কলকাতা, 13 মার্চ : অটল বিহারী বাজপেয়ীর আমলে যে বিজেপি ছিল, যে সরকার ছিল, আজকের সরকার এবং দলের সঙ্গে তার অনেক তফাৎ রয়েছে ৷ তৃণমূলে যোগ দিয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে বললেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী যশবন্ত সিনহা ৷ তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে আজ তৃণমূলে যোগ দিলেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী যশোবন্ত সিনহা ৷ তৃণমূল ভবন থেকে তিনি মমতা-ব্রিগেডে যোগ দেন ৷ উল্লেখ্য, বিজেপি আগেই তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করেছিল ৷
যশবন্ত সিনহাকে দলে স্বাগত জানাতে আজ তৃণমূল ভবনে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সুব্রত মুখোপাধ্যায় ও ডেরেক ও'ব্রায়েন ৷ নবাগত নেতার হাতে আজ জোড়াফুলের পতাকা তুলে দেন তৃণমূলের নেতারা ৷ সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের মতে, আগামী দিনে তৃণমূলের পথ প্রদর্শক হবেন যশোবন্ত ৷ তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ও আবেগাপ্লুত ৷ বললেন, বাজপেয়ী আমলে অন্যতম স্তম্ভ ছিলেন যশোবন্ত সিনহা ৷ আমি অনেকবার ভেবেছিলাম আমরা একসঙ্গে কাজ করতে পারব ৷ আজ সেই স্বপ্ন সত্যি হল ৷
মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে প্রায় 45 মিনিট কথা হয়েছে যশোবন্ত সিনহার ৷ তারপরেই আজ তৃণমূল ভবন থেকে মমতা-ব্রিগেডে যোগ দিলেন বর্ষীয়ান নেতা ৷ যশোবন্ত সিনহার তৃণমূলে যোগদান নিঃসন্দেহে দলের শক্তি অনেকাংশে বাড়িয়ে দেবেন বলেই মনে করছে তৃণমূল নেতৃত্ব ৷
আরও পড়ুন : জমি আন্দোলনের আবেগ ফেরাতেই কি নন্দীগ্রাম দিবসে ইস্তাহার প্রকাশ তৃণমূলের ?
একসময় অটল বিহারী বাজপেয়ীর ক্যাবিনেটের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলেন যশবন্ত সিনহা ৷ তবে আজ কেন দল ছাড়ছেন তিনি ? উত্তর দিলেন নিজেই ৷ স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, এখনকার দল আর অটলজির সময়ের দলের মধ্যে অনেক তফাৎ রয়েছে ৷ মোদি-শাহ দিল্লি থেকে যেভাবে চালানোর চেষ্টা করছে, তা দেশের আমজনতা মেনে নেবে না ৷ বাংলার ভোট থেকেই তার শুরু হচ্ছে ৷
তোপ দাগলেন নির্বাচন কমিশনের উপরেও ৷ সরাসরি অভিযোগ তুলে বললেন, নির্বাচন কমিশন এখন আর স্বতন্ত্র সংস্থা নেই ৷ সংবিধানে রাষ্ট্রপতি শাসনের কথা বলা রয়েছে ৷ কিন্তু, এখন আদর্শ আচারণবিধির নামে নির্বাচন কমিশনের শাসন চলছে বলেও অভিযোগ করেন বর্ষীয়ান নেতা ৷ তাঁর মতে, নির্বাচন কমিশন কেন্দ্রের হাতের পুতুলে পরিণত হয়েছে ৷
এদিকে আজ তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর থেকেই বিজেপিকে একের পর এক বাক্যবাণে বিদ্ধ করতে শুরু করেন যশবন্ত সিনহা ৷ বললেন, "সরকারের খামখেয়ালিপনার উপর বাধা দেওয়ার মতো কেউ আর নেই ৷ গণতন্ত্রের মানে শুধুমাত্র ভোট দেওয়া নয়, গণতন্ত্র মানে যে সরকার তৈরি হচ্ছে, তা সারাক্ষণ আমজনতার প্রতি তার কর্তব্য পালন করা ৷ আজ দেশের যা অবস্থা তাতে মনে হচ্ছে কারও কিছু যায় আসে না ৷ অন্নদাতারা রাস্তায় বসে রয়েছেন, কিন্তু কারও কোনও হেলদোল নেই ৷ পরিযায়ী শ্রমিকরা যেভাবে পায়ে হাঁটে বাড়ি ফিরতে বাধ্য হয়েছেন... সবকিছু দেখে মনে হচ্ছে... সরকারের কিছু যায়-আসে না ৷" প্রশ্ন তুললেন দেশের বিচারব্যবস্থা নিয়েও ৷