কলকাতা, 14 জুন : আনলক 1 -এ ধীরে ধীরে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরছে কলকাতা ৷ মানুষও কাজের সূত্রে বাইরে বের হচ্ছেন ৷ তাই মানুষের প্রয়োজনের কথা মাথায় রেখে 1 জুন থেকে খুলে গেছে কলকাতার সুলভ শৌচালয়গুলি ৷ কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে কতটা সুরক্ষিত এই সুলভ শৌচালয়গুলি ? আদৌ কি সেখানে মেনে চলা হচ্ছে স্বাস্থ্যবিধি ?
এই শৌচালয়গুলির হালহকিকত জানতেই কলকাতার বিভিন্ন জায়গা ঘুরে দেখলেন ETV ভারতের প্রতিনিধি ৷ কথা বললেন, বিভিন্ন শৌচালয়ের কর্মীদের সঙ্গে ৷ শৌচালয় ব্যবহারকারীদের সঙ্গেও কথা বলা হয় ৷ আর তাতেই উঠে এল আসল তথ্য ৷ জানা গেল, কলকাতা পৌরনিগমের অধীন কিছু শৌচালয় দিনে তিনবার করে স্যানিটাইজ় করা হচ্ছে ৷ যদিও অন্যান্য শৌচালয়গুলিতে এখনও ফিনাইল ও সাবান জল দিয়েই কাজ সারা হচ্ছে ৷ কিন্তু স্বাস্থ্যবিধি মেনে যে শৌচালয় প্রতিবার ব্যবহারের পরই পরিষ্কার করা হচ্ছে তা নিশ্চিতভাবে বলতে পারলেন না কেউই ৷ তবে, আগের থেকে বেশি বার শৌচালয় পরিষ্কার করা হচ্ছে বলে জানালেন অনেক কর্মীই ৷
অন্যদিকে আগের থেকে বেশি বার পরিষ্কার করা হলেও খুব কম মানুষই আসছেন এই সুলভ শৌচালয়গুলিতে ৷ যার জেরে সমস্যায় পড়ছেন শৌচালয়ের কর্মীরা ৷ রোজগার হচ্ছে না ঠিকমতো ৷ এই বিষয়ে টালিগঞ্জ অঞ্চলের একটি শৌচালয়ের কর্মী অশেষ রানা বলেন, "আগে সারা দিনে দু'বার পরিষ্কার করা হত শৌচালয় ৷ এখন সাবান ও শ্যাম্পু দিয়ে সারা দিনে তিনবার পরিষ্কার করা হচ্ছে ৷ কিন্তু তারপরও লোক নেই ৷ সারা দিনে নাম মাত্র আয় হচ্ছে ৷ আমি আমার নিজের পকেট থেকে অন্যান্য কর্মীদের টাকা দিচ্ছি ৷"
কিছু শৌচালয়ের কর্মীরা আবার মাস্ক পরছেন না বলেও অভিযোগ তুলতে দেখা গেল এক ব্যক্তিকে ৷ গোপাল হালদার ৷ সম্প্রতি তিনি সুলভ শৌচালয় ব্যবহার করেছেন ৷ তাঁর অভিজ্ঞতার কথা জিজ্ঞাসা করা হয় ৷ তিনি বলেন, "এই সংক্রমণের পরিস্থিতিতে যখন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা এবং নিয়মিত স্যানিটাইজ়েশনের উপর জোর দেওয়া হচ্ছে তখন এমন বহু শৌচালয় রয়েছে যেখানে প্রবেশ অসম্ভব ৷ সেখানকার কর্মীদের মাস্ক পরার কোনও বালাই নেই ৷ বাথরুমও নিয়মিত পরিষ্কার করা হয় না ৷ অত্যন্ত খারাপ দশা শৌচালয়গুলির ৷"
শৌচালয় ব্যবহারের পর একই অভিজ্ঞতা পার্থবাবুরও ৷ তিনি সম্প্রতি রাসবিহারী এলাকার একটি শৌচালয় ব্যবহার করেছেন ৷ তিনি জানান, রাসবিহারীর এই শৌচালয়টি মোটামুটি পরিষ্কার ৷ তবে, একজন শৌচালয় ব্যবহার করার পরই যে পরিষ্কার করা হচ্ছে তা দেখে মনে হয়নি তাঁর ৷
রাসবিহারীর এই শৌচালয়ের এক কর্মীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এটি কলকাতা পৌরনিগমের অধীন ৷ কিন্তু তারপরও এখনও পর্যন্ত একবারের জন্য স্যানিটাইজ় করা হয়নি শৌচালয়টি ৷
সব মিলিয়ে বলা যেতে পারে, আগের থেকে কলকাতার শৌচালয়গুলিতে পরিচ্ছন্নতা বেড়েছে ৷ তবে, বর্তমান পরিস্থিতিতে তা যথেষ্ট কি না সেটা স্পষ্টভাবে বলা যাচ্ছে না ৷