কলকাতা, 6 ডিসেম্বর: সম্প্রতি বিশ্বকাপের ফাইনালে ভারতের হারের পর সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয় বেশকিছু ভিডিয়ো ৷ ভিডিয়োতে দেখা যায় ভারতের হারে উল্লাস করছেন কিছু বাংলাদেশি নাগরিক ৷ আর তারপরেই কলেজ স্কোয়ারে শুরু হয়েছে বাংলাদেশ বইমেলা ৷ চলবে 13 ডিসেম্বর পর্যন্ত ৷ কিন্তু সেই বইমেলায় ভিড় কেমন হবে তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে বই বিক্রেতা ৷ কারণ বাংলাদেশি নাগরিকদের উল্লাসের ভিডিয়ো সামনে আসার পর ভারতীয় নাগরিকদের অনেকের মধ্যেই তৈরি হয়েছে চাপা ক্ষোভ ৷ তারপরেই আইপিএল থেকে শুরু করে হোটেলে থাকার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের নাগরিকদের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। অনেকে তো নেটপাড়ায় কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলায় বাংলাদেশের স্টল বয়কট করার আহ্বান জানাতে শুরু করেছেন ৷ এহেন পরিস্থিতিতে কলেজ স্কোয়ারে 11তম বাংলাদেশ বইমেলা নিয়েও তৈরি হয়েছে আশাঙ্কার বাতাবরণ ৷
কোনও কোনও বই বিক্রেতা অবশ্য় একেবারেই চিন্তিত নন ৷ ঠিক যেমন বাংলাদেশের কুমিল্লার বাসিন্দা বই বিক্রেতা শাহ আলম বলেন, "সব মানুষ সমান নয় কিছু মানুষ এসব করেছে তবে বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষই ভারতীয়দের ভালোবাসেন । যাঁরা কাজটা করেছেন সেটা ঠিক করেননি । তবে এই বইমেলায় সেই ঘটনার প্রভাব পড়বে কি না তা নিয়ে সন্ধিহান । এখন সবে শুরু হয়েছে মেলা দিন কয়েক গেলে বুঝব । তবে চিন্তা চেতনা আর বইয়ের জগতে যারা বিচরন করেন তাঁদের মধ্যে এই সমস্ত ঘটনা দাগ কাটবে বলে মনে হয় না।"
একই কথা উঠে আরও এক বাংলাদেশি প্রকাশনা সংস্থার কর্মীর কথাতেও ৷ প্রকাশনা সংস্থার কর্মী সায়ন বলেন, "গান, কবিতা, সাহিত্য সংস্কৃতি দুই বাংলার মাঝে কাঁটাতারের পরোয়া করে না । এখানে বিদ্বেষের কোনও জায়গা নেই । ওই ধরনের ঘটনা কাম্য নয় । জ্ঞানের আলো পৌঁছালে কেউই তেমন কিছু করতেন না যাতে করো মনে আঘাত লাগে । বইয়ের জগতে প্রভাব পড়ে কি না সেটাই দেখার ।"
ঢাকার বাংলা বাজারের বাসিন্দা বই বিক্রেতা মাধব চন্দ্র দাস বলেন, "যারা করেছে তাদের হাতে কোনো দিন বই ওঠেনি । আমাদের রাষ্ট্র কখনোই ভারতের বিরুদ্ধে নয় । দুই রাষ্ট্র বন্ধু । ওদের হাতে বই থাকলে এমনটা করতে পারত না । বাংলাদেশের যেমন একাংশ দেখেছেন উল্লাস করেছে তেমন বড় অংশের মানুষ দুঃখ পেয়েছে । আর গোটাটাই ক্রিকেটকেন্দ্রিক । দেশের বিরোধী নয় । প্রচুর মানুষ আসছেন বই কিনছেন । তাঁদের আশা, আলাপচারিতা, ভালোবাসা, কেনাকাটা বুঝিয়ে দিচ্ছে গুটিকতক মানুষের অসভ্যতার প্রভাব কখনোই দীর্ঘ দিনের আত্মার সম্পর্কে চির ধরাতে পারবে না ।" বইমেলার অন্যতম আয়োজক ভাষা চেতনা সমিতির কর্মকর্তা ইমানুল হকের কথায়, "সব জায়গায় ভালো মন্দ মানুষের বসবাস । ওসবের থেকে অনেক দূরে এই বই মেলা । এটা মিলন মেলা দুই বাংলার । এখানে কোনও প্রভাব নেই বিদ্বেষের।"
আরও পড়ুন: