ETV Bharat / state

সংযুক্ত মোর্চার পাশে অধীর, সুর চড়ালেন দলীয় সাংসদের বিরুদ্ধে

ব্রিগেডের সমাবেশে আইএসএফ-কংগ্রেস এক মঞ্চে থাকা প্রসঙ্গে বর্ষীয়ান কংগ্রেস সাংসদ আনন্দ শর্মা টুইট করেছেন, "এই ধরনের মঞ্চে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির উপস্থিতি এবং সমর্থন লজ্জাজনক । " এরপরই অধীরের পাল্টা, "আনন্দ শর্মা পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল নন ।"

অধীর চৌধুরী
অধীর চৌধুরী
author img

By

Published : Mar 2, 2021, 3:47 PM IST

দিল্লি ও কলকাতা, 2 মার্চ : আব্বাসদের সম্ভাব্য জোটসঙ্গী হিসেবে দেখা নিয়ে প্রদেশ কংগ্রেসের চিন্তাভাবনাকে মোটেই ভালভাবে দেখছে না কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের একটি অংশ । বিষয়টি নিয়ে জলঘোলা হতেও শুরু করে দিয়েছে, তাও আবার একেবারে প্রকাশ্যে । প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা কংগ্রেসের বর্ষীয়ান নেতা আনন্দ শর্মা প্রদেশ কংগ্রেসের রণনীতি বিরুদ্ধ প্রকাশ্যেই মুখ খুলেছেন । সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কংগ্রেস কখনোই কোনওরকম বাছ-বিচার করতে পারে না বলে টুইটারে লিখেছেন তিনি । আর এ-ক্ষেত্রে সাম্প্রদায়িক শক্তি বলতে তিনি সরাসরি আব্বাসের ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের নামও উল্লেখ করেছেন ।

টুইটারে আনন্দ শর্মা লিখেছেন, "আইএসএফ এবং সমতুল্য দলগুলির সঙ্গে কংগ্রেসের জোট দলের মূল ভাবনা এবং গান্ধি-নেহরুরা যে ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বলেছেন তার পরিপন্থী । বিষয়টি নিয়ে কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির সঙ্গে আলোচনা করা অবশ্যই দরকার ছিল ।"

তিনি আরও লেখেন, "সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কংগ্রেস কখনোই কোনওরকম বাছ-বিচার করতে পারে না । সবরকম ভাবে সাম্প্রদায়িক শক্তিগুলির বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই করা উচিত । এই ধরনের মঞ্চে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির উপস্থিতি এবং সমর্থন লজ্জাজনক । তাঁর নিজের অবস্থান স্পষ্ট করা উচিত ।"

মার্চ থেকেই বিধানসভা ভোট শুরু হয়ে যাচ্ছে বাংলায় । এবার লড়াইটা মূলত ঘাসফুল বনাম পদ্মফুল । কিন্তু রবিবারের ব্রিগেড সমাবেশে যে ভিড় চোখে পড়েছিল, তারপর থেকে আর কেউই জোর গলায় বলতে পারছেন না লড়াইটা দ্বিমুখী । বরং বিমান-অধীর-আব্বাসদের ত্রিশক্তি জোট বিকল্প শক্তি হয়ে উঠে আসতে পারে বলে মনে করছেন অনেকেই । ভোটবাক্সের লড়াইয়ে বাম-কংগ্রেস-আইএসএফয়ের সংযুক্ত মোর্চা অনেকটাই প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছেন রাজ্য রাজনীতির পর্যবেক্ষকরা ।

  • Congress’ alliance with parties like ISF and other such forces militates against the core ideology of the party and Gandhian and Nehruvian secularism, which forms the soul of the party. These issues need to be approved by the CWC.

    — Anand Sharma (@AnandSharmaINC) March 1, 2021 " class="align-text-top noRightClick twitterSection" data=" ">

আরও পড়ুন : আব্বাস-অধীরের স্নায়ুযুদ্ধ, জোটের আকাশে কালো মেঘ নিয়ে শেষ হল বামেদের ব্রিগেড

তবে 28 ফেব্রুয়ারির ব্রিগেডেও বেশ অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছিল সংযুক্ত মোর্চাকে । মঞ্চে তখন বক্তব্য রাখছিলেন অধীর চৌধুরী । আর সেই সময়েই ব্রিগেডের মঞ্চে ওঠেন আব্বাস । সঙ্গে সঙ্গে ছন্দপতন । মঞ্চের সামনে থাকা আইএসএফ কর্মী ও সমর্থকদের বাঁধভাঙা উচ্ছাসে বক্তব্য থামাতে হয়েছিল অধীরকে । বক্তব্য মাঝপথেই ছেড়ে দিতে চাইছিলেন প্রদেশ সভাপতি ।

এরপর আব্বাসের বক্তব্যও বেশ যন্ত্রণাদায়ক ছিল কংগ্রেসের জন্য । সিপিএমের সঙ্গে জোট নিয়ে খুশি হলেও সংযুক্ত মোর্চার অপর সঙ্গী কংগ্রেসকে নিয়ে একটি বাক্যও রবিবার ব্যবহার করেননি আব্বাস । বরং কংগ্রেস প্রসঙ্গে বলতে শোনা যায়, "কারও তাবেদারি করতে আসেননি ।"

সংযুক্ত মোর্চার পক্ষে সওয়াল করে কংগ্রেস সাংসদকে পাল্টা দিলেন অধীর চৌধুরী

তবে এরপর পরিস্থিতি এখন অনেকটা হালকা হয়েছে । সুর নরম করেছেন আব্বাস-অধীরও । আব্বাস তো বলেই দিয়েছেন, বিষয়টি ভুল বোঝাবুঝি ছাড়া আর কিছুই না ।

আরও পড়ুন : অধিকার বোঝার জন্য নিজের দল : আব্বাস

এই পরিস্থিতিতে আনন্দ শর্মার এই ধরনের টুইট মোটেই ভালভাবে নেননি প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী । তাঁর কথায়, "আমরা এক একটি রাজ্যে দায়িত্বে আছি । আমরা অনুমতি ছাড়া নিজে থেকে কোনও সিদ্ধান্ত নিই না ।" তিনি আনন্দ শর্মাকে এটা বুঝিয়ে দিতে চেয়েছেন, দিল্লির নেতৃত্ব সিলমোহর না দিলে তিনি কখনও কোনও সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেন না ।

প্রদেশ সভাপতি অধীর চৌধুরী ক্ষোভের সুরে বলেন, "আনন্দ শর্মা পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল নন । আনন্দ শর্মার বলা উচিত ছিল, স্বৈরতান্ত্রিক তৃণমূল এবং সাম্প্রদায়িক বিজেপির বিরুদ্ধে । দিল্লিতে বসে এই রাজ‍্য সম্পর্কে কিছু জানেন না আনন্দ শর্মা । উনি রাজ‍্যসভার টিকিটের জন্য এই সব কথা বলছেন ।"

  • Congress cannot be selective in fighting communalists but must do so in all its manifestations, irrespective of religion and colour. The presence and endorsement West Bengal PCC President is painful and shameful, he must clarify.

    — Anand Sharma (@AnandSharmaINC) March 1, 2021 " class="align-text-top noRightClick twitterSection" data=" ">

উল্লেখ্য, 2014 সালের জুনে রাজ্যসভায় কংগ্রেসের সাংসদ হন আনন্দ শর্মা । মাসখানেক পরেই তাঁর সাংসদ পদের মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে । সেই প্রসঙ্গ টেনেই আনন্দ শর্মাকে এবার পাল্টা খোঁচা দিলেন অধীর চৌধুরী ।

দিল্লি ও কলকাতা, 2 মার্চ : আব্বাসদের সম্ভাব্য জোটসঙ্গী হিসেবে দেখা নিয়ে প্রদেশ কংগ্রেসের চিন্তাভাবনাকে মোটেই ভালভাবে দেখছে না কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের একটি অংশ । বিষয়টি নিয়ে জলঘোলা হতেও শুরু করে দিয়েছে, তাও আবার একেবারে প্রকাশ্যে । প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা কংগ্রেসের বর্ষীয়ান নেতা আনন্দ শর্মা প্রদেশ কংগ্রেসের রণনীতি বিরুদ্ধ প্রকাশ্যেই মুখ খুলেছেন । সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কংগ্রেস কখনোই কোনওরকম বাছ-বিচার করতে পারে না বলে টুইটারে লিখেছেন তিনি । আর এ-ক্ষেত্রে সাম্প্রদায়িক শক্তি বলতে তিনি সরাসরি আব্বাসের ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের নামও উল্লেখ করেছেন ।

টুইটারে আনন্দ শর্মা লিখেছেন, "আইএসএফ এবং সমতুল্য দলগুলির সঙ্গে কংগ্রেসের জোট দলের মূল ভাবনা এবং গান্ধি-নেহরুরা যে ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বলেছেন তার পরিপন্থী । বিষয়টি নিয়ে কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির সঙ্গে আলোচনা করা অবশ্যই দরকার ছিল ।"

তিনি আরও লেখেন, "সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কংগ্রেস কখনোই কোনওরকম বাছ-বিচার করতে পারে না । সবরকম ভাবে সাম্প্রদায়িক শক্তিগুলির বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই করা উচিত । এই ধরনের মঞ্চে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির উপস্থিতি এবং সমর্থন লজ্জাজনক । তাঁর নিজের অবস্থান স্পষ্ট করা উচিত ।"

মার্চ থেকেই বিধানসভা ভোট শুরু হয়ে যাচ্ছে বাংলায় । এবার লড়াইটা মূলত ঘাসফুল বনাম পদ্মফুল । কিন্তু রবিবারের ব্রিগেড সমাবেশে যে ভিড় চোখে পড়েছিল, তারপর থেকে আর কেউই জোর গলায় বলতে পারছেন না লড়াইটা দ্বিমুখী । বরং বিমান-অধীর-আব্বাসদের ত্রিশক্তি জোট বিকল্প শক্তি হয়ে উঠে আসতে পারে বলে মনে করছেন অনেকেই । ভোটবাক্সের লড়াইয়ে বাম-কংগ্রেস-আইএসএফয়ের সংযুক্ত মোর্চা অনেকটাই প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছেন রাজ্য রাজনীতির পর্যবেক্ষকরা ।

  • Congress’ alliance with parties like ISF and other such forces militates against the core ideology of the party and Gandhian and Nehruvian secularism, which forms the soul of the party. These issues need to be approved by the CWC.

    — Anand Sharma (@AnandSharmaINC) March 1, 2021 " class="align-text-top noRightClick twitterSection" data=" ">

আরও পড়ুন : আব্বাস-অধীরের স্নায়ুযুদ্ধ, জোটের আকাশে কালো মেঘ নিয়ে শেষ হল বামেদের ব্রিগেড

তবে 28 ফেব্রুয়ারির ব্রিগেডেও বেশ অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছিল সংযুক্ত মোর্চাকে । মঞ্চে তখন বক্তব্য রাখছিলেন অধীর চৌধুরী । আর সেই সময়েই ব্রিগেডের মঞ্চে ওঠেন আব্বাস । সঙ্গে সঙ্গে ছন্দপতন । মঞ্চের সামনে থাকা আইএসএফ কর্মী ও সমর্থকদের বাঁধভাঙা উচ্ছাসে বক্তব্য থামাতে হয়েছিল অধীরকে । বক্তব্য মাঝপথেই ছেড়ে দিতে চাইছিলেন প্রদেশ সভাপতি ।

এরপর আব্বাসের বক্তব্যও বেশ যন্ত্রণাদায়ক ছিল কংগ্রেসের জন্য । সিপিএমের সঙ্গে জোট নিয়ে খুশি হলেও সংযুক্ত মোর্চার অপর সঙ্গী কংগ্রেসকে নিয়ে একটি বাক্যও রবিবার ব্যবহার করেননি আব্বাস । বরং কংগ্রেস প্রসঙ্গে বলতে শোনা যায়, "কারও তাবেদারি করতে আসেননি ।"

সংযুক্ত মোর্চার পক্ষে সওয়াল করে কংগ্রেস সাংসদকে পাল্টা দিলেন অধীর চৌধুরী

তবে এরপর পরিস্থিতি এখন অনেকটা হালকা হয়েছে । সুর নরম করেছেন আব্বাস-অধীরও । আব্বাস তো বলেই দিয়েছেন, বিষয়টি ভুল বোঝাবুঝি ছাড়া আর কিছুই না ।

আরও পড়ুন : অধিকার বোঝার জন্য নিজের দল : আব্বাস

এই পরিস্থিতিতে আনন্দ শর্মার এই ধরনের টুইট মোটেই ভালভাবে নেননি প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী । তাঁর কথায়, "আমরা এক একটি রাজ্যে দায়িত্বে আছি । আমরা অনুমতি ছাড়া নিজে থেকে কোনও সিদ্ধান্ত নিই না ।" তিনি আনন্দ শর্মাকে এটা বুঝিয়ে দিতে চেয়েছেন, দিল্লির নেতৃত্ব সিলমোহর না দিলে তিনি কখনও কোনও সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেন না ।

প্রদেশ সভাপতি অধীর চৌধুরী ক্ষোভের সুরে বলেন, "আনন্দ শর্মা পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল নন । আনন্দ শর্মার বলা উচিত ছিল, স্বৈরতান্ত্রিক তৃণমূল এবং সাম্প্রদায়িক বিজেপির বিরুদ্ধে । দিল্লিতে বসে এই রাজ‍্য সম্পর্কে কিছু জানেন না আনন্দ শর্মা । উনি রাজ‍্যসভার টিকিটের জন্য এই সব কথা বলছেন ।"

  • Congress cannot be selective in fighting communalists but must do so in all its manifestations, irrespective of religion and colour. The presence and endorsement West Bengal PCC President is painful and shameful, he must clarify.

    — Anand Sharma (@AnandSharmaINC) March 1, 2021 " class="align-text-top noRightClick twitterSection" data=" ">

উল্লেখ্য, 2014 সালের জুনে রাজ্যসভায় কংগ্রেসের সাংসদ হন আনন্দ শর্মা । মাসখানেক পরেই তাঁর সাংসদ পদের মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে । সেই প্রসঙ্গ টেনেই আনন্দ শর্মাকে এবার পাল্টা খোঁচা দিলেন অধীর চৌধুরী ।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.