কলকাতা, 7 অগস্ট: চার বছরের ডিগ্রি কোর্স চালু করতে গিয়ে আগেই রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছিলেন যে রাজ্য জাতীয় শিক্ষানীতি কার্যকর হচ্ছে না । তার বদলে রাজ্য সরকার নিজস্ব শিক্ষা নীতি বলবৎ করবে । ইতিমধ্যেই রাজ্য শিক্ষানীতি কার্যকর করতে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করেছিল রাজ্য সরকার । সেই কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে আজ অর্থাৎ সোমবার রাজ্য মন্ত্রিসভা রাজ্য শিক্ষানীতিতে সিলমোহর দিল ।
রাজ্যে চালু হওয়া চার বছরের ডিগ্রি কোর্স এই নতুন শিক্ষানীতির অংশ বলে জানা যাচ্ছে । একই সঙ্গে এই রাজ্য শিক্ষানীতিতে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য সরকার । যেখানে রাজ্যের সমস্ত স্কুলের ইংরেজি ও বাংলা ভাষা বাধ্যতামূলক করা হল । সরকারি এবং প্রাইভেট উভয় স্কুলেই ছাত্র-ছাত্রীদের এই ভাষা শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে । এক্ষেত্রে তৃতীয় ভাষা হিসেবে কোনও স্কুল চাইলে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের স্থানীয় ভাষাকে গুরুত্ব দিতে পারে ।
বহু ক্ষেত্রে দেখা যায় ইংরেজি মাধ্যম স্কুলগুলিতে বাংলা পড়ানো নিয়ে অনীহা । রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারবার বলেছেন মাতৃভাষা শিক্ষার গুরুত্বের কথা । একদা পার্থ চট্টোপাধ্যায় শিক্ষামন্ত্রী থাকাকালীন বাংলা ভাষাকে বাধ্যতামূলক করার একটা উদ্যোগ সরকারের তরফ থেকে করা হয়েছিল । কিন্তু সেই সময় রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ শুরু হয়েছিল । সবচেয়ে বেশি উত্তাপ ছড়িয়েছিল পাহাড়ে ।
তাই এবার শিক্ষানীতিতে বাংলা ও ইংরেজি বাধ্যতামূলক করার কথা বলা হলেও একই সঙ্গে স্থানীয় ভাষাকে গুরুত্ব দেওয়ার উপরে জোর দেওয়া হয়েছে । যাতে এই নিয়ে নতুন করে কোনও আঞ্চলিক আবেগ থেকে উত্তাপ তৈরি না হয় । এক্ষেত্রে যেখানে যে জনগোষ্ঠীর জনসংখ্যার মানুষের বাস বেশি রয়েছে, সেখানে আঞ্চলিক ভাষাকে গুরুত্ব দিয়ে সেই ভাষাও পড়ানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে । মনে করা হচ্ছে, এমন সিদ্ধান্তের ফলে আঞ্চলিক আবেগ সরকারি সিদ্ধান্ত প্রয়োগের ক্ষেত্রে কোনও বাধা হবে না ।
আরও পড়ুন: জাতীয় শিক্ষানীতি মেনেই চার বছরের স্নাতক কোর্স চালু রাজ্যে ! মমতার দাবি, এতে পড়ুয়াদেরই সুবিধা হবে
একইভাবে এই শিক্ষানীতির অংশ হিসেবে শিক্ষা কমিশনের কথা বলা হয়েছে । এর মাধ্যমে বেসরকারি স্কুলগুলির ইচ্ছা খুশিমতো ফি নেওয়ার পথে একটা নিয়ন্ত্রণ আনতে চাইছে রাজ্য সরকার ।