ETV Bharat / state

নবান্ন দখলে মাঠে সাংসদরা, পদ্মবনে প্রার্থীর অভাব ? - বিজেপির প্রার্থীতালিকায় চার সাংসদ

দু'বারের সাংসদ বাবুল ৷ মোদি সরকারের রাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্বও সামলাচ্ছেন ৷ কিন্তু নীলবাড়ির দখল নিতে তাঁকেও টেনে আনতে হচ্ছে দিল্লি থেকে ৷ রাজ্যে কি বিজেপির প্রার্থীর এতটাই অভাব পড়েছে ?

West Bengal Assembly Election 2021
ছবি
author img

By

Published : Mar 14, 2021, 8:14 PM IST

Updated : Mar 15, 2021, 5:38 PM IST

কলকাতা, 14 মার্চ : টিকিট দেওয়া হল হুগলির সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়কে ৷ কোচবিহারের সাংসদ নিশীথ প্রামাণিকও টিকিট পেলেন ৷ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়কেও নিয়ে আসা হচ্ছে এবারের ভোটে ৷ টালিগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্র থেকে নির্বাচনে লড়বেন তিনি ৷ এমনকি রাজ্যসভার সাংসদ স্বপন দাশগুপ্তকেও টেনে আনতে হচ্ছে বঙ্গ-জয়ের লক্ষ্যে ৷ নীলবাড়ি দখলের লড়াইয়ে ময়দানে নামাতে হচ্ছে একঝাঁক সাংসদকে ৷

আসানসোল থেকে টলিপাড়ায় নিয়ে আসা হচ্ছে বাবুলকে ৷ লকেট দাঁড়াচ্ছেন চুঁচুড়া থেকে ৷ দিনহাটায় বিজেপি ভরসা রাখছে নিশীথ প্রামাণিকের উপর ৷ এখানেই প্রশ্ন উঠতে, তাহলে কি বিজেপির প্রার্থী এতটাই কম পড়ে যাচ্ছে বঙ্গে ? এত ধুমধাম, এত হাঁক-ডাক, পুরোটাই কি সার ?

রাজ্যে বিজেপির শক্তি বাড়লেও নেতৃত্ব নিয়ে এর আগেও একাধিকবার প্রশ্ন তুলেছিলেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা ৷ আজ বিজেপির প্রার্থী তালিকা প্রকাশের পর আরও একবার সেই প্রশ্নটাই যেন প্রকট হয়ে উঠছে ৷

দলের সব কর্মীকে সবরকমভাবে কাজে লাগানো হচ্ছে, বললেন জয়প্রকাশ

শুধু সাংসদরাই নন, দলে জায়গা পেয়েছেন একঝাঁক তৃণমূলত্যাগীও ৷ সিঙ্গুর থেকে বিজেপির বাজি রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য ৷ তৃণমূলের প্রার্থীতালিকায় জায়গা না পেয়ে, বিজেপিতে এসেছেন তিনি ৷ শুভেন্দু আগেই প্রার্থী হয়েছেন ৷ এবারের ভোটে সবথেকে হাই ভোল্টেজ কেন্দ্র নন্দীগ্রামে বিজেপির বাজি শুভেন্দু ৷ এছাড়াও ভোটের মুখে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, দীপক হালদার, প্রবীর ঘোষালরা ৷ তিনজনেই জায়গা পেয়েছেন পদ্মের প্রার্থীতালিকায় ৷

আরও পড়ুন : বাবুল, নিশীথ, লকেট... বিজেপির প্রার্থীতালিকায় একাধিক হেভিওয়েট

নিজের শক্ত ঘাঁটি ডোমজুড় থেকেই ভোটে লড়বেন রাজীব, ডায়মন্ড হারবার থেকে লড়বেন দীপক হালদার ৷ আর প্রবীর ঘোষাল টিকিট পেয়েছেন উত্তরপাড়া থেকে ৷ অনেকেই বলছেন, ভোটের বাজারে নিজেদের প্রার্থীর খামতি মেটাতেই এতজন তৃণমূলত্যাগীকে দলে টিকিট দিয়েছে বিজেপি ৷

টলিপাড়ার একঝাঁক পরিচিত মুখও জায়গা পেয়েছে বিজেপির প্রার্থীতালিকায় ৷ সোনারপুরে লাভলি মৈত্রর বিপরীতে লড়ছেন অঞ্জনা বসু ৷ বেহালা পূর্বে লড়ছেন পায়েল ৷ শ্যামপুর থেকে টিকিট পেয়েছেন তনুশ্রী ৷ সর্বসাকুল্যে আগাগোড়া বিজেপি করে এসেছেন এমন প্রার্থী হাতে গুনে বলা যাবে বলেও মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা ৷

এরই মধ্যে তৃণমূলীরা যে তত্ত্বটি তুলে ধরছেন, তা হল আদি ও নব্য বিজেপির সংঘাত ৷ হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিটের অনেকেই বলছেন, বিজেপি যতই বাংলায় কেন্দ্রের নেতৃত্বের আস্ফালন দেখানোর চেষ্টা করুক, আদতে জেলা স্তরে এখনও নব্য ও আদি বিজেপির মধ্যে সম্পর্ক মোটেও ভালো নয় ৷ বিজেপির প্রার্থীতালিকায় সাংসদদের টেনে নিয়ে আসা আর তৃণমূলত্যাগীদের জায়গা করে দেওয়া তারই প্রতিফলন বলে মনে করছেন অনেকে ৷

তবে মুরলিধর সেন লেন থেকে কিন্তু অন্য যুক্তি দেওয়া হচ্ছে ৷ বিজেপি ক্ষমতায় এলে রাজ্যে বিজেপির মন্ত্রিসভা কেমন হবে, তারই একটি ইঙ্গিত রয়েছে আজকের প্রার্থীতালিকায় ৷ আজ শুধু দ্বিতীয় ও তৃতীয় দফায় ভোটগ্রহণ রয়েছে এমন 63 টি কেন্দ্রের প্রার্থীতালিকা প্রকাশ করা হয়েছে ৷ এর পরের দফাগুলির প্রার্থীতালিকাতেও বেশ কয়েকজন সাংসদের নাম থাকতে পারে বলে মুরলিধর সেন লেন সূত্রে খবর ৷

আরও পড়ুন : বিজেপিতে যোগ দিয়েই কেন মিঠুন-শুভেন্দুরা কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা পাচ্ছেন ?

2014 সালে যখন বিজেপি কেন্দ্রে ক্ষমতায় এল, তখন থেকেই মোদি সরকারের রাষ্ট্রমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় ৷ পরপর দু'বার লোকসভায় আসানসোল থেকে ভোটে লড়ে জিতেছেন তিনি ৷ সেখান থেকে দেখতে গেলে, বাবুলকে সংসদ থেকে টেনে বিধানসভা ভোটে নিয়ে আসাটা কতটা যুক্তিযুক্ত ?

বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার অবশ্য বলছেন, প্রার্থী হিসেবে দলের তাঁকে এখানে দরকার, তাই তাঁকে নিয়ে আসা হয়েছে ৷ শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের তৈরি দল এখনও এই রাজ্যে ক্ষমতায় আসেনি ৷ এখন ক্ষমতার দরজার কাছে পৌঁছেছে ৷ সেই কারণে দলের সব কর্মীকে সবরকমভাবে কাজে লাগানো হচ্ছে ৷ বিজেপি যে রাজ্যে ক্ষমতায় আসার জন্য সর্বশক্তি দিয়ে লড়ছে, সেটাই সবথেকে বড় কথা ৷

পাশাপাশি, টিকিট না পাওয়া তৃণমূলত্যাগীরা যে প্রার্থী হওয়ার আশায় বিজেপিতে আসছেন, এমন অভিযোগও উড়িয়ে দিয়েছেন জয়প্রকাশ ৷ তাঁর কথায়, তৃণমূলে টিকিট পেয়েও তো প্রার্থীরা বিজেপিতে এসে যোগ দিচ্ছেন ৷

তবে বঙ্গ বিজেপির নেতৃত্ব যাই বলুক না কেন, দলে জেলাস্তরে একটা বড় অংশের মধ্যে নব্য-আদি বিজেপির মধ্যে একটি দ্বন্দ্ব রয়েছে বলেই মনে করছেন রাজ্য রাজনীতির পর্যবেক্ষকরা ৷ অনেকেই মনে করছেন, সেই দ্বন্দ্ব চাপা দিতেই তারকা প্রার্থীদের এবং নবাগত নেতাদের গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে ৷ তারই প্রতিফলন পড়ছে বিজেপির প্রার্থীতালিকায় ৷

নীলবাড়ির দখলের লড়াইয়ে এখন এই সাংসদ-তারকাপ্রার্থী খচিত তালিকা কতটা প্রভাব ফেলতে পারে, সেই দিকেই তাকিয়ে রয়েছেন রাজ্য রাজনীতির বিশ্লেষকরা ৷

কলকাতা, 14 মার্চ : টিকিট দেওয়া হল হুগলির সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়কে ৷ কোচবিহারের সাংসদ নিশীথ প্রামাণিকও টিকিট পেলেন ৷ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়কেও নিয়ে আসা হচ্ছে এবারের ভোটে ৷ টালিগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্র থেকে নির্বাচনে লড়বেন তিনি ৷ এমনকি রাজ্যসভার সাংসদ স্বপন দাশগুপ্তকেও টেনে আনতে হচ্ছে বঙ্গ-জয়ের লক্ষ্যে ৷ নীলবাড়ি দখলের লড়াইয়ে ময়দানে নামাতে হচ্ছে একঝাঁক সাংসদকে ৷

আসানসোল থেকে টলিপাড়ায় নিয়ে আসা হচ্ছে বাবুলকে ৷ লকেট দাঁড়াচ্ছেন চুঁচুড়া থেকে ৷ দিনহাটায় বিজেপি ভরসা রাখছে নিশীথ প্রামাণিকের উপর ৷ এখানেই প্রশ্ন উঠতে, তাহলে কি বিজেপির প্রার্থী এতটাই কম পড়ে যাচ্ছে বঙ্গে ? এত ধুমধাম, এত হাঁক-ডাক, পুরোটাই কি সার ?

রাজ্যে বিজেপির শক্তি বাড়লেও নেতৃত্ব নিয়ে এর আগেও একাধিকবার প্রশ্ন তুলেছিলেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা ৷ আজ বিজেপির প্রার্থী তালিকা প্রকাশের পর আরও একবার সেই প্রশ্নটাই যেন প্রকট হয়ে উঠছে ৷

দলের সব কর্মীকে সবরকমভাবে কাজে লাগানো হচ্ছে, বললেন জয়প্রকাশ

শুধু সাংসদরাই নন, দলে জায়গা পেয়েছেন একঝাঁক তৃণমূলত্যাগীও ৷ সিঙ্গুর থেকে বিজেপির বাজি রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য ৷ তৃণমূলের প্রার্থীতালিকায় জায়গা না পেয়ে, বিজেপিতে এসেছেন তিনি ৷ শুভেন্দু আগেই প্রার্থী হয়েছেন ৷ এবারের ভোটে সবথেকে হাই ভোল্টেজ কেন্দ্র নন্দীগ্রামে বিজেপির বাজি শুভেন্দু ৷ এছাড়াও ভোটের মুখে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, দীপক হালদার, প্রবীর ঘোষালরা ৷ তিনজনেই জায়গা পেয়েছেন পদ্মের প্রার্থীতালিকায় ৷

আরও পড়ুন : বাবুল, নিশীথ, লকেট... বিজেপির প্রার্থীতালিকায় একাধিক হেভিওয়েট

নিজের শক্ত ঘাঁটি ডোমজুড় থেকেই ভোটে লড়বেন রাজীব, ডায়মন্ড হারবার থেকে লড়বেন দীপক হালদার ৷ আর প্রবীর ঘোষাল টিকিট পেয়েছেন উত্তরপাড়া থেকে ৷ অনেকেই বলছেন, ভোটের বাজারে নিজেদের প্রার্থীর খামতি মেটাতেই এতজন তৃণমূলত্যাগীকে দলে টিকিট দিয়েছে বিজেপি ৷

টলিপাড়ার একঝাঁক পরিচিত মুখও জায়গা পেয়েছে বিজেপির প্রার্থীতালিকায় ৷ সোনারপুরে লাভলি মৈত্রর বিপরীতে লড়ছেন অঞ্জনা বসু ৷ বেহালা পূর্বে লড়ছেন পায়েল ৷ শ্যামপুর থেকে টিকিট পেয়েছেন তনুশ্রী ৷ সর্বসাকুল্যে আগাগোড়া বিজেপি করে এসেছেন এমন প্রার্থী হাতে গুনে বলা যাবে বলেও মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা ৷

এরই মধ্যে তৃণমূলীরা যে তত্ত্বটি তুলে ধরছেন, তা হল আদি ও নব্য বিজেপির সংঘাত ৷ হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিটের অনেকেই বলছেন, বিজেপি যতই বাংলায় কেন্দ্রের নেতৃত্বের আস্ফালন দেখানোর চেষ্টা করুক, আদতে জেলা স্তরে এখনও নব্য ও আদি বিজেপির মধ্যে সম্পর্ক মোটেও ভালো নয় ৷ বিজেপির প্রার্থীতালিকায় সাংসদদের টেনে নিয়ে আসা আর তৃণমূলত্যাগীদের জায়গা করে দেওয়া তারই প্রতিফলন বলে মনে করছেন অনেকে ৷

তবে মুরলিধর সেন লেন থেকে কিন্তু অন্য যুক্তি দেওয়া হচ্ছে ৷ বিজেপি ক্ষমতায় এলে রাজ্যে বিজেপির মন্ত্রিসভা কেমন হবে, তারই একটি ইঙ্গিত রয়েছে আজকের প্রার্থীতালিকায় ৷ আজ শুধু দ্বিতীয় ও তৃতীয় দফায় ভোটগ্রহণ রয়েছে এমন 63 টি কেন্দ্রের প্রার্থীতালিকা প্রকাশ করা হয়েছে ৷ এর পরের দফাগুলির প্রার্থীতালিকাতেও বেশ কয়েকজন সাংসদের নাম থাকতে পারে বলে মুরলিধর সেন লেন সূত্রে খবর ৷

আরও পড়ুন : বিজেপিতে যোগ দিয়েই কেন মিঠুন-শুভেন্দুরা কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা পাচ্ছেন ?

2014 সালে যখন বিজেপি কেন্দ্রে ক্ষমতায় এল, তখন থেকেই মোদি সরকারের রাষ্ট্রমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় ৷ পরপর দু'বার লোকসভায় আসানসোল থেকে ভোটে লড়ে জিতেছেন তিনি ৷ সেখান থেকে দেখতে গেলে, বাবুলকে সংসদ থেকে টেনে বিধানসভা ভোটে নিয়ে আসাটা কতটা যুক্তিযুক্ত ?

বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার অবশ্য বলছেন, প্রার্থী হিসেবে দলের তাঁকে এখানে দরকার, তাই তাঁকে নিয়ে আসা হয়েছে ৷ শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের তৈরি দল এখনও এই রাজ্যে ক্ষমতায় আসেনি ৷ এখন ক্ষমতার দরজার কাছে পৌঁছেছে ৷ সেই কারণে দলের সব কর্মীকে সবরকমভাবে কাজে লাগানো হচ্ছে ৷ বিজেপি যে রাজ্যে ক্ষমতায় আসার জন্য সর্বশক্তি দিয়ে লড়ছে, সেটাই সবথেকে বড় কথা ৷

পাশাপাশি, টিকিট না পাওয়া তৃণমূলত্যাগীরা যে প্রার্থী হওয়ার আশায় বিজেপিতে আসছেন, এমন অভিযোগও উড়িয়ে দিয়েছেন জয়প্রকাশ ৷ তাঁর কথায়, তৃণমূলে টিকিট পেয়েও তো প্রার্থীরা বিজেপিতে এসে যোগ দিচ্ছেন ৷

তবে বঙ্গ বিজেপির নেতৃত্ব যাই বলুক না কেন, দলে জেলাস্তরে একটা বড় অংশের মধ্যে নব্য-আদি বিজেপির মধ্যে একটি দ্বন্দ্ব রয়েছে বলেই মনে করছেন রাজ্য রাজনীতির পর্যবেক্ষকরা ৷ অনেকেই মনে করছেন, সেই দ্বন্দ্ব চাপা দিতেই তারকা প্রার্থীদের এবং নবাগত নেতাদের গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে ৷ তারই প্রতিফলন পড়ছে বিজেপির প্রার্থীতালিকায় ৷

নীলবাড়ির দখলের লড়াইয়ে এখন এই সাংসদ-তারকাপ্রার্থী খচিত তালিকা কতটা প্রভাব ফেলতে পারে, সেই দিকেই তাকিয়ে রয়েছেন রাজ্য রাজনীতির বিশ্লেষকরা ৷

Last Updated : Mar 15, 2021, 5:38 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.