ETV Bharat / state

বাংলা আবাস যোজনায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে স্বজনপোষণের অভিযোগ, বিক্ষোভ গ্রামবাসীদের - Agitation of malda people over bangla awas yojana

স্থানীয় সূত্রে খবর, সম্প্রতি ভালুকা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় রাজ্য সরকারের বাংলা আবাস যোজনায় উপভোক্তাদের তালিকা প্রকাশিত হয়েছে ৷ স্থানীয়দের অভিযোগ, ওই তালিকায় অনেক গরিব মানুষের নাম নেই ৷ উলটে সেই তালিকায় নাম রয়েছে এলাকার কয়েকজন তৃণমূল নেতা-কর্মীর ৷

Agitation of malda people
বাংলা আবাস যোজনায় তৃণমূলের স্বজনপোষণ
author img

By

Published : Aug 28, 2020, 5:49 PM IST

মালদা, 28 অগাস্ট : বাংলা আবাস যোজনায় এলাকার তৃণমূল নেতাদের নাম ৷ শুধু তাই নয়, যাদের দোতলা, এমনকী তিনতলা বাড়ি, তাদের নামও রয়েছে ওই তালিকায় ৷ এই ঘটনায় আজ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে হরিশ্চন্দ্রপুর ২ ব্লকের ভালুকা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা ৷ সরকারি প্রকল্পে ঘর না পাওয়া অনেক মানুষ আজ গ্রাম পঞ্চায়েত দপ্তরের সামনে বিক্ষোভ দেখায় ৷ এলাকায় বিক্ষোভ মিছিলও বেরোয় ৷ আজ পঞ্চায়েত দপ্তর তালাবন্ধ থাকায় ক্ষিপ্ত মানুষজন সেখানে রাস্তা অবরোধ করে ৷ খবর পেয়ে ঘটনাস্থানে পৌঁছেছে ভালুকা ফাঁড়ির পুলিশ ৷ তবে এখনও অবরোধ তুলতে পারেননি পুলিশকর্মীরা ৷ এদিকে আজ পঞ্চায়েত দপ্তরে যাননি প্রধান মিনু মুশহর ৷ ফোনও সুইচ অফ করে রেখেছেন তিনি ৷

স্থানীয় সূত্রে খবর, সম্প্রতি ভালুকা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় রাজ্য সরকারের বাংলা আবাস যোজনায় উপভোক্তাদের তালিকা প্রকাশিত হয়েছে ৷ স্থানীয়দের অভিযোগ, ওই তালিকায় অনেক গরিব মানুষের নাম নেই৷ এলাকার অনেক গৃহহীন মানুষ নিজেদের ঘরের দাবিতে এই প্রকল্পে আবেদন জানিয়েছিল ৷ প্রকাশিত তালিকায় নাম নেই তাঁদেরও ৷ উলটে সেই তালিকায় নাম রয়েছে এলাকার কয়েকজন তৃণমূল নেতা-কর্মীর ৷ এদের অনেকের বাড়িও রয়েছে৷ শুধু তাই নয়, উপভোক্তাদের তালিকায় এমন অনেকের নাম রয়েছে, যাদের দোতলা, এমনকী তিনতলা বাড়ি রয়েছে ৷ গোটা ঘটনায় শাসকদল পরিচালিত পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে স্বজনপোষণের অভিযোগ এনে আজ স্থানীয় মানুষজন সকাল 11টা থেকে পঞ্চায়েত দপ্তরের সামনে প্রবল বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে৷ শুরু হয় পথ অবরোধ ৷ এখনও সেই বিক্ষোভ প্রদর্শন চলছে ৷

বিক্ষোভে অংশ নেওয়া ভালুকা পালপাড়ার বাসিন্দা আরতি দাস বলেন, “আমাদের নিজস্ব বাড়ি নেই৷ সরকারি ঘর পাওয়ার জন্য আবেদন করেছিলাম ৷ কিন্তু প্রকাশিত তালিকায় আমার নাম নেই ৷ যাদের দোতলা, তিনতলা বাড়ি আছে, তাদের নাম তালিকায় আছে ৷ এমনও দেখা য়াচ্ছে, স্বামী-স্ত্রী, দু’জনের নামই তালিকায় উঠেছে ৷ এলাকার বেশ কয়েকজন তৃণমূল নেতার নাম তালিকায় রয়েছে ৷ আমাদের দাবি, এদের নাম তালিকা থেকে বাদ দিয়ে আমাদের মতো গরিবদের নাম তালিকায় ঢোকাতে হবে ৷ যতক্ষণ না আমাদের এই দাবি পূরণ করা হচ্ছে, ততক্ষণ আমাদের বিক্ষোভ চলবে ৷ প্রধান এখনও দপ্তরে আসেননি৷ তাঁর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না ৷”

বাংলা আবাস যোজনায় তৃণমূলের স্বজনপোষণ

আরেক বিক্ষোভকারী, পার ভালুকার বাসিন্দা নৃপেন মহালদার বলেন, “কিছুদিন আগে হরিশ্চন্দ্রপুর দুই নম্বর ব্লকে বাংলা আবাস যোজনায় উপভোক্তাদের নামের তালিকা প্রকাশিত হয় ৷ আমাদের হাতে যখন সেই তালিকা আসে, তখন আমরা দেখতে পাই, এই ব্লকের 12টি গ্রাম পঞ্চায়েতেই তৃণমূলের ছোট, বড়, মাঝারি নেতা, তাঁদের আত্মীয়স্বজনদের নামই বেশি ৷ ভালুকা গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল সভাপতি, পেশায় প্রাথমিক শিক্ষক ধীরেন্দ্রনাথ সাহা ও তাঁর স্ত্রী বেলি রায়ের নাম তালিকায় রয়েছে ৷ রয়েছে স্থানীয় তৃণমূল নেতা উজ্জ্বল কর্মকার, হরেন্দ্র কর্মকারের নামও ৷ এখানকার 110 নম্বর বুথের পঞ্চায়েত সদস্য গীতা পাশোয়ানের স্বামী রতন মহালদারের নাম উপভোক্তাদের তালিকায় রয়েছে৷ কলকাতা পুলিশে কর্মরত মধু সাহার স্ত্রী সুতপা সাহা সরকারি প্রকল্পের বাড়ি পাচ্ছেন ৷ এভাবেই এই এলাকায় সরকারি প্রকল্পের বাড়ি নিয়ে শাসকদলের স্বজনপোষণ চলছে ৷ অথচ এলাকার গরিব মানুষরা আবেদন করেও ঘর পাচ্ছেন না ৷ অনেককে আবার ফর্ম জমা পর্যন্ত দিতে দেওয়া হয়নি৷ আজ অনেকে ফর্ম জমা দিতে এসেছিলেন৷ কিন্তু ছুটির দিন না হওয়া সত্বেও আজ পঞ্চায়েত দপ্তর তালাবন্ধ ৷ এসব কারণেই আজ আমরা এলাকার মানুষজন বিক্ষোভ দেখাতে বাধ্য হয়েছি৷ যতক্ষণ না উপভোক্তাদের নামের তালিকা ঠিক করা হচ্ছে, ততক্ষণ আমরা বিক্ষোভ অব্যাহত রাখব ৷ এনিয়ে আমরা BDO, SDO, জেলাশাসক, এমনকী নবান্নেও অভিযোগ জানাব ৷”

গ্রামবাসীদের বিক্ষোভ ও পথ অবরোধের খবর পেয়ে ঘটনাস্থানে যায় ভালুকা ফাঁড়ির পুলিশ ৷ পরে উপস্থিত হয় রতুয়া থানার পুলিশও ৷ পুলিশের পক্ষ থেকে এখনও গ্রামবাসীদের সঙ্গে আলোচনা চালানো হচ্ছে ৷ যদিও এখনও পুলিশের আবেদনে সাড়া দিয়ে পথ অবরোধ প্রত্যাহার করেনি ক্ষিপ্ত গ্রামবাসীরা ৷ এদিন পঞ্চায়েত প্রধান মিনু মুশহর নিজের মোবাইল ফোন সুইচ অফ করে রাখায় তাঁর কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি ৷ তবে গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন হরিশ্চন্দ্রপুর ২-এর BDO প্রীতম সাহা ৷

মালদা, 28 অগাস্ট : বাংলা আবাস যোজনায় এলাকার তৃণমূল নেতাদের নাম ৷ শুধু তাই নয়, যাদের দোতলা, এমনকী তিনতলা বাড়ি, তাদের নামও রয়েছে ওই তালিকায় ৷ এই ঘটনায় আজ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে হরিশ্চন্দ্রপুর ২ ব্লকের ভালুকা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা ৷ সরকারি প্রকল্পে ঘর না পাওয়া অনেক মানুষ আজ গ্রাম পঞ্চায়েত দপ্তরের সামনে বিক্ষোভ দেখায় ৷ এলাকায় বিক্ষোভ মিছিলও বেরোয় ৷ আজ পঞ্চায়েত দপ্তর তালাবন্ধ থাকায় ক্ষিপ্ত মানুষজন সেখানে রাস্তা অবরোধ করে ৷ খবর পেয়ে ঘটনাস্থানে পৌঁছেছে ভালুকা ফাঁড়ির পুলিশ ৷ তবে এখনও অবরোধ তুলতে পারেননি পুলিশকর্মীরা ৷ এদিকে আজ পঞ্চায়েত দপ্তরে যাননি প্রধান মিনু মুশহর ৷ ফোনও সুইচ অফ করে রেখেছেন তিনি ৷

স্থানীয় সূত্রে খবর, সম্প্রতি ভালুকা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় রাজ্য সরকারের বাংলা আবাস যোজনায় উপভোক্তাদের তালিকা প্রকাশিত হয়েছে ৷ স্থানীয়দের অভিযোগ, ওই তালিকায় অনেক গরিব মানুষের নাম নেই৷ এলাকার অনেক গৃহহীন মানুষ নিজেদের ঘরের দাবিতে এই প্রকল্পে আবেদন জানিয়েছিল ৷ প্রকাশিত তালিকায় নাম নেই তাঁদেরও ৷ উলটে সেই তালিকায় নাম রয়েছে এলাকার কয়েকজন তৃণমূল নেতা-কর্মীর ৷ এদের অনেকের বাড়িও রয়েছে৷ শুধু তাই নয়, উপভোক্তাদের তালিকায় এমন অনেকের নাম রয়েছে, যাদের দোতলা, এমনকী তিনতলা বাড়ি রয়েছে ৷ গোটা ঘটনায় শাসকদল পরিচালিত পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে স্বজনপোষণের অভিযোগ এনে আজ স্থানীয় মানুষজন সকাল 11টা থেকে পঞ্চায়েত দপ্তরের সামনে প্রবল বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে৷ শুরু হয় পথ অবরোধ ৷ এখনও সেই বিক্ষোভ প্রদর্শন চলছে ৷

বিক্ষোভে অংশ নেওয়া ভালুকা পালপাড়ার বাসিন্দা আরতি দাস বলেন, “আমাদের নিজস্ব বাড়ি নেই৷ সরকারি ঘর পাওয়ার জন্য আবেদন করেছিলাম ৷ কিন্তু প্রকাশিত তালিকায় আমার নাম নেই ৷ যাদের দোতলা, তিনতলা বাড়ি আছে, তাদের নাম তালিকায় আছে ৷ এমনও দেখা য়াচ্ছে, স্বামী-স্ত্রী, দু’জনের নামই তালিকায় উঠেছে ৷ এলাকার বেশ কয়েকজন তৃণমূল নেতার নাম তালিকায় রয়েছে ৷ আমাদের দাবি, এদের নাম তালিকা থেকে বাদ দিয়ে আমাদের মতো গরিবদের নাম তালিকায় ঢোকাতে হবে ৷ যতক্ষণ না আমাদের এই দাবি পূরণ করা হচ্ছে, ততক্ষণ আমাদের বিক্ষোভ চলবে ৷ প্রধান এখনও দপ্তরে আসেননি৷ তাঁর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না ৷”

বাংলা আবাস যোজনায় তৃণমূলের স্বজনপোষণ

আরেক বিক্ষোভকারী, পার ভালুকার বাসিন্দা নৃপেন মহালদার বলেন, “কিছুদিন আগে হরিশ্চন্দ্রপুর দুই নম্বর ব্লকে বাংলা আবাস যোজনায় উপভোক্তাদের নামের তালিকা প্রকাশিত হয় ৷ আমাদের হাতে যখন সেই তালিকা আসে, তখন আমরা দেখতে পাই, এই ব্লকের 12টি গ্রাম পঞ্চায়েতেই তৃণমূলের ছোট, বড়, মাঝারি নেতা, তাঁদের আত্মীয়স্বজনদের নামই বেশি ৷ ভালুকা গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল সভাপতি, পেশায় প্রাথমিক শিক্ষক ধীরেন্দ্রনাথ সাহা ও তাঁর স্ত্রী বেলি রায়ের নাম তালিকায় রয়েছে ৷ রয়েছে স্থানীয় তৃণমূল নেতা উজ্জ্বল কর্মকার, হরেন্দ্র কর্মকারের নামও ৷ এখানকার 110 নম্বর বুথের পঞ্চায়েত সদস্য গীতা পাশোয়ানের স্বামী রতন মহালদারের নাম উপভোক্তাদের তালিকায় রয়েছে৷ কলকাতা পুলিশে কর্মরত মধু সাহার স্ত্রী সুতপা সাহা সরকারি প্রকল্পের বাড়ি পাচ্ছেন ৷ এভাবেই এই এলাকায় সরকারি প্রকল্পের বাড়ি নিয়ে শাসকদলের স্বজনপোষণ চলছে ৷ অথচ এলাকার গরিব মানুষরা আবেদন করেও ঘর পাচ্ছেন না ৷ অনেককে আবার ফর্ম জমা পর্যন্ত দিতে দেওয়া হয়নি৷ আজ অনেকে ফর্ম জমা দিতে এসেছিলেন৷ কিন্তু ছুটির দিন না হওয়া সত্বেও আজ পঞ্চায়েত দপ্তর তালাবন্ধ ৷ এসব কারণেই আজ আমরা এলাকার মানুষজন বিক্ষোভ দেখাতে বাধ্য হয়েছি৷ যতক্ষণ না উপভোক্তাদের নামের তালিকা ঠিক করা হচ্ছে, ততক্ষণ আমরা বিক্ষোভ অব্যাহত রাখব ৷ এনিয়ে আমরা BDO, SDO, জেলাশাসক, এমনকী নবান্নেও অভিযোগ জানাব ৷”

গ্রামবাসীদের বিক্ষোভ ও পথ অবরোধের খবর পেয়ে ঘটনাস্থানে যায় ভালুকা ফাঁড়ির পুলিশ ৷ পরে উপস্থিত হয় রতুয়া থানার পুলিশও ৷ পুলিশের পক্ষ থেকে এখনও গ্রামবাসীদের সঙ্গে আলোচনা চালানো হচ্ছে ৷ যদিও এখনও পুলিশের আবেদনে সাড়া দিয়ে পথ অবরোধ প্রত্যাহার করেনি ক্ষিপ্ত গ্রামবাসীরা ৷ এদিন পঞ্চায়েত প্রধান মিনু মুশহর নিজের মোবাইল ফোন সুইচ অফ করে রাখায় তাঁর কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি ৷ তবে গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন হরিশ্চন্দ্রপুর ২-এর BDO প্রীতম সাহা ৷

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.