ETV Bharat / state

Ration Dealership: পুলিশের খাতায় ফেরার তৃণমূল নেতাকে রেশনের ডিলারশিপ, অভিযোগ দায়ের

মালদার হরিশ্চন্দ্রপুরে রেশন ডিলারশিপ পেলেন দুর্নীতিতে দোষী সাব্যস্ত তৃণমূল নেতা (Ration Dealership)৷ তাই নিয়ে জেলাশাসকের কাছে অভিযোগ দায়ের করলেন আরেক ডিলারশিপ আবেদনকারী ব্যক্তি ৷

author img

By

Published : Dec 9, 2022, 5:43 PM IST

ETV Bharat
পুলিশের খাতায় ফেরার তৃণমূল নেতাকে রেশনের ডিলারশিপ

মালদা, 9 ডিসেম্বর: বন্যাত্রাণ দুর্নীতিতে অভিযুক্ত ৷ পুলিশের চোখে ফেরার ৷ অথচ সেই তৃণমূল নেতাই কি না পেলেন রেশনের ডিলারশিপ (Abscond TMC Leader of Malda get Ration Dealership)৷ আইনত, রেশনের ডিলারশিপ দেওয়ার আগে আবেদনকারীর পুলিশি ভেরিফিকেশন হয় ৷ একজন ফেরার আসামীর সেই ভেরিফিকেশন পুলিশ কীভাবে করল ? সেই ব্যক্তি তৃণমূলের প্রভাবশালী নেতা বলেই কী তাঁকে ডিলারশিপ দেওয়া হল ? এই নিয়ে শুক্রবার জেলাশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন রেশন ডিলারশিপের আরেক আবেদনকারী ৷ এই নিয়ে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে হরিশ্চন্দ্রপুরে (Harishchandrapur TMC)৷ পঞ্চায়েত নির্বাচনের মুখে এই ঘটনায় শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা ৷ যদিও বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন জেলাশাসক ৷

বছর তিনেক আগে হরিশ্চন্দ্রপুর 1 নম্বর ব্লকের কুশিদায় রেশন ডিলারের জন্য খাদ্য দফতরের তরফে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয় ৷ সেই বিজ্ঞপ্তি দেখে ডিলারশিপের জন্য অনেকে আবেদন করেন ৷ তাঁদের মধ্যে ছিলেন মুকুন্দপুর গ্রামের শেখ জাহাঙ্গির এবং কুশিদার পালপাড়ার সুব্রত পাল ওরফে বাপিও ৷ এই সুব্রত তৃণমূলের প্রভাবশালী নেতা বলে পরিচিত ৷ তাঁর স্ত্রী এর আগে হরিশ্চন্দ্রপুর 1 নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ ছিলেন ৷ এখনও তিনি পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল সদস্য ৷ 2017 সালের বন্যাত্রাণ দুর্নীতিতে তাঁরা দু’জনেই আদালতের রায়ে দোষী সাব্যস্ত ৷ তাঁদের নামে জারি রয়েছে গ্রেফতারি পরোয়ানাও ৷ সেই সুব্রত পালকেই কুশিদায় রেশনের ডিলারশিপ দিয়েছে খাদ্য দফতর ৷ আর এই নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন জাহাঙ্গির ৷

যদিও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, খাদ্য দফতর 2019 সালে বাপি পালের ভেরিফিকেশনের কাগজ হরিশ্চন্দ্রপুর থানা থেকে সংগ্রহ করে ৷ তবে কি সেই কাগজের ভিত্তিতেই তাঁকে ডিলারশিপ দেওয়া হয়েছে ? তিন বছর পর নতুন করে পুলিশ ভেরিফিকেশনের নথি কেন সংগ্রহ করা হল না তা নিয়ে খাদ্য দফতরের দিকে অভিযোগের আঙুল উঠেছে ৷

পুলিশের খাতায় ফেরার তৃণমূল নেতাকে রেশনের ডিলারশিপ

আরও পড়ুন : কংগ্রেস করার 'অপরাধে' জোটেনি সরকারি ঘর, প্রবীণ দম্পতির রাত কাটে মাটির দাওয়ায়

এই বিষয়ে অভিযোগকারী জাহাঙ্গির বলেন, "রেশনের ডিলারশিপের জন্য আমি আবেদন করেছিলাম ৷ আমার সঙ্গে সুব্রত পাল ওরফে বাপিও আবেদন করেছিল ৷ শুনেছি, বাপির ডিলারশিপ হয়ে গিয়েছে ৷ উনি দুর্নীতিতে ডুবে রয়েছেন ৷ তাঁর নামে অনেক মামলা চলছে ৷ বন্যাত্রাণ দুর্নীতিতে তিনি দোষী প্রমাণিত ৷ এমন একজনকে রেশনের ডিলারশিপ দেওয়া হয়েছে ৷ এটাই কি ঠিক ? তাঁরা শাসকদলের নেতা বলেই কি সব তাঁরাই পাবেন ? এটাই আমার প্রশ্ন ৷ বন্যা দুর্গত মানুষদের টাকা যে চুরি করতে পারে, সে তো মানুষের চালও চুরি করে খাবে ৷ ডিলারশিপের জন্য একই দিনে আমার আর বাপির এনকোয়ারি হয়েছিল ৷ গ্রামে এসে প্রশাসনিক কর্তারা সব কিছু দেখে গিয়েছিলেন ৷ তাঁরা আমার সঙ্গে পরে আর যোগাযোগই করেননি ৷ কোনও কিছু জানতেও চাননি ৷ আসলে রাজনৈতিক খুঁটি থাকার জন্যই ওকে ডিলারশিপ দেওয়া হয়েছে ৷ একসময় যার কিছুই ছিল না, রাজনীতি করে সে এখন প্রচুর টাকার মালিক ৷"

পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে বিষয়টি ইস্যু করছে বিজেপি ৷ দলের উত্তর মালদা সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক রূপেশ আগরওয়াল বলেন, "2017 সালের বন্যাত্রাণ দুর্নীতিতে বাপি পাল ও তাঁর স্ত্রী জয়শ্রী কর্মকার দু’জনেই জড়িত ৷ দু’জনকেই দোষী সাব্যস্ত করেছে আদালত ৷ 2019 সালে সেই বাপিকে পুলিশ কীভাবে ক্লিনচিট দিল ? শাসকদলের সঙ্গে যুক্ত বলেই কি প্রশাসন বাপিকে এভাবে রেশনের ডিলারশিপ দিয়েছে ? তবে কি পুলিশ ও প্রশাসন নিজেদের মেরুদণ্ড হারিয়ে ফেলেছে ? বাপি রেশনের ডিলারশিপ পেলে বিজেপি কিন্তু রাস্তায় নামবে ৷ পুলিশ আর প্রশাসনকে বলব, আগামীতে কিন্তু আপনাদের বিজেপির অধীনে কাজ করতে হবে ৷ আমরা সঠিক তদন্ত চাই ৷ আমাদের আন্দোলন সামাল দিতে পারলে পুলিশ-প্রশাসন দুর্নীতি করুক ৷"

এই নিয়ে তৃণমূলে রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরীর প্রতিক্রিয়া, "কোনও মন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী কিংবা আমাদের কোনও নেতার কথায় এই কাজ হয়নি ৷ এটা প্রশাসনিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে হয়েছে ৷ সরকারি প্রক্রিয়ায় কোনও ভুল হয়ে থাকলে অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত হবে ৷ তৃণমূল করে বলেই বাপির রেশনের ডিলারশিপ হয়েছে, এটা ঠিক নয় ৷"

যদিও জেলাশাসক নীতিন সিংহানিয়া জানিয়েছেন, তিনি বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন ৷ এক্ষেত্রে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে ৷

আরও পড়ুন : গ্রুপ-ডি কর্মচারী অ্যাকাউন্টে বন্যাত্রাণের 69 লক্ষ টাকা! দুর্নীতির অভিযোগে বিডিও-র বিরুদ্ধে মামলা

মালদা, 9 ডিসেম্বর: বন্যাত্রাণ দুর্নীতিতে অভিযুক্ত ৷ পুলিশের চোখে ফেরার ৷ অথচ সেই তৃণমূল নেতাই কি না পেলেন রেশনের ডিলারশিপ (Abscond TMC Leader of Malda get Ration Dealership)৷ আইনত, রেশনের ডিলারশিপ দেওয়ার আগে আবেদনকারীর পুলিশি ভেরিফিকেশন হয় ৷ একজন ফেরার আসামীর সেই ভেরিফিকেশন পুলিশ কীভাবে করল ? সেই ব্যক্তি তৃণমূলের প্রভাবশালী নেতা বলেই কী তাঁকে ডিলারশিপ দেওয়া হল ? এই নিয়ে শুক্রবার জেলাশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন রেশন ডিলারশিপের আরেক আবেদনকারী ৷ এই নিয়ে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে হরিশ্চন্দ্রপুরে (Harishchandrapur TMC)৷ পঞ্চায়েত নির্বাচনের মুখে এই ঘটনায় শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা ৷ যদিও বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন জেলাশাসক ৷

বছর তিনেক আগে হরিশ্চন্দ্রপুর 1 নম্বর ব্লকের কুশিদায় রেশন ডিলারের জন্য খাদ্য দফতরের তরফে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয় ৷ সেই বিজ্ঞপ্তি দেখে ডিলারশিপের জন্য অনেকে আবেদন করেন ৷ তাঁদের মধ্যে ছিলেন মুকুন্দপুর গ্রামের শেখ জাহাঙ্গির এবং কুশিদার পালপাড়ার সুব্রত পাল ওরফে বাপিও ৷ এই সুব্রত তৃণমূলের প্রভাবশালী নেতা বলে পরিচিত ৷ তাঁর স্ত্রী এর আগে হরিশ্চন্দ্রপুর 1 নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ ছিলেন ৷ এখনও তিনি পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল সদস্য ৷ 2017 সালের বন্যাত্রাণ দুর্নীতিতে তাঁরা দু’জনেই আদালতের রায়ে দোষী সাব্যস্ত ৷ তাঁদের নামে জারি রয়েছে গ্রেফতারি পরোয়ানাও ৷ সেই সুব্রত পালকেই কুশিদায় রেশনের ডিলারশিপ দিয়েছে খাদ্য দফতর ৷ আর এই নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন জাহাঙ্গির ৷

যদিও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, খাদ্য দফতর 2019 সালে বাপি পালের ভেরিফিকেশনের কাগজ হরিশ্চন্দ্রপুর থানা থেকে সংগ্রহ করে ৷ তবে কি সেই কাগজের ভিত্তিতেই তাঁকে ডিলারশিপ দেওয়া হয়েছে ? তিন বছর পর নতুন করে পুলিশ ভেরিফিকেশনের নথি কেন সংগ্রহ করা হল না তা নিয়ে খাদ্য দফতরের দিকে অভিযোগের আঙুল উঠেছে ৷

পুলিশের খাতায় ফেরার তৃণমূল নেতাকে রেশনের ডিলারশিপ

আরও পড়ুন : কংগ্রেস করার 'অপরাধে' জোটেনি সরকারি ঘর, প্রবীণ দম্পতির রাত কাটে মাটির দাওয়ায়

এই বিষয়ে অভিযোগকারী জাহাঙ্গির বলেন, "রেশনের ডিলারশিপের জন্য আমি আবেদন করেছিলাম ৷ আমার সঙ্গে সুব্রত পাল ওরফে বাপিও আবেদন করেছিল ৷ শুনেছি, বাপির ডিলারশিপ হয়ে গিয়েছে ৷ উনি দুর্নীতিতে ডুবে রয়েছেন ৷ তাঁর নামে অনেক মামলা চলছে ৷ বন্যাত্রাণ দুর্নীতিতে তিনি দোষী প্রমাণিত ৷ এমন একজনকে রেশনের ডিলারশিপ দেওয়া হয়েছে ৷ এটাই কি ঠিক ? তাঁরা শাসকদলের নেতা বলেই কি সব তাঁরাই পাবেন ? এটাই আমার প্রশ্ন ৷ বন্যা দুর্গত মানুষদের টাকা যে চুরি করতে পারে, সে তো মানুষের চালও চুরি করে খাবে ৷ ডিলারশিপের জন্য একই দিনে আমার আর বাপির এনকোয়ারি হয়েছিল ৷ গ্রামে এসে প্রশাসনিক কর্তারা সব কিছু দেখে গিয়েছিলেন ৷ তাঁরা আমার সঙ্গে পরে আর যোগাযোগই করেননি ৷ কোনও কিছু জানতেও চাননি ৷ আসলে রাজনৈতিক খুঁটি থাকার জন্যই ওকে ডিলারশিপ দেওয়া হয়েছে ৷ একসময় যার কিছুই ছিল না, রাজনীতি করে সে এখন প্রচুর টাকার মালিক ৷"

পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে বিষয়টি ইস্যু করছে বিজেপি ৷ দলের উত্তর মালদা সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক রূপেশ আগরওয়াল বলেন, "2017 সালের বন্যাত্রাণ দুর্নীতিতে বাপি পাল ও তাঁর স্ত্রী জয়শ্রী কর্মকার দু’জনেই জড়িত ৷ দু’জনকেই দোষী সাব্যস্ত করেছে আদালত ৷ 2019 সালে সেই বাপিকে পুলিশ কীভাবে ক্লিনচিট দিল ? শাসকদলের সঙ্গে যুক্ত বলেই কি প্রশাসন বাপিকে এভাবে রেশনের ডিলারশিপ দিয়েছে ? তবে কি পুলিশ ও প্রশাসন নিজেদের মেরুদণ্ড হারিয়ে ফেলেছে ? বাপি রেশনের ডিলারশিপ পেলে বিজেপি কিন্তু রাস্তায় নামবে ৷ পুলিশ আর প্রশাসনকে বলব, আগামীতে কিন্তু আপনাদের বিজেপির অধীনে কাজ করতে হবে ৷ আমরা সঠিক তদন্ত চাই ৷ আমাদের আন্দোলন সামাল দিতে পারলে পুলিশ-প্রশাসন দুর্নীতি করুক ৷"

এই নিয়ে তৃণমূলে রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরীর প্রতিক্রিয়া, "কোনও মন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী কিংবা আমাদের কোনও নেতার কথায় এই কাজ হয়নি ৷ এটা প্রশাসনিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে হয়েছে ৷ সরকারি প্রক্রিয়ায় কোনও ভুল হয়ে থাকলে অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত হবে ৷ তৃণমূল করে বলেই বাপির রেশনের ডিলারশিপ হয়েছে, এটা ঠিক নয় ৷"

যদিও জেলাশাসক নীতিন সিংহানিয়া জানিয়েছেন, তিনি বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন ৷ এক্ষেত্রে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে ৷

আরও পড়ুন : গ্রুপ-ডি কর্মচারী অ্যাকাউন্টে বন্যাত্রাণের 69 লক্ষ টাকা! দুর্নীতির অভিযোগে বিডিও-র বিরুদ্ধে মামলা

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.