ETV Bharat / state

Drinking Water Project : জাইকা ও এডিবি'র সহযোগিতায় রাঢ়বঙ্গের রুক্ষ ভূমিতে পানীয় জল পৌঁছে দিতে চায় রাজ্য

author img

By

Published : Apr 18, 2022, 11:06 PM IST

রাজ্য সরকার চায় বাঁকুড়া ও পুরুলিয়ার বৃহত্তর অংশের সাধারণ মানুষের কাছে পানীয় জল পৌঁছে দিতে (WB Govt is planning to provide drinking water in rural areas of Purulia and Bankura) । সেই জন্যই এই প্রকল্পের বিষয়ে উদ্যোগ শুরু করেছে রাজ্য সরকার ।

Bengal Govt Drinking Water Project
রাঢ়বঙ্গের রুক্ষ ভূমিতে পানীয় জল পৌঁছে দিতে চায় রাজ্য

কলকাতা, 18 এপ্রিল : নল বাহিত জল ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে দেশের মধ্যে পয়লা নম্বর স্থানে রয়েছে বাংলা । কিন্তু শুধু এই সাফল্যে থেমে থাকতে চায়না রাজ্য সরকার । জাপানি সংস্থা জাইকা এবং এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের সহযোগিতায় রাঢ়বঙ্গের রুক্ষ ভূমিতে 32 লাখ মানুষের বাড়িতে খাবার জল পৌঁছে দিতে চায় রাজ্য (WB Govt is planning to provide drinking water in rural areas of Purulia and Bankura) । রাজ্য সরকারের তরফ থেকে সামগ্রিকভাবে যে তথ্য পাওয়া গিয়েছে তাতে জানা গিয়েছে, জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের এই প্রকল্পে অর্থ সাহায্যের একটা বড় অংশই আসছে জাপানি সংস্থা জাইকা এবং এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক বা এডিবির কাছ থেকে ।

দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, "এই প্রকল্পের জন্য জাইকা দেবে 1296.25 কোটি টাকা । আর এডিবি দেবে 2265.50 কোটি টাকা । রাজ্য সরকার লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছে, আগামী বছর অর্থাৎ 2023 সালের মার্চের মধ্যে এই কাজ শুরু হবে । আসলে পুরুলিয়ার রুক্ষ ভূমিতে পানীয় জল পৌঁছে দেওয়া রাজ্য সরকারের কাছে একটা বড় চ্যালেঞ্জ । ইতিমধ্যেই পুরুলিয়া শহরের একটা বড় অংশের নল বাহিত পানীয় জল পৌঁছে গেলেও গ্রামীণ অংশে বর্ষা বাদ দিলে বেশিরভাগ সময়ই মানুষকে জল সংকটে ভুগতে হয় । এইসব এলাকায় পানীয় জল এক বড় অংশের সাধারণ মানুষের কাছে স্বপ্নের মতো ৷

কিন্তু এই অবস্থাতেই রাজ্য সরকার চায় এই জেলার বৃহত্তর অংশের সাধারণ মানুষের পানীয় জল পৌঁছে দিতে । সেই জন্যই এই প্রকল্পের বিষয়ে উদ্যোগ শুরু করেছে রাজ্য সরকার । রাজ্যের জনসাস্থ্য কারিগরি দফতরের মন্ত্রী পুলক রায় জানিয়েছেন, জাইকার দেওয়া অর্থে এই প্রকল্পের মাধ্যমে পুরুলিয়ার গ্রামীণ অংশের আড়শা, বরাবাজার, পুঞ্চা, পুরুলিয়া 1 ও মানবাজার 1-এর প্রায় 6.32 লাখ মানুষ উপকৃত হবেন । পাশাপাশি, পুরুলিয়ার পুর এলাকার 1.85 লাখ মানুষ লাভবান হবেন । একইভাবে এডিবির দেওয়া অর্থে বাঁকুড়া, উত্তর 24 পরগনা, দক্ষিণ 24 পরগনা এবং পূর্ব মেদিনীপুরে কাজ করা হবে । এই প্রকল্পের মাধ্যমে বাঁকুড়ার চারটি ব্লক মেজিয়া, গঙ্গাজলঘাটি, ইন্দপুর ও তালডাংরার 11.3 লাখ মানুষ উপকৃত হবেন ৷

আরও পড়ুন : দেউচা-পাচামিতে খনিবিরোধী বিক্ষোভ, তির-ধনুক নিয়ে জেলাশাসককে গ্রামে ঢুকতে বাধা

একইভাবে উত্তর 24 পরগনার হাড়োয়া, দক্ষিণ 24 পরগনার ভাঙড়-সহ এই প্রকল্পের মাধ্যমে লাভবান হবেন প্রায় সাড়ে পাঁচ লাখ মানুষ । মোটের উপর এই প্রকল্প আগামী দিনে রাজ্যের কাছে পাখির চোখ হতে চলেছে । কারণ স্বাধীনতার এত বছর পরেও কোনও সরকারই মানুষকে বিশুদ্ধ পানীয় জল পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে এভাবে তৃণমূল স্তরে কাজ করেনি । সে দিক থেকে দেখতে গেলে এই প্রকল্প গ্রামীণ বাংলায় একটা নতুন উন্মাদনা তৈরি করতে পারে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল । সবথেকে বড় কথা এই প্রকল্প রূপায়ণ করতে গিয়ে রাজ্য সরকার এক বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে । সিদ্ধান্ত হয়েছে, রাজ্যের কারিগরি শিক্ষা দফতরের মাধ্যমে প্লাম্বারদের প্রশিক্ষিত করে এই কাজ করা হবে ।

তবে এক্ষেত্রে সমস্যা হল এত বৃহত্তর এলাকায় একসঙ্গে এই কাজ করতে গেলে যে পরিমাণ প্রশিক্ষিত শ্রমিকের প্রয়োজন তা রাজ্যে কেন, কোন সংস্থার হাতেই নেই ৷ এই অবস্থায় যাতে শ্রমিকদের দ্রুত প্রশিক্ষণের কাজ শেষ করা যায় সেই বিষয়টি মাথায় রাখা হচ্ছে ৷ বর্তমানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে রাজ্যে একাধিক জনমুখী প্রকল্প চললেও পুরুলিয়া, বাঁকুড়ার মতো রাঢ় বঙ্গের মাটিতে পানীয় জল পৌঁছে দেওয়ার এই প্রকল্প তৃণমূল সরকারকে যে ভাল ডিভিডেন্ট দিতে পারে বলে মনে করছে ঘাসফুল শিবির ৷ আর সে কারণেই রাজ্যের প্রয়াত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় পঞ্চায়েত দফতরের দায়িত্বে থাকার সময় তাঁকে এই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল ৷ তাঁর আমলে প্রথম দফায় বেশ কিছু এলাকায় কাজ হলেও তিনি জীবদ্দশায় এই কাজের শেষ দেখে যেতে পারেননি । তবে পরিকল্পনা মতো এই জল প্রকল্পের মাধ্যমে আগামী দিনে পুরুলিয়া এবং বাঁকুড়ার মত এলাকায় রাজ্য সরকার যদি পানীয় জলের ব্যবস্থা করতে পারে তা রাজ্যের শাসক দলকে বাড়তি সুবিধা পাইয়ে দেবে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল ৷

কলকাতা, 18 এপ্রিল : নল বাহিত জল ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে দেশের মধ্যে পয়লা নম্বর স্থানে রয়েছে বাংলা । কিন্তু শুধু এই সাফল্যে থেমে থাকতে চায়না রাজ্য সরকার । জাপানি সংস্থা জাইকা এবং এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের সহযোগিতায় রাঢ়বঙ্গের রুক্ষ ভূমিতে 32 লাখ মানুষের বাড়িতে খাবার জল পৌঁছে দিতে চায় রাজ্য (WB Govt is planning to provide drinking water in rural areas of Purulia and Bankura) । রাজ্য সরকারের তরফ থেকে সামগ্রিকভাবে যে তথ্য পাওয়া গিয়েছে তাতে জানা গিয়েছে, জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের এই প্রকল্পে অর্থ সাহায্যের একটা বড় অংশই আসছে জাপানি সংস্থা জাইকা এবং এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক বা এডিবির কাছ থেকে ।

দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, "এই প্রকল্পের জন্য জাইকা দেবে 1296.25 কোটি টাকা । আর এডিবি দেবে 2265.50 কোটি টাকা । রাজ্য সরকার লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছে, আগামী বছর অর্থাৎ 2023 সালের মার্চের মধ্যে এই কাজ শুরু হবে । আসলে পুরুলিয়ার রুক্ষ ভূমিতে পানীয় জল পৌঁছে দেওয়া রাজ্য সরকারের কাছে একটা বড় চ্যালেঞ্জ । ইতিমধ্যেই পুরুলিয়া শহরের একটা বড় অংশের নল বাহিত পানীয় জল পৌঁছে গেলেও গ্রামীণ অংশে বর্ষা বাদ দিলে বেশিরভাগ সময়ই মানুষকে জল সংকটে ভুগতে হয় । এইসব এলাকায় পানীয় জল এক বড় অংশের সাধারণ মানুষের কাছে স্বপ্নের মতো ৷

কিন্তু এই অবস্থাতেই রাজ্য সরকার চায় এই জেলার বৃহত্তর অংশের সাধারণ মানুষের পানীয় জল পৌঁছে দিতে । সেই জন্যই এই প্রকল্পের বিষয়ে উদ্যোগ শুরু করেছে রাজ্য সরকার । রাজ্যের জনসাস্থ্য কারিগরি দফতরের মন্ত্রী পুলক রায় জানিয়েছেন, জাইকার দেওয়া অর্থে এই প্রকল্পের মাধ্যমে পুরুলিয়ার গ্রামীণ অংশের আড়শা, বরাবাজার, পুঞ্চা, পুরুলিয়া 1 ও মানবাজার 1-এর প্রায় 6.32 লাখ মানুষ উপকৃত হবেন । পাশাপাশি, পুরুলিয়ার পুর এলাকার 1.85 লাখ মানুষ লাভবান হবেন । একইভাবে এডিবির দেওয়া অর্থে বাঁকুড়া, উত্তর 24 পরগনা, দক্ষিণ 24 পরগনা এবং পূর্ব মেদিনীপুরে কাজ করা হবে । এই প্রকল্পের মাধ্যমে বাঁকুড়ার চারটি ব্লক মেজিয়া, গঙ্গাজলঘাটি, ইন্দপুর ও তালডাংরার 11.3 লাখ মানুষ উপকৃত হবেন ৷

আরও পড়ুন : দেউচা-পাচামিতে খনিবিরোধী বিক্ষোভ, তির-ধনুক নিয়ে জেলাশাসককে গ্রামে ঢুকতে বাধা

একইভাবে উত্তর 24 পরগনার হাড়োয়া, দক্ষিণ 24 পরগনার ভাঙড়-সহ এই প্রকল্পের মাধ্যমে লাভবান হবেন প্রায় সাড়ে পাঁচ লাখ মানুষ । মোটের উপর এই প্রকল্প আগামী দিনে রাজ্যের কাছে পাখির চোখ হতে চলেছে । কারণ স্বাধীনতার এত বছর পরেও কোনও সরকারই মানুষকে বিশুদ্ধ পানীয় জল পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে এভাবে তৃণমূল স্তরে কাজ করেনি । সে দিক থেকে দেখতে গেলে এই প্রকল্প গ্রামীণ বাংলায় একটা নতুন উন্মাদনা তৈরি করতে পারে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল । সবথেকে বড় কথা এই প্রকল্প রূপায়ণ করতে গিয়ে রাজ্য সরকার এক বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে । সিদ্ধান্ত হয়েছে, রাজ্যের কারিগরি শিক্ষা দফতরের মাধ্যমে প্লাম্বারদের প্রশিক্ষিত করে এই কাজ করা হবে ।

তবে এক্ষেত্রে সমস্যা হল এত বৃহত্তর এলাকায় একসঙ্গে এই কাজ করতে গেলে যে পরিমাণ প্রশিক্ষিত শ্রমিকের প্রয়োজন তা রাজ্যে কেন, কোন সংস্থার হাতেই নেই ৷ এই অবস্থায় যাতে শ্রমিকদের দ্রুত প্রশিক্ষণের কাজ শেষ করা যায় সেই বিষয়টি মাথায় রাখা হচ্ছে ৷ বর্তমানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে রাজ্যে একাধিক জনমুখী প্রকল্প চললেও পুরুলিয়া, বাঁকুড়ার মতো রাঢ় বঙ্গের মাটিতে পানীয় জল পৌঁছে দেওয়ার এই প্রকল্প তৃণমূল সরকারকে যে ভাল ডিভিডেন্ট দিতে পারে বলে মনে করছে ঘাসফুল শিবির ৷ আর সে কারণেই রাজ্যের প্রয়াত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় পঞ্চায়েত দফতরের দায়িত্বে থাকার সময় তাঁকে এই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল ৷ তাঁর আমলে প্রথম দফায় বেশ কিছু এলাকায় কাজ হলেও তিনি জীবদ্দশায় এই কাজের শেষ দেখে যেতে পারেননি । তবে পরিকল্পনা মতো এই জল প্রকল্পের মাধ্যমে আগামী দিনে পুরুলিয়া এবং বাঁকুড়ার মত এলাকায় রাজ্য সরকার যদি পানীয় জলের ব্যবস্থা করতে পারে তা রাজ্যের শাসক দলকে বাড়তি সুবিধা পাইয়ে দেবে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল ৷

For All Latest Updates

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.