কলকাতা, 26 জানুয়ারি : সপ্তম শ্রেণির পড়ুয়াদের ব্যাঙ্কিংয়ের পাঠ দিতে আগেই উদ্যোগী হয়েছিল রাজ্য সরকারের স্কুল শিক্ষা দপ্তর । এবার প্রাথমিকের পড়ুয়াদের সাইবার ক্রাইম সম্পর্কে সচেতন করতে সচেষ্ট হয়েছে দপ্তর । তবে, পাঠ্য পুস্তকের মাধ্যমে নয় । শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মাধ্যমেই পড়ুয়াদের সচেতনতার পাঠ দিতে চায় স্কুল শিক্ষা দপ্তর ।
গত বছর ডিসেম্বর মাসেই জানা গেছিল, সপ্তম শ্রেণির পড়ুয়াদের ব্যাঙ্কের পাঠ দিতে স্বাস্থ্য ও শরীরশিক্ষা পাঠ্যপুস্তকের নতুন সংস্করণে যুক্ত করা হয়েছে একটি অধ্যায় । সেখানে কী করে খুলতে হয় একটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট, কীভাবে টাকা লেনদেন করতে হয়, সেই সম্পর্কে বলা হয়েছে । ওই সময়ই সিলেবাস কমিটির চেয়ারম্যান অভীক মজুমদার জানিয়েছিলেন, ব্যাঙ্কিংয়ের পাঠের পাশাপাশি কী করে পড়ুয়াদের সাইবার ক্রাইম সম্পর্কে সচেতন করা যায় সে বিষয়েও ভাবনাচিন্তা করা হচ্ছে । সেই প্রসঙ্গেই সম্প্রতি অভীক মজুমদার বলেন, "প্রাথমিক স্কুল শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের জন্য আমরা চার ঘণ্টার একটি ভিডিয়ো তৈরি করেছি । যা পশ্চিমবঙ্গজুড়ে সকল শিক্ষক-শিক্ষিকার মধ্যে বিতরণ করা হচ্ছে । তাতে আমরা একটা আধ ঘণ্টার স্লট রেখেছি সাইবার ক্রাইম এবং পড়ুয়াদের উপর তার প্রভাব নিয়ে ।"
শিক্ষকরা এই সম্পর্কে কী কী শেখাবেন পড়ুয়াদের ?
জানা গেছে, পাসওয়ার্ড যেন কোনও অপরিচিত মানুষকে না জানায় । কোনও গোপন তথ্য যেন কারও সঙ্গে না শেয়ার না করে । অপরিচিত মানুষের কাছ থেকে আবেদন এলে সেটা যেন বিবেচনা না করে । আপত্তিকর কোনও ছবি বা কিছু পেলেই যেন শিক্ষক-শিক্ষিকাদের জানায় । ডিভাইস বা টুল ব্যবহারের সময় যেন তাঁরা সতর্ক থাকেন তাঁরা যেন কোনও সাইবার ক্রাইমের ফাঁদে না পড়েন । প্রথমে প্রাথমিকের পড়ুয়াদের দিয়ে শুরু করলেও ধাপে ধাপে সব পড়ুয়াদের মধ্যেই সচেতনতা গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে রাজ্যের স্কুল শিক্ষা দপ্তরের ।
আরও পড়ুন : পড়ুয়াদের বাড়িতে শঙ্খ বাজিয়ে নেতাজির 125তম জন্মজয়ন্তী পালন করতে বলল শিক্ষা দপ্তর
অভীক মজুমদার বলেন, "সাইবার ক্রাইম প্রাথমিক স্তরের শিক্ষকদের আগে শিখিয়েছি টিচার্স ট্রেনিং প্রোগ্রামে । তাঁরা গিয়ে পড়ুয়াদের শেখাবেন । আমরা আগামীদিনে এই সচেতনতা আরও বাড়াব । ধাপে ধাপে সব স্তরের পড়ুয়াদেরকেই এই সচেতনতার পাঠ দেওয়া হবে । উচ্চস্তরের ক্লাসগুলির ক্ষেত্রে আরও অনেককিছু সম্পর্কেই জানাতে হবে । সেটা কীভাবে করব সেটা দেখছি । বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলছি ।"
তবে, এতদিন টিচার্স ট্রেনিং প্রোগ্রাম সরাসরি দেওয়া হতো শিক্ষক-শিক্ষিকাদের । তার পরিবর্তে ভিডিয়ো তৈরি করে বিতরণের পিছনে একদিকে যেমন কোরোনা অতিমারি একটা কারণ, তেমনি 'চাইনিজ হুইসপার'র মতো বিষয় ঘটার আশঙ্কাও একটা কারণ বলে জানা যাচ্ছে । অভীক মজুমদার বলেন, "ট্রান্সমিশন লস হচ্ছিল । আমরা একটা পড়াচ্ছি । তাঁরা গিয়ে পড়াচ্ছে । বাচ্চারা শিখছে । সেটা চাইনিজ হুইসপারের মতো হয়ে যাচ্ছিল । তাই আমরা চাইছিলাম যে একেবারে আসলটাই তাঁদের কাছে যাক কোনও ট্রান্সমিশন লস ছাড়াই ।"