কলকাতা, 1 অগস্ট: অন্য খেলা যখন করোনা ভাইরাসের ধাক্কা সামলে পুরোপুরি গুছিয়ে উঠতে ব্যস্ত তখন কার্যত মসৃন গতিতে উত্থান বাংলার টেবিল টেনিসের । কোভিড বিধিনিষেধের বেড়া অল্প শিথিল হতেই গতবছর থেকেই টেবিল টেনিস ডানা মেলতে শুরু করেছিল। রাজ্য চ্যাম্পিয়নশীপ আয়োজিত হয়েছিল সমারোহে । এবছর কোভিড পরিস্থিতি আরও উন্নত হওয়ায় এরাজ্যের টেবিল টেনিস পুরানো ছন্দে (West Bengal Table Tanis is back on track after COVID) । নতুন মরশুমে তিন হাজার খেলোয়াড় নাম নথিভুক্ত করেছেন । যা গতবছর ছিল অর্ধেক । নেপথ্যে ছিল কোভিড আতঙ্ক ৷
চলতি বছরে সেই বাধা দূর হয়েছে । তার থেকেও বড় কথা রাজ্য টেবিল টেনিসের একাধিক খেলোয়াড় নিয়মিত ভালো খেলছেন ৷ বিদেশেও প্রতিনিধিত্ব করছেন । রাজ্য টেবিল টেনিস সংস্থার যুগ্ম সচিব শর্মি সেনগুপ্ত বলছেন, "গত বছর আমরা এপ্রিল মাসে শুরু করলেও চারটে টুর্নামেন্টের পর কোভিড বিধিনিষেধের কারণেই বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছিলাম । তারপর রাজ্য চ্যাম্পিয়নশীপ করেছিলাম । আমাদের এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাইশটা টুর্নামেন্ট হয়। এত বেশি টুর্নামেন্ট দেশের অন্য কোনও রাজ্যে হয় না। গতবছর বিধিনিষেধের কারণেই হাজার দেড়েক ছেলেমেয়ে নথিভুক্ত হয়েছিল । এবার সেই সংখ্যাটা দ্বিগুন । বারোশো খেলোয়াড় শুধু টুর্নামেন্ট খেলছে । এবারও একের পর এক টুর্নামেন্ট হচ্ছে । বাইশটি টুর্নামেন্ট হবে । নিয়মিত খেলার সুযোগ পেয়ে খেলোয়াড়দের গ্রাফটা এতটাই ওপরে যে তারা জাতীয় পর্যায়ে নিয়মিত পারফরম্যান্স করছে এবং সাফল্য পাচ্ছে । শুধু দেশে কেন, দেশের বাইরেও আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টেও আমাদের ছেলেরা নিয়মিত যাচ্ছে সাফল্য পাচ্ছে ।"
আরও পড়ুন: দেউলপুরের ভাঙা বাড়ি থেকে কমনওয়েলথের পোডিয়াম, স্বপ্নকে সঙ্গী করেই ইতিহাসে অচিন্ত্য
খুব সম্প্রতি অঙ্কলিকা চক্রবর্তী, আদিত্য দাস, রঞ্জিনি সাহা, অহনা রায়, সমৃদ্ধা ভট্টাচার্য, অভিষা কর্মকার, ছাড়াও বোধিসত্ত্ব দত্ত,শুভাঙ্কৃতা দত্ত,অঙ্কুর ভট্টাচার্য, মুনমুন কুণ্ডুরা সফল হয়েছেন । "এটা সত্যিই আমাদের খেলোয়াড়রা নিয়মিত সাফল্য নিয়ে আসছে । বিদেশেও খেলতে যাচ্ছে তারা । শুধু খেলোয়াড়রা নয় এই কৃতিত্ব কোচেদেরও । অনিন্দিতা চক্রবর্তী কমনওয়েলথ গেমসে গিয়েছেন । অনির্বাণ নন্দী হাঙ্গেরী ওপেনে গিয়েছেন । সুইডেন ওপেনে কোচ হিসেবে যাচ্ছেন শুভজিৎ পাপ্পু সাহা । একটু ভালো খেললেই তাদের তুলে নিয়ে আসা, সুযোগ দেওয়ার ব্যাপারে আমরা বর্তমান টিটিএফআই কর্তাদের কাছে তদবির করছি । সাই আর্থিকভাবে খেলোয়াড়দের পাশে দাঁড়াচ্ছে । একসঙ্গে ছয়জন খেলোয়াড়ের সুইডেন ওপেনে যাওয়া এর আগে কিন্তু হয়নি । সেদিক থেকে এটা এই রাজ্যের টেবিল টেনিসের জন্য যে ভাল বিজ্ঞাপন তা বলাই যায় । আমরা প্রশাসক হিসেবে খেলোয়াড়দের সাহায্য করছি, খেলোয়াড়রা পারফরম্যান্স করে এই চেষ্টার মুল্য দিচ্ছে," বলছিলেন শর্মি সেনগুপ্ত । সবমিলিয়ে বলা যায় কোভিড পরবর্তী সময়ে বাংলার টেবিল টেনিসে একটা ফিল গুড আবহাওয়া এসেছে।