কলকাতা, 29 ডিসেম্বর: আবারও চোখ রাঙাচ্ছে করোনাভাইরাস (Coronavirus) ৷ পড়শি চিনের অবস্থা কাহিল ৷ বিশেষজ্ঞরা জোর দিচ্ছেন টিকাকরণের উপর ৷ যদিও তা নিয়ে ইতিমধ্যেই কিছু ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে (মূলত, বুস্টার ডোজ আর ন্যাজাল ভ্যাকসিন নিয়ে) ৷ এদিকে হিসাব বলছে, রাজ্যের (West Bengal Government) কোভিড টিকার (Covid Vaccine) ভাঁড়ার প্রায় শূন্য ! এই অবস্থায় যদি ফের একবার আছড়ে পড়ে করোনার ঢেউ, তাহলে সেই পরিস্থিতি সামাল দেওয়া হবে কীভাবে ? তবে সরকারের দাবি, তারা প্রস্তুত ৷ এমনকী, এ নিয়ে নবান্নে জরুরি বৈঠকও করেছেন মুখ্যসচিব, স্বাস্থ্যসচিব-সহ অন্য়রা ৷ তারপরও কিছু বিষয় নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে ৷ তার একটা বড় কারণ হল কেন্দ্রের বিভিন্ন নির্দেশিকা ৷
সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই করোনা সংক্রান্ত একাধিক নির্দেশিকা জারি করেছে কেন্দ্রীয় সরকার ৷ এর আগের দফায়, যতবার করোনা দেশে থাবা বসানোর চেষ্টা করেছে, ততবার আক্রান্তদের সারিয়ে তোলার জন্য কিছু নির্দিষ্ট ওষুধ খাওয়ানো হয়েছে ৷ কিন্তু, বর্তমানে সেইসব ওষুধের মধ্য়ে প্রায় অর্ধেকই ব্যবহার না-করার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্র ৷ তথ্য বলছে, প্রথমে করোনা আক্রান্তদের আইভারমেকটিন, অ্যজিথ্রোমাইসিন, ডক্সিসাইক্লিন জাতীয় ওষুধ দেওয়া হত ৷ কিন্তু, এইসব ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া অত্যন্ত বেশি ৷ সেই কারণে বর্তমানে কেন্দ্রীয় সরকার এই ওষুধগুলি করোনা চিকিৎসায় ব্যবহার না করার নির্দেশ দিয়েছে ৷
আরও পড়ুন: রাজ্যে এখনই কার্যকর হচ্ছে না করোনাবিধি, বৈঠকের পর জানালেন মুখ্যসচিব
এই প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে ফার্মাকোলজিস্ট তথা চিকিৎসক অর্পণ দত্তরায় বলেন, "রোগীর অবস্থা বুঝে তাঁদের এই ওষুধগুলি দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার ৷ কিন্তু, পরবর্তীতে এই ওষুধগুলির ব্যবহার বন্ধ করতে বলা হয় ৷ তবে, এখনও পর্যন্ত এ নিয়ে নতুন কোনও গাইডলাইন দেওয়া হয়নি ৷ সমস্যা হল, কিছু মানুষের মধ্যে নিজে থেকেই ওষুধ খাওয়ার প্রবণতা রয়েছে ৷ তাঁরা জ্বর হলেই প্যারাসিটামল খেয়ে নেন ৷ এটা একেবারেই ঠিক নয় ৷ চিকিৎসকের পরামর্শ না নিয়ে কোনও ওষুধই খাওয়া উচিত নয় ৷"
এদিকে, চিন-সহ বিভিন্ন দেশে আবারও করোনার বাড়বাড়ন্ত শুরু হতেই ফের একবার বুস্টার ডোজ নেওয়ার উপর গুরুত্ব দিচ্ছেন চিকিৎসকরা ৷ ইতিমধ্যে প্রস্তুত হয়ে গিয়েছে করোনার ন্য়াজাল ভ্য়াকসিনও ৷ যদিও কারা এই ভ্যাকসিন নিতে পারবেন, আর কারা নিতে পারবেন না, তা নিয়ে কিছু সংশয় রয়েছে ৷ এই প্রেক্ষাপটে চিন্তা বাড়াচ্ছে রাজ্যের প্রায় শূন্য হয়ে যাওয়া করোনা টিকার ভাঁড়ার ৷ সূত্রের দাবি, এই মুহূর্তে রাজ্য সরকারের হাতে মাত্র 280টি কোভিশিল্ড রয়েছে ! সেন্ট্রাল স্টোরে করবিভ্যাক্স নেই ৷ এছাড়া, মজুত কোভ্যাক্সিন রয়েছে 46 হাজার ৷ এখন যদি টিকা নিতে মানুষের ভিড় বাড়ে, তাহলে কীভাবে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া হবে, তা নিয়ে উদ্বিগ্ন রাজ্য প্রশাসন ৷ এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রকে চিঠি পাঠিয়ে ফের একবার পর্যাপ্ত পরিমাণে করোনা টিকা মজুত করে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার ৷