ETV Bharat / state

নার্সকে হাসপাতালে যেতে বাধা, হুমকি ; অভিযুক্ত তৃণমূল কাউন্সিলর - Tmc

একদিকে মুখ্যমন্ত্রী যখন বলেছেন, জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত কোনও কর্মীকে হেনস্থা করা হলে তা বরদাস্ত করা হবে না, তখন তাঁর দলেরই কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে এক নার্সকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠল ।

ছবি
ছবি
author img

By

Published : Apr 1, 2020, 9:55 AM IST

Updated : Apr 1, 2020, 1:57 PM IST

কলকাতা, 1 এপ্রিল : বেলঘরিয়ার এক হাসপাতালের নার্সকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূল কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে । সোদপুরের আজাদ নগরের বাসিন্দা ওই নার্সের অভিযোগ, তাঁকে এলাকার তৃণমূল কাউন্সিলর কাজে যেতে নিষেধ করেছেন । কারণ তিনি যেই হাসপাতালে কর্মরত সেখানে এক রোগীর শরীরে মিলেছে কোরোনা ভাইরাস । ঘটনায় যথেষ্ট আতঙ্কে রয়েছেন তিনি । একদিকে মুখ্যমন্ত্রী যখন বলেছেন, জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত কোনও কর্মীকে হেনস্থা করা হলে বরদাস্ত করা হবে না, তখন তাঁর দলেরই এক কাউন্সিলরের এই আচরণ নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে ।

আড়িয়াদহের বাসিন্দা 57 বছরের এক ব্যক্তি কোরোনায় আক্রান্ত হন । 23 মার্চ তিনি বেলঘরিয়ার এক বেসরকারি হাসপাতালে ভরতি হন । স্বাভাবিক সর্দি-কাশি জ্বর হওয়ায় তাঁকে ভরতি করা হয়েছিল । সম্প্রতি বিদেশে কিংবা দেশের অন্য কোনও প্রান্তে যাননি । ওই ব্যক্তিকে বেলেঘাটা ID হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে বলে খবর । সেই খবর ছড়িয়ে পড়ার পরই ওই নার্সের বাড়িতে লোকজন নিয়ে এলাকার কাউন্সিলর আশিস দেব রায় আসেন বলে অভিযোগ। ওই নার্স ETV ভারতকে বলেন, " উনি এসে আমাকে কাজে যেতে নিষেধ করেছেন । ওঁর কথাকে সম্মান জানিয়ে আগামীকাল আমার ডিউটি সত্ত্বেও কাজে যাব না বলে ম্যানেজমেন্টকে জানিয়েছি । কিন্তু তার পরের দিন থেকে আমায় কাজে যেতেই হবে । আমার মেয়ে থ্যালাসেমিয়া রোগী । প্রচুর খরচ । কাজে না গেলে চলবে না । অথচ ওনার সঙ্গে থাকা লোকজন আমায় বলে গেছে, কাজে গেলে আমরা ঠিক খবর পেয়ে যাব। কী করব বুঝে উঠতে পারছি না ।" আজ সকালেই ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয় ৷

ওই নার্স জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে তিন দিন করে ছুটি দেওয়া হচ্ছে হাসপাতালের তরফে। তারপর 24 ঘন্টা কাজ করতে হচ্ছে। আজ তাঁর ডিউটি ছিল। গত রবিবার তিনি শেষ ডিউটি করেছেন। অর্থাৎ ওই আক্রান্ত হাসপাতালে থাকাকালীন তিনি ডিউটি করেছেন। আর এখন যখন তাঁকে ID হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হচ্ছে তখন তাঁকে ডিউটিতে যেতে নিষেধ করা হচ্ছে।

শেষ নয় এখানেই। স্থানীয় যুবক শুভাশিস দেব থাকেন ঝাড়খণ্ডে । সেখানে তিনি একটি বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত। দিন দশেক হল বাড়ি ফিরেছেন। ঝাড়খণ্ড থেকে ফিট সার্টিফিকেট এনেছিলেন । ফেরার পর থেকে হোম আইসোলেশনে রয়েছেন । এ দিন ওই কাউন্সিলর তাঁর বাড়িতে যায় বলে অভিযোগ। জানানো হয়, বেলেঘাটা ID হাসপাতাল থেকে তাঁকে ফিট সার্টিফিকেট আনতে হবে । ওই যুবকের মা বলেন, " লকডাউনের মধ্যে অত্যন্ত কষ্ট করে আমরা নীলরতন সরকার মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে গিয়ে ফিট সার্টিফিকেট এনেছি । তারপরও আমার ছেলেকে বলা হয়েছে, ID হাসপাতাল থেকে সার্টিফিকেট আনতে হবে । অথচ সরকার তো এমন কথা বলছে না । চিকিৎসকরাও বলছেন না । কী করব কিছু বুঝে উঠতে পারছি না ।" মহিলার গলা ধরে আসে কান্নায়। বলেন, " আমাকে এক ঘরে করে রাখা হয়েছে । খাবার জলটুকু পর্যন্ত আনতে যেতে পারছি না বাইরে থেকে। পাড়র কলে হাত দেওয়ার অধিকার নেই । মুদিখানায় জিনিসপত্র দেওয়া হচ্ছে না । আমি কাউন্সিলরকে হাতজোড় করে অনুরোধ করেছিলাম, "বাঁচতে হবে আমার পরিবারকে । আপনার কোনও একজন ছেলেকে দিন যিনি আমায় বাজারটুকু করে এনে দেবেন । তাহলে আমরা কেউ বাড়ি থেকে বের হব না । সেটাও তিনি করেননি ।"

এ প্রসঙ্গে কাউন্সিলর আশিস দেব রায় বলেন, " আমাদের পাড়ায় একজন নার্স আছেন । যিনি হাওড়ার ওই হাসপাতালে কাজ করেন । আমাদের ঘনবসতিপূর্ণ পাড়া । সবারই তো ভয় আছে । আমরা নিজেরা এই কাজ করছি । নাহলে প্রশাসনকে জানাচ্ছি । এমন করাটা কি ভুল হয়েছে ? আজকে আমি ওনার বাড়িতে গিয়েছিলাম । উনি বললেন, না আমি তিনদিন ধরে যাচ্ছি না। আমি শুধু বলেছি তাহলে কোনও ব্যাপার নেই ।" শুভাশিস দেবের পরিবারের অভিযোগের বিষয়টি তিনি অবশ্য অস্বীকার করেছেন ।

কলকাতা, 1 এপ্রিল : বেলঘরিয়ার এক হাসপাতালের নার্সকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূল কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে । সোদপুরের আজাদ নগরের বাসিন্দা ওই নার্সের অভিযোগ, তাঁকে এলাকার তৃণমূল কাউন্সিলর কাজে যেতে নিষেধ করেছেন । কারণ তিনি যেই হাসপাতালে কর্মরত সেখানে এক রোগীর শরীরে মিলেছে কোরোনা ভাইরাস । ঘটনায় যথেষ্ট আতঙ্কে রয়েছেন তিনি । একদিকে মুখ্যমন্ত্রী যখন বলেছেন, জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত কোনও কর্মীকে হেনস্থা করা হলে বরদাস্ত করা হবে না, তখন তাঁর দলেরই এক কাউন্সিলরের এই আচরণ নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে ।

আড়িয়াদহের বাসিন্দা 57 বছরের এক ব্যক্তি কোরোনায় আক্রান্ত হন । 23 মার্চ তিনি বেলঘরিয়ার এক বেসরকারি হাসপাতালে ভরতি হন । স্বাভাবিক সর্দি-কাশি জ্বর হওয়ায় তাঁকে ভরতি করা হয়েছিল । সম্প্রতি বিদেশে কিংবা দেশের অন্য কোনও প্রান্তে যাননি । ওই ব্যক্তিকে বেলেঘাটা ID হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে বলে খবর । সেই খবর ছড়িয়ে পড়ার পরই ওই নার্সের বাড়িতে লোকজন নিয়ে এলাকার কাউন্সিলর আশিস দেব রায় আসেন বলে অভিযোগ। ওই নার্স ETV ভারতকে বলেন, " উনি এসে আমাকে কাজে যেতে নিষেধ করেছেন । ওঁর কথাকে সম্মান জানিয়ে আগামীকাল আমার ডিউটি সত্ত্বেও কাজে যাব না বলে ম্যানেজমেন্টকে জানিয়েছি । কিন্তু তার পরের দিন থেকে আমায় কাজে যেতেই হবে । আমার মেয়ে থ্যালাসেমিয়া রোগী । প্রচুর খরচ । কাজে না গেলে চলবে না । অথচ ওনার সঙ্গে থাকা লোকজন আমায় বলে গেছে, কাজে গেলে আমরা ঠিক খবর পেয়ে যাব। কী করব বুঝে উঠতে পারছি না ।" আজ সকালেই ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয় ৷

ওই নার্স জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে তিন দিন করে ছুটি দেওয়া হচ্ছে হাসপাতালের তরফে। তারপর 24 ঘন্টা কাজ করতে হচ্ছে। আজ তাঁর ডিউটি ছিল। গত রবিবার তিনি শেষ ডিউটি করেছেন। অর্থাৎ ওই আক্রান্ত হাসপাতালে থাকাকালীন তিনি ডিউটি করেছেন। আর এখন যখন তাঁকে ID হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হচ্ছে তখন তাঁকে ডিউটিতে যেতে নিষেধ করা হচ্ছে।

শেষ নয় এখানেই। স্থানীয় যুবক শুভাশিস দেব থাকেন ঝাড়খণ্ডে । সেখানে তিনি একটি বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত। দিন দশেক হল বাড়ি ফিরেছেন। ঝাড়খণ্ড থেকে ফিট সার্টিফিকেট এনেছিলেন । ফেরার পর থেকে হোম আইসোলেশনে রয়েছেন । এ দিন ওই কাউন্সিলর তাঁর বাড়িতে যায় বলে অভিযোগ। জানানো হয়, বেলেঘাটা ID হাসপাতাল থেকে তাঁকে ফিট সার্টিফিকেট আনতে হবে । ওই যুবকের মা বলেন, " লকডাউনের মধ্যে অত্যন্ত কষ্ট করে আমরা নীলরতন সরকার মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে গিয়ে ফিট সার্টিফিকেট এনেছি । তারপরও আমার ছেলেকে বলা হয়েছে, ID হাসপাতাল থেকে সার্টিফিকেট আনতে হবে । অথচ সরকার তো এমন কথা বলছে না । চিকিৎসকরাও বলছেন না । কী করব কিছু বুঝে উঠতে পারছি না ।" মহিলার গলা ধরে আসে কান্নায়। বলেন, " আমাকে এক ঘরে করে রাখা হয়েছে । খাবার জলটুকু পর্যন্ত আনতে যেতে পারছি না বাইরে থেকে। পাড়র কলে হাত দেওয়ার অধিকার নেই । মুদিখানায় জিনিসপত্র দেওয়া হচ্ছে না । আমি কাউন্সিলরকে হাতজোড় করে অনুরোধ করেছিলাম, "বাঁচতে হবে আমার পরিবারকে । আপনার কোনও একজন ছেলেকে দিন যিনি আমায় বাজারটুকু করে এনে দেবেন । তাহলে আমরা কেউ বাড়ি থেকে বের হব না । সেটাও তিনি করেননি ।"

এ প্রসঙ্গে কাউন্সিলর আশিস দেব রায় বলেন, " আমাদের পাড়ায় একজন নার্স আছেন । যিনি হাওড়ার ওই হাসপাতালে কাজ করেন । আমাদের ঘনবসতিপূর্ণ পাড়া । সবারই তো ভয় আছে । আমরা নিজেরা এই কাজ করছি । নাহলে প্রশাসনকে জানাচ্ছি । এমন করাটা কি ভুল হয়েছে ? আজকে আমি ওনার বাড়িতে গিয়েছিলাম । উনি বললেন, না আমি তিনদিন ধরে যাচ্ছি না। আমি শুধু বলেছি তাহলে কোনও ব্যাপার নেই ।" শুভাশিস দেবের পরিবারের অভিযোগের বিষয়টি তিনি অবশ্য অস্বীকার করেছেন ।

Last Updated : Apr 1, 2020, 1:57 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.