ETV Bharat / state

WB Govt And UNICEF: মূলস্রোতে ফিরুক অপরাধে যুক্ত শিশুরা, অভিনব প্রয়াসে হাত ধরল ইউনিসেফ ও পশ্চিমবঙ্গ সরকার

ছোট এবং গুরুতর অপরাধ করার অভিযোগে বিচার প্রক্রিয়া চলাকালীন অনেক শিশুদের ট্রমার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। সেই ট্রমা থেকে শিশুদের দূরে রাখা যায় কীভাবে শুরু হয়েছে তারই পরিকল্পনা। কলকাতায় ড্বলুবিসিপিসিআর ও ইউনিসেফ আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে নারী ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রী শশী পাঁজা আলোকপাত করেছেন এই বিষয়ে।

author img

By

Published : Apr 2, 2023, 10:47 PM IST

WB Govt And UNICEF
ড্বলুবিসিপিসিআর ও ইউনিসেফ আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে মন্ত্রী শশী পাঁজা

কলকাতা, 2 এপ্রিল: কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য লিখেছিলেন, 'এ বিশ্বকে শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি।' আজকের শিশুই ভবিষ্য়তে দেশের কাণ্ডারি হয়ে উঠবে । তারাই নতুন পথের দিশারি । কিন্তু অনেক সময় সেই শৈশব হারিয়ে যায় গভীর অন্ধকারে । পরিস্থিতির শিকার হয়ে অনেক সময় না-বুঝেই জড়িয়ে পড়ে যে কোনও অপরাধে । যদি তাকে অন্যান্য অপরাধীর মতোই সংশোধনাগারে রাখা হয় বা বারবার বিচার প্রক্রিয়ার সম্মুখীন হতে হয় তাহলে সেই শৈশব হারিয়ে যায় অচিরেই । এমতাবস্থায় দেশে শিশুমঙ্গলের কথা ভেবেই প্রথমবার পশ্চিমবঙ্গ সরকার, ইউনিসেফ এবং ওয়েস্ট বেঙ্গল কমিশন ফর প্রোটেকশন অফ চাইল্ড রাইটস (ডব্লিউবিসিপিসিআর) এর সহযোগিতায় নেওয়া হতে চলেছে অভিনব উদ্যোগ। ছোট এবং গুরুতর অপরাধ করার অভিযোগে বিচার প্রক্রিয়া চলাকালীন অনেক শিশুদের ট্রমার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। সেই ট্রমা থেকে শিশুদের দূরে রাখা যায় কীভাবে শুরু হয়েছে তারই পরিকল্পনা। জুভেনাইল জাস্টিস অ্যাক্ট, 2015 অনুযায়ী, ছোটখাটো অপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত শিশুকে নিয়মিত বিচার প্রক্রিয়া থেকে সরিয়ে দেওয়া যেতে পারে । পাশাপাশি, শিশুটিকে বাবা-মা বা সমাজকর্মীদের সহায়তায় কাছে রেখে পুনর্বাসন করা যেতে পারে ।

সম্প্রতি কলকাতায় ড্বলুবিসিপিসিআর ও ইউনিসেফ আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে নারী ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রী শশী পাঁজা এই বিষয়ে বলেন," যদি কোনও শিশু, ছোট ও গুরুতর অপরাধের সঙ্গে যুক্ত থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হবে না । শিশুসুরক্ষা প্রতিষ্ঠানে তাদের পাঠানো হতে পারে আবার নাও হতে পারে । শিশুদের তাদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হবে এবং তাদের বিভিন্ন কল্যাণমূলক পরিষেবা ও কাজের সঙ্গে যুক্ত করা হবে ।" তিনি আরও বলেছেন, এই ধরণের প্রকল্পের সঙ্গে শিশুদের অপরাধপ্রবণতা কমাতে এবং তাদের জীবনের মূলস্রোতে ফিরিয়ে আনার জন্য আরও পুলিশ, সরকারী কর্মকর্তাদের আরও বেশি সংবেদনশীল হতে হবে ।

যদি কোনও শিশু ছোট ও গুরুতর অপরাধের সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়ে তাহলে থানায় পুলিশকে জেনারেল ডায়েরি করতে হবে এবং বিষয়টি সম্পর্কে জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডকে অবহিত করতে হবে। বৈজ্ঞানিক ব্যাখা তুলে ধরে নারী ও শিশুকল্যাণমন্ত্রী আরও বলেন, "ছোট অপরাধের জন্য যখন শিশুদের বিচারের মুখোমুখি হতে হয় তখন তাদের মধ্যে একাধিক ট্রমা বা সাইকোলজিক্যাল সমস্যা দেখা দেয়। এর ফলে জীবনের মূলস্রোতে ফিরে আসার ইচ্ছা নষ্ট হয়ে যায়। তারা আরও বেশি করে একই ধরনের অপরাধের পুনরাবৃত্তি করে থাকে ।"

অনুষ্ঠানে উপস্থিত কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায়ও জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডের ম্যাজিস্ট্রেটদের শিশুদের সঙ্গে জড়িত মামলাগুলিকে সহানুভূতির সঙ্গে দেখার আবেদন জানিয়েছেন । তিনি জানান, শিশুদের আপনার সহানুভূতি দরকার এবং তারা যে পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে তা বোঝাটাও প্রয়োজন। অনুগ্রহ করে আইনের পরিধির মধ্যে থেকে আবেগের সঙ্গে একটি শিশুর মামলা বিবেচনা করুন। শিশুদের সুবিধা এবং উন্নতির জন্য সংবেদনশীল এবং নমনীয় হওয়াটা প্রয়োজন ।

উল্লেখ্য, ইতিমধ্যেই পশ্চিমবঙ্গ সরকার ও ইউনিসেফ ও প্রাজক নামে এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার মিলিত প্রয়াসে জলপাইগুড়ি, মুর্শিদাবাদ এবং দক্ষিণ 24 পরগনা জেলার বেশ কিছু অপরাধপ্রবণ এলাকায় পাইলট প্রকল্প শুরু করা হয়েছে । ইউনিসেফ-এর পশ্চিমবঙ্গের প্রধান মোঃ মহিউদ্দিন বলেন, "গত তিন বছরে দেখা গেছে, থানা এবং জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ড থেকে শিশুদের সরিয়ে দিলেই দায়িত্ব শেষ হয়ে যাচ্ছে না । আমাদের এই শিশুদের জন্য প্রয়োজনীয় পরিষেবা, নিয়মিত ফলো-আপ এবং মানসিক-সামাজিক সহায়তা এবং যত্ন আরও বেশি করে নিশ্চিত করতে হবে।"

আরও পড়ুন: পকসো মামলার শুনানিতে বিশেষ আদালতের সংখ্যা এখনও প্রয়োজনের তুলনায় কম

ডব্লুবিসিপিসিআর-এর সুদেষ্ণা রায় অভিনব এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। তিনি বলেন, "যে যে আইনের অধীনে ডাইভারশনের নীতির বাস্তবায়নকে শক্তিশালী করার উদ্যোগকে স্বাগত । এমন অনেক সিশুর খোঁজ পাওয়া গিয়েছে যারা ছোটখাটো অপরাধের সঙ্গে যুক্ত। এই ধরনের সমস্যার সমাধান হিসাবে বিচার কার্যক্রম থেকে শিশুদের সরিয়ে আনাটা, তাদের ভালর জন্য সত্যিই অপরিহার্য ।"

কলকাতা, 2 এপ্রিল: কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য লিখেছিলেন, 'এ বিশ্বকে শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি।' আজকের শিশুই ভবিষ্য়তে দেশের কাণ্ডারি হয়ে উঠবে । তারাই নতুন পথের দিশারি । কিন্তু অনেক সময় সেই শৈশব হারিয়ে যায় গভীর অন্ধকারে । পরিস্থিতির শিকার হয়ে অনেক সময় না-বুঝেই জড়িয়ে পড়ে যে কোনও অপরাধে । যদি তাকে অন্যান্য অপরাধীর মতোই সংশোধনাগারে রাখা হয় বা বারবার বিচার প্রক্রিয়ার সম্মুখীন হতে হয় তাহলে সেই শৈশব হারিয়ে যায় অচিরেই । এমতাবস্থায় দেশে শিশুমঙ্গলের কথা ভেবেই প্রথমবার পশ্চিমবঙ্গ সরকার, ইউনিসেফ এবং ওয়েস্ট বেঙ্গল কমিশন ফর প্রোটেকশন অফ চাইল্ড রাইটস (ডব্লিউবিসিপিসিআর) এর সহযোগিতায় নেওয়া হতে চলেছে অভিনব উদ্যোগ। ছোট এবং গুরুতর অপরাধ করার অভিযোগে বিচার প্রক্রিয়া চলাকালীন অনেক শিশুদের ট্রমার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। সেই ট্রমা থেকে শিশুদের দূরে রাখা যায় কীভাবে শুরু হয়েছে তারই পরিকল্পনা। জুভেনাইল জাস্টিস অ্যাক্ট, 2015 অনুযায়ী, ছোটখাটো অপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত শিশুকে নিয়মিত বিচার প্রক্রিয়া থেকে সরিয়ে দেওয়া যেতে পারে । পাশাপাশি, শিশুটিকে বাবা-মা বা সমাজকর্মীদের সহায়তায় কাছে রেখে পুনর্বাসন করা যেতে পারে ।

সম্প্রতি কলকাতায় ড্বলুবিসিপিসিআর ও ইউনিসেফ আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে নারী ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রী শশী পাঁজা এই বিষয়ে বলেন," যদি কোনও শিশু, ছোট ও গুরুতর অপরাধের সঙ্গে যুক্ত থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হবে না । শিশুসুরক্ষা প্রতিষ্ঠানে তাদের পাঠানো হতে পারে আবার নাও হতে পারে । শিশুদের তাদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হবে এবং তাদের বিভিন্ন কল্যাণমূলক পরিষেবা ও কাজের সঙ্গে যুক্ত করা হবে ।" তিনি আরও বলেছেন, এই ধরণের প্রকল্পের সঙ্গে শিশুদের অপরাধপ্রবণতা কমাতে এবং তাদের জীবনের মূলস্রোতে ফিরিয়ে আনার জন্য আরও পুলিশ, সরকারী কর্মকর্তাদের আরও বেশি সংবেদনশীল হতে হবে ।

যদি কোনও শিশু ছোট ও গুরুতর অপরাধের সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়ে তাহলে থানায় পুলিশকে জেনারেল ডায়েরি করতে হবে এবং বিষয়টি সম্পর্কে জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডকে অবহিত করতে হবে। বৈজ্ঞানিক ব্যাখা তুলে ধরে নারী ও শিশুকল্যাণমন্ত্রী আরও বলেন, "ছোট অপরাধের জন্য যখন শিশুদের বিচারের মুখোমুখি হতে হয় তখন তাদের মধ্যে একাধিক ট্রমা বা সাইকোলজিক্যাল সমস্যা দেখা দেয়। এর ফলে জীবনের মূলস্রোতে ফিরে আসার ইচ্ছা নষ্ট হয়ে যায়। তারা আরও বেশি করে একই ধরনের অপরাধের পুনরাবৃত্তি করে থাকে ।"

অনুষ্ঠানে উপস্থিত কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায়ও জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডের ম্যাজিস্ট্রেটদের শিশুদের সঙ্গে জড়িত মামলাগুলিকে সহানুভূতির সঙ্গে দেখার আবেদন জানিয়েছেন । তিনি জানান, শিশুদের আপনার সহানুভূতি দরকার এবং তারা যে পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে তা বোঝাটাও প্রয়োজন। অনুগ্রহ করে আইনের পরিধির মধ্যে থেকে আবেগের সঙ্গে একটি শিশুর মামলা বিবেচনা করুন। শিশুদের সুবিধা এবং উন্নতির জন্য সংবেদনশীল এবং নমনীয় হওয়াটা প্রয়োজন ।

উল্লেখ্য, ইতিমধ্যেই পশ্চিমবঙ্গ সরকার ও ইউনিসেফ ও প্রাজক নামে এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার মিলিত প্রয়াসে জলপাইগুড়ি, মুর্শিদাবাদ এবং দক্ষিণ 24 পরগনা জেলার বেশ কিছু অপরাধপ্রবণ এলাকায় পাইলট প্রকল্প শুরু করা হয়েছে । ইউনিসেফ-এর পশ্চিমবঙ্গের প্রধান মোঃ মহিউদ্দিন বলেন, "গত তিন বছরে দেখা গেছে, থানা এবং জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ড থেকে শিশুদের সরিয়ে দিলেই দায়িত্ব শেষ হয়ে যাচ্ছে না । আমাদের এই শিশুদের জন্য প্রয়োজনীয় পরিষেবা, নিয়মিত ফলো-আপ এবং মানসিক-সামাজিক সহায়তা এবং যত্ন আরও বেশি করে নিশ্চিত করতে হবে।"

আরও পড়ুন: পকসো মামলার শুনানিতে বিশেষ আদালতের সংখ্যা এখনও প্রয়োজনের তুলনায় কম

ডব্লুবিসিপিসিআর-এর সুদেষ্ণা রায় অভিনব এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। তিনি বলেন, "যে যে আইনের অধীনে ডাইভারশনের নীতির বাস্তবায়নকে শক্তিশালী করার উদ্যোগকে স্বাগত । এমন অনেক সিশুর খোঁজ পাওয়া গিয়েছে যারা ছোটখাটো অপরাধের সঙ্গে যুক্ত। এই ধরনের সমস্যার সমাধান হিসাবে বিচার কার্যক্রম থেকে শিশুদের সরিয়ে আনাটা, তাদের ভালর জন্য সত্যিই অপরিহার্য ।"

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.