ETV Bharat / state

জ্বরে আক্রান্ত 250 পরিবার, ডেঙ্গির কথা স্বীকার স্বাস্থ্যবিভাগের - Health Department admits

ডেঙ্গির আতঙ্কে কাঁপছে ইংরেজবাজার ব্লকের মিলকি গ্রাম পঞ্চায়েত । চলতি মরশুমে এখনও পর্যন্ত ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে 25 জন জ্বরে আক্রান্ত রোগীর রক্তে ডেঙ্গির জীবাণু পাওয়া গেছে বলে জানান খোদ ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক ৷

প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বাইরে রোগীদের লাইন
author img

By

Published : Aug 28, 2019, 9:05 PM IST

মালদা, 28 অগাস্ট : ডেঙ্গির আতঙ্কে কাঁপছে ইংরেজবাজার ব্লকের মিলকি গ্রাম পঞ্চায়েত । এই পঞ্চায়েতের বেশ কয়েকটি গ্রামে ভয়ঙ্করভাবে বেড়েছে ডেঙ্গির প্রকোপ । গ্রামগুলির বেশিরভাগ বাড়িতেই বাড়ছে জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা । খোদ ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকও স্বীকার করেছেন, মাত্র তিন জন চিকিৎসক রয়েছেন ৷ তাঁরা প্রতিদিন কয়েকশো জ্বরে আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসা করতে হিমশিম খাচ্ছেন । চলতি মরশুমে এখনও পর্যন্ত ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে 25 জন জ্বরে আক্রান্ত রোগীর রক্তে ডেঙ্গির জীবাণু পাওয়া গেছে বলে জানান ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক । তবে, গ্রামবাসীদের দাবি, 25 জন নয় আরও বেশি সংখ্যক রোগীর রক্তে ডেঙ্গির জীবাণু পাওয়া গেছে ৷

মালদা শহর থেকে মিলকি গ্রাম পঞ্চায়েতের দূরত্ব মাত্র 16 কিলোমিটার । এই পঞ্চায়েতের সাতঘরিয়া ও আটগামা কলোনিতেই জ্বরের প্রাদুর্ভাব সবচেয়ে বেশি । সাতঘরিয়া গ্রামে গেলে এখন ধরা পড়ে অদ্ভুত দৃশ্য ৷ রাস্তাঘাট ফাঁকা ৷ প্রায় জনশূন্য বলা চলে ৷ কিন্তু এর কারণ কী ? গ্রামবাসীরা জানায়, প্রায় সবার বাড়িতেই জ্বরের থাবা । শরীরে ব্যথা আর বমি । ফলে সবাই ঘরেই থাকছে । অনেকে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গেলেও বেশিরভাগই মালদা শহরে জ্বরের চিকিৎসা করাচ্ছে ।

গ্রামের বাসিন্দা শাহজাহান শেখের বাড়ি গিয়ে দেখা গেল, ঘরের ভিতরে মশারি টাঙিয়ে ঘুমোচ্ছেন 26 বছরের ছেলে জাবেদ । শাহজাহান বলেন, "বাড়িতে সবাই জ্বরে আক্রান্ত । গত 16 দিন ধরে ছেলে ডেঙ্গিতে ভুগছে । তাঁকে মালদা মেডিকেল কলেজ ও ভরতি করেছিলাম । প্লেটলেট এক লাখের কম থাকা সত্ত্বেও মেডিকেল থেকে ছেলেকে ছেড়ে দিয়েছে । আমি নিজেও ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছিলাম । এখন খানিকটা সুস্থ হলেও ভীষণ দুর্বল । গ্রামে প্রায় 400 বাড়ি । তার মধ্যে 250 বাড়িতে জ্বরে আক্রান্ত রোগী রয়েছে । গত একমাস ধরে এলাকায় জ্বরের প্রাদুর্ভাব ঘটেছে । গ্রামবাসীদের অনেকের রক্তে ডেঙ্গির জীবাণু ধরা পড়েছে । স্বাস্থ্যদপ্তর ও পঞ্চায়েত সব জানে । পঞ্চায়েতের তরফে একবার মশা মারার ব্যবস্থা করা হয়েছিল । তবে তা পর্যাপ্ত নয় । মিলকি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বহির্বিভাগে রোগীদের ভিড় উপচে । স্বাস্থ্যকর্মীরা নাজেহাল হয়ে পড়ছে ।"

মিরাজুল আনসারি নামে আর এক বাসিন্দা বলেন "প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রতিদিন প্রায় 800 রোগী চিকিৎসা করাতে আসেন । মাঝেমধ্যে সংখ্যাটা হাজার ছাড়িয়ে যায় । এই রোগীদের প্রায় সবাই জ্বরে আক্রান্ত । ডেঙ্গির জীবাণু ধরা পড়েছে অনেকের রক্তে ।" স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভরতি রয়েছে আটগামা কলোনির বাসিন্দা কিসমত মোমিন ৷ ডেঙ্গিতে আক্রান্ত এই কিশোর ৷ তার আব্বা আজাদ মোমিন বলেন, "শনিবার(24 অগাস্ট) থেকে ছেলের ভীষণ জ্বর । সঙ্গে মাথা আর পেট ব্যথা । মাঝেমধ্যে বমি করছে । রবিবার(25 অগাস্ট) বিকেলে ছেলেকে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভরতি করেছি । রক্ত পরীক্ষায় ডেঙ্গির জীবাণু পাওয়া গেছে । আমাদের গ্রামে আরও অনেকের ডেঙ্গি হয়েছে । আমাদের পাড়াতেই তিন-চারজনের রক্তে ডেঙ্গির জীবাণু পাওয়া গেছে । "


মিলকি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসক তথা ইংরেজবাজার ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক শাহনাওয়াজ হোসেন ৷ তিনি বলেন, "আমাদের এখানে আউটডোরে প্রতিদিন 700 থেকে 750 জন রোগী চিকিৎসা করাতে আসেন । তার মধ্যে প্রায় 400 রোগীই জ্বরে আক্রান্ত । জ্বরাক্রান্ত প্রতিটি রোগীর রক্ত আমরা স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করি । তবে, যাদের রক্ত পরীক্ষায় সন্দেহজনক কিছু ধরা পড়ে তাদের রক্ত আমাদের এখানে PPP মডেলে যে ল্যাব রয়েছে সেখানে পরীক্ষা করাই । সেই ল্যাবে প্রতিদিনই একটি কিংবা দুটি ডেঙ্গি কেস ধরা পড়ে । ক্রিটিক্যাল কেস না হলে আমরা রোগীদের এখানেই সাতদিন ভরতি রেখে চিকিৎসা করি । তবে কারও রক্তের প্লেটলেট এক লাখের নীচে নেমে গেলে কিংবা শরীর থেকে রক্তক্ষরণ শুরু হলে আমরা সেই রোগীকে মালদা মেডিকেলে রেফার করে দিই । চলতি মরশুমে ইংরেজবাজার ব্লকে 25 জনের রক্তে ডেঙ্গির জীবাণু পাওয়া গেছে । তার মধ্যে বেশিরভাগই চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে গেছে । পরিকাঠামো পর্যাপ্ত না হলেও আমরা তিনজন চিকিৎসক সবাইকে স্বাস্থ্য পরিষেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি । অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীরাও ডেঙ্গি প্রতিরোধে সব ধরনের চেষ্টা করে যাচ্ছেন । ডেঙ্গু প্রতিরোধে আমরা গত মার্চ থেকেই কাজে নেমে পড়েছি । তার ফলও মিলেছে । গত মরশুম থেকে এবার ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা অনেকটা কমেছে ।"

মালদা, 28 অগাস্ট : ডেঙ্গির আতঙ্কে কাঁপছে ইংরেজবাজার ব্লকের মিলকি গ্রাম পঞ্চায়েত । এই পঞ্চায়েতের বেশ কয়েকটি গ্রামে ভয়ঙ্করভাবে বেড়েছে ডেঙ্গির প্রকোপ । গ্রামগুলির বেশিরভাগ বাড়িতেই বাড়ছে জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা । খোদ ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকও স্বীকার করেছেন, মাত্র তিন জন চিকিৎসক রয়েছেন ৷ তাঁরা প্রতিদিন কয়েকশো জ্বরে আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসা করতে হিমশিম খাচ্ছেন । চলতি মরশুমে এখনও পর্যন্ত ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে 25 জন জ্বরে আক্রান্ত রোগীর রক্তে ডেঙ্গির জীবাণু পাওয়া গেছে বলে জানান ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক । তবে, গ্রামবাসীদের দাবি, 25 জন নয় আরও বেশি সংখ্যক রোগীর রক্তে ডেঙ্গির জীবাণু পাওয়া গেছে ৷

মালদা শহর থেকে মিলকি গ্রাম পঞ্চায়েতের দূরত্ব মাত্র 16 কিলোমিটার । এই পঞ্চায়েতের সাতঘরিয়া ও আটগামা কলোনিতেই জ্বরের প্রাদুর্ভাব সবচেয়ে বেশি । সাতঘরিয়া গ্রামে গেলে এখন ধরা পড়ে অদ্ভুত দৃশ্য ৷ রাস্তাঘাট ফাঁকা ৷ প্রায় জনশূন্য বলা চলে ৷ কিন্তু এর কারণ কী ? গ্রামবাসীরা জানায়, প্রায় সবার বাড়িতেই জ্বরের থাবা । শরীরে ব্যথা আর বমি । ফলে সবাই ঘরেই থাকছে । অনেকে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গেলেও বেশিরভাগই মালদা শহরে জ্বরের চিকিৎসা করাচ্ছে ।

গ্রামের বাসিন্দা শাহজাহান শেখের বাড়ি গিয়ে দেখা গেল, ঘরের ভিতরে মশারি টাঙিয়ে ঘুমোচ্ছেন 26 বছরের ছেলে জাবেদ । শাহজাহান বলেন, "বাড়িতে সবাই জ্বরে আক্রান্ত । গত 16 দিন ধরে ছেলে ডেঙ্গিতে ভুগছে । তাঁকে মালদা মেডিকেল কলেজ ও ভরতি করেছিলাম । প্লেটলেট এক লাখের কম থাকা সত্ত্বেও মেডিকেল থেকে ছেলেকে ছেড়ে দিয়েছে । আমি নিজেও ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছিলাম । এখন খানিকটা সুস্থ হলেও ভীষণ দুর্বল । গ্রামে প্রায় 400 বাড়ি । তার মধ্যে 250 বাড়িতে জ্বরে আক্রান্ত রোগী রয়েছে । গত একমাস ধরে এলাকায় জ্বরের প্রাদুর্ভাব ঘটেছে । গ্রামবাসীদের অনেকের রক্তে ডেঙ্গির জীবাণু ধরা পড়েছে । স্বাস্থ্যদপ্তর ও পঞ্চায়েত সব জানে । পঞ্চায়েতের তরফে একবার মশা মারার ব্যবস্থা করা হয়েছিল । তবে তা পর্যাপ্ত নয় । মিলকি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বহির্বিভাগে রোগীদের ভিড় উপচে । স্বাস্থ্যকর্মীরা নাজেহাল হয়ে পড়ছে ।"

মিরাজুল আনসারি নামে আর এক বাসিন্দা বলেন "প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রতিদিন প্রায় 800 রোগী চিকিৎসা করাতে আসেন । মাঝেমধ্যে সংখ্যাটা হাজার ছাড়িয়ে যায় । এই রোগীদের প্রায় সবাই জ্বরে আক্রান্ত । ডেঙ্গির জীবাণু ধরা পড়েছে অনেকের রক্তে ।" স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভরতি রয়েছে আটগামা কলোনির বাসিন্দা কিসমত মোমিন ৷ ডেঙ্গিতে আক্রান্ত এই কিশোর ৷ তার আব্বা আজাদ মোমিন বলেন, "শনিবার(24 অগাস্ট) থেকে ছেলের ভীষণ জ্বর । সঙ্গে মাথা আর পেট ব্যথা । মাঝেমধ্যে বমি করছে । রবিবার(25 অগাস্ট) বিকেলে ছেলেকে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভরতি করেছি । রক্ত পরীক্ষায় ডেঙ্গির জীবাণু পাওয়া গেছে । আমাদের গ্রামে আরও অনেকের ডেঙ্গি হয়েছে । আমাদের পাড়াতেই তিন-চারজনের রক্তে ডেঙ্গির জীবাণু পাওয়া গেছে । "


মিলকি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসক তথা ইংরেজবাজার ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক শাহনাওয়াজ হোসেন ৷ তিনি বলেন, "আমাদের এখানে আউটডোরে প্রতিদিন 700 থেকে 750 জন রোগী চিকিৎসা করাতে আসেন । তার মধ্যে প্রায় 400 রোগীই জ্বরে আক্রান্ত । জ্বরাক্রান্ত প্রতিটি রোগীর রক্ত আমরা স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করি । তবে, যাদের রক্ত পরীক্ষায় সন্দেহজনক কিছু ধরা পড়ে তাদের রক্ত আমাদের এখানে PPP মডেলে যে ল্যাব রয়েছে সেখানে পরীক্ষা করাই । সেই ল্যাবে প্রতিদিনই একটি কিংবা দুটি ডেঙ্গি কেস ধরা পড়ে । ক্রিটিক্যাল কেস না হলে আমরা রোগীদের এখানেই সাতদিন ভরতি রেখে চিকিৎসা করি । তবে কারও রক্তের প্লেটলেট এক লাখের নীচে নেমে গেলে কিংবা শরীর থেকে রক্তক্ষরণ শুরু হলে আমরা সেই রোগীকে মালদা মেডিকেলে রেফার করে দিই । চলতি মরশুমে ইংরেজবাজার ব্লকে 25 জনের রক্তে ডেঙ্গির জীবাণু পাওয়া গেছে । তার মধ্যে বেশিরভাগই চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে গেছে । পরিকাঠামো পর্যাপ্ত না হলেও আমরা তিনজন চিকিৎসক সবাইকে স্বাস্থ্য পরিষেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি । অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীরাও ডেঙ্গি প্রতিরোধে সব ধরনের চেষ্টা করে যাচ্ছেন । ডেঙ্গু প্রতিরোধে আমরা গত মার্চ থেকেই কাজে নেমে পড়েছি । তার ফলও মিলেছে । গত মরশুম থেকে এবার ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা অনেকটা কমেছে ।"

Intro:মালদা, 26 অগাস্ট : ডেঙ্গির আতঙ্কে কাঁপছে ইংরেজবাজার ব্লকের মিলকি গ্রাম পঞ্চায়েত। এই পঞ্চায়েতের বেশ কয়েকটি গ্রামে ভয়ঙ্করভাবে হানা দিয়েছে ডেঙ্গি। গ্রামগুলির বেশিরভাগ বাড়িতেই বাড়ছে জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা। খোদ ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকও স্বীকার করেছেন, মাত্র তিনজন চিকিৎসক প্রতিদিন কয়েকশো জ্বরের রোগীর চিকিৎসা করতে হিমশিম খেয়ে যাচ্ছেন। তিনি আরও স্বীকার করেন। চলতি মরশুমে আজ পর্যন্ত ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে 25 জন জ্বরে আক্রান্ত রোগীর রক্তে ডেঙ্গির জীবাণু ধরা পড়েছে। তবে এর বাইরেও এলাকার বহু মানুষের রক্তে ডেঙ্গির জীবাণু ধরা পড়েছে বলে জানাচ্ছেন গ্রামবাসীরা।


Body:মালদা শহর থেকে মিলকি গ্রাম পঞ্চায়েতের দূরত্ব মাত্র 16 কিলোমিটার। এই পঞ্চায়েতের সাতঘরিয়া ও আটগামা কলোনিতেই জ্বরের প্রাদুর্ভাব সবচেয়ে বেশি। আজ দুপুরে সাতঘরিয়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, গ্রামের রাস্তা প্রায় জনশূন্য। প্রশ্ন করতে জানা গেল, প্রায় সবার বাড়িতেই জ্বরের থাবা। শরীরে ব্যথা আর বমি। ফলে সবাই ঘরেই থাকছে। অনেক স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গেলেও বেশিরভাগই মালদা শহরে জ্বরের চিকিৎসা করাচ্ছে। গ্রামের বাসিন্দা শাহজাহান শেখের বাড়ি গিয়ে দেখা গেল, ঘরের ভিতরে মশারি টাঙিয়ে ঘুমোচ্ছেন 26 বছরের ছেলে জাবেদ। শাহজাহান জানালেন, "বাড়িতে সবাই জ্বরে আক্রান্ত। গত 16 ড8ন ধরে ছেলে ডেঙ্গিতে ভুগছে। তাকে মালদা মেডিকেলে ভরতি করেছিলাম। প্লেটলেট এক লক্ষের কম থাকা সত্ত্বেও মেডিকেল থেকে ছেলেকে ছেড়ে দিয়েছে। আমি নিজেও ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছিলাম। এখন খানিকটা সুস্থ হলেও ভীষণ দুর্বল। গ্রামে প্রায় 400 বাড়ি। তার মধ্যে 250 বাড়িতে জ্বরে আক্রান্ত রোগী রয়েছে। গত একমাস ধরে এলাকায় জ্বরের প্রাদুর্ভাব ঘটেছে। গ্রামবাসীদের অনেকের রক্তে ডেঙ্গির জীবাণু ধরা পড়েছে। স্বাস্থ্যদপ্তর ও পঞ্চায়েত সব জানে। পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে একবার মশা মারার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। তবে তা পর্যাপ্ত নয়।"
আজ মিলকি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে বহির্বিভাগে উপচে পড়ছে রোগীদের ভিড়। ভিড় সামলাতে নাজেহাল স্বাস্থ্যকর্মীরা। সেখানে উপস্থিত মিরাজুল আনসারি বলেন, "এখানে প্রতিদিন প্রায় 800 রোগী চিকিৎসা করাতে আসেন। মাঝেমধ্যে সংখ্যাটা হাজার ছাড়িয়ে যায়। এই রোগীদের প্রায় সবাই জ্বরে আক্রান্ত। ডেঙ্গির জীবাণু ধরা পড়েছে অনেকের রক্তে। তাদের এই স্বাস্থ্যকেন্দ্র অথবা মালদা মেডিকেলে ভরতি করা হয়েছে।" স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভরতি রয়েছে আটগামা কলোনির বাসিন্দা, ডেঙ্গি আক্রান্ত কিশোর কিসমত মোমিন। তার আব্বা আজাদ মোমিন জানালেন, "গত পরশু থেকে ছেলের ভীষণ জ্বর। সঙ্গে মাথা আর পেট ব্যথা। মাঝেমধ্যে বমি করছে। গতকাল বিকেলে ছেলেকে এখানে ভরতি করেছি। পরীক্ষায় তার রক্তে ডেঙ্গির জীবাণু ধরা পড়েছে। আমাদের গ্রামে আরও অনেকের ডেঙ্গি হয়েছে। আমাদের পাড়াতেই তিন-চারজনের রক্তে ডেঙ্গির জীবাণু পাওয়া গেছে। এককথায়, গোটা পঞ্চায়েত এলাকাতেই ডেঙ্গি থাবা মেরেছে।"


Conclusion:মিলকি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসক, ইংরেজবাজার ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক শাহনাওয়াজ হোসেন বলেন, "আমাদের এখানে আউটডোরে প্রতিদিন 700 থেকে 750 জন রোগী চিকিৎসা করাতে আসেন। তার মধ্যে প্রায় 400 রোগীই জ্বরে আক্রান্ত। জ্বরাক্রান্ত প্রতিটি রোগীর রক্ত আমরা স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করি। তবে যাদের রক্ত পরীক্ষায় সন্দেহজনক কিছু ধরা পড়ে, তাদের রক্ত আমাদের এখানে পিপিপি মডেলে যে ল্যাব রয়েছে, সেখানে পরীক্ষা করাই। সেই ল্যাবে প্রতিদিনই একটি কিংবা দুটি ডেঙ্গি কেস ধরা পড়ে। ক্রিটিক্যাল কেস না হলে আমরা রোগীদের এখানেই সাতদিন ভরটি রেখে চিকিৎসা করি। তবে কারোর রক্তের প্লেটলেট এক লক্ষের নীচে নেমে গেলে কিংবা পরিস্থিতি খারাপের দিকে গেলে অর্থাৎ শরীর থেকে রক্তক্ষরণ শুরু হলে আমরা সেই রোগীকে মালদা মেডিকেলে রেফার করে দিই। চলতি মরশুমে ইংরেজবাজার ব্লকে 25 জনের রক্তে ডেঙ্গির জীবাণু ধরা পড়েছে। তার মধ্যে বেশিরভাগই চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে গেছে। পরিকাঠামো পর্যাপ্ত না হলেও আমরা তিনজন চিকিৎসক সবাইকে স্বাস্থ্য পরিষেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি। অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীরাও ডেঙ্গি প্রতিরোধে সব ধরনের চেষ্টা করে যাচ্ছেন। ডেঙ্গু প্রতিরোধে আমরা গত মার্চ থেকেই কাজে নেমে পড়েছি। তার ফলও মিলেছে। গত মরশুম থেকে এবার ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা অনেকটা কমেছে।"
ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.