কলকাতা, 28 জুন: রাজ্যপাল রাজ্যের 10টি বিশ্ববিদ্যালয়ে যে উপাচার্যদের নিয়োগ করেছিলেন তা বৈধ বলে নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। মামলাকারী সনৎকুমার কুমার ঘোষের আবেদন খারিজ করল হাইকোর্ট। প্রধান বিচারপতি নির্দেশে জানিয়েছেন এই উপাচার্যদের বেতন-সহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা স্বাভাবিকভাবে চালু রাখতে হবে। প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ পর্যবেক্ষণে জানিয়েছেন, মামলাকারী জনস্বার্থ মামলা কোথায় জনস্বার্থ ক্ষুণ্ণ হচ্ছে তা বোঝাতে ব্যর্থ। রাজ্যও মামলাকারীর জুতোয় পা গলিয়েছে। আদালত সেই জন্য মামলাকারীর আবেদন খারিজ করেছে।
মামলাকারী সনৎ কুমার ঘোষ মামলায় অভিযোগ করেছিলেন, রাজ্যপাল যে উপাচার্যদের নিয়োগ করেছেন সেখানে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে পরামর্শ না-করেই করেছেন। রাজ্যের আইন মানা হয়নি। নির্দিষ্ট সময়ের জন্য নিয়োগের যে সময়সীমা তা অগ্রাহ্য করেই রাজ্যপাল সেই পদে নতুন করে নিয়োগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। পাশাপাশি রাজ্যের সঙ্গে কোনও পরামর্শ করা হয়নি। তাই রাজ্যপালের নিয়োগ অবৈধ। সেই দাবিই এদিন খারিজ করল প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম ও বিচারপতি অজয় গুপ্ত'র ডিভিশন বেঞ্চ।
মামলাকারীর যুক্তি ছিল, রাজ্যের সঙ্গে পরামর্শ করার বিষয়টি আইনসভার অন্তর্ভুক্ত একটি আইন । ওই আইনকে অগ্রাহ্য করা হয়েছে। সরকার তাঁদের বেতন দেয় । যদি বেআইনি নিয়োগ হয় তাহলে এদের টাকা সরকার কীভাবে দেবে ? এই বিষয়ে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ স্পষ্ট জানিয়েছে, এই উপাচার্যদের বেতন চালু রাখতে হবে। কারও বকেয়া থাকলে মিটিয়ে দিতে হবে। মামলাকারীর আইনজীবী আরও যুক্তি দিয়েছিলেন, ওয়েস্টবেঙ্গল ইউনিভার্সিটি অ্যাক্টে উপাচার্যদের নিয়োগ, তাঁদের চাকরির মেয়াদ সমস্ত কিছুই আইনে স্পষ্ট করা আছে।
কিন্তু এখানে নব নিযুক্ত উপাচার্যদের কথা শুনে মনে হচ্ছে তাঁরা সবাই উপযুক্ত, যোগ্যতায় খামতি নেই। অতএব এই নিয়োগে রাজ্যপাল কোনও ভুল করেননি! এই বিষয়ে নির্দেশে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, দু'পক্ষের আলোচনায় কোথাও ফাঁক ছিল। রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী 27 জনের নাম চূড়ান্ত করে পাঠিয়েছিলেন রাজ্যপালের সঙ্গে কোনও পরামর্শ না-করেই। সেখান থেকে দু'জনকে রাজ্যপাল ইতিমধ্যেই উপাচার্য হিসাবে নিয়োগ করেছেন। ফলে রাজ্যপাল রাজ্যের বক্তব্য না-শুনেই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এই দাবি সঠিক নয়।
আরও পড়ুন: উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে ফের ছাত্র বিক্ষোভের মুখে সিভি আনন্দ বোস