কলকাতা, 27 এপ্রিল : কোরোনা সংক্রমণের জেরে ইতিমধ্যেই বাড়ানো হয়েছে লকডাউনের সময়সীমা । আজ মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রী জানান, রেড জ়োনগুলিতে আপাতত জারি থাকবে লকডাউন । তবে 3 মে-র পর লকডাউন বাড়ানো হবে কি না আজকের বৈঠকে তা জানা যায়নি । এর মাঝেই লকডাউন নিয়ে কেন্দ্র সরকারের পদক্ষেপকে কটাক্ষ করলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা আবদুল মান্নান । তিনি বলেন, "কেন্দ্রীয় সরকারের অপরিকল্পিত লকডাউনে সমগ্র দেশে অনাহারে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়বে। এমন বিপর্যয় নেমে আসবে যা কল্পনাতীত।"
আবদুল মান্নান আরও বলেন, "এভাবে অপরিকল্পিতভাবে লকডাউন চললে, দেশের আইন-শৃঙ্খলা অবস্থা তলানিতে গিয়ে ঠেকবে। কর্মহীন হবেন রেকর্ড সংখ্যক মানুষ। 1976 সালের মন্বন্তরের থেকেও কঠিন পরিস্থিতি হওয়ার প্রবল আশঙ্কা । রাজ্য সরকারের সদিচ্ছা থাকলেও পরিস্থিতির জন্য অসহায় হয়ে যাবে রাজ্য । তবে কেবল এ রাজ্য নয়, দেশের বিভিন্ন রাজ্যের সরকারও একই সমস্যার সম্মুখীন হবে । সদিচ্ছা থাকলেও পরিস্থিতির জন্য পেরে উঠবে না। চুরি-ছিনতাই সহ নানা রকমের অপরাধ সহযোগে সামাজিক অবক্ষয় বৃদ্ধি পাবে। অনাহার মৃত্যু বাড়বে সর্বত্র।"
একই ইশুতে সরব বিরোধী দলগুলি । লকডাউন ঘোষণার পর এপ্রিলের তৃতীয় সপ্তাহ অবধি অর্থাৎ এক মাসে মোট 14 কোটির উপর শ্রমিক কাজ হারিয়েছেন। প্রতিদিন প্রায় 50 লাখ শ্রমিক কাজ হারিয়েছেন। সম্প্রতি সেন্টার ফর মনিটরিং ইন্ডিয়ান ইকনমি বা CMIE-র সমীক্ষার রিপোর্ট সামনে এনে হতাশ রাজ্যের বিরোধী দলের নেতৃত্ব। এবিষয়ে বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু বলেন, "এর আগেও মোদি সরকারের ভ্রান্ত নীতিতে বেকার বেড়েছে দেশে। 2016 সালে নোট বাতিলের জেরে বেকারের সংখ্যা রেকর্ড পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়েছিল দেশে। সেই বেকার বৃদ্ধির হারও পিছিয়ে পড়েছে লকডাউনের সময় বেকার বৃদ্ধির হারের কাছে।"
কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য সর্বনাশের দিন দেখতে পাচ্ছেন। তিনি বলেন, "2016 সালে নোট বাতিলের পর দেশে বেকারের হার বেড়ে হয়েছিল 9.59 শতাংশ। আর এই লকডাউনের সময় বেকারের হার প্রায় তিনগুণ বেড়ে হয়ে গেছে 26.2 শতাংশ। দেশে কর্মসংস্থানের হার ফেব্রুয়ারিতে ছিল 40 শতাংশের কাছাকাছি। এখন তা কমে হয়েছে 26 শতাংশ। মাত্র তিন মাসে 14 শতাংশ হ্রাস পেয়েছে কর্মসংস্থান।"
কেন্দ্রীয় সরকারকে মানুষের পাশে থাকার আবেদন জানিয়েছেন প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী ডঃ অসীম দাশগুপ্ত । তিনি বলেন, "এখন কেন্দ্রীয় সরকারকে আরও বেশি মানবিক হয়ে দেশবাসীর পাশে দাঁড়াতে হবে। পর্যাপ্ত অর্থের যোগান দিতে হবে । প্রয়োজনে আর্থিক নীতি সংশোধন করে টাকা ছাপাবার পথে এগোতে হবে ।"