কলকাতা, 5 মার্চ : মদনায়নের অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই শুরু ৷
একাধিক অভিযোগে জেলযাত্রা ৷ জামিনে মুক্তি ৷ বেশ কিছুদিন নিশ্চুপ থাকা ৷ কিন্তু কখনওই তৃণমূল নেত্রী-তৃণমূল কংগ্রেস সম্পর্কে বেসুরো কথা না বলার পুরস্কার পেলেন মদন মিত্র ৷ কামারহাটি থেকে প্রার্থী করা হল তৃণমূল কংগ্রেসের বহু যুদ্ধের নায়ক মদন মিত্রকে ৷ জেলযাত্রার আগে যেখানে শেষ করেছিলেন এবার সেখান থেকেই শুরু করলেন ৷ এই নিয়ে তৃতীয়বার পরপর তিনবার কামারহাটি থেকে প্রার্থী হচ্ছেন মদন মিত্র ৷ 2011 সালে এই কামারহাটি থেকে জিতেই মন্ত্রী হয়েছিলেন ৷ পরিবহন দফতর সামলেছিলেন ৷ সামলাচ্ছিলেন ক্রীড়া দফতরও ৷
এরপরই চিটফান্ড কেলেঙ্কারিতে মদন মিত্রের নাম জড়াল ৷ একাধিক অভিযোগ উঠল ৷ মন্ত্রীসভার মন্ত্রীত্ব-বিধায়ক পদ ছাড়লেন ৷ তাও রক্ষা হল না ৷ হল জেলযাত্রা ৷ জেল থেকেই 2011 সালে প্রার্থী হলেন ৷ কিন্তু হেরে গেলেন ৷ এবার তৃণমূল কংগ্রেসে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব যখন প্রকট ৷ অর্জুন সিং, দীনেশ ত্রিবেদীরা যখন গেরুয়া আবির মেখেছেন ঠিক তখন সেই মদন মিত্রতেই আস্থা রাখলেন মমতা ৷
আরও পড়ুন : কথা রেখে নন্দীগ্রামে চললেন মমতা
জননেতা হিসেবে বরাবরই একটা আলাদা ইমেজ রয়েছে মদনের ৷ রাতবিরেতে ফোন থেকে শুরু করে যেকোনও সমস্যায় হাত বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য সুনাম রয়েছে তাঁর ৷ তৃণমূল কংগ্রেসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পর যদি কাউকে এককথায় 'মাস লিডার' বলা হয় তিনি হলেন মদন মিত্র ৷ বেশ কিছুদিন ধরেই প্রচারের আলোর বাইরে ছিলেন মদন ৷ নিজেকে গুটিয়ে রেখেছিলেন অনেকটাই ৷ একাধিক আইনি জটিলতার কারণে সম্ভবত তাঁকে থাকতে হয়েছিল পিছনের সারিতে ৷ কিন্তু ভোট যত এগিয়েছে ততই মদনে আস্থা বেড়েছে নেত্রীর ৷ শোভন চট্টোপাধ্যায়, শুভেন্দু অধিকারী, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়রা যেভাবে একের পর এক দল ত্যাগ করেছেন তখন মদন মিত্রের মতো পুরানো দিনের সৈনিক কিন্তু নেত্রীর পাশেই ছিলেন ৷ নেত্রীকে নিয়ে গান বেঁধেছেন ৷ সরাসরি অমিত শাহ এবং মোদিকে আক্রমণ করেছেন ৷ স্বাভাবিকভাবেই গানের মোড়কে রাজনীতির লড়াইকে জনপ্রিয় করেছেন ৷ এবার সেই আনুগত্যের পুরস্কার পেলেন মদন মিত্র ৷
আরও পড়ুন : তারকার তাসেই বাজিমাতের চেষ্টা, দিল্লিতে 25 নাম পাঠাল বিজেপি
ব্যারাকপুর, কামারহাটি সংশ্লিষ্ট এলাকায় বরাবরই মদন মিত্রের একটা ক্যারিশ্মা কাজ করে ৷ আবার গোটা এলাকায় অর্জুন সিংয়ের প্রতিপত্তিও প্রবল ৷ অর্জুন যখন তৃণমূলে ছিলেন তখন তাঁকে সারথি করেই ছুটেছিল মমতার রথ ৷ কিন্তু কালের নিয়মে পরিবর্তন ঘটেছে অনেক কিছুই ৷ প্রথমে অর্জুন পরে দীনেশ বিজেপিতে নাম লিখিয়েছেন ৷ ওই সংশ্লিষ্ট এলাকায় বেশ কিছুটা নড়বড়ে হয়ে উঠেছে তৃণমূলের ভিত্তি ৷ মনে করা হচ্ছে সেই নড়বড়ে ভিত মজবুত করতেই ফের একবার মদনে আস্থা রাখলেন নেত্রী ৷