয়ার রাজনীতি। এই শিলান্যাস আর উদ্বোধন তো ভোট প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পরেও করা যেত। আমার মনে হয়, যে পদ্ধতিতে আজ ২০১৯-২০ সালের বাজেট পাস করা হল তা আইন মেনে হয়নি। কিন্তু মানুষ এদের রাজনীতি পরিষ্কার বুঝে গেছে। আগামী লোকসভা নির্বাচনে এর ফল তৃণমূল পাবে। তবে এভাবে বাজেটসভা থেকে এরা শিলান্যাস করতেই পারে। কারণ, দিদি আইনকে পরোয়া করেন না। সংবিধানকেও মানেন না। উনি নিজেই সংবিধান তৈরি করেন।"
এই বাজেট নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন জেলাপরিষদের বিরোধী দলনেতা জুয়েল মুর্মুও। তিনি বলেন, "এই বাজেট আমাদের মনের মতো হয়নি। আজ আমরা কিছু বলারও সুযোগ পাইনি। বর্তমান জেলাপরিষদ বোর্ড বিরোধীদের কোনও সম্মান দেয় না। এটা ভোটের আগে শুধুই শিলান্যাস হবে, কিন্তু কাজের কাজ হবে না।"
যদিও বিরোধীদের সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন সভাধিপতি। তাঁর দাবি, তাঁরা মানুষের উন্নয়নের জন্য কাজ করে চলেছেন। আর কাজ করলে উদ্বোধন করতেই হবে। বিরোধীরা বিরোধিতা করার জন্যই এসব গুরুত্বহীন কথাবার্তা বলছে।