কলকাতা, 26 ডিসেম্বর: "ভারতীয় জনতা পার্টির শীর্ষ নেতৃত্ব মুখে কিছু না বললেও তাঁদের বিব্রত করেছে", বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের মন্তব্য নিয়ে বললেন যুব তৃণমূলের সভাপতি সায়নী ঘোষ ৷ বিজেপি নেতার ফুটবল ও গীতা পাঠ সম্পর্কিত মন্তব্যের প্রতিবাদে মঙ্গলবার রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে প্রতিবাদ মিছিল বের করে তৃণমূল ৷ উত্তর কলকাতার শ্যামবাজার থেকে সিমলা স্ট্রিট পর্যন্ত এই মিছিলে অংশগ্রহণ করেন শিশু ও নারী কল্যাণ মন্ত্রী শশী পাঁজা, যুব তৃণমূলের সভাপতি সায়নী ঘোষ এবং অন্যরা । এদিন সায়নী সাংবাদিকদের বলেন, "বঙ্গ বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার অত্যন্ত শিক্ষিত ৷ তা সত্ত্বেও তিনি স্বামীজি সম্পর্কে কিছু বিকৃত মন্তব্য করেছেন, যা আপামর বঙ্গবাসীকে বিরক্ত করেছে ৷ বিজেপি পশ্চিমবঙ্গ থেকে 35টি আসন পাবে বলেছে ৷ এরকম কথাবার্তা বললে তো সাড়ে 3টে আসনও পাবে না ৷"
বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের মন্তব্যে ইতিমধ্যে বিতর্ক তৈরি হয়েছে ৷ তৃণমূলের অভিযোগ, তিনি স্বামী বিবেকানন্দকে অসম্মান করেছেন ৷ রবিবার, 24 ডিসেম্বর ব্রিগেডে লক্ষ কণ্ঠে গীতা পাঠ অনুষ্ঠান হয় ৷ এদিন সুকান্ত মজুমদার বলেন, "যাঁরা ফুটবল খেলাকে গীতপাঠের তুলনায় ভালো বলছেন, তাঁরা বামপন্থী প্রোডাক্ট ৷" এদিকে স্বামী বিবেকানন্দ তাঁর বাণীতে তরুণ সমাজকে ফুটবল খেলা নিয়ে অনুপ্রেরণা দিয়েছেন ৷ এই অবস্থায় বালুরঘাটের বিজেপি সাংসদ সুকান্তের মন্তব্য ঘিরে রাজনৈতিক তরজা শুরু হয় ৷ তৃণমূল সুকান্ত মজুমদারের ক্ষমা দাবি করে ৷
এই মিছিল প্রসঙ্গে মন্ত্রী শশী পাঁজা বলেন, "সুকান্ত মজুমদারের বক্তব্যের পর 48 ঘণ্টা অতিবাহিত হয়ে গিয়েছে ৷ বিজেপির রাজ্য সভাপতি এখনও এই নিয়ে ক্ষমা চাননি ৷ বিবেকানন্দকে অসম্মানজনক কথা বলে বিজেপির রাজ্য সভাপতির মনে কোনও গ্লানি নেই ৷ আর তাই পথে নেমেছে তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকরা ৷ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে বিজেপির রাজ্য সভাপতি এই বক্তব্যের সমালোচনা করে মিছিল করা হচ্ছে ৷ তাদের দাবি, বিজেপি সভাপতি জেপি নাড্ডা এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ স্পষ্ট করুন, তাঁরাও কি সুকান্ত মজুমদারের এই বক্তব্যটি সমর্থন করেন ? নাকি এর নিন্দা করছেন ৷ বাস্তবে কি তাঁরা সুকান্ত মজুমদারকে ক্ষমা চাওয়ার জন্য বলবেন ?"
এদিন যুবনেত্রী সায়নী ঘোষ বলেন, "বিবেকানন্দকে অপমান করে বিজেপি রাজ্য সভাপতি বাস্তবে বাংলার মানুষকে অপমান করেছেন ৷ তাই তাঁকে ক্ষমা চাইতে হবে ৷ বিবেকানন্দ কখনওই বলেননি গীতা পাঠ করো না ৷ স্বামীজি কর্মযোগের কথা বলেছেন ৷ সেখানে স্বামীজীর মূল বক্তব্যের অর্থ না বুঝে তাঁকে অপমান করা হয়েছে ৷" বিজেপিকে তুলোধনা করে সায়নী আরও বলেন, "রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বিজেপির নয়, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরও বিজেপির নয় ৷ স্বামী বিবেকানন্দ বিজেপির নয় ৷ আর তাই জন্য বাংলাও বিজেপির নয় ৷ বিবেকানন্দ কোনও দিন বলেননি গীতা পাঠ না করে ফুটবল খেলো ৷ তিনি কর্মযোগের কথা বলেছেন ৷" এদিকে রাজ্যে এসেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ ৷
আরও পড়ুন: