ETV Bharat / state

JMI-এর সন্ত্রাসের জন্য অর্থ জোগায় কারা? ধৃত রিজাউলেই মিলবে উত্তর, নিশ্চিত গোয়েন্দারা - Special Task Force

কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্সের হাতে ধৃত জঙ্গি শেখ রেজ়াউল । JMI-এর সন্ত্রাসের জন্য অর্থ যোগায় কারা ? উত্তর খুঁজছে পুলিশ ।

JMI
ছবি
author img

By

Published : Jun 9, 2020, 1:15 AM IST

Updated : Jun 9, 2020, 6:01 PM IST

কলকাতা, 8 জুন: দক্ষিণ ভারতে একের পর এক ডাকাতি । তদন্তে উঠে এসেছিল জামাতুল মুজ়াহিদিন ইন্ডিয়ার জঙ্গিদের নাম । কর্নাটক ও কেরালার বেশ কয়েকটি ডাকাতির ঘটনায় গোয়েন্দারা প্রমাণ পেয়েছিল সেটির । তখনই গোয়েন্দারা নিশ্চিত হয়েছিল, সংগঠন চালানো এবং বিস্ফোরক তৈরির খরচ জোগাতে ডাকাতির পথ নিয়েছে এই জঙ্গি সংগঠন । কিন্তু দক্ষিণ ভারতে একের পর এক ধরপাকড়ের পর বন্ধ হয়েছে জঙ্গিদের ডাকাতি । গোয়েন্দাদের মনে প্রশ্ন ছিল সংগঠন চালানোর টাকা আসে কীভাবে? সেই প্রশ্নের অনেকটাই উত্তর উঠে এল ধৃত জঙ্গি শেখ রেজ়াউলকে জেরা করার পর থেকে । গোয়েন্দারা জানতে পেরেছে মূলত অর্থ জোগানোর কাজ করত এই জঙ্গি ।

আজ ডানকুনি বাসস্ট্যান্ডের কাছ থেকে গ্রেপ্তার করা হয় রেজ়াউলকে । কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স সূত্রে জানা গেছে, দিন কয়েক আগে ধৃত বড় করিমকে জেরা করেই তার বিষয়ে তথ্য পায় গোয়েন্দারা । সেই হিসেবে কাজে লাগানো হয় পুলিশের চরদের । তারই ফল মিলল হাতেনাতে । এমনিতে রেজ়াউলের বাড়ি বীরভূমে । জানা গেছে, তার ট্রেনিং হয়েছিল শিমুলিয়া মাদ্রাসায় । হাত কাটা নাসিরুল্লাহ নামের এক কুখ্যাত অপরাধীর কাছেই তার ট্রেনিং । হলি আর্টিজন মামলায় বাংলাদেশের ফাঁসির সাজা প্রাপ্ত হাত কাটা নাসিরুল্লাহ ঢুকেছিল লালগোলা সীমান্ত দিয়ে । তারপর সীমান্ত লাগোয়া মোকিমনগরে তৈরি করে ঘাঁটি । একটু একটু করে দখল করে নেয় মোকিমনগর মাদ্রাসা । সেখান থেকেই শুরু করে মগজধোলাইয়ের কাজ । আবার বেলডাঙ্গার বোরখা ঘর নামে পোশাকের দোকানের আড়ালে বোমা সরবরাহের ডেরাও তৈরি করা হয়েছিল । ওই ডেরার আড়ালে ছিল শাকিল গাজি নামের এক অপরাধী । সেখানে যাতায়াত ছিল নাসিরুল্লাহর ।

খাগড়াগড়কাণ্ড নিয়ে NIA-র তদন্তে জানা গেছিল, মুর্শিদাবাদের উমরপুরে জামাতুল মুজ়াহিদিন বাংলাদেশের সাইবার সেল তৈরির পরিকল্পনা করেছিল নাসিরুল্লাহ । তার জন্য অসম সরকারের তরফে ছাত্রদের দেওয়া ল্যাপটপ জোগাড় করেছিল সে । জোগাড় করেছিল বেশকয়েকজন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারকেও । খাগড়াগড় বিস্ফোরণের পরেই ফের সামনে আসে সালাউদ্দিন এবং কওসরের নাম । জানা যায়, 2014 সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ভারতে ঢুকেই মাত্র আট মাসের মধ্যে মুর্শিদাবাদ, মালদা, বীরভূম নদিয়া ও বর্ধমানে জাল বিস্তার করে ফেলেছে সালাউদ্দিন ।

গোয়েন্দারা জানতে পারে খাগড়াগড় বিস্ফোরণের অন্যতম প্রধান অভিযুক্ত বোরহান শেখের দেওয়া যে 4 কাঠা জমিতে মহিলাদের জন্য মাদ্রাসা গড়ে উঠেছিল, সেখানে শুধুমাত্র মহিলাদের জঙ্গি খাতায় নাম লেখানোর পাঠ দেওয়াই হত না, সেখানে রেজ়াউলদের মত যুবকদের ট্রেনিংও দেওয়া হত । বর্ধমানের মঙ্গলকোটের এই মাদ্রাসার অবস্থানগত কারণে বর্ধমান, মুর্শিদাবাদ, নদিয়া এবং বীরভূমের বিভিন্ন যুবক-যুবতীদের মগজ ধোলাই চলত । তাদের কাছে অস্ত্র চালনা এবং বোমা বানানোর প্রশিক্ষণ পেয়েছিল রেজ়াউল । গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, একটা সময়ে কওসর এবং সালাউদ্দিন দু'জনেই ঘাঁটি গেড়েছিল বীরভূমে । সেই সূত্র ধরে দু'জনের সঙ্গেই ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ গড়ে ওঠে রেজ়াউলের । সেখান থেকেই তার উত্থান । গোয়েন্দারা জানতে পেরেছে, রেজ়াউল বেশকিছু হাইপ্রোফাইল জঙ্গি মিটিং আয়োজন করেছিল ।

একের পর এক ধরপাকড়ের জেরে জামাত জঙ্গিদের শীর্ষনেতারা আর এই রাজ্যকে নিরাপদ বলে মনে করছে না । যদিও এখনও ছদ্মবেশে বেশ কয়েকটি জেলায় কাজ করে চলেছে তারা । কিন্তু গোয়েন্দাদের প্রাথমিক অনুমান, শীর্ষ নেতারা লুকিয়েছে দক্ষিণের রাজ্যগুলিতে এবং বিহার, ঝাড়খণ্ডে । দিন কয়েক আগেই গয়ার বুনিয়াদপুরের পাঠানতলি থেকে ইজাজ আহমেদ নামের কুখ্যাত জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করে স্পেশাল টাস্কফোর্স । সেখানে একটি ভাড়া বাড়িতে পরিচয় গোপন করে দুব'ছর লুকিয়েছিল JMI-এর বর্তমান আমের ইজাজ । সেখানে নিজের পরিচয় দিয়েছিল রাজমিস্ত্রি হিসেবে । তাকে গ্রেপ্তারের পরে জিজ্ঞাসাবাদে প্রচুর তথ্য পায় স্পেশাল টাস্কফোর্স । পুলিশ জানতে পেরেছে সিরিয়াল ব্লাস্টের পরিকল্পনা করছিল ইজাজ় । তাই জড়ো করা হচ্ছিল বিস্ফোরক । পরে অন্য এক জঙ্গি কাশেমকে কলকাতা স্টেশন সংলগ্ন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ । কাশেমের কাছে পাওয়া যায় বেশ কিছু লিফলেট, অডিয়ো রেকর্ডার ও পেনড্রাইভ ।

কলকাতা, 8 জুন: দক্ষিণ ভারতে একের পর এক ডাকাতি । তদন্তে উঠে এসেছিল জামাতুল মুজ়াহিদিন ইন্ডিয়ার জঙ্গিদের নাম । কর্নাটক ও কেরালার বেশ কয়েকটি ডাকাতির ঘটনায় গোয়েন্দারা প্রমাণ পেয়েছিল সেটির । তখনই গোয়েন্দারা নিশ্চিত হয়েছিল, সংগঠন চালানো এবং বিস্ফোরক তৈরির খরচ জোগাতে ডাকাতির পথ নিয়েছে এই জঙ্গি সংগঠন । কিন্তু দক্ষিণ ভারতে একের পর এক ধরপাকড়ের পর বন্ধ হয়েছে জঙ্গিদের ডাকাতি । গোয়েন্দাদের মনে প্রশ্ন ছিল সংগঠন চালানোর টাকা আসে কীভাবে? সেই প্রশ্নের অনেকটাই উত্তর উঠে এল ধৃত জঙ্গি শেখ রেজ়াউলকে জেরা করার পর থেকে । গোয়েন্দারা জানতে পেরেছে মূলত অর্থ জোগানোর কাজ করত এই জঙ্গি ।

আজ ডানকুনি বাসস্ট্যান্ডের কাছ থেকে গ্রেপ্তার করা হয় রেজ়াউলকে । কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স সূত্রে জানা গেছে, দিন কয়েক আগে ধৃত বড় করিমকে জেরা করেই তার বিষয়ে তথ্য পায় গোয়েন্দারা । সেই হিসেবে কাজে লাগানো হয় পুলিশের চরদের । তারই ফল মিলল হাতেনাতে । এমনিতে রেজ়াউলের বাড়ি বীরভূমে । জানা গেছে, তার ট্রেনিং হয়েছিল শিমুলিয়া মাদ্রাসায় । হাত কাটা নাসিরুল্লাহ নামের এক কুখ্যাত অপরাধীর কাছেই তার ট্রেনিং । হলি আর্টিজন মামলায় বাংলাদেশের ফাঁসির সাজা প্রাপ্ত হাত কাটা নাসিরুল্লাহ ঢুকেছিল লালগোলা সীমান্ত দিয়ে । তারপর সীমান্ত লাগোয়া মোকিমনগরে তৈরি করে ঘাঁটি । একটু একটু করে দখল করে নেয় মোকিমনগর মাদ্রাসা । সেখান থেকেই শুরু করে মগজধোলাইয়ের কাজ । আবার বেলডাঙ্গার বোরখা ঘর নামে পোশাকের দোকানের আড়ালে বোমা সরবরাহের ডেরাও তৈরি করা হয়েছিল । ওই ডেরার আড়ালে ছিল শাকিল গাজি নামের এক অপরাধী । সেখানে যাতায়াত ছিল নাসিরুল্লাহর ।

খাগড়াগড়কাণ্ড নিয়ে NIA-র তদন্তে জানা গেছিল, মুর্শিদাবাদের উমরপুরে জামাতুল মুজ়াহিদিন বাংলাদেশের সাইবার সেল তৈরির পরিকল্পনা করেছিল নাসিরুল্লাহ । তার জন্য অসম সরকারের তরফে ছাত্রদের দেওয়া ল্যাপটপ জোগাড় করেছিল সে । জোগাড় করেছিল বেশকয়েকজন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারকেও । খাগড়াগড় বিস্ফোরণের পরেই ফের সামনে আসে সালাউদ্দিন এবং কওসরের নাম । জানা যায়, 2014 সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ভারতে ঢুকেই মাত্র আট মাসের মধ্যে মুর্শিদাবাদ, মালদা, বীরভূম নদিয়া ও বর্ধমানে জাল বিস্তার করে ফেলেছে সালাউদ্দিন ।

গোয়েন্দারা জানতে পারে খাগড়াগড় বিস্ফোরণের অন্যতম প্রধান অভিযুক্ত বোরহান শেখের দেওয়া যে 4 কাঠা জমিতে মহিলাদের জন্য মাদ্রাসা গড়ে উঠেছিল, সেখানে শুধুমাত্র মহিলাদের জঙ্গি খাতায় নাম লেখানোর পাঠ দেওয়াই হত না, সেখানে রেজ়াউলদের মত যুবকদের ট্রেনিংও দেওয়া হত । বর্ধমানের মঙ্গলকোটের এই মাদ্রাসার অবস্থানগত কারণে বর্ধমান, মুর্শিদাবাদ, নদিয়া এবং বীরভূমের বিভিন্ন যুবক-যুবতীদের মগজ ধোলাই চলত । তাদের কাছে অস্ত্র চালনা এবং বোমা বানানোর প্রশিক্ষণ পেয়েছিল রেজ়াউল । গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, একটা সময়ে কওসর এবং সালাউদ্দিন দু'জনেই ঘাঁটি গেড়েছিল বীরভূমে । সেই সূত্র ধরে দু'জনের সঙ্গেই ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ গড়ে ওঠে রেজ়াউলের । সেখান থেকেই তার উত্থান । গোয়েন্দারা জানতে পেরেছে, রেজ়াউল বেশকিছু হাইপ্রোফাইল জঙ্গি মিটিং আয়োজন করেছিল ।

একের পর এক ধরপাকড়ের জেরে জামাত জঙ্গিদের শীর্ষনেতারা আর এই রাজ্যকে নিরাপদ বলে মনে করছে না । যদিও এখনও ছদ্মবেশে বেশ কয়েকটি জেলায় কাজ করে চলেছে তারা । কিন্তু গোয়েন্দাদের প্রাথমিক অনুমান, শীর্ষ নেতারা লুকিয়েছে দক্ষিণের রাজ্যগুলিতে এবং বিহার, ঝাড়খণ্ডে । দিন কয়েক আগেই গয়ার বুনিয়াদপুরের পাঠানতলি থেকে ইজাজ আহমেদ নামের কুখ্যাত জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করে স্পেশাল টাস্কফোর্স । সেখানে একটি ভাড়া বাড়িতে পরিচয় গোপন করে দুব'ছর লুকিয়েছিল JMI-এর বর্তমান আমের ইজাজ । সেখানে নিজের পরিচয় দিয়েছিল রাজমিস্ত্রি হিসেবে । তাকে গ্রেপ্তারের পরে জিজ্ঞাসাবাদে প্রচুর তথ্য পায় স্পেশাল টাস্কফোর্স । পুলিশ জানতে পেরেছে সিরিয়াল ব্লাস্টের পরিকল্পনা করছিল ইজাজ় । তাই জড়ো করা হচ্ছিল বিস্ফোরক । পরে অন্য এক জঙ্গি কাশেমকে কলকাতা স্টেশন সংলগ্ন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ । কাশেমের কাছে পাওয়া যায় বেশ কিছু লিফলেট, অডিয়ো রেকর্ডার ও পেনড্রাইভ ।

Last Updated : Jun 9, 2020, 6:01 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.