ETV Bharat / state

অসুরক্ষিত যৌনসম্পর্ক থেকেও হতে পারে জন্ডিস

হেপাটাইটিস বি, হেপাটাইটিস সি, হেপাটাইটিস ডি জন্ডিস জলের মাধ্যমে ছড়ায় না । অসুরক্ষিত যৌন সংসর্গ বা রক্তের মাধ্যমে ছড়ায়।

author img

By

Published : Jun 10, 2019, 11:22 AM IST

প্রতীকী ছবি


কলকাতা, 9 জুন: শুধুমাত্র জল থেকে নয়, অসুরক্ষিত যৌনসম্পর্ক থেকেও হতে পারে জন্ডিস। বিষয়টি কতটা আশঙ্কার ? জন্ডিস আসলে কী ? চিকিৎসা এবং প্রতিরোধের উপায়ই বা কী ? এ সব নিয়ে বলেছেন কলকাতা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর তথা চিকিৎসক মৌসুমি দত্ত।

জন্ডিস আসলে কী?

জন্ডিস আসলে কোনও রোগ নয় । জন্ডিস মানে রক্তে বিলিরুবিনের মাত্রা বেড়ে যাওয়া । বিভিন্ন কারণে রক্তে বিলিরুবিন বাড়তে পারে । কোনও সংক্রমণের কারণেও সেটা বাড়তে পারে । শরীরে অন্য কোনও সমস্যার থেকে বাড়তে পারে । কিন্তু মূল কথা হচ্ছে, লিভার যতটা বিলিরুবিন তৈরি করছে ততটা শরীর থেকে বের না হলে রক্তে তার মাত্রা বেড়ে যায় । তখন বিলিরুবিন শরীরের অন্য কোষগুলির মধ্যে জমতে থাকে । এর জেরে গায়ের রং হলুদ হয়ে যায় । চোখের সাদা অংশটি দেখতে হলুদ লাগতে থাকে । প্রস্রাবের রং হলুদ হতে পারে । তখন রক্ত পরীক্ষা করা হলে দেখা যাবে বিলিরুবিনের মাত্রা বেশি । এই অবস্থাকে আমরা জন্ডিস বলি।


খাবার অথবা জলের মাধ্যমে জন্ডিস হতে পারে?

জন্ডিসকে মূলত তিন ভাগে ভাগ করতে পারি। জন্ডিস খাবার থেকে হয় না, তবে জল থেকে হয় । অর্থাৎ জলবাহিত রোগ জন্ডিস। জল থেকে যে জন্ডিস ছড়ায় তা ভাইরাস বাহিত । জল থেকে যে জন্ডিস হয় তা মূলত দুই ধরনের - হেপাটাইটিস এ এবং হেপাটাইটিস ই । এছাড়া আরও এক ধরণের জন্ডিস হয় যেটা রক্তের মাধ্যমে ছড়ায়। অসুরক্ষিত যৌন সংসর্গ, দূষিত রক্ত থেকে হতে পারে এই জন্ডিস। এই ধরনের জন্ডিসের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল হেপাটাইটিস বি। এছাড়া হেপাটাইটিস সি এবং হেপাটাইটিস ডি রয়েছে । আরও এক ধরণের জন্ডিস আছে যা নবজাতকদের হয় । তবে, এই জন্ডিস সংক্রামক নয় । শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়ায় কারণে এই জন্ডিস হয়।


কোন ধরণের জন্ডিস বেশি দেখা যায়?
হেপাটাইটিস এ হল কমন জন্ডিস। তবে, হেপাটাইটিস বি-ও এখন অনেক দেখা যায়।


সাধারণ মানুষ কীভাবে বুঝবেন কেউ জন্ডিসে আক্রান্ত কি না?

শরীরে প্রথমে কিছু উপসর্গ দেখা দিতে পারে। যেমন খিদে না হওয়া। বমি বমি ভাব। বমি হওয়া। এর সঙ্গে জ্বর থাকতে পারে। গায়ের রং হলুদ হয়ে যাবে । চোখের সাদা অংশ হলুদ দেখতে লাগবে । প্রস্রাব হলুদ হতে পারে । যদি জল বাহিত জন্ডিস হয় তাহলে দেখা যাবে একই এলাকায় বেশ কয়েকজন এই রোগে আক্রান্ত হয়েছেন ।


চিকিৎসা কী রয়েছে ?

জন্ডিসের টিকা আছে। হেপাটাইটিস এ এবং হেপাটাইটিস বি-র টিকা আছে। হেপাটাইটিস এ-র টিকা সরকারি হাসপাতালে পাওয়া যায় না । হেপাটাইটিস বি-র জন্মের সময় প্রতিটি শিশুকে দেওয়া হয়। বড়রাও টিকা নিতে পারেন । বিশেষ করে যাঁরা স্বাস্থ্যকর্মী, যাঁদের ক্ষেত্রে সুচ ফুটে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, তাঁদের অবশ্যই হেপাটাইটিস বি ভ্যাকসিন নিতে হবে। হেপাটাইটিস এ-র ভ্যাকসিনও পাওয়া যায়। যাঁরা চাইবেন নিতে পারেন।


টিকা রয়েছে কিন্তু চিকিৎসার যদি প্রয়োজন দেখা দেয়, তা হলে?

হেপাটাইটিস এ-র ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা জরুরি। জল ফুটিয়ে খেতে হবে। খাবার আগে, পরে এবং শৌচাগারে যাওয়ার আগে ও পরে হাত ধুয়ে নিতে হবে। পরিস্রুত জলের ব্যবহার করতে হবে । জন্ডিসের কোনও ওষুধ হয় না । শরীরকে সময় দিতে হবে, যাতে নিজের থেকেই রোগটি সারিয়ে তুলতে পারে । তত দিন নিয়ম মেনে খাওয়া-দাওয়া করতে হবে । যেমন, হালকা খাবার খেতে হবে । বেশি পরিমাণে জল খেতে হবে । বিশ্রামে থাকতে হবে । যদি প্রয়োজন দেখা দেয়, চিকিৎসক মনে করলে রোগীকে হাসপাতালে ভর্তিও রাখতে পারেন।

হেপাটাইটিস বি, হেপাটাইটিস সি, হেপাটাইটিস ডি জন্ডিস জলের মাধ্যমে ছড়ায় না । অসুরক্ষিত যৌন সংসর্গ বা রক্তের মাধ্যমে ছড়ায়। এ ক্ষেত্রে রক্ত পরীক্ষা করা হয়। রক্তের মাধ্যমে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে । সেফ সেক্স যেমন HIV প্রতিরোধ করে, তেমনই হেপাটাইটিস বি এবং হেপাটাইটিস সি প্রতিরোধ করে।

জন্ডিসে সবথেকে বেশি আক্রান্ত হওয়ার আশংকা কাদের ?

যে কোনও মানুষ-ই আক্রান্ত হতে পারেন । কিন্তু আক্রান্ত হলে বেশি অসুস্থ হওয়া কিংবা মৃত্যুর আশঙ্কা থাকে এক বছরের কম বয়সের শিশুদের, খুব বয়স্কদের এবং গর্ভবতী মহিলাদের ক্ষেত্রে । হেপাটাইটিস বি এবং হেপাটাইটিস সি সংক্রমণ থেকে পরবর্তীকালে ক্যান্সার হতে পারে । লিভারের ক্রনিক অসুখও হতে পারে । তার জেরে মৃত্যু হতে পারে । হেপাটাইটিস এ এবং হেপাটাইটিস ই-র সংক্রমণেও মৃত্যুর আশঙ্কা থেকে যায় । কোনও কোনও মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে। তাদের ক্ষেত্রে গুরুতর আকার ধারণ করতে পারে জন্ডিস।


কলকাতা, 9 জুন: শুধুমাত্র জল থেকে নয়, অসুরক্ষিত যৌনসম্পর্ক থেকেও হতে পারে জন্ডিস। বিষয়টি কতটা আশঙ্কার ? জন্ডিস আসলে কী ? চিকিৎসা এবং প্রতিরোধের উপায়ই বা কী ? এ সব নিয়ে বলেছেন কলকাতা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর তথা চিকিৎসক মৌসুমি দত্ত।

জন্ডিস আসলে কী?

জন্ডিস আসলে কোনও রোগ নয় । জন্ডিস মানে রক্তে বিলিরুবিনের মাত্রা বেড়ে যাওয়া । বিভিন্ন কারণে রক্তে বিলিরুবিন বাড়তে পারে । কোনও সংক্রমণের কারণেও সেটা বাড়তে পারে । শরীরে অন্য কোনও সমস্যার থেকে বাড়তে পারে । কিন্তু মূল কথা হচ্ছে, লিভার যতটা বিলিরুবিন তৈরি করছে ততটা শরীর থেকে বের না হলে রক্তে তার মাত্রা বেড়ে যায় । তখন বিলিরুবিন শরীরের অন্য কোষগুলির মধ্যে জমতে থাকে । এর জেরে গায়ের রং হলুদ হয়ে যায় । চোখের সাদা অংশটি দেখতে হলুদ লাগতে থাকে । প্রস্রাবের রং হলুদ হতে পারে । তখন রক্ত পরীক্ষা করা হলে দেখা যাবে বিলিরুবিনের মাত্রা বেশি । এই অবস্থাকে আমরা জন্ডিস বলি।


খাবার অথবা জলের মাধ্যমে জন্ডিস হতে পারে?

জন্ডিসকে মূলত তিন ভাগে ভাগ করতে পারি। জন্ডিস খাবার থেকে হয় না, তবে জল থেকে হয় । অর্থাৎ জলবাহিত রোগ জন্ডিস। জল থেকে যে জন্ডিস ছড়ায় তা ভাইরাস বাহিত । জল থেকে যে জন্ডিস হয় তা মূলত দুই ধরনের - হেপাটাইটিস এ এবং হেপাটাইটিস ই । এছাড়া আরও এক ধরণের জন্ডিস হয় যেটা রক্তের মাধ্যমে ছড়ায়। অসুরক্ষিত যৌন সংসর্গ, দূষিত রক্ত থেকে হতে পারে এই জন্ডিস। এই ধরনের জন্ডিসের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল হেপাটাইটিস বি। এছাড়া হেপাটাইটিস সি এবং হেপাটাইটিস ডি রয়েছে । আরও এক ধরণের জন্ডিস আছে যা নবজাতকদের হয় । তবে, এই জন্ডিস সংক্রামক নয় । শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়ায় কারণে এই জন্ডিস হয়।


কোন ধরণের জন্ডিস বেশি দেখা যায়?
হেপাটাইটিস এ হল কমন জন্ডিস। তবে, হেপাটাইটিস বি-ও এখন অনেক দেখা যায়।


সাধারণ মানুষ কীভাবে বুঝবেন কেউ জন্ডিসে আক্রান্ত কি না?

শরীরে প্রথমে কিছু উপসর্গ দেখা দিতে পারে। যেমন খিদে না হওয়া। বমি বমি ভাব। বমি হওয়া। এর সঙ্গে জ্বর থাকতে পারে। গায়ের রং হলুদ হয়ে যাবে । চোখের সাদা অংশ হলুদ দেখতে লাগবে । প্রস্রাব হলুদ হতে পারে । যদি জল বাহিত জন্ডিস হয় তাহলে দেখা যাবে একই এলাকায় বেশ কয়েকজন এই রোগে আক্রান্ত হয়েছেন ।


চিকিৎসা কী রয়েছে ?

জন্ডিসের টিকা আছে। হেপাটাইটিস এ এবং হেপাটাইটিস বি-র টিকা আছে। হেপাটাইটিস এ-র টিকা সরকারি হাসপাতালে পাওয়া যায় না । হেপাটাইটিস বি-র জন্মের সময় প্রতিটি শিশুকে দেওয়া হয়। বড়রাও টিকা নিতে পারেন । বিশেষ করে যাঁরা স্বাস্থ্যকর্মী, যাঁদের ক্ষেত্রে সুচ ফুটে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, তাঁদের অবশ্যই হেপাটাইটিস বি ভ্যাকসিন নিতে হবে। হেপাটাইটিস এ-র ভ্যাকসিনও পাওয়া যায়। যাঁরা চাইবেন নিতে পারেন।


টিকা রয়েছে কিন্তু চিকিৎসার যদি প্রয়োজন দেখা দেয়, তা হলে?

হেপাটাইটিস এ-র ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা জরুরি। জল ফুটিয়ে খেতে হবে। খাবার আগে, পরে এবং শৌচাগারে যাওয়ার আগে ও পরে হাত ধুয়ে নিতে হবে। পরিস্রুত জলের ব্যবহার করতে হবে । জন্ডিসের কোনও ওষুধ হয় না । শরীরকে সময় দিতে হবে, যাতে নিজের থেকেই রোগটি সারিয়ে তুলতে পারে । তত দিন নিয়ম মেনে খাওয়া-দাওয়া করতে হবে । যেমন, হালকা খাবার খেতে হবে । বেশি পরিমাণে জল খেতে হবে । বিশ্রামে থাকতে হবে । যদি প্রয়োজন দেখা দেয়, চিকিৎসক মনে করলে রোগীকে হাসপাতালে ভর্তিও রাখতে পারেন।

হেপাটাইটিস বি, হেপাটাইটিস সি, হেপাটাইটিস ডি জন্ডিস জলের মাধ্যমে ছড়ায় না । অসুরক্ষিত যৌন সংসর্গ বা রক্তের মাধ্যমে ছড়ায়। এ ক্ষেত্রে রক্ত পরীক্ষা করা হয়। রক্তের মাধ্যমে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে । সেফ সেক্স যেমন HIV প্রতিরোধ করে, তেমনই হেপাটাইটিস বি এবং হেপাটাইটিস সি প্রতিরোধ করে।

জন্ডিসে সবথেকে বেশি আক্রান্ত হওয়ার আশংকা কাদের ?

যে কোনও মানুষ-ই আক্রান্ত হতে পারেন । কিন্তু আক্রান্ত হলে বেশি অসুস্থ হওয়া কিংবা মৃত্যুর আশঙ্কা থাকে এক বছরের কম বয়সের শিশুদের, খুব বয়স্কদের এবং গর্ভবতী মহিলাদের ক্ষেত্রে । হেপাটাইটিস বি এবং হেপাটাইটিস সি সংক্রমণ থেকে পরবর্তীকালে ক্যান্সার হতে পারে । লিভারের ক্রনিক অসুখও হতে পারে । তার জেরে মৃত্যু হতে পারে । হেপাটাইটিস এ এবং হেপাটাইটিস ই-র সংক্রমণেও মৃত্যুর আশঙ্কা থেকে যায় । কোনও কোনও মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে। তাদের ক্ষেত্রে গুরুতর আকার ধারণ করতে পারে জন্ডিস।

Intro:কলকাতা, ৯ জুন: শুধুমাত্র জল থেকে নয়, অসুরক্ষিত যৌনসম্পর্ক থেকেও হতে পারে জন্ডিস। কতটা আশঙ্কার? জন্ডিস আসলে কী, চিকিৎসা এবং প্রতিরোধের উপায়ই-বা কী? এ সব নিয়ে বলেছেন কলকাতা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর, চিকিৎসক মৌসুমী দত্ত।
Body:জন্ডিস আসলে কী?
জন্ডিস আসলে কোনও একটি রোগ নয়। জন্ডিস মানে রক্তে বিলিরুবিনের মাত্রা বেড়ে যাওয়া। বিভিন্ন কারণে বিলিরুবিন বাড়তে পারে। কোনও সংক্রমণের কারণে বাড়তে পারে। শরীরে অন্য কোনও সমস্যা থেকে বাড়তে পারে। কিন্তু মূল কথা হচ্ছে, লিভার যতটা বিলিরুবিন তৈরি করছে, ততটা বিলিরুবিন শরীর থেকে বের হচ্ছে না। তা সে, বেশি মাত্রায় বিলিরুবিন তৈরি করার কারণে হতে পারে। বা, কোনও কারণে বিলিরুবিন শরীর বের করতে না পারার কারণে হতে পারে। রক্তে তখন বিলিরুবিনের মাত্রা বেড়ে যায়। এই বিলিরুবিন অন্য কোষগুলির মধ্যেও জমে যায়। গায়ের রং হলুদ হয়ে যায়। চোখের সাদা অংশটি দেখতে হলুদ লাগতে থাকে। প্রস্রাবের রং হলুদ হতে পারে। রক্ত পরীক্ষা করা হলে দেখা যাবে বিলিরুবিনের মাত্রা বেশি। এই অবস্থাকে আমরা জন্ডিস বলি।


কোনও খাবার অথবা, জলের মাধ্যমেও জন্ডিস হতে পারে?
জন্ডিসকে মূলত তিন ধরনের ভাগ করতে পারি। খাবার থেকে হয় না। তবে, জল থেকে হয় অর্থাৎ, জলবাহিত জন্ডিস। এই জন্ডিস ভাইরাস বাহিত। জল থেকে যে জন্ডিস হয় তা মূলত দুই ধরনের। হেপাটাইটিস এ এবং হেপাটাইটিস ই। এছাড়া আরও এক ধরণের জন্ডিস হয়, যেটা রক্তের মাধ্যমে ছড়ায়। যৌন সংসর্গ, দূষিত রক্ত, জন্ডিস সংক্রামিত রক্ত থেকে হতে পারে এই জন্ডিস। এর মধ্যে সব থেকে পরিচিত হল হেপাটাইটিস বি। এছাড়া জন্ডিস হিসাবে হেপাটাইটিস সি এবং, হেপাটাইটিস ডি রয়েছে। আরও এক ধরণের জন্ডিস আছে যা নবজাতকদের হয়। তবে, এই জন্ডিস সংক্রামক নয়। শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়ায় কারণে এই জন্ডিস হয়।


কোন ধরণের জন্ডিস বেশি দেখা যায়?
হেপাটাইটিস এ কমন জন্ডিস। তবে, হেপাটাইটিস বি-ও প্রচুর দেখা যায়।


সাধারণ মানুষ কীভাবে বুঝবেন, কেউ জন্ডিসে আক্রান্ত কি না?
শরীরে প্রথমে কিছু উপসর্গ দেখা দিতে পারে। যেমন খিদে না হওয়া। বমি বমি ভাব। বমি হওয়া। এর সঙ্গে জ্বর থাকতে পারে। গায়ের রং হলুদ হয়ে যাবে। চোখের সাদা অংশ হলুদ দেখতে লাগবে। প্রস্রাব হলুদ হতে পারে। যদি জল বাহিত জন্ডিস হয়, তাহলে দেখা যাবে একই এলাকায় বেশ কয়েকজন এই রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। জলের মধ্যে ভাইরাস মিশে গিয়ে থাকলে হতে পারে জন্ডিস।


চিকিৎসা কী রয়েছে
জন্ডিসের চিকিৎসা বলতে প্রথমে প্রতিরোধ তার পরে অসুখ হলে কী করা যায়। সব সময় প্রতিরোধে করাটা খুবই ভালো, তাতে খরচ কম এবং মানুষের সমস্যা এবং শারীরিক যে কষ্ট তা হবে না। তবে জন্ডিসের টিকা আছে। হেপাটাইটিস এ এবং হেপাটাইটিস বি, এই দুইয়ের টিকা আছে। হেপাটাইটিস এ-র টিকা সরকারি হাসপাতালে পাওয়া যায় না। হেপাটাইটিস বি-র জন্মের সময় প্রতিটি শিশুকে দেওয়া হয়। বড়রাও টিকা নিতে পারেন। বিশেষ করে যাঁরা স্বাস্থ্যকর্মী। যাঁদের ক্ষেত্রে সুচ ফুটে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, তাঁদের অবশ্যই হেপাটাইটিস বি ভ্যাকসিন নিতে হবে। হেপাটাইটিস এ-র ভ্যাকসিনও পাওয়া যায়। যাঁরা চাইবেন নিতে পারেন।


টিকা রয়েছে কিন্তু চিকিৎসার যদি প্রয়োজন দেখা দেয়, তা হলে?
হেপাটাইটিস এ-র ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা জরুরি। জল ফুটিয়ে খেতে হবে। খাবার আগে, পরে এবং শৌচাগারে যাওয়ার আগে, পরে হাত ধুয়ে নিতে হবে। পরিশ্রুত জলের ব্যবহার করতে হবে। এর পরেও যদি জন্ডিস দেখা দেয়, জন্ডিসের কোনও ওষুধ হয় না। শরীরকে সময় দিতে হবে, যাতে নিজের থেকেই রোগটি সারিয়ে তুলতে পারে। তত দিন নিয়ম মেনে খাওয়া-দাওয়া করতে হবে। যেমন, হালকা খাবার খেতে হবে। বেশি পরিমাণে জল খেতে হবে। বিশ্রামে থাকতে হবে। এবং, যদি প্রয়োজন দেখা দেয়, চিকিৎসক মনে করলে রোগীকে হাসপাতালে ভর্তিও রাখতে পারেন।

হেপাটাইটিস বি, হেপাটাইটিস সি, হেপাটাইটিস ডি, এই ধরনের জন্ডিস জলের মাধ্যমে ছড়ায় না। যৌন সংসর্গ বা রক্তের মাধ্যমে ছড়ায়। এ ক্ষেত্রে রক্ত পরীক্ষা করা হয়। রক্তের মাধ্যমে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে, অসুরক্ষিত যৌন সম্পর্ক থেকেও হতে পারে জন্ডিস। এক্ষেত্রে সুরক্ষিত যৌন সম্পর্কের বিষয়ে জানা প্রয়োজন। সেফ সেক্স যেমন এইচআইভি প্রতিরোধ করে, তেমনই হেপাটাইটিস বি এবং হেপাটাইটিস সি প্রতিরোধ করে।

Conclusion:জন্ডিসে সবথেকে বেশি আক্রান্ত হওয়ার আশংকা কাদের থাকে?
যে কোনও মানুষ-ই আক্রান্ত হতে পারেন।কিন্তু আক্রান্ত হলে বেশি অসুস্থ হওয়া কিংবা মৃত্যুর আশঙ্কা থাকে এক বছরের কম বয়সি শিশুদের, খুব বয়স্কদের এবং গর্ভবতী মহিলাদের ক্ষেত্রে। এদের ক্ষেত্রে মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে জন্ডিস। হেপাটাইটিস বি এবং হেপাটাইটিস সি এই দুটি সংক্রমণ থেকে পরবর্তীকালে ক্যান্সার হতে পারে। লিভারের ক্রনিক অসুখও হতে পারে। মৃত্যু হতে পারে। হেপাটাইটিস এ এবং হেপাটাইটিস ই-র সংক্রমণের কারণেও মৃত্যুর আশঙ্কা থেকে যায়। কোনও কোনও মানুষের রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা কম থাকে। তাঁদের ক্ষেত্রেও মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে জন্ডিস।

________
RAP-এ বাইট
wb_kol_june 9 jaundice bt1_7203421
এবং
wb_kol_june 9 jaundice bt2_7203421
কলকাতা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর, চিকিৎসক মৌসুমী দত্তর বক্তব্য।

_____


For All Latest Updates

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.