কলকাতা, 22 ফেব্রুয়ারি: মূল্যবৃদ্ধির যুক্তিতে যদি রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের কেন্দ্রীয় হারে মহার্ঘ ভাতা (Kalyan on DA) দিতে হয়, তাহলে তো বিধায়করা কেন কেন্দ্রীয় হারে ভাতা পাবে না ? ডিএ নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) এজলাসে দাঁড়িয়ে নয়া প্রশ্ন উসকে দিলেন আইনজীবী তথা শাসক দলের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় (Kalyan Banerjee News)। তবে এ দিন ডিএ মামলার আইনজীবী নির্ধারণ নিয়ে রাজ্য সরকারের প্রতি অসন্তোষ ধরা পড়েছে তাঁর কথায় ৷
বুধবার জমি সংক্রান্ত একটি মামলার শুনানি চলছিল বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর এজলাসে ৷ সেখানেই নানা সওয়াল জবাবের মাঝে ডিএ প্রসঙ্গ এলে আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, আইনজীবী হিসাবে রাজ্যকে কিছু পরামর্শ দিতে পারতেন তিনি । কিন্তু রাজ্যের এখন বড় বড় কৌসুঁলি রয়েছে । তাঁরা কেন রাজ্যকে সেই পরামর্শ দিচ্ছেন তা নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন তিনি ৷
তবে কেন্দ্রীয় হারে ডিএ-র দাবি প্রসঙ্গে আজ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "তাহলে তো বিধায়কদেরও কেন্দ্রীয় হারে ভাতা দেওয়া উচিত । কারণ মূল্যবৃদ্ধির যুক্তিতে যদি তাঁদের কেন্দ্রীয় হারে ভাতা দিতে হয়, তাহলে তো বিধায়কদেরও তো একই সমস্যা ।" সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের মতো রাজ্যের হাইকোর্টের বিচারপতিরাও কি সমান হারে মহার্ঘ ভাতা পাবেন, সেই প্রশ্নও তোলেন তিনি ৷ যদিও বিচারপতি তাঁর এই প্রশ্নের কোনও জবাব দেননি ৷
জমি সংক্রান্ত মামলার শুনানিতে এ দিন কল্যাণ আরও বলেন, সিঙ্গুর আন্দোলনের পর এ রাজ্য আর জমি অধিগ্রহণ করতে পারবে না । জমি দরকার হলে কিনতেই হবে রাজ্যকে ৷ সিঙ্গুর আন্দোলনের মামলার আইনজীবী বলেছেন, শিল্প করতে চাইলেও সরকারকে জমি কিনতেই হবে । সিঙ্গুর আন্দোলনের পর এই রাজ্যই এমন আইন করেছে । তাই বাস্তবে তা মানতে হবে রাজ্যকে ৷
আরও পড়ুন: রাজ্য সরকারি স্কুলে নবম-দশমের সিলেবাস বদলের পরামর্শ বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর
রায়গঞ্জ এলাকায় চিড়িয়াখানা করতে জমি নিয়েছিল রাজ্য সরকার । চিড়িয়াখানার বাইরেও কিছু জমি রয়েছে ৷ সেগুলি ব্যবহার করতে পারছেন না ওই জমির মালিক ৷ তিনিই মামলা করে অভিযোগ করেছেন যে, উপযুক্ত দাম দেওয়া হচ্ছে না । আবার ব্যবহারও করতে দেওয়া হচ্ছে না । আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় এই মামলার শুনানিতে বলেন, অন্য রাজ্যে পারলেও সিঙ্গুরের আন্দোলনের জেরে এই রাজ্য অন্তত অধিগ্রহণে হ্যাঁ বলতে পারবে না । জমি অধিগ্রহণ নয়, কিনতে হবে । যদি শিল্প করতে হয় তাহলেও জমি কিনতে হবে । তাঁর কথায়, "মুখ্যমন্ত্রী সব মিটিঙে বলেন, জমি অধিগ্রহণ হবে না । ক্যাবিনেটেও বলা হয় । ফলে বাস্তবে সেটা মানতে হবে ৷"
বর্তমানে ওই জমির মূল্য রাজ্য ধার্য করেছে 2 কোটি 35 লক্ষ 93 হাজার টাকা । বিচারপতি অ্যাডভোকেট জেনারেলকে প্রশ্ন করেন, রাজ্যের স্কিমে জমি কেনা হলে অন্তত কিছু টাকা মিটিয়ে দেওয়া যায় । স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী এটা ঠিক করলে কার্যকরী করতে সমস্যা কোথায় ? এই ব্যাপারে 9 মার্চ রাজ্য তাদের বক্তব্য জানাবে । ওই দিনই এই মামলার পরবর্তী শুনানি ।