মালদা, 18 ফেব্রুয়ারি : ভোটের মুখে গ্রাম পঞ্চায়েতে 100 দিনের কাজ নিয়ে বিজেপি পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুললেন গ্রামবাসীরা ৷ এনিয়ে আজ তাঁরা পঞ্চায়েত দপ্তরে প্রধানকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান ৷ যদিও গোটা ঘটনার দায় সুপারভাইজ়ারের কাঁধে চাপিয়েছেন প্রধান ৷ সুপারভাইজ়ারকে বরখাস্ত করার কথাও জানিয়েছেন তিনি ৷ ঘটনাটি ঘটেছে পুরাতন মালদার মুচিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতে ৷ বিক্ষোভের খবর পেয়ে ঘটনাস্থানে আসে মালদা থানার পুলিশ ৷ তবে এনিয়ে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি ৷
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্তমানে মুচিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের সিন্ধিয়া গ্রামে 100 দিনের কাজ প্রকল্পে মহানন্দার পাড় থেকে মাটি তোলার কাজ চলছে ৷ সেখানে কাজ পেয়েছেন গ্রামের প্রায় দেড়শো মানুষ ৷ কিন্তু শ্রমিকদের সেখানে নায্য মজুরি দেওয়া হচ্ছে না ৷ কাজ না করেও অনেকের অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকছে ৷ এসব নিয়েই আজ পঞ্চায়েত দপ্তরে বিক্ষোভ দেখান শ্রমিকরা ৷ বিক্ষোভকারী সত্যনারায়ণ সাহা বলেন, “আমাদের মাটি কাটার নায্য পারিশ্রমিক দিচ্ছে না ৷ মাটি কাটার সরকারি পারিশ্রমিক 204 টাকা ৷ কিন্তু আমাদের দেওয়া হচ্ছে 150 টাকা ৷ গত 5-7 বছর ধরে এমনটা চলছে ৷ এনিয়ে আমরা সুপারভাইজ়ারকে বারবার বলেছি ৷ কিন্তু তিনি আমাদের পাত্তা দিচ্ছেন না ৷ তিনি বলছেন, 150 টাকায় কাজ করতে হলে কর, নয়তো বাদ দাও ৷ আরও বড় বিষয়, সুপারভাইজ়ার নদীপাড়ের মাটি কেটে একজনের বাড়িতে ফেলাচ্ছেন ৷ আমরা এই বেনিয়মের বিরুদ্ধে ৷ আমারা নায্য পারিশ্রমিক ও বেআইনি কাজ বন্ধ করার দাবিতে প্রধানকে ঘেরাও করতে এসেছি ৷”
একই বক্তব্য অন্য এক বিক্ষোভকারী আলো সাহার । তিনি বলেন, “আমরা খেটে সামান্য অর্থ উপার্জন করি ৷ কিন্তু সেখানেও আমাদের বরাদ্দ 204 টাকা দেওয়া হচ্ছে না ৷ মাত্র 150 টাকা দেওয়া হচ্ছে ৷ আমরা এর বিহিত চাই ৷ নাহলে আমরা পঞ্চায়েত দপ্তরের সামনে বিক্ষোভ চালাতেই থাকব ৷”
আরও পড়ুন : কোচবিহারে 100 দিনের কাজ নিয়ে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অভিযোগ
পঞ্চায়েত প্রধান শুভলক্ষ্মী গাইনের দাবি, নদীর পাড় থেকে 100 দিন প্রকল্পে মাটি কাটার কাজ যে চলছে তা তিনি জানেনই না ৷ তিনি বলেন, “কাজ পঞ্চায়েত দপ্তর থেকে অ্যাপ্রুভাল হয় না ৷ সেটা বিডিও অফিস থেকে হয় ৷ আর সব কাজ প্রধানের পক্ষে দেখা সম্ভব নয় ৷ সেটা সুপারভাইজ়ারেরই দেখার কথা ৷ তাঁর কাছ থেকে তথ্য পাওয়ার পর আমি বিলের জন্য ব্লকে জানাই ৷ যে সুপারভাইজ়ার এভাবে গরিব মানুষকে বঞ্চিত করছেন, তাঁকে আমি আগামীতে বাদ দেওয়ার চেষ্টা করব ৷ তবে অনেক সময় সম্পূর্ণ মাটি কাটতে না পারলে শ্রমিকরা 204 টাকা পারিশ্রমিক পান না ৷ যান্ত্রিক গোলযোগেও এমন ঘটনা ঘটতে পারে ৷ আগামীতে শ্রমিকরা যেন নায্য পারিশ্রমিক পায়, তার ব্যবস্থা করব ৷ সিন্ধিয়া গ্রামে সুপারভাইজ়ারই মিথ্যে কথা বলে কাজ করাচ্ছে ৷ এখানে প্রধান কিংবা পঞ্চায়েত সদস্যের কোনও যোগ নেই ৷”