কলকাতা, 8 অক্টোবর: বছরভর 144 ধারা জারি থাকে ধর্মতলা, রাজভবন, বিধানসভা এলাকায় ৷ এই এলাকাগুলিতে জমায়েত করা বেআইনি ৷ এদিকে 5 অক্টোবর, বৃহস্পতিবার থেকে রাজভবনের সামনে মঞ্চ বেঁধে অবস্থান করছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ এই নিয়ে প্রশ্ন তুললেন রাজ্যপাল নিজেই ৷ এই রাজভবন অভিযান কীভাবে হচ্ছে, সেই বিষয়ে জবাব তলব করে নবান্নকে চিঠি দিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস ৷
সূত্রের খবর, নবান্নের কাছ থেকে তিনটি বিষয়ে জবাব তলব করা হয়েছে ৷ তবে নবান্নের তরফে এই চিঠির প্রাপ্তির বিষয়ে কিছুই জানানো হয়নি ৷ রাজভবনের সামনে ধরনা মঞ্চ তৈরি করে আইন ভেঙেছে তৃণমূল ৷ আইন ভেঙে কেন রাজনৈতিক সভা ? এই বিষয়ে রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী কী ব্যবস্থা নিলেন, তাও জানতে চেয়েছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস ৷ রবিবার রাজভবন সূত্রের দাবি, আইনের ধারা উল্লেখ করে তিনটি বিষয়ে মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীর কাছ থেকে জবাব চাওয়া হয়েছে।
রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের নির্দেশেই এই রিপোর্ট তলব ৷ তাই রাজভবনের সঙ্গে রাজ্য সরকারের তো বটেই, এবার শাসকদলের সঙ্গেও সংঘাত চরমে উঠল বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ ৷ একশো দিনের কাজের বকেয়া টাকা-সহ আরও বেশ কিছু কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকা পাওনা রয়েছে রাজ্য সরকারের ৷
আরও পড়ুন: রাজ্যপাল আশ্বাস দিলেও নিজেদের অবস্থানে অনড় তৃণমূল
2-3 অক্টোবর সেই পাওয়া আদায়ের দাবিতে দিল্লি গিয়ে অবস্থান বিক্ষোভ করে তৃণমূল ৷ 2 অক্টোবর রাজঘাটে বিক্ষোভ চলাকালীন পুলিশ তৃণমূলের শীর্ষ নেতাদের হটিয়ে দেয় ৷ এরপর, 3 অক্টোবর কৃষিভবনে গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী সাধ্বী নিরঞ্জন জ্যোতির সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে চরম হেনস্তা হতে হয় তৃণমূলের মন্ত্রী, সাংসদ, বিধায়ক ও নেতাদের ৷ পুলিশ গায়ের জোরে তাঁদের প্রিজন ভ্যানে তুলে নিয়ে যায় ৷ পরে অবশ্য তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয় ৷
এই বিষয়ে অভিযোগ জানাতে চেয়ে 'রাজভবন চলো' অভিযান করে তৃণমূল ৷ রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের সঙ্গে দেখা করার দাবিতে বৃহস্পতিবার রাজভবনে যান তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং দলের অন্য নেতা, কর্মীরা ৷ এদিকে সেদিন রাজ্যপাল দিল্লিতে ছিলেন ৷
-
The 3rd Day of our Dharna concluded with 2 moral victories.
— Abhishek Banerjee (@abhishekaitc) October 7, 2023 " class="align-text-top noRightClick twitterSection" data="
While the Zamindars were forced to leave their ivory towers in Delhi & come to Kolkata, the Governor finally agreed to meet our delegation at the earliest.
I am confident BENGAL WILL WIN this battle for its people! pic.twitter.com/of6tqIf85a
">The 3rd Day of our Dharna concluded with 2 moral victories.
— Abhishek Banerjee (@abhishekaitc) October 7, 2023
While the Zamindars were forced to leave their ivory towers in Delhi & come to Kolkata, the Governor finally agreed to meet our delegation at the earliest.
I am confident BENGAL WILL WIN this battle for its people! pic.twitter.com/of6tqIf85aThe 3rd Day of our Dharna concluded with 2 moral victories.
— Abhishek Banerjee (@abhishekaitc) October 7, 2023
While the Zamindars were forced to leave their ivory towers in Delhi & come to Kolkata, the Governor finally agreed to meet our delegation at the earliest.
I am confident BENGAL WILL WIN this battle for its people! pic.twitter.com/of6tqIf85a
ওইদিনই সিকিমে মেঘ ভাঙা বৃষ্টি এবং তিস্তা নদীতে হড়পা বানের ঘটনায় বন্যা পরিস্থিতি দেখা দেয় উত্তরবঙ্গের দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কালিম্পংয়ে ৷ এদিনই রাজ্যপাল দিল্লি থেকে ওই ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলি পরিদর্শনে যান ৷ তাঁর এই সফরকে 'পর্যটকের সফর' বলে কটাক্ষ করে শাসকদল ৷
এমনকী রাজ্যপালের কলকাতা রাজভবনে না-থাকা নিয়ে শাসকদল অভিযোগ করে, তৃণমূলের ভয়ে রাজভবন ছেড়ে দিল্লি পালিয়েছেন সিভি আনন্দ বোস ৷ দিল্লি থেকে উত্তরবঙ্গে এলেও কেন কলকাতা আসতে পারলেন না তিনি ? প্রশ্ন করে তৃণমূল নেতৃত্ব ৷ দার্জিলিংয়ের রাজভবনে তৃণমূলের প্রতিনিধি দলকে ডেকে পাঠান রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস ৷ এই ঘটনাকে 'রাজ্যপালের জমিদারি' বলে কটাক্ষ করে শাসকদল ৷ এর পালটা জবাব দেয় রাজভবন ৷
আরও পড়ুন: আবাস যোজনার বঞ্চিতদের নিয়ে পুজোর পরেই পথে নামছে বিজেপি, ঘোষণা শুভেন্দুর
শনিবার দার্জিলিং রাজভবনে তৃণমূলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে দেখা করার পরও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যপালকে আক্রমণ করেন ৷ এমতবস্থায়, আইন ভেঙে রাজভবনের সামনে তৃণমূলের অবস্থান কেন এবং কী ব্যবস্থা নেওয়া হল, এই বিষয়ে জানতে চায় রাজভবন ৷ রাজনৈতিক মহলের মতে, এতে সংঘাতে নতুন মাত্রা যোগ হল ।
এই পরিস্থিতিতে রাজভবনের উত্তর দ্বারের সামনের রাস্তাটি বন্ধ ৷ এই প্রসঙ্গে সিপিএম পলিটব্যুরো সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেন, "এ রাজ্যে আইনের শাসন নেই। ভিক্টরিয়াতে তৃণমূল ছাড়া কেউ মিটিং করতে পারবে না ৷ কলকাতা বা এসপ্ল্যানেডের আশপাশে আমাদের মিটিং-মিছিলের অনুমতি দেওয়া হয় না ৷ রাজভবনে 144 ধারা ৷ অথচ, রাজভবনের গেটে, ঢিল ছোড়া দূরত্বে তৃণমূলের মঞ্চ বেঁধে অবস্থান চলল ৷ আসলে তৃণমূলের অবস্থান মানে পুলিশের দায়িত্ব ৷ রাজ্যের পুলিশ তৃণমূলের হয়ে তৃণমূল দল চালাচ্ছে ৷ যদি কেউ কালীঘাটের শান্তিকুঞ্জে তিনবার চোখ রাখে, তাহলেই কলকাতা পুলিশ গ্রেফতার করবে ৷ রাজ্যের পুলিশ একেবারে দালালি করছে ৷ রাজ্যের পুলিশ মন্ত্রীর পদত্যাগ করা উচিত ।"
প্রদেশ কংগ্রেসের সোশ্যাল মিডিয়া সেলের ইনচার্জ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও এর তীব্র সমালোচনা করেন ৷ তিনি বলেন, "গত 12 বছর ধরে বাংলার আইনশৃঙ্খলা শিকেয় উঠেছে ৷ কংগ্রেসের নেতা কর্মীরা রাজভবনে গেটে হাত রাখলেই পুলিশ টেনে-হিঁচড়ে আটক করে ৷ আর এখন পুলিশ কী করছে ? অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় নাটক না করে মনরেগার 60-40 রেশিও মেনে 40 শতাংশ টাকা আগে দিয়ে দিক রাজ্যের মানুষকে ৷"
বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা বলেন, "সরকারে থাকা রাজনৈতিক দল এভাবে আইন ভাঙলে সেখানে আর কী বলার থাকে ৷ হাইকোর্টের এই সরকারের বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা করা উচিত ৷"
আরও পড়ুন: বিজেপির সভায় গিয়ে বাংলার দাবিতে সরব হতে চান অভিষেক, চ্যালেঞ্জ সুকান্ত-শুভেন্দুেকে